এবারের জার্নিটা একটু অন্যরকম ছিল
নমষ্কার,,
ঢাকা থেকে বেশ তাড়াহুড়ো করেই বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। কারণ ঠিক দুই দিন পর আবার রওনা দিতে হবে ঢাকার দিকে। বাড়ি থেকে অনেক কিছু গুছিয়ে নিয়ে আসতে হবে। তাই সন্ধ্যা হলেও রওনা দিয়ে দিলাম বাড়ির দিকে। দুপুরে ঠিক মত খাওয়া হয় নি। শরীর টা এক রকম পারছিল না আর। তবু কষ্ট করেই বেরিয়ে পরলাম কল্যাণপুরের দিকে। এসে দেখি বাস নেই কোন। প্রায় চল্লিশ মিনিট পর একটা বাস। তারপরও সিট একদম পিছনের দিকে। মানে একদম শেষ সারির আগের টা। এদিকে পরের গাড়ি আবার তার এক ঘন্টা পর ছাড়বে। তাই আর কোন কিছু না ভেবে পেছনেই একটা টিকিট নিয়ে রওনা দিলাম বাড়ির দিকে।
এমন রাতের দিকে জার্নি করা আমার কাছে নতুন কিছু নয়। বলা যায় এক রকম অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আর আমার রাতের জার্নি করতেই বেশি ভালো লাগে। যদিও গাড়িতে আমার ঘুম হয় না একদমই। তারপরও অন্ধকারের মাঝে গাড়ির ঐ ছুটে বেড়ানোটা আমার দারুণ লাগে এক কথায়। খুব উপভোগ করি এই ব্যাপারটা। সেদিনও তাই করছিলাম। তবে জ্যাম ছিল কিছুটা সাভার পার হয়ে। আর গাড়িটাও কেমন একটা ভাবে যেন চালাচ্ছিল ড্রাইভার। একটুও ভালো লাগছিল না জার্নি করে। কিছু সময় ইউটিউবে কাটাতে লাগলাম। আর মাঝে মধ্যে ফেইসবুকে চ্যাটিং। ইদানিং ফেসবুক ব্যবহার করা টা বেশ কমিয়ে দিয়েছি। শুধু মেসেঞ্জারে ম্যাসেজ আসলে সেগুলোর রিপ্লাই দেই। আর এমনিতে ফোন দিয়ে ফেসবুক একদম ব্রাউজ করি না। এক দুই দিন পর যদি ল্যাপটপ নিয়ে বসি তখনই শুধু নোটিফিকেশন গুলো দেখা হয়।
যাই হোক, বাস বেশ দূরন্ত গতিতে ছুটে চলছিল। কিন্তু মাঝে মাঝেই এমন ভাবে ব্রেক করছিল যেন পুরো চকমে উঠছিল বাসের সব যাত্রীই। এতো রিস্কি ড্রাইভিং কেউ পছন্দ করছিল না। সাধারনত এসআর গাড়ির সার্ভিস নিয়ে কখনো কেউ কথা বলে না। কিন্তু সেদিন অনেক টা বাধ্য হয়েই অনেক যাত্রী রেগে ড্রাইভারের সাথে তর্কে জড়িয়ে যায়। রাত তখন প্রায় সাড়ে বারোটা বাজে। একটা পর্যায়ে বেশ তীব্র আকার ধারণ করে। অনেকে বললো ড্রাইভার কে আর রাগিয়ে না দিতে। কারণ এখনো অনেকটা রাস্তা বাকি। কেউ কেউ চুপ হয়ে এসে বসে পড়লো। কিন্তু ড্রাইভার শুরু করলো আরেক দুষ্টুমি। এমন ধীরে ধীরে গাড়িতে চালানো শুরু করলো যেটা প্রায় অস্বাভাবিক। হাজার বলেও সে স্পীড আর বাড়ায় না। পেছন থেকে ট্রাক অবধি আমাদের কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। আবার একদম ফাঁকা রাস্তাতেও একই কাহিনী। কেউ যে বেশি কিছু বলবে তার উপায় নেই। কারণ মাঝ রাতের ব্যাপার। একটু বেশি হৈ চৈ কিছু হলে ড্রাইভার কোন দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে।
যাত্রা বিরতির আগে পর্যন্ত এভাবেই শয়তানি করে ঐ ড্রাইভার। তবে বিরতির পর আবার আগের মতোই স্বাভাবিক ভাবেই গাড়ি চালিয়েছে। আর এতো কিছুর পর আমি বাড়ি পৌছালাম প্রায় রাত আড়াইটার দিকে। কি আর করার! তবু যে ভালোভাবে পৌঁছাতে পেরেছি এটাই বড় ছিল। এমন ঝামেলায় আগে কখনোই পরিনি। একদম শেষ রাতের দিকে নিজের এলাকার রাস্তায় সিস দিয়ে হাঁটতে বেশ মজাই লাগছিল। আমার জন্য এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা হয়ে থাকলো এবারের জার্নিটা।
রাতের জার্নি আমার কাছেও ভালো লাগে । তবে কোন গাড়িতে জার্নি করতে আমি পছন্দ করি না কারণ আমার গাড়িতে উঠলেই বমি পায় আর ঘুম তো আছেই। রাতের বেলা অতিরিক্ত স্পিডে গাড়ি চললে ভয় করে । আর ড্রাইভের সাথে তর্কাতর্কি করলে ড্রাইভাররা এরকম শয়তানি করে । কিন্তু আপনাদের ড্রাইভার টা মনে হয় একটু বেশি শয়তান ছিল । এরকম তো আগে কখনো শুনিনি । তারপরও যে ড্রাইভার পরে গিয়ে স্বাভাবিক হয়েছে এটাই বড় কথা । ভালই ভালই বাড়িতে গিয়ে পৌঁছেছেন তো ?
হ্যাঁ আপু আপনাদের দোয়ায় ভালো ভাবে পৌঁছে গেছি। পরে আর কোন সমস্যা হয় নি। এবারই প্রথম এমন হলো আমার সাথে।
সব মিলিয়ে ভালোভাবে বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন এর জন্যই হাজার শুকরিয়া। তবে ড্রাইভার লোকটা বেশ শয়তান আছে। বিরতির আগ পর্যন্ত ইচ্ছে করে এত আস্তে আস্তে ড্রাইভিং করেছে। মূলত সে রং ড্রাইভ করছিল আর যাত্রীরা সেটা বলেছে যার কারণে সে ইচ্ছে করে এমনটা শয়তানি করেছে।
কি আর বলবো ভাই, এত লং জার্নি করি, কিন্তু এমন এক্সপেরিয়েন্স এই প্রথম। ঐ ড্রাইভার কে যে পরে মার দেয় নি এটাই ওর কপাল। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।
অন্যরকম একটা অভিজ্ঞতা থেকে তাহলে এই জার্নি টা করলেন। এই জার্নিতে আপনার ভিন্ন একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। ড্রাইভারও দেখছি দুষ্টামি করছিল। তবে আবার বেশি আসতে চালালে অশান্তি লাগে। তবে আপনি যে ভালোভাবে পৌঁছাতে পেরেছেন এটাতেই অনেক। ড্রাইভার এর সাথে সবাই এরকম তর্কে গিয়েছিল বলে ড্রাইভার দুষ্টামি করেছিল। যাই হোক অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে অন্যরকম জার্নির অভিজ্ঞতার পোস্টটা সবার মাঝে সুন্দর করে তুলে ধরার জন্য।
দুষ্ট মানুষদের সাথে আসলে পেরে ওঠা কঠিন। আমরাই শেষমেষ চুপ হয়ে গেছিলাম। ধন্যবাদ আপু সবটা পড়ে সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।
এরকম একটা সিচুয়েশনে আমার কখনোই পড়া লাগেনি। এরকম মানুষদের সাথে সত্যি পেরে ওঠা যায় না। আপনারা শেষমেষ চুপ করে গিয়ে ভালোই করেছিলেন। কিন্তু এরপর থেকে তো লোকটা দুষ্টামি শুরু করেছিল। বাস কিন্তু বেশি আসতে চালালেও ভালো লাগে না একেবারে। আবার বেশি জোরে চালালে ভয় লাগে। অন্যরকম একটা জার্নি ছিল এবারেরটা, বুঝতে পারতেছি আপনার পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ে। ভালোভাবে এবং সুস্থভাবে আপনি বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন অনেক রাত হলেও এটা দেখেই ভালো লেগেছে।
কিছু সময় চুপ হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না ভাই,, আমরা এদের কাছে একদম জিম্মি। যাই হোক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।
ভাই আপনার মতো আমারও গাড়িতে একেবারেই ঘুম হয় না। এখন স্লিপার কোচে শুয়ে শুয়ে কক্সবাজার যাচ্ছি, কিন্তু তবুও চোখে ঘুম নেই। যাইহোক ড্রাইভারদের সাথে বেশি রাগারাগি করলে শয়তানি করে অনেক সময়, তবে আপনাদের বাসের ড্রাইভারের মতো এমন শয়তানি কোনো ড্রাইভার করে না। সুযোগ পেয়ে বেশ ভালোই মজা নিয়েছে সেই ড্রাইভার। যাইহোক ঠিকমতো নিজের এলাকায় পৌঁছাতে পেরেছেন, এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এই দুষ্টু লোকদের সাথে পেরে ওঠা কঠিন ভাই। আমার লাইফে প্রথম এমন ঘটনার সন্মুখীন হলাম। কক্সবাজারের ট্যুর টা দারুন উপভোগ করেন, এই শুভ কামনা রইলো ভাই।
হ্যাঁ ভাই বেশ উপভোগ করছি কক্সবাজার ট্যুর। যাইহোক এতো চমৎকার ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
মাঝে মাঝে কিছু গাড়ির ড্রাইভার এরকম হয় খুব উল্টাপাল্টা গাড়ি চালায়। তখন যাত্রীদের খুব ভোগান্তি হয়। আবার এদের কিছু বলাও যায় না। যাত্রীদের বেশি বলার কারণেই তো আপনাদের ড্রাইভার এরকম ধীরগতিতে অর্ধেক রাস্তা নিয়ে গিয়েছে। যাই হোক পরে যে লোকটার মাথা ঠিক হয়েছে ভালোমতো চালিয়ে গন্তব্যে আপনাদের পৌঁছে দিয়েছে তাই অনেক।
আমিও এটা অবাক হলাম শেষের দিকে যে লোকটা যাত্রা বিরতির পর আর কোন ফাজলামি করলো না। আগের মতোই ড্রাইভ করলো। সত্যি বলতে আমি পুরো গাড়িতে বেশ ভয়ে ছিলাম আপু। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।