নীড়ে ফিরে আসা

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার,,

প্রতিদিন যেভাবে ডেঙ্গু জ্বরের খবর কানে আসছে,আর এবছরে যে হারে মানুষ মারা যাচ্ছে ডেঙ্গুতে তাতে ঢাকা থাকতে রীতিমত বুকের ভেতর কাপছিল। গতবছর একবার ডেঙ্গুর ছ্যাকা খেয়েছি। এবার হলে আর রক্ষা নেই। তাই কাজ শেষ করে একদম দেরি না করে বাড়ির দিকে রওনা দিয়ে দেই। বন্ধুরা অনেক জোরাজুরি করছিল আর একটা দিন থাকার জন্য। তার মধ্যে একজন বাইক কিনবে সেদিনই। তাই আরো বেশি জোর করছিল। কিন্তু বাড়িতে সমস্যার জন্য রওনা দিয়েই দেই। আসার আগের রাতে প্ল্যান করেছিল সবাই যে সকাল বেলা আমাকে ভালোমত খাওয়া দাওয়া করিয়ে বাড়ির দিকে রওনা করিয়ে দেবে। সেই মত বাজার টাও করেছিল। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে সবাই দেখি চেঁচামেচি শুরু করেছে রান্নার খালা আসে নি দেখে। হাহাহাহাহা। খাওয়া দাওয়া ওখানেই শেষ।

IMG20230727143839.jpg
Location

সবাই অনেক ধরেছিল আর একটা দিন থাকার জন্য। আমি জানি কয়দিন পর আবার আসতেই হবে। তাই আর কারোর কথা না শুনে বাইরে থেকে হালকা নাস্তা করেই রওনা দিয়ে দেই। সময় তখন সকাল এগারোটা বেজে গেছে। আমি তো ভয় পাচ্ছিলাম এই সময় টা তে নিউ মার্কেট আর কলা বাগানের জ্যাম আমার জীবন শেষ করে দিবে। বাড়ির জন্য গাড়ি পেতে পেতে হয়তো দুপুর একটা পার হয়ে যাবে। কিন্তু আমি যেন অন্য এক বাংলাদেশে পৌঁছে গেছিলাম ক্ষণিকের জন্য। আজিমপুর থেকে কল্যাণপুর অবধি যেতে দুই মিনিটের জন্যও সিগনালে আটকাই নি। পুরোটাই ম্যাজিকের মতো লেগেছে আমার কাছে। দুপুর বারোটার আগেই আমি কল্যাণপুর নেমে যাই। আর সেখানেও দেখি দুপুর বারোটার গাড়ি ছাড়া ছাড়া ভাব। আমি দ্রুত টিকিট করে নিয়ে রওনা দিয়ে দেই।

IMG20230727121416.jpg
Location

IMG20230727143855.jpg
Location

টেকনিক্যাল থেকে মূল বাস টা ছাড়লো। সবকিছুই ঠিক ছিল কিন্তু গাবতলী কাউন্টারে এসে দুইজন যাত্রীর জন্য প্রায় পনের থেকে বিশ মিনিট লেট হয়। এক কথায় বললে বাস ছাড়তে ছাড়তে প্রায় সাড়ে বারোটাই বেজে যায়। ঢাকার ভেতরের দিকে আকাশ টা বেশ মেঘলা ছিল। তাই খুব একটা কষ্ট হচ্ছিল না। আর আমাদের গাড়িটাও বেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় একদম জ্যাম ছিল না। এমন জার্নি করতে সব সময় অনেক ভালো লাগে। তবে কপালে এমন দিন খুব কম আসে, হিহিহিহি।

IMG20230727154759.jpg
Location

IMG20230727153923.jpg
Location

একদম পাক্কা তিন ঘন্টার মধ্যে ফুড ভিলেজে এসে বাসটা ব্রেক দেয়। এই ব্রেক টা না দিলে হয়তো আর পনের মিনিটের মাঝেই বাড়ি চলে যেতাম। কিন্তু নিয়মের কাছে সবাই বাঁধা। ত্রিশ মিনিটের একটা ব্রেক নিতেই হলো। এখানে এসে বেশির ভাগ সময় আমি আইসক্রিম অথবা ছোট্ট একটা দই খাই। ঐদিনও তাই করলাম। বেশ মজার এই দই টা খেতে। পরিমাণে আরেকটু বেশি হলে বেশি খুশি হতাম। হাহাহাহা। যাই হোক, ব্রেকের ত্রিশ মিনিট পর বাস টা ছেড়ে দিল আবার। আর আমি ঠিক চার ঘণ্টার মধ্যেই বাড়িতে ঢুকে গেলাম। এবারের ঢাকা যাওয়া এবং আসার জার্নি টা সত্যিই খুব আরামদায়ক ছিল আমার জন্য। কোন দুর্ভোগ পোহাতে হয় নি একদম।

Sort:  
 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া ঢাকা শহরে যে হারে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে আর মারা যাচ্ছে। এখানে না থাকাই ভালো। তাড়াতাড়ি আপনার কাজ শেষ করে বাড়ি চলে গিয়ে ভালো করেছেন। আপনার বন্ধুদের ইচ্ছেটা পূরণ হলো না আবার আসলে পেট ভরে খেয়ে তাদের ইচ্ছে পূরণ করে দিয়ে যায়েন। সবসময় ঢাকা শহরের রাস্তা জ্যাম মুক্ত পাওয়া যায় না। আপনাকে ঢাকা শহর চায় না বলে সে তো খালি রাস্তা পেয়েছেন হা হা হা। যাক অবশেষে সুস্থভাবে আপনার মায়ের কোলে ফিরে গিয়েছেন এটাই অনেক। গ্ৰামে ভালো সময় কাটাবেন আর আমাদের সাথে সুন্দর পোস্ট শেয়ার করবেন।

 2 years ago 

হাহাহাহা,, বেশ বলেছেন আপু। এই ঢাকা শহরকে আমিও চাই না একদমই। আমার বাড়িই আমার স্বর্গ 🥰। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

ঢাকা যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবে আপনার মতো মাঝে মাঝে ম্যাজিক হয়ে যায় হা হা হা।যাইহোক দই দেখে সত্যি লোভ সামলানো মুশকিল। আপনি ব্রেকে দারুণ জিনিস খেয়েছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। ভালো মতো পৌঁছাতে পেরেছেন জেনে আরো ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

বাহ বেশ ভালো লাগলো ভাইয়া আপনি খুব দ্রুত এবং নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন । আমার মনে আছে গতবার আপনার ডেঙ্গুর কথা। এবার সাবধানে থাকবেন আপনি। ভয়াবহ ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে ঢাকায় ।ঢাকায় আপাতত না যাওয়াই ভালো। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

হ্যাঁ আপু,, গতবার অনেক ভুগেছি। আপনাদের দোয়ায় সুস্থ হয়ে উঠেছিলাম ভালোভাবেই। এবার ডেঙ্গুর ভয় টা তাই একটু বেশিই কাজ করছে মনে। খুব দরকার ছাড়া তাই ঢাকা যাওয়ার কথা মনেও আনছি না তাই।

আমাদের এই দিকে কিন্তু ডেঙ্গুর কোন পূর্বাভাস পাচ্ছি না। তবে বর্তমানে Conjunctivitis মানে চোখে এক ধরনের ইনফেকশন হচ্ছে। যার কারণে চোখ উঠছে, এই নিয়ে বেশ আতঙ্কে আছি রে ভাই। আর ট্রাফিক জ্যামের কথা কি বলবো, সেটা তো নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গেছে এখন। যদিও কলকাতায় এখন ট্রাফিক জ্যাম অনেক কম, সবকিছু নিয়ম করেও হয়। যাইহোক দই টা দেখে কিন্তু প্রথমে আমার কাছে মালাই চা মনে হয়েছিল।

 2 years ago 

চোখের এই প্রবলেম টা আমাদের দেশেও কিছুদিন আগে ব্যাপক ভাবে হয়েছিল। এখন ডেঙ্গু টাই আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর দই এর ডিব্বা টা আসলেই মালাই চায়ের মতই লাগছে ভাই আমার কাছেও 😊।

 2 years ago 

বন্ধুরা এতো এতো আয়োজন করে খাওয়াবে, খালা না আসাতে আর হলো না।আসলে ভাগ্যে না থাকলে সামনে থাকলেও খাওয়া যায় না। খাওয়া না হলেও ভাগ্যে কিন্তু জার্নিটা খুব ভালোই ছিল।এমন জার্নি সবারই কাম্য।৪ ঘন্টায় বাড়ি পৌঁছে গেলেন।আর ওই ফুড ভিলেজে হয় আইসক্রিম নয়তো এই দইটা আপনি খান।আর একটা পোস্টে ও দইটা দেখেছিলাম।খুব মজা খেতে বলেছিলেন।যাক ডেঙ্গুর মাঝে আমাদের ফেলে আপনি নীড়ে ফিরে গেলেন নিশ্চিন্তে।দোয়া করি ভালো থাকবেন, সেভ থাকবেন।আমাদের ঢাকাবাসীর জন্য দোয়া রাখবেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আগের পোস্টের কথাও যে মনে আছে এটা দেখে খুবই ভালো লাগছে আপু। আর আপনারাও সাবধানে থাকবেন আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময়।

Coin Marketplace

STEEM 0.09
TRX 0.29
JST 0.036
BTC 103593.28
ETH 3515.41
USDT 1.00
SBD 0.56