গরীবের ম্যালটিপ্লান সেন্টার
নমষ্কার,,
মাস খানেক আগে হঠাৎ করেই ডেস্কটপের মাদারবোর্ড টা নষ্ট হয়ে গেল। নিজে অনেক ঘাটাঘাটি করেও খুব একটা লাভ হলো না। অবশেষে ডাক্তার বাড়িতেও বেশ পাকাপাকি করলাম পিসি টা নিয়ে। কিন্তু ফলাফল শূন্য। মোটামুটি হাজার পাঁচেক টাকা হলে ঠিক করা সম্ভব। ভাবলাম এই পুরোনো কম্পিউটারে যে টাকায় লাগাবো সেটাই লস প্রোজেক্ট। মোটামুটি একটা ল্যাপটপ নিতে পারলে আমার সব দিক থেকেই লাভ । কিন্তু নতুন ল্যাপটপের এখন আকাশ ছোঁয়া দাম। পছন্দ মত নিতে গেলে সত্তর হাজারের নিচে কেনা সম্ভব নয়। পরে মাথায় আসলো বাইরে ইউজ হওয়া কিছু প্রোডাক্ট আমাদের দেশে আসে। সেগুলো যদি কেনা যায় তাহলে মন্দ হয় না।
সত্যি বলতে এই বয়সে বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে কেনার কোন ইচ্ছাই আমার ছিল না। বাবা বলেছিল নতুন নিতে। কিন্তু আমার মন সায় দেয় নি। নিজে যেটুকু দিতে পারব সেটা দিয়েই নেব। তো নানান জায়গায় কথা বলা শুরু করি ল্যাপটপ নিয়ে। আমার কিছু বন্ধু আছে বুয়েটে যারা বাইরে থেকে আসা রিফারবিশড ল্যাপটপ অনেক নিয়েছে। আর তাদের সার্ভিস টাও অনেক ভালো পাচ্ছে। সেই সূত্র ধরেই আমার বন্ধুকে বলি তাদের পরিচিত মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে। মোটামুটি ভালো একটা প্রোডাক্ট যেন আমাকে দেয়।
যেহেতু সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিস তাই খুব বেশি দাম দিয়ে কেনার ইচ্ছে আমার ছিল না। আমি চেয়েছিলাম ২২ ,২৩ হাজারের মধ্যেই কিছু একটা কিনতে। সেই মত করেই বন্ধুদের কে বলা ছিল। অবশেষে ঢাকা যাওয়ার পর দুই বন্ধুকে সাথে নিয়ে একদিন সন্ধ্যায় চলে গেলাম এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লান সেন্টারে। ওদের পরিচিত দোকান এটা। মোটামুটি সাত থেকে আটটা ল্যাপটপ এভাবেই তারা নিয়েছে। আর প্রত্যেকটার সার্ভিস বেশ ভালো পাচ্ছে।
শো রুমে যাওয়ার পর দেখলাম যিনি প্রধান তিনি বেশ আন্তরিকতার সাথে আমাদেরকে গ্রহণ করলেন। বুঝতে পারলাম লোকটার সাথে আমার বাকি দুই বন্ধুর বেশ ভালো সম্পর্ক আছে। যেহেতু আমার ব্যাপারটা আগে থেকেই বলা ছিল, তাই আমার জন্য বাছাই করা একটা ল্যাপটপ তিনি নিজে থেকেই রেখে দিয়েছিলেন। আমাদেরকে সেই প্রোডাক্টটি তিনি বের করে দেন। কিন্তু সেখানে আরো অনেক ধরনের ল্যাপটপ ডিসপ্লেতে ছিল। হঠাৎ করেই এক বন্ধুর চোখ সেই দিকে পড়লো। আর ওই ল্যাপটপটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করার পর আগেরটা যেন আর ভালো লাগছিল না। কিন্তু এটার দামটাও বেশ বেশি ছিল। তবে পারফরম্যান্স চমৎকার। কি আর করার, আমার নিজের কাছেও সেটা ভালো লেগে গেল। অবশেষে অনেক কিছু ম্যানেজ করে আমাদের পছন্দমত ল্যাপটপটাই নিলাম। ২৯ হাজার টাকার মতো লাগলো। যেটা বাইরে অনেক জায়গায় ৩৩ হাজারের কম পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
শোরুমের মালিক জহির ভাই লোকটা খুব আন্তরিক। দোকানে অনেক ভিড় ছিল। তারপরেও তিনি আমাদের তিনজনকে নিচে নিয়ে গিয়ে বেশ ভালোমতো নাস্তা করিয়ে তারপর ছেড়ে দিলেন। আমরা তিনজন এদিক-ওদিক আরো ঘোরাঘুরি করলাম। শেষ বেলায় আবার খিদে পেয়ে গেল। রাস্তার পাশেই একটা দোকানে শুনলাম খুব ভালো শর্মা নাকি পাওয়া যায়। তারপর তিনজন মিলে সেটাও খেয়ে নিলাম।
সত্যি বলতে আমার টেক রিলেটেড নলেজ বেশ কম। তাই এসব ব্যাপারে আমি আমার বন্ধুদের কথাকেই বেশি প্রাধান্য দেই। ওরা এক একটা এসবের জিনিয়াস বলা যায়। আর তাদের সাথে এমন একটা সম্পর্ক যে, ওরা বন্ধুর জিনিস ভেবে কাজ করবে না,একদম নিজের জন্য কিছু করছে এটা ভেবেই সব করে। অনেকেই বলেন এসব ইলেকট্রনিক্স জিনিস সেকেন্ড হ্যান্ড না কেনার জন্য। কিন্তু আমি আমার অনেক বন্ধুদের দেখেছি যারা আসলেই ভালো বাইরের প্রোডাক্ট নিতে পেরেছে ,তাদের সব কিছু বেশ ভালো চলছে। এখন আমার কেমন হয় সেটাই দেখার পালা।
আপনি ঠিক বলেছেন ভাইয়া এখন বাবা মার কাছ থেকে টাকা নেওয়া সত্যি অনেক কষ্টের।তবে আপনি বন্ধুদের সাথে গিয়ে বেশ ভালো একটা ল্যাপটপ কিনেছেন।সত্যি পছন্দ মতো জিনিস হলে অনেক ভালো লাগে। আপনি পছন্দ মতো ল্যাপটপ নিতে পেরেছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ আপু মা বাবার থেকে টাকা নিতে খুব লজ্জা লাগে এখন। দোয়া করবেন আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
দাদা আমিও বেশ অনেক দিন ধরে ভাবছি একটা সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কেনার জন্য ৷ কিন্তু পরিচিত বা ভালো ল্যাপটপ না পাই ৷ তবে চেষ্টা করছি সামনের ঈদে নেওয়ার ৷ যা হোক বন্ধুদের সাথে ল্যাপটপ কেনা ভালোই ছিল ৷
তবে দাদা কি ল্যাপটপ কিনেছেন যদি বলতেন ৷ আমি ও নিতে চাই একটা ৷
আমারটা লেনেভো থিঙ্ক প্যাড T480s মডেল। এটা কোর আই ফাইভ এবং এইট জেনারেশনের একটি ল্যাপটপ। ধন্যবাদ ভাই।
ভালো করেছেন পুরনো কম্পিউটার এত টাকা দিয়ে না সেরে নতুন ল্যাপটপ নিয়ে নিয়েছেন। যদিও বাজেট এর থেকে বেশি দাম লেগেছে। আসলে আজকালকার দিনে বাজেটে কোন কাজ হয় না । সব সময় দেখা যায় যে বাজেট থাকে তার থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। দামি জিনিস তো একটু পারফরম্যান্স ভালো হবেই। যাইহোক দাম বেশি হলেও নিয়ে নিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। আশা করি পারফরমেন্স ভালো পাবেন। যেহেতু আপনার বন্ধুরা এরকম সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ ইউজ করছে।
বাজেট ধরে কেনা এখন খুব মুশকিল আপু। তবু রিস্ক নিয়ে কিনেই ফেললাম। আমার যা ফাটা কপাল, দেখা যাক কতদূর কি হয়। অনেক ধন্যবাদ আপু।
সবসময় সেকেন্ড হ্যান্ড প্রোডাক্ট যে খারাপ হয় সেটা আমি বলছি না, তবে আমি কখনোই সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিস ব্যবহার করি না। এটা আমার কাছে কেমন যেন একটা লাগে।
যাই হোক আপনি যেহেতু ল্যাপটপ কিনেই ফেলেছেন না হলে বলতাম যে কলকাতা থেকে কিনতে। এখানে কম দামে অনেক ভালো ভালো ল্যাপটপ পাওয়া যায়। ২৯ হাজার টাকা হলে আপনি ইন্ডিয়াতে সেকেন্ড হ্যান্ড গেমিং ল্যাপটপ পেয়ে যেতেন।
বলেন কি 😳😳,, তাহলে তো এই টাকায় কলকাতা ঘোরা আর ল্যাপটপ কেনা দুইটাই হয়ে যেত। মিস করে ফেললাম। আমি এটাই প্রথম সেকেন্ড হ্যান্ড প্রোডাক্ট কিনলাম। দেখা যাক কেমন চলে।
আমার এক বন্ধু কিনেছে জন্যই বললাম। একটু খোঁজ লাগালেই পাওয়া যায়।