জীবনের আহ্বানে সামনে এগিয়ে যাই

নমষ্কার,,

মোটামুটি মাস দুয়েক আগে থেকেই প্ল্যান করার ছিল আগস্টের এই সময়টাতে ইন্ডিয়াতে আসবো। সম্পূর্ণটাই নিজের জন্য শুধু। সত্যিকারের প্রিয় মানুষগুলোর সাথে কিছুটা সময় কাটাবো এটা ভেবেই এবার ইন্ডিয়া আসার ইচ্ছে। মন যখন একবার স্থির করে নিয়েছিলাম তখন আর পিছুপা হইনি। সময় এবং সুযোগ বের করে বেরিয়ে পরলাম নিজের মত করে জীবনের কিছুটা সময় কাটাতে।

IMG20220808221749.jpg
Location

IMG20220808233310.jpg
Location

ঢাকা থেকে কলকাতা সরাসরি বাস সার্ভিস দেয় শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস। আর ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে জানতে পারি এই বাসের মাধ্যমে যারা যাতায়াত করেন তাদেরকে বেনাপোল বর্ডারে ইমিগ্রেশনের জন্য ভিআইপি সুবিধা দেওয়া হয়। তাই অন্য কথা না ভেবে চার পাঁচ দিন আগেই ঢাকা থেকে কলকাতার একটা টিকিট ম্যানেজ করে ফেলি। বাস ছাড়ার সময় ছিল রাতের ১০:৩০ মিনিট কমলাপুর বিআরটিসি বাস কাউন্টার থেকে। আমি যেহেতু শ্যামলীতে থাকি তাই রাত নয়টা পনের মিনিটে আমাকে কল্যাণপুর কাউন্টারে যেতে হয়। সেখান থেকে ছোট গাড়িতে করে কমলাপুর পর্যন্ত নিয়ে আসে। সব কাজ শেষ হলে একদম ঠিক ঠিক ১০:৩০ মিনিটে বাস ছেড়ে দেয় কমলাপুর থেকে।

IMG20220809010154.jpg
Location

যাত্রাপথে বারবারই আমার কিছু মজার মানুষের সাথে পরিচয় হয়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমার পাশের সিটে যে ছেলেটা বসেছিল তার নাম আমির শেখ। ঢাকার গাবতলীতে থাকে। ভীষণ মিশুক ছেলেটা। আমার সমবয়সী হবে। গল্পে গল্পে সারাটা রাস্তা এসেছি। সব থেকে মজার ব্যাপার এই ছেলেটা ইন্ডিয়া যাচ্ছে তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে 😂। ছয় বছরের সম্পর্ক তাদের। দুই বছর পর দেখা করার জন্য যাচ্ছে। অনেক অনেক কথা। ওর গল্প শুনছিলাম আর আমি মুচকি মুচকি হাসছিলাম 🥰🥰।

IMG20220809044716.jpg
Location

IMG20220809052114.jpg
Location

IMG20220809064013.jpg
Location

IMG20220809054707.jpg
Location

পদ্মা সেতু হওয়ার জন্য বেনাপোল বর্ডারে আসতে আর খুব বেশী বেগ পেতে হয় না। মোটামুটি চার থেকে সাড়ে চার ঘন্টার মাঝে পৌঁছানো যায় বর্ডারে। আমাদের বাসটা একটা হোটেল ব্রেক দিয়েছিল ত্রিশ মিনিটের। তারপর আবার শুরু চলা। ভোর চার টা বাজার আগেই আমরা বেনাপোল পৌঁছে যাই। বাসের লোকজন আমাদের বসার আলাদা ব্যবস্থা করে দেন। সকাল সাড়ে ছটায় ইমিগ্রেশন শুরু হবে তখন সেখানে নিয়ে যাবে। আমি আর আমির ভাই দুজন মিলে হাঁটাহাঁটি করলাম বেশ। দেখলাম শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে গেছে। আর সেখানে আমরা তো মাস্তি করে ঘুরে বেড়াচ্ছি ভি আই পি ইমিগ্রেশন হবে বলে। হলোও তাই। ইমিগ্রেশন শুরু হওয়ার সাথে সাথে বাসের সুপারভাইজার আমাদের আলাদা একটা লাইনে করে পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ করে দিলেন। বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়া অংশে দুই জায়গাতেই কোনরকম ঝামেলা ছাড়া ভালোভাবে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়ে যায়।

IMG20220809054628.jpg
Location

IMG20220809072047.jpg
Location

সকাল সাড়ে আটটার ভেতর সব কাজ শেষ হয়ে গেলে আমরা আবার রওনা দেই কলকাতার দিকে। আসার সময় রাস্তাটা একটু জ্যাম ছিল। তাই দেরি হচ্ছিল কিছুটা। সকাল ১১ঃ০০ টার মাঝেই কলকাতা নিউ মার্কেটে বাসটা আমাদের নামিয়ে দেয়। সারারাত পাঁচ মিনিটও ঘুম নেই। কিভাবে যেন সময় গুলো কেটে গেছে বুঝতেই পারেনি।

IMG20220809082846.jpg
Location

১২ থেকে ১৩ ঘণ্টার বেশ লম্বা একটা জার্নি শেষ করে কলকাতা পৌছাই। সত্যি বলতে বেশ ভালো ছিল জার্নি টা। হুন্দাই বাস হওয়ার জন্য খুব একটা অসুবিধা হয়নি। বাসের ভেতর আমরা যতজন যাত্রী ছিলাম সবাই বেশ পরিচিত হয়ে গিয়েছিলাম। হাসি ঠাট্টা গল্প করতে করতে পুরো সকাল এসেছি। ভালোই লেগেছে এক কথায়। শরীরটা হালকা কাপছিল। কিন্তু তারপরেও দিব্যি ছিলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরের গল্পটা না হয় অন্যদিন লিখব। সকলে ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আর আমার জন্য আশীর্বাদ করবেন।

Sort:  
 2 years ago 

অনেক লম্বা একটি জার্নি করেছেন। কোন অসুবিধা ছাড়াই কলকাতায় পৌঁছাতে পেরেছেন এটা জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগলো। পাশাপাশি জার্নি করার সময় আপনি সকল যাত্রীদের সাথে পরিচিত হওয়ার বিষয়টা আমাকে অবাক করেছে। দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

হ্যাঁ ভাই সব কিছুর পরেও যে ভালো ভাবে সব হয়েছে এটাই বড় কথা। দোয়া রাখবেন যেন সব কাজ সেরে ভালো ভাবে ফিরতে পারি 🙏

 2 years ago 

খুব মজা করে গল্প গল্প করতে করতে কলকাতা পৌঁছে গেছেন জেনে ভাল লাগলো । কোন ভোগান্তি হয়নি , ভাগ্য ভাল । সব মিলিয়ে ব্লগটি খুব ভাল লাগলো ভাইয়া । শুভকামনা আপনার জন্য ।

হ্যাঁ আপু ভালো একটা জার্নি ছিল সত্যি। অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59575.00
ETH 2607.14
USDT 1.00
SBD 2.43