বিসর্জন
নমস্কার,,
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল সদস্যকে জানাচ্ছি বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা। দেখতে দেখতে পূজোর পাঁচটা দিন কেটে গেল। আবার একটা বছরের অপেক্ষা। মা আবার আসবেন। আবার তার ছেলে মেয়ে দের মুখে হাসি ফোটাবেন। আমার জন্য অপেক্ষার প্রহর টা এবার আরো মধুর হবে। যেহেতু একটুও মজা করতে পারি নি এবার তাই পরের বছরের জন্য এখন থেকেই মন উরু উরু করছে।
তবে প্রতিবছরের মত এবারের বিসর্জনটা সেই আনন্দ ঘন মুহূর্ত নিয়ে আসেনি আমাদের পাড়াতে। হঠাৎ একটা দুর্ঘটনা মুহূর্তেই সবার মুখের হাসি কেড়ে নিয়ে যায়। আমাদের পাড়াতে ঠাকুর বিসর্জনের ঠিক আগ মুহূর্তে মন্ডপ থেকে ঠাকুর নামানোর সময় হঠাৎ করেই পূজা কমিটির একজন সদস্য বিদ্যুৎ সৃষ্ট হন এবং সাথে সাথে সেখানেই ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোকে গমন করেন। বিকাল সাড়ে চার টার ঘটনা। সীদুর খেলার সময় হয়ে গিয়েছিল। পাড়ার সব দিদি বৌদিরা সব কিছু নিয়ে মন্দিরে যেতে শুরু করেছে সবে। আর ঠিক সেই মুহূর্তে এই দুর্ঘটনা।
খুব অল্প বয়সী ছেলেটা। আমার থেকে চার পাচ বছরের বড় হবে হয়তো। ছোট বেলায় এক সাথে খেলাধুলাও করেছি। ছোট একটা বাচ্চা আছে। এক বছরের হবে হয়তো। এমন একটা তাজা প্রাণ যদি মুহূর্তেই ঝড়ে যায় তাহলে পাড়ার অবস্থা কি হতে পারে একবার ভাবুন! ছেলেটাকে বগুড়া মেডিকেলে নিয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয় নি।
চোখের সামনে কাল বিকাল থেকে ঐ একটা মুখ যেন ভেসে উঠছিল। অসুস্থ শরীর নিয়ে বেশি দূর আর যেতে পারি নি। একবার একটু রাস্তায় গিয়েছিলাম। দেখলাম পাড়ার দিদি বৌদিরা কোন রকম করে নিয়ম কানুন গুলো পালন করছে। প্রতিমা ভ্যানে তুলে রেডি করছিল ঘাটে নিয়ে বিসর্জন দিবে বলে। এভাবেই দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে গতকাল বিজয়া দশমী কাটে আমাদের পাড়াতে। যে পাড়া সব সময় হৈ হুল্লোড়ে মেতে থাকে সেখানে সন্ধ্যে নামার আগেই শোকে স্তব্ধ চারদিক। আজ আমি লিখতেও পারছি না ঠিক করে। কেমন যেন গুলিয়ে ফেলছি সব। সকলে প্রার্থনা করবেন যেন ওই পরিবারটা এই শোক সামলে উঠে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।
বিসর্জন তো না। এতো আর মাত্র ১ বছরের অপেক্ষা। আসছে বছর আবার হবে।
প্রথমে আপনার পোস্ট দেখে ভেবেছিলাম একটা আনন্দঘন মুহূর্ত। কিন্তু পরবর্তীতে বিদ্যুতের জন্য একটি লোক মারা গেলেন এটা শুনে খুবই খারাপ লাগলো। আরো বেশি খারাপ লাগলো এটা শুনে লোকটির এক বছরের একটা বাচ্চা আছে। এরকম আনন্দের মুহূর্তে এরকম একটা দুর্ঘটনা। সত্যি অনেক খারাপ লাগলো।
কি আর বলবো আপু,, ব্যাপারটা সত্যিই খুব মর্মান্তিক ছিল। সবার মুখে মুখে এখনও ঐ আলোচনায় চলছে। দোয়া করবেন আপু যেন এই কঠিন অবস্থা ঐ পরিবার সামলে উঠতে পারে তারাতারি।
মায়ের যে কি ইচ্ছে তা মা ই জানে। এই ঘটনাগুলো এতই হৃদয় স্পর্শী যে ভাষায় বোঝানো মুস্কিল।যে যায় সে তো চলেই যায়। কিন্তু কষ্ট তো তাদের যারআ রয়ে যায় সার্ভাইভ করার জন্য।বড্ড খারাপ লাগলো পড়ে।
সত্যিই তাই মায়ের চাওয়া আমাদের বোঝার সাধ্য নেই। ওই রাস্তা দিয়ে এখনো যেতে পারি না আমি। মনে মনে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কি বা করার আছে। ভগবান দেখে শুনে রাখুক এই পরিবারটাকে এটাই প্রার্থনা 🙏