শব্দ দূষণ এক নীরব ঘাতক

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

নমস্কার,,

আচ্ছা শব্দ দূষণ থেকে বাঁচার উপায়টা কি? প্রতিদিন যেভাবে বাড়ছে এই শব্দ দূষণের তীব্রতা তাতে এটা ভয়ংকর একটা রূপ ধারণ করেছে। আমি রীতিমত অতিষ্ঠ হয়েই আজকের লেখা টা লিখছি। সত্যি বলতে আমরা অন্য অনেক দিক নিয়ে সচেতন হলেও শব্দ দূষণ নিয়ে কেউ অতোটা ভাবি না। কিন্তু দিন দিন এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া আমাদের কতোটা ক্ষতি করছে সেটা কেউ খেয়াল করছি না। শব্দ দূষণের মাত্রা এতো তীব্র হয়ে দাঁড়িয়েছে যে আমাদের তিলে তিলে অসুস্থ করে ফেলছে। অথচ এই ব্যাপারটা আমরা কেউ অনুধাবন করতেই পারছি না।

bells-2651369_1280.jpg

Source

আমি রোজ হেঁটে অফিস থেকে যাওয়া আসা করি। পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথ আমার জন্য এটা। সে হিসাব করলে আমার কোন ক্লান্তি আসার কথাই নাহ। কিন্তু রোজ যে পরিমাণ হর্নের আওয়াজ কানে আসে তাতে আমি অসুস্থ হতে বাধ্য। অনেক টা নীরব ঘাতকের ভূমিকা পালন করছে এই শব্দ দূষণ। ঘরে এসে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। সব কিছুতে বিরক্তি লাগে। কোন কাজে মন বসাতে পারি না। আমি সব থেকে অবাক হই বিনা প্রয়োজনে হর্ন বাজানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতা দেখে। ট্র্যাফিক সিগনাল দিয়ে রেখেছে সেখানে তো অন্তত বসে বসে হর্ন বাজানোর কোন দরকার নেই। কিন্তু সবাই নির্বিঘ্নে হর্ন বাজিয়ে যায়। আর এখন তো ঘরে ঘরে বাইকার। সবাই হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করছে। দেখা যায় ধুম করে পেছন থেকে এসে কানের কাছে হর্ন বাজিয়ে দিচ্ছে। মনে হয় মাথার ভেতরের সব কিছু উল্টে পাল্টে দিচ্ছে হর্নের ঐ তীব্রতা।

গবেষণায় দেখা গেছে এই শব্দ দূষণের ফলে এখন মানুষ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হৃদরোগ থেকে শুরু করে মানসিক বিষণ্ণতা সবকিছুর মূলে রয়েছে শব্দ দূষণ। আমরা জাতি হিসেবে শিক্ষিত হলেও কাজে কর্মে ভীষণ অশিক্ষিত। আর আচার আচরণেও। বিনা প্রয়োজনে হর্ন বাজানোর পর সেটা নিয়ে কথা বললে উল্টো আমাদের দিকেই সবাই চড়াও হয়। স্কুল কিংবা হসপিটাল কোনটার সামনেই হর্ন বাজাতে কেউ দ্বিধা করে না।

আমার কাছে মনে হয় আইনের সঠিক প্রয়োগ না করার জন্যই আজ এই করুন দশা দেখতে হচ্ছে। এভাবে যদি প্রতিনিয়ত চলতে থাকে তবে খুব খারাপ সময় আমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে। কেউ কাউকে সচেতন করতে পারবে না যদি আমাদের নিজেদের মূল্যবোধ আর বিবেক জাগ্রত না হয়। অন্তত নিজেদের জন্য, আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের এই ব্যাপার গুলো নিয়ে সচেতন হওয়া উচিত।

Sort:  
 2 months ago 

শব্দ দূষণ তো আমি মোটেও পছন্দ করি না। অতিরিক্ত বিরক্ত লাগে অযথা সব দোকানে আসলে। তবে সবকিছুর একটা লিমিট থাকা প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু মানুষ অসচেতন তাই এভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে শব্দ দূষণ করে মানুষকে বিরক্ত করে আর মানুষের সমস্যা সৃষ্টি করে।

 last month 

এই ব্যাপারটা দিন দিন খুবই তীব্র হয়ে উঠেছে। একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে। তবে যে কোন মন্তব্য করার পর চেষ্টা করবেন সেটা আবার ভালো করে চেক করার। তাহলে আর ছোট খাটো ভুল গুলো হবে না।

 2 months ago 

কি আর বলবো দাদা! আমি নিজে আসলে জব ছেড়ে দিয়েছি শব্দ দূষণ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই! আমি শব্দে ভীষণ সেন্সিটিভ! অফিস যাওয়া আসার দেড় দেড় মিলে মোট প্রায় ৩ ঘন্টা এমন বাজে শব্দ দূষণ আমি নিতে পারতিছিলাম না বলেই চাকরিই ছেড়ে দিয়েছি। ভীষণ খারাপ লাগতো বাসায় এসে! সাথে মাথা ব্যাথা তো আছেই!! আমরা সকলে সচেতন না হলে এই দূষণ কমবে না ভাই! বিশেষ করে মোটরসাইকেল এবং বাস সিএনজি চালক রা!

 last month 

রাস্তায় বসে হর্ন দেওয়া এখন একটা ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে দিদি। এটা থেকে কিভাবে যে বের হয়ে আসব আমরা এটা বোধ হয় ঈশ্বরেরও অজানা। হাহাহাহাহা,,, দেখা যাক আমাদের মত শিক্ষিত মূর্খ জাতির বিবেক কবে খোলে!

 2 months ago 

ব‍্যাপার টা আমাদের দেশের প্রশাসনের। অতিরিক্ত হর্ন দেওয়ার জন্য জরিমানা এর বিধান করে দেওয়া উচিত। আর যখন এরা লাইসেন্স দেয় তখন এমন একটা নিয়ম থাকা অত‍্যাবশ‍্যকীয়। প্রয়োজনে আইনের আওতায় এনে লাইসেন্স বাতিল এর বিধান রাখতে হবে। কিন্তু এরা এটা একেবারে উদাসীন। ব‍্যাপার টা এমন এটা যেন কোন সমস‍্যায় না। কিন্তু আমার আপনার মতো সাধারণ মানুষ এটার ভুক্তভোগী।

 last month 

ভাই এসব বিধান অনেক আগে থেকেই আছে। কিন্তু আমরা কেউ এসব নিয়ম যেমন মেনে চলি না, তেমন উপড় মহল থেকেও এসব নিয়ম মানানোর কোন কার্যক্রমের ব্যবস্থাও নেওয়া হয় না। তাই আজ এমন বেহাল দশা।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58478.70
ETH 3158.37
USDT 1.00
SBD 2.43