হারিয়ে যাচ্ছে খেলার মাঠ ।। ফিকে হয়ে যাচ্ছে শৈশব

নমষ্কার,
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল সদস্যকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। হ্যাঁ আমিও আছি মোটামুটি। হঠাৎ করেই এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল। আবহাওয়া টা আবার ঠান্ডা হলো বেশ। আকাশটা এখনো বড্ড মেঘলা। হয়তো খানিক বাদে আবার ঝরবে অঝোরে বৃষ্টি।

IMG20220430182751.jpg
Location

বেশ কয়েকদিন আগে যখন খেলার মাঠে বসে ছিলাম একা একা, এক পাশে তাকিয়ে দেখি ছোট ছোট বাচ্চারা ফুটবল খেলায় মেতে উঠেছে। কেউ কেউ আবার একপাশে ক্রিকেট খেলছে। মুহূর্তের মাঝেই ফিরে গেলাম হারানো শৈশবে। এই বয়সটা তে কত দুরন্ত ছিলাম! সকালবেলা খেলার নেশা, দুপুরবেলা খেলার নেশা, বিকেল বেলাও খেলার নেশা। অথচ বর্তমান যুগের শিশু-কিশোররা অধিকাংশই খেলাধুলা করতে ভুলে গেছে। ওদের দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই। খেলার মাঠ টাই বা কই।

IMG20220430183021.jpg
Location

ছোটবেলাতে আমরা যেসব জায়গায় খেলাধুলা করতাম তার অধিকাংশ জায়গায় এখন বাড়িঘর দোকানপাট তৈরি হয়ে গেছে। ফাঁকা নেই কোন জায়গা। বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার চাপ সামাল দিতে গিয়ে বিসর্জন দিতে হচ্ছে আমাদের খেলার মাঠগুলোকে। আবার কখনও কখনও কোন ভাবনা চিন্তা ছাড়াই সরকারিভাবে বা বেসরকারিভাবে অনেক মাঠ দখল হয়ে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাদের শিশু-কিশোরদের বেড়ে ওঠার স্বপ্নগুলো।

IMG20220430182532.jpg
Location

গ্রাম অঞ্চলে খেলার মাঠ কিছু থাকলেও শহরাঞ্চলে একদম নেই বললেই চলে। বদ্ধ ঘরে ছোট মেঝেতে অথবা রুমের পাশের বেলকুনিতে যেটুকু খেলাধুলা করা যায় সেটুকু নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে এখনকার শিশু-কিশোরদের। আর যার জন্য এদের মানসিক বিকাশ টাও পরিপূর্ণভাবে হয়ে উঠছে না। একসাথে খেলাধুলা করা, একসাথে চলার মাঝে যে একটা ভ্রাতৃত্ব বোধ গড়ে ওঠে সেই ব্যাপারটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। আমি মনে করি সমাজের অনেক বড় ক্ষতি হচ্ছে সামগ্রিক এই ঘটনা চক্র থেকে।

IMG20220430182414.jpg
Location

সবচেয়ে বড় উদ্বেগের ব্যাপার এই যে খেলার মাঠ বা শিশু-কিশোরদের বেড়ে ওঠা নিয়ে এখনকার মা-বাবার মাঝেও তেমন একটা সচেতনতা লক্ষ করা যায় না। শুধুমাত্র পড়াশোনা করা আর প্রাইভেট টিচারের কাছে যাওয়া এসব করলেই তারা খুশি। খেলার মাঠে বন্ধুদের সাথে মিশলে যেন তাদের বাচ্চারা বিপথে চলে যাবে এমনটাই তাদের চিন্তা ধারা। অথচ একটা শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা এবং বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় কাটানো যে কতটা প্রয়োজন এই ধ্রুবসত্য টা আমরা বিন্দুমাত্র অনুভব করার চেষ্টা করি না।

IMG20220506183019.jpg
Location

তবে সবাই একরকম না। এর মাঝেও অনেক অভিভাবক আছেন যারা শত ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে তাদের বাচ্চাদেরকে খেলার মাঠে নিয়ে যান এবং পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য যা যা করা দরকার সবটা করার চেষ্টা করেন। আমার মনে হয় এই ব্যাপার গুলো নিয়ে ভাবার সময় হয়ে গেছে। আমরা কোন দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে। এখনই যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেই এর অনেক নেতিবাচক প্রভাব পুরো সমাজের উপরে পরবে। তাই আসুন আমরা সকলে সচেতন হই শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশ নিয়ে। সুন্দর একটা পরিবেশ তাদের উপহার দিয়ে যাই।

Sort:  
 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন দাদা, খেলার মাঠে আগে অনেক খেলতাম। তবে এখন সেই খেলার মাঠে আগের মতো আমেজ নেই৷ এখন ছেলেরা মাঠে খেলে না খেলে মোবাইলের ভেতর। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

মোবাইল আমাদের পাগল করে দিল ভাই। এর থেকে বড় নেশা এখন পর্যন্ত বের হয় নি পৃথিবীতে, আর হবেও না কখনো। অনেক ভালো থাকবেন

 2 years ago 

ঢাকার ভিতরে যে কয়টা মাঠ আছে সেখানে খেলতে গেলে মাঠ ফি দেয়া লাগে। গতকাল আমার রোম মেট গেছিল জিগাতলার এইদিকে খেলতে। এসে বলল। কি আর করার ভাই। সমাজ যদি এগিয়ে না আসে কিছু করার থাকবে না। ভাল লিখেছেন আপনি। ভাল লাগল। ধন্যবাদ

সমাজে ঘুন ধরে গেছে ভাই। কিছু করার নেই আর। মুখ বুজে দর্শক সারিতে বসে আছি আমরা।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56588.25
ETH 2399.94
USDT 1.00
SBD 2.32