মাসির বাড়িতে ছোটাছুটির একদিন

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

নমস্কার,,

অনেকদিন পর মাসির বাড়ি আসলাম। খুব একটা গোবিন্দগঞ্জে আসা হয় না এমনিতে আমার। এবার তো হুটহাট চলে গিয়েছি। বাড়িতে মা বাবাও জানতো না। পিসির বাড়িতে গিয়েছিলাম বগুড়া শহর থেকে একটু গ্রামের দিকে। ওখান থেকে সন্ধ্যা বেলা ধুম করে রওনা দিয়ে দেই মাসির বাড়ির দিকে। আসল উদ্দেশ্য শুভ ভাইয়ের সাথে দেখা করাও হয়ে যাবে , আর মেসো একটু অসুস্থ তাকেও দেখে আসা যাবে। আমি ভেবছিলাম যেতে যেতে রাত হয়ে যাবে। শুভ ভাইয়ের সাথে হয়তো পরদিন সকালে দেখা করতে হবে। কিন্তু নির্ভেজাল ভাবে পৌঁছে যাই একদম। তাই সন্ধ্যা সাতটার মাঝেই মোটামুটি পৌঁছে গিয়েছিলাম। তারপর তো ভাইয়ের এর সাথে দেখা করলাম। আর রাত নয়টার পর পর মাসির বাড়ি ঢুকলাম। আমাকে দেখে রীতিমত অবাক সবাই। ছোট বোনকে বলেছিলাম আসছি। কিন্তু ওরা কেউ বিশ্বাসই করেনি। আসলে সব সময় ওদের সাথে মজা করি। তাই ভেবেছে এটাও মজা করছি 😀।

IMG20221120132605.jpg
Location

অনেকরাত পর্যন্ত মাসি মেসো আর বোনকে নিয়ে আড্ডা দিলাম। মেসোর শরীরটা ভালোই ছিল তখন। আমি ভাবলাম আর প্রবলেম নেই তাহলে। তারপর তো রাতে ঘুমিয়ে গেলাম। সকাল বেলা উঠতে উঠতে দশ টা বেজেই গেল। মাসি এসে বলছে তোমার মেসোর আবার শরীরটা খারাপ করছে। বুকে ব্যাথা হচ্ছে। দেখো কেমন ভাবে শুয়ে আছে। আমি সাথে সাথে উঠে গেলাম। বললাম আজই ঢাকা চলে যান। আমি কথা বলে ডাক্তারের খোঁজ নিচ্ছি। আসলে মেসোর বুকে মাঝে মাঝেই খুব ব্যাথা হয়। বগুড়ায় অনেক ডাক্তার দেখিয়েছে। টেস্ট করেও কোন কিছুই ধরা পরে নি। ভিসার অপেক্ষায় আছে। বেঙ্গালুরু যাবে চেক আপ করতে। তো এখন যখন প্রবলেম হচ্ছে তাই ভিসা পাওয়ার আগে ঢাকায় ভালো কাউকে দেখাক। এমন টাই আমার কথা।

IMG20221120131747.jpg
Location

IMG20221120131956.jpg
Location

মেসোর কথা আমাকেও ঢাকা যেতে হবে ঐদিন তাদের সাথে। আমি পাশ কাটাতেও পারছি না। পরে শুনি আমার মামাতো ভাই যাচ্ছে ঐদিন রাতেই। তাই অনেক বুঝিয়ে ওর সাথে যাওয়ার জন্য রাজি করিয়ে দিলাম। আর এর মধ্যে ঢাকায় আমার যে মামাতো বোন থাকে তার সাথে কথা বলে সব ঠিক করে নিলাম। মেসো বাইরে যেতে পারছে না। গাড়ির টিকিট থেকে শুরু করে ব্যাংকের কিছু কাজ, আবার একটু বাজারও করতে হবে। আমি বললাম আমি সব ম্যানেজ করে নিচ্ছি। আপনি রেস্ট নিন। তারপর বোনকে নিয়ে বেরিয়ে গেলাম সব কাজ সারতে।

IMG20221120131103.jpg
Location

IMG20221120131636.jpg
Location

IMG20221120132129.jpg
Location

প্রথমে ব্যাংকের কাজ সেরে সোজা বাস কাউন্টারে গিয়ে তিনটে টিকিট কেটে নেই। তারপর চলে গেলাম কাচা বাজারে। যা যা প্রয়োজন বোন সব লিস্ট করে নিয়েছিল। সেই মত জিনিস নিয়ে নিল। মিষ্টির দোকান সামনে পরতেই আমার তো জিভে জল এসে গেল । বোন জানেই আমি মিষ্টি পছন্দ করি। বলে চলো দাদা মিষ্টি নেই। দোকানে দাড়িয়ে মিষ্টি খেয়ে তারপর মিষ্টি নিয়েই নিলাম এক কেজি। বাজার থেকে বেরিয়ে আসার সময় মনে পড়লো আমার মাসির জন্য পান কেনা হয় নি। ওটা ছাড়া বাড়িতেই ঢুকতে দেবে না 😉। আবার দৌড়ে গিয়ে পান নিয়ে নিলাম 😅।

IMG20221120132648.jpg
Location

গোবিন্দগঞ্জ শহর টা ছোট হলেও বেশ ভালোই লাগে আমার। তবে হাই রোড টা এত চাপা যে, মনে হয় বাড়ির ভেতর দিয়ে রাস্তা চলে গেছে। শুনলাম কিছুদিন পর থেকে ভাঙ্গার কাজ শুরু হবে। তখন হয়তো শহরের সৌন্দর্য টা আরেকটু বাড়বে। এভাবেই একদিনের ঝটিকা সফর করে ফেললাম মাসির বাড়ি তে 😊।

Sort:  
 2 years ago 

প্রথমেই আপনার মেসোর জন্য অনেক অনেক প্রার্থনা রইলো। মাঝে মাঝে বুকে ব্যাথা হওয়াটা বেশ খারাপ একটা লক্ষণ তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনারা ভিসা পেলে বেঙ্গালুরু গিয়ে ভালো করে ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে আসেন। আশা করি সমস্যার সমাধান ঘটবে এবং তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন খুব তাড়াতাড়ি।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভিসা টা পাওয়ার সাথে সাথেই চলে যাবে। সব কিছু রেডি আছে। অনেক ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

ঠিক আছে ভাই সবকিছু সুস্থ সুন্দরভাবে হোক এই প্রার্থনা রইলো।

 2 years ago 

মাসি পিসি দুজনের বাড়িতে দেখছি ঘোরাঘুরি করছেন। যাই হোক আপনার মেসোর জন্য দোয়া রইল উনি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়। আপনার মিষ্টি পছন্দ জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই একদিনের মাঝে বেশ ভালোই সফর দিয়েছি 😅। ভালো ছিল সময় গুলো। অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

এইটা কি হলো?🙂দেখা পেলাম না আপনার!অথচ ভাইয়ার সাথেও সময় কাটিয়েছেন☹️।
আমাদের এখানকার বেস্ট মিষ্টি আর দইয়ের দোকান ওটা।
এরপর আসলে সম্ভব হইলে জানাইয়েন।দেখা হবে।

 2 years ago 

হ্যাঁ মিষ্টি গুলো খেতে বেশ ভালই ছিল । আর এবার সময় ছিল না একদম। এরপরের বার গিয়ে সবার সাথে আড্ডা দিয়ে আসবো।

 2 years ago 

আমাদের এখানেও বগুড়া বলে একটা জায়গা আছে। আর আপনাতো দেখছি এই বয়সেই বেশ দায়িত্ববান পুরুষ হয়ে উঠেছেন। মাসির জন্য পান কেনার কথাটাও মনে আছে। প্রিয় মানুষদের হঠাৎ করে সারপ্রাইজ দিলে তাদের মুখগুলো দারুণ দেখার মত থাকে।

 2 years ago 

আচ্ছা জায়গাটার নাম বগুলা নাহ্? কৃষ্ণ নগরের পাশে মনে হয়। আমি ঠিক শিওর না। আর আমার মাসি যে পরিমাণ পান খায়, মাথা নষ্ট হয়ে যাবে দেখলে। দুই দিন ভাত না খেলেও চলে, তবু তার পান চাই 😀

 2 years ago 

ভাইয়া কাউকে না জানিয়ে কোথাও যেতে আমারও অনেক ভালো লাগে। হঠাৎ করে দেখে সবাই অবাক হবে এর মজাই আলাদা। যাই হোক আপনি তো দেখছি মাসির বাড়ি গিয়ে ভালোই ছুটাছুটি করেছেন। তবে আপনার মেসোকে নিয়ে তো আপনিই যেতে পারতেন। কাজে ফাঁকি দিতে মজা লাগে তাইনা। তবে সকাল বেলা ভালো কাজ করেছেন। পরিশ্রম করা শরীরের জন্য ভালো বোঝলেন। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

হাহাহাহা, এটা ঠিক বলেছেন আমি বেশ ফাঁকিবাজ। তবে এই মানুষ গুলো আমাকে খুবই ভরসা করে। অনেক ভালোবাসে। তাদের জন্য কিছু করতে পারলে আমারও অনেক ভালো লাগে।

 2 years ago 

সজিব দাদা মাসির বাড়ি গিয়েছেন তাহলে ৷ আর মামা তো বোন মিলে তো বাজার সদাই বেশ ভালোই করেছেন ৷ তবে আপনার মেসো কে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উন্নত চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়া নিয়ে যান ৷

 2 years ago 

হ্যাঁ সামনের মাসেই নিয়ে যাবে ভাই ইন্ডিয়া। আপাতত ঢাকা চিকিৎসা করছে।

 2 years ago 

ভাই আপনি তো দেখছি এক ঢেলে দুই পাখি মেরেছেন। একদিকে প্রিয় শুভ ভাইয়ের সাথে দেখা করা, অন্যদিকে মাসির বাড়িতে দিন কাটানো। বেশতো জমিয়েছিলেন। ভাই আপনার মেসোর শারীরিক অবস্থার কথা শুনে সত্যিই খুব খারাপ লাগলো। তাই যত দ্রুত সম্ভব ঢাকায় নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বোনকে নিয়ে বেশ ভালোই ঘোরাফেরা করেছেন সেই সাথে টুকিটাকি বাজারও। আর সেসব বিষয় নিয়ে আপনি খুবই চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই মেসোকে নিয়ে অলরেডি ঢাকা চলে গেছে। ডাক্তারও দেখানো হয়েছে। এখন টেষ্ট দিয়েছে। ওগুলো করার পর বাকি অবস্থা বোঝা যাবে। দোয়া করবেন ভাই।

 2 years ago 

একসাথে দুইটা উদ্দেশ্যই পূরণ হলো আপনার শুভ ভাইয়ের সাথেও দেখা করতে পারলেন আবার আপনার অসুস্থ মেসো কেও দেখতে পারলেন।আপনার মেসোর সুস্থতা কামনা করছি। পরে আপনার মেসো আপনার মামাতো ভাইয়ার সাথে ঢাকা গিয়েছিলেন।আপনার বোনের সাথে বাজারে গেলেন মিষ্টি খেলেন কিনলেন ।পান টা ছাড়া ত বাড়িতেই ঢুকতে দিবেন না আপনার মাসি তাই পান কিনে বাড়িতে ফেরত এলেন।সব মিলিয়ে বেশ ভালো সময় পার করেছেন গোবিন্দগঞ্জে।ধন্যবাদ পোস্টটি ভালো লেগেছে।

 2 years ago 

বাহ পুরো লেখাটা এত সুন্দর করে পড়ে নিজের মন্তব্য টা করেছেন আপু। সত্যিই অনেক ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন আপু।

গোবিন্দগঞ্জ এর নামটা এর আগেও একবার শুনেছি মনে হয়। যাইহোক আপনার মেসোর যেহেতু পুরনো বুকের ব্যথা সুতরাং আর দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব ব্যাঙ্গালোরে চলে আসা উচিত। এই সিদ্ধান্ত আপনারা ঠিকই নিয়েছেন। আর মিষ্টিগুলো দেখে তো আমাদের দেশের মতোই মনে হচ্ছে তবে আপনাদের ওখানে কেজি হিসেবে বিক্রি হয় আর আমাদের এখানে তো পিস হিসাবে।

বাজার থেকে বেরিয়ে আসার সময় মনে পড়লো আমার মাসির জন্য পান কেনা হয় নি। ওটা ছাড়া বাড়িতেই ঢুকতে দেবে না 😉। আবার দৌড়ে গিয়ে পান নিয়ে নিলাম 😅।

অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন মনে হয়।😁😁

 2 years ago 

ভিসা টা হাতে পেলে সামনের মাসেই যাবে ইন্ডিয়া। আপাতত ঢাকা তে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর সত্যি বলতে আপনাদের ওখানে গিয়ে মিষ্টির দোকানে গিয়ে আমি তো একবার বিপাকে পরে গিয়েছিলাম পিস ভাও মিষ্টি কিনতে দেখে 😀।

 2 years ago 

ঝটিকা সফরে এদিক-ওদিক বেশ ভালোই ঘুরে বেড়াচ্ছ দেখছি।এবার একবার এদিকেও পদধূলি দিও সম্ভব হলে 😬।তবে নিজের এতো ব্যস্ততার মাঝেও সবদিক সামলে মেসোর সাথেও দেখা করে এসো দেখে ভালো লাগলো।তোমার মেসোর দ্রুত সুস্থতা কামনা করি 🙏🏻।

 2 years ago 

এবার পার্মানেন্ট শশুর বাড়ি বানাবো তোমাদের ঐদিকে বুঝলে 😉। শুধু পদধূলি না গো, পুরো শরীরের ধুলি দিয়ে আসবো। 😅

 2 years ago 

তালে তো কোনো কথাই নেই🌝

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 68156.06
ETH 3517.56
USDT 1.00
SBD 2.81