কালীপুজো পরিক্রমণ পর্ব - ০১ ||১৩ নভেম্বর ২০২২
নমস্কার সবাইকে ,
তোমরা সবাই কেমন আছো ? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও অনেক অনেক ভালো আছি। |
---|
প্রথমেই সবাইকে আমার আজকের ব্লগে স্বাগতম জানাই। গতকালকের ব্লগে আমি কালীপুজোর দুইদিন আগে বেরিয়ে পুজো প্যান্ডেল প্রস্তুতির একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলাম। রাত আটটার দিকে আমি সেই পুজো প্যান্ডেল প্রস্তুতি দেখে বাড়ি চলে আসি। তারপর বাড়ি আসার পর জানতে পারি বাড়ির লোকজন সবাই খুব নামকরা একটি পুজো প্যান্ডেল কমপ্লিট হয়ে গেছে, সেই পুজো প্যান্ডেলটি দেখতে যাবে। তারা জানায় নবপল্লী অ্যাসোসিয়েশন ক্লাব দ্বারা আয়োজিত কেদারনাথ মন্দির থিমে করা পুজো প্যান্ডেলটি দেখতে যাবে এবং আমাকেও তাদের সাথে যাওয়ার কথা বলে। আমি যদিও একটু ঘোরাঘুরি করে এসে ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম তারপরও না বলিনি, আমিও তাদের সাথে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে যাই।
অতঃপর হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির লোকজনের সাথে আমি পৌঁছে গেলাম সেই কাঙ্ক্ষিত কেদারনাথ মন্দির প্যান্ডেলটির সামনে। এই প্যান্ডেলটি আমাদের বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে ১৫ মিনিটের দূরত্বে ছিল । খুব একটা দূরত্ব না হওয়ায় আমরা সবাই পায়ে হেঁটেই সেখানে গেছিলাম। সত্যি কথা বলতে গেলে পুজোর সময় গাড়ি করে ঘুরা অনেকটা সমস্যা কারণ পুজোর সময়টাতে খুব ভিড় হয়ে যায়। এই ভিড়ের মধ্যে গাড়িতে উঠে স্বাচ্ছন্দে কোথাও ঘুরে দেখা যায় না । রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে গাড়ি আটকে দেয় কারণ পুজো প্যান্ডেলে ঢোকার জন্য হাজার হাজার মানুষের লাইন থাকে । এই জন্য এই সময়টাতে গাড়িতে করে না ঘুরাই ভালো। পুজোর সময় হেঁটে পুজো প্যান্ডেল গুলো দেখার একটা আলাদা মজা আছে তাছাড়া এটা একটা বেস্ট উপায়ও বটে।
যাই হোক কেদারনাথ মন্দির প্যান্ডেলটির সামনে গিয়ে আমি অবাক হয়ে গেছিলাম তাদের প্যান্ডেলটি দেখে, সত্যিই অসাধারণ লাগছিল । অরিজিনাল কেদারনাথ মন্দিরটি আসলে খুবই নামকরা একটি মন্দির। হিন্দু ধর্মালম্বী অধিকাংশ মানুষের স্বপ্ন থাকে জীবনে একবার হলেও এই কেদারনাথ মন্দিরটি দর্শন করবে। অরজিনাল কেদারনাথ মন্দিরটি উত্তরাখণ্ড রাজ্যে অবস্থিত যা আমাদের কলকাতা থেকে অনেক অনেক দূরে। অনেক ইচ্ছা থাকো সত্বেও সেখানে যাওয়ার মত কোন সিচুয়েশন লাইফে পাইনি। যাইহোক অরজিনাল না হোক ডুপলিকেট কেদারনাথ মন্দিরটি দেখে অনেক আনন্দ লাগছিল। মনে হচ্ছিল কিছুটা স্বপ্ন পূরণ হল এই প্যান্ডেলটি দেখে। খুবই নিখুঁতভাবে প্যান্ডেলের মন্দিরটি
অরিজিনাল মন্দিরের মত করে তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।
আমার বাড়ির লোকজনও এই মন্দিরটি দেখে অনেক অবাক হয়ে গেছিল তাদের এক্সপ্রেশন দেখে যা বুঝতে পেরেছিলাম। অনেকটা সময় তাকিয়ে খুবই মন দিয়ে তারা সবাই মন্দিরটি দেখছিল। বাড়ির লোকজনও এই অরজিনাল মন্দির সম্পর্কে অনেক শুনেছে কিন্তু কোনদিন যায়নি এইজন্যই হয়তো তারা অতটা মন দিয়ে দেখছিল। প্যান্ডেলটির মধ্যে অনেক মানুষের ভিড় ছিল কিন্তু কি একটা কারণে প্যান্ডেলের মধ্যে সেই সময়টাতে ঢুকতে দিচ্ছিল না। যদিও প্যান্ডেলটি এর আগের দিনই খুলে দিয়েছিল কিন্তু সেই সময়টাতে ভিতরে ঢুকতে দেয়নি কাউকে। যাইহোক সেদিন আমারা প্যান্ডেলের মধ্যে ঢুকতে পারিনি কিন্তু আমরা বাইরে থেকে সমস্ত সৌন্দর্য উপভোগ করেছিলাম। চারপাশে ঘুরে ঘুরে খুব ভালোভাবেই দেখেছিলাম । সেদিন আমি ঘুরে দেখার সময় কিছু ফটোগ্রাফিও করেছিলাম সেগুলো লেখার পাশাপাশি শেয়ারও করলাম। এখানে গিয়ে সেদিন দেখছিলাম কয়েকটি চ্যানেলের সাংবাদিক এসেছিল পুজো প্যান্ডেলটির ভিডিও ধারণ করার জন্য। কলকাতার অনেক চ্যানেলের শিরোনাম হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই কেদারনাথ মন্দির থিমে করা প্যান্ডেলটি।
আপনার পুজো প্যান্ডেল নিয়ে পর্বগুলো আমার কাছে ভীষণ ভালোই লাগে। বিশেষ করে কেদারনাথ মন্দির প্যান্ডেলটি জাস্ট অসাধারণ লেগেছে। কিন্তু আসলে আমি বুঝতে পারিনি এটি ডুবলি তৈরি করা হয়েছে। আসল কেদারনাথ মন্দির আপনারা দেখেননি। বিশেষ করে এই মন্দিরটা ও একদম হুবহু ভাবে তৈরি করা হয়েছে। যদিও আপনার পরিবারের লোকজন ও এটা দেখে ভীষণ আনন্দিত হয়েছে। কারণ সবাই তো আর আসলটা দেখতে পায়নি এই জন্য নকল টা দেখেই খুশি।
হ্যাঁ আপু অরজিনাল যে কেদারনাথ মন্দিরটি রয়েছে সেটি কখনো দেখার সুযোগ হয়নি তাই এই প্যান্ডেলটা দেখেই অনেক আনন্দ পেয়েছিলাম আমি এবং আমার পরিবারের সবাই।