সাঁতরাগাছি স্টেশনে

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বন্ধুরা ,

সবাই তোমরা কেমন আছো ? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমিও অনেক অনেক ভালো আছি।

বিগত কিছুদিন ধরে আমি ঠিকঠাক ঘুমাতে পারছি না নানা ব্যস্ততার কারণে। গতকালকে খুব ভোরেই ঘুম থেকে উঠতে হয়েছিল কারণ রাজস্থান থেকে আমার যে বোন আমাদের এখানে ঘুরতে এসেছিল তাদের সাঁতরাগাছি স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসতে হয়েছিল আমাকে। বোনের সাথে বোনের বর এবং বোনের মেয়েও ছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠার পরপরই সবাই ব্যস্ত হয়ে পরে ব্যাগ প্যাকিং এর জন্য। রাজস্থান অনেকটা দূরের জার্নি, আমাদের বারাসাত থেকে প্রায় ৪০ ঘণ্টার মতো সময় লাগে ট্রেনে। বোনরা গোছানো ব্যাগগুলো বারবার করে দেখে নিচ্ছিল কারণ কোন কিছু যদি আমাদের এখানে রেখে যায় সেটা কোন ভাবে তাদের পর্যন্ত পৌঁছানো যাবে না কারণ তারা অনেকটা দূরেই থাকে সেজন্য সবকিছু ভালোভাবে দেখে শুনে নিচ্ছিল। তারপর কোন রকম করে সবাই একটু খেয়ে নিল। খাওয়া শেষে বোনের বরের ব্যস্ততা একটু বেশি দেখা যাচ্ছিল কারণ বোনের বর সাঁতরাগাছি স্টেশন হয়ে কোনদিন আমাদের এই দিকে আসেনি আর কোনদিন রাজস্থানও যায়নি সেজন্য সব দায়িত্ব আমার উপর দিল কি করে সেখানে যেতে হবে সেই সব বিষয়।

20230106_130010.jpg

20230106_130012.jpg

20230106_130020.jpg

যেহেতু আগে কোনদিন আমিও সাঁতরাগাছি স্টেশনে যায়নি তাই সব কিছু মোটামুটি গুগল সার্চ করে জেনে নিলাম কিভাবে যেতে হবে এবং বাকি ডিটেলস। আমাদের এইখান থেকে ট্রেনে করে গেলে প্রথমে শিয়ালদা স্টেশন যেতে হবে, শেয়ালদা স্টেশন থেকে আমাদের বাসে বা টেক্সি গাড়িতে করে সাঁতরাগাছি স্টেশনে পৌঁছাতে পারি। তাছাড়াও বাসে করেও যাওয়া যায় কিন্তু এত বেশি বেডিং ছিল বাসে করে যাওয়াটাও আমাদের জন্য বেশ মুশকিল কাজ ছিল। এইজন্য আমরা প্রাইভেট গাড়ি ঠিক করে নিলাম একটা অ্যাপ থেকে। সবার এ টু জেড গোছানোর পর এবং খাওয়া-দাওয়ার পর মোটামুটি সকাল ন'টার কিছুটা আগে আমি গাড়ি বুক করে দিলাম । প্রায় ১৫ মিনিটের মধ্যেই গাড়ি চলে আসলো বাড়ির সামনে। বোনদের যাওয়ার ট্রেন ছিল দুপুর এক টাই আর আমাদের বাড়ি থেকে সাঁতরাগাছি স্টেশন অব্দি যেতে সময় লাগবে গাড়িতে করে ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট। আমরা হাতে মোটামুটি তিন ঘণ্টার মতো সময় এক্সট্রা নিয়েই গেলাম। নতুন স্টেশনে যাচ্ছি কোথায় কি করতে হবে না হবে সেজন্য আমরা আগেভাগেই বাড়ি থেকে রওনা করে দিলাম।

20230106_111956.jpg

20230106_112008.jpg

গাড়িওয়ালার সাথে আমাদের যা কথা হয়েছিল তা বাদেও আমাদের কাছ থেকে ১০০ টাকা এক্সট্রা নিয়েছিল পার্কিং চার্জ হিসাবে ।সে ক্ষেত্রে আমাদের কোন কিছু করারও ছিল না। বেডিং সব স্টেশনের কাছে নামানোর পর আমরা কনফিউশনে পড়ে যাই কোন প্লাটফর্ম থেকে ট্রেন যাবে তাই নিয়ে । যেহেতু এটা একটি বড় স্টেশন ছিল তাই পুলিশের অভাব ছিল না সেখানে। আমরা সেখানের এক রেল পুলিশের কাছ থেকে জেনে নিলাম রাজস্থান যাওয়ার গাড়ি কোন প্লাটফর্ম থেকে ছাড়বে এবং সেই অনুযায়ী সব বেডিং নিয়ে আমরা সেই প্ল্যাটফর্মের চলে গেলাম। আমি যেহেতু সকালে সামান্য কিছু খেয়ে গেছিলাম এবং আমার বাড়ি ফিরতে ফিরতে অনেকটা লেট হবে সেই জন্য আমি প্লাটফর্মে বসে আরও কিছু খাবার খেয়ে নিয়েছিলাম।

20230106_112002.jpg

20230106_102831.jpg

20230106_102835.jpg

আমাদেরকে যে প্লাটফর্মে থাকার কথা বলা হয়েছিল প্রায় দু'ঘণ্টা মত অপেক্ষা করার পর আমরা জানতে পারলাম ওই প্লাটফর্ম থেকে রাজস্থান যাওয়ার গাড়ি যাবে না, অন্য প্ল্যাটফর্ম দিয়ে যাবে। সেইজন্যে পুনরায় এত বেডিং নিয়ে আমাদের অন্য প্ল্যাটফর্মে যেতে হল যা আমাদের জন্য অনেকটা মুশকিল কাজ ছিল। ট্রেন ছাড়ার প্রায় ৩০ মিনিট আগে প্লাটফর্মে যখন গাড়ি দিয়ে দেয় তখন সব বেডিং নিয়ে পুনরায় গাড়িতে তুলে দেই। এই কাজগুলো সত্যিই আমার জন্য বেশ মুশকিল ছিল তারপরও বোনদের জন্য এতটুক তো অবশ্যই করতে হয়। এভাবে গতকালকে বোনদের সাঁতরাগাছি স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফিরি । এটাই ছিল গতকালকে সাঁতরাগাছি স্টেশনে যাওয়ার আমার ঘটনা। নতুন একটা স্টেশনে যাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার গতকালকে। বেশ বড়সড় জংশন ছিল এটা। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম এটি খুব একটা বড় জংশন হবে না কিন্তু যাওয়ার পরেই বুঝতে পেরেছিলাম এখান থেকে দূরপাল্লার অনেক ট্রেন যায় তাছাড়া একটি বেশ নামকরণ স্টেশন।

20230106_112314.jpg



ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: সাঁতরাগাছি স্টেশন , ওয়েস্ট বেঙ্গল।

আজকের ব্লগ এখানেই শেষ করলাম। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

🔚🔚 ধন্যবাদ সবাইকে 🔜🔜

Sort:  
 2 years ago 

ভাইয়া বোন বলে কথা ভাইদের তো একটু দায়িত্ব পালন করতেই হবে। আপনি ভাই হিসেবে খুব ভালো দায়িত্ব পালন করেছেন যা দেখে খুব ভালো লাগলো। এছাড়া এভাবে দৌড়াদৌড়ি করাতে আপনার নতুন অভিজ্ঞতাও হলো। পরবর্তীতে গেলে এবারের মতো আর এত ঝামেলায় পড়তে হবে না। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মুহূর্ত ও নতুন অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

যা অভিজ্ঞতা হয়েছে পরেরবার গেলে আর ঝামেলায় পড়তে হবে না এটা ঠিক।

 2 years ago 

বোন-ভাগ্নিদের বিদায় দিতে গিয়েছিলেন,দেখে ভালো লাগলো।
মাঝে প্লাটফর্মের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়াটা প্যারাদায়ক ছিল বটে।
ফটোগ্রাফিগুলো ভালো ছিল,শুভ কামনা রইলো।

 2 years ago 

আমাদের কাছে জায়গাটা নতুন ছিল আর কোন দিন দূরপাল্লার ট্রেন কোন প্লাটফর্মে দেবে সেটা অনেকটা আগে থেকে জানা যায় না, ট্রেন ছাড়ার ৩০ মিনিট আগেই জানা যায় এই জন্য কিছুটা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছিল।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62647.29
ETH 2439.61
USDT 1.00
SBD 2.66