ক্রিয়েটিভ রাইটিং || ভৌতিক গল্প : বৃষ্টির রাতে (পর্ব -০২)

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও ভালো আছি।

আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি ভৌতিক গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "বৃষ্টির রাতে"। গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।

dog-4266512_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

প্রথম পর্বের লিংক

এই ঝড়ের পরিস্থিতিতে দুই বোন পুরনো ওই বাড়ির মধ্যে আশ্রয় পেয়ে মনে মনে একটু খুশি হয়। যদিও পুরনো বাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল, মাথার উপরে ছাদটুকু ছিল বলে এই বৃষ্টির জলটা শুধু গায়ে লাগছিল না তাদের। তবে ঝড়ের যে একটা প্রভাব, সেটা তাদের গায়ে ঠিকই লাগছিল। তারা পুরনো বাড়ির একটা অংশে গিয়ে দাঁড়ানোর পর ঠান্ডায় দু'জনে কাঁপছিল কারণ দু'জনেই বৃষ্টির জলে ভিজে গেছিল। এই সময় তাদের কোন কিছু করারও ছিল না। কারণ বাইরে ঝড়ের পরিমাণ আরও বেড়েই চলেছিল। দুই বোন ওই বাড়ির মধ্যে থাকা অবস্থায় একটা জিনিস দেখে আচমকা ভয় পেয়ে যায়। হঠাৎ করে তারা দেখে চারটি চোখ জ্বলজ্বল করে জ্বলছে!

এই চোখগুলো দেখে তারা চিৎকার করে ওঠে প্রথমে। যেহেতু দুই বোনের কাছে লাইট ছিল তাই তারা সেই লাইট জ্বালিয়ে দেখে ঘরের এক কোণায় একটি কুকুর এবং একটি বিড়াল বসে রয়েছে। তবে তারা বৃষ্টিতে ভিজে যে এখানে আশ্রয় নিয়েছে, সেরকমটা তাদের দেখে মনে হচ্ছিল না। কারণ বিড়াল এবং কুকুরের গায়ে কোন জল লাগানো ছিল না। এই বিড়াল এবং কুকুরটি দেখতে ছিল পুরোপুরি কালো রঙের। এইজন্যই তাদের চোখ গুলো অনেক বেশি জ্বলজ্বল করছিল। দুই বোন অন্ধকারে তাদের চোখগুলো দেখে প্রথমে ভয় পেলেও, পরে যখন দেখতে পায় যে, সেখানে কুকুর ও বিড়াল বসে রয়েছে তখন তাদের ভয় কিছুটা কমে যায়। তবে এই সময়টাতে এরা এখানে কি করছে, এটাও দুই বোনের মনে প্রশ্ন জাগে। কিছু সময় তারা কুকুর এবং বিড়ালটিকে লক্ষ্য করে, তবে তারা কোন নড়াচড়া করছিল না। তারা এক জায়গায়ই বসেছিল চুপচাপ করে।

কুকুর বা বিড়াল মানুষ দেখলে সাধারণত সরে যায়, তবে এদের ক্ষেত্রে এরকম কোন কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এই ব্যাপারটা দুই বোনের মধ্যে একটু ভীতির সঞ্চার ঘটায়। এইসময় দুই বোন একটু নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে, সেখান থেকে নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে চায়। তবে বাইরের পরিস্থিতি যা ছিল তারা চাইলেও বের হতে পারছিল না। দুই দিকেই তাদের বিপদ, এরকম একটা পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়িয়েছিল তখন। তবে কালো কুকুর এবং বিড়ালটি তাদের ভেতরে ভয় ব্যাপারটা এনে দেওয়ার কারণে তারা এই ঝড়ের মধ্যে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ে ভিজতে ভিজতে। যেহেতু ঝড়-বৃষ্টি একসাথেই হচ্ছিলো তাই কিছু দূর হেঁটে আসার পর তাদের লাইটটাও কাজ করা বন্ধ করে দেয় বৃষ্টির জল লাইটের মধ্যে চলে যাওয়ায় কারণে ।

তাদের বাড়ির দূরত্ব বেশি খানিকটাই ছিল। এই সময় তারা কোনো রকমে জোরে জোরে হাঁটতে থাকে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে। অন্ধকারের মধ্যেই তারা রাস্তা অনুমান করে করে বাড়ির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। তবে তারা কোনভাবেই এগোতে পারছিল না সামনের দিকে এই ঝড় বৃষ্টির কারণে। এই ঝড় বৃষ্টিতে চলতে চলতে তারা হঠাৎ করেই খেয়াল করে যে, তাদের সামনে সেই চারটি চোখ জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। এটা দেখে তারা প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়! এই বার আগুনের গোলার মত সেই চোখ গুলো লাগছিল। এই সময় তারা আবার চিৎকারও করে ওঠে। পুনরায় প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায় দুই বোন ।

তারপরে তারা কোনরকম ভাবে অন্যদিকে দৌড় দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে থাকে। সেই মুহূর্তে তারা বুঝতে না পারলেও কিছুদূর যাওয়ার পর বুঝতে পারে যে, তারা ভুল রাস্তায় চলে এসেছে। এটা তাদের চেনা কোন রাস্তা ছিল না, যেহেতু অন্য একটি গ্রামে তারা এসেছিল। ওই অন্ধকারের ভিতর আরও কিছুটা হাঁটতে হাঁটতে একটা নদীর কূলে পৌঁছে যায় তারা। এই নদী তাদের পরিচিত ছিল তবে নদীর যে অংশটাতে তারা পৌঁছেছিল, সেই জায়গাটা তাদের পরিচিত ছিল না। এই সময় তারা খেয়াল করে, নদীর কূলে একটি শ্মশান ঘাট দেখা যাচ্ছে এবং যেখানে অল্প অল্প আলো জ্বলছে।

চলবে..


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীক্রিয়েটিভ রাইটিং (ভৌতিক গল্প)
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আমার আজকে শেয়ার করা "বৃষ্টির রাতে" গল্পের দ্বিতীয় পর্ব টি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  
 2 months ago 

ভৌতিক গল্প গুলো আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। বৃষ্টির রাতের মাঝে দুই বোন হঠাৎ করে দেখতে পায় চারটি চোখ জ্বলজ্বল করে জ্বলছে, কিন্তু আমার কাছে স্বাভাবিক কুকুর ও বিড়াল মনে হয় নি। কুকুর এবং বিড়াল দুই বোনের পিছু ছাড়বেনা। তার জন্য নদীর কূলে একটি শ্মশান ঘাটেও অল্প অল্প ভয়ংকর আলো দেখতে পায়। পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম। সুন্দর ভাবে গুছিয়ে উপস্থাপনা করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া।

 2 months ago 

এই গল্পের পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবো ভাই। যাইহোক, চেষ্টা করেছি ভাই, গল্পটি সুন্দর ভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন করার জন্য।

 2 months ago 

ছোট বেলা থেকেই আমার ভূতের গল্প অনেক ভালো লাগতো। মনে মনে ভাবতাম যদি ভুতের সাথে সরাসরি একটু দেখা করতে পারতাম। কিন্তু বড় হয়ে বুঝলাম ভূত বলে কিছু নাই। বিষয়টা জানার পর মনটা আমার বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। যাকে এত ভালোবাসি সেই জিনিস বলে কিছুই নাই। যাই হোক আপনার গল্প পড়ে বেশ মজা পেলাম। দুই বোকে দেখে কুকুর বিড়াল পলায়ন না করে এক জায়গায় বসে ছিলো যার কারনে তাদের ভেতর ভীতির সৃষ্টি হয়। আবার তারা রাস্তা ভূল করে শশান ঘটে চলে যায় না জানি এবার তাদের সাথে কি ঘটতে চলেছে .......
পরবর্তী পোস্ট পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ধন্যবাদ ভাই।

 2 months ago 

মনে মনে ভাবতাম যদি ভুতের সাথে সরাসরি একটু দেখা করতে পারতাম।

ছোটবেলায় এরকমটা আমরাও ভাবতাম ভাই। হেহেহে.. 🤭🤭 তবে বড় হয়ে এই ভূতের সত্যতা জানতে পেরেছি।

 2 months ago 

জেনেই বড় ভুল করেছি ভাই আগের মতো আর মজা পাইনা ভূরের গল্প শুনে।

 2 months ago 

ভূতের সাথে একদিন দেখা হয়ে গেলে, ভূতের গল্পগুলো আবার মজা লাগবে ভাই। হেহেহে...

 2 months ago 

মজা মনে সেই মজা লাগবে এত যে চেষ্টা করি কিন্তু দেখতে পারি না।

 2 months ago 

খুব সুন্দর একটি ভৌতিক গল্প লিখেছেন। আসলে এ ধরনের গল্পগুলো পড়তে আমার ভীষণ ভালো লাগে। ছোটবেলায় থেকেই আমি ভূতের ভয় পাই এবং এখন পর্যন্ত। সত্যি কথা বলতে আমি টিভি চ্যানেলে কখনো এই ভৌতিক গল্প দেখিনি কেমন ভয় লাগে রাতে একা বাইরে বের হতে পারি না। তবে আপনার এই ভৌতিক গল্পটি পড়ে আমার ভীষণ ভালো লাগলো এবং পুরো গল্পটি পড়ার ইচ্ছে জাগে পরবর্তী গল্পটি পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 months ago 

ছোটবেলায় থেকেই আমি ভূতের ভয় পাই এবং এখন পর্যন্ত।

ছোটবেলায় ভূতের ভয় পেতেন সেটা তো ঠিক আছে আপু, তবে এখনো কেন ভূতের ভয় পান?

যাইহোক, আমার এই ভৌতিক গল্পটি পড়ে যে আপনার ভীষণ ভালো লেগেছে, তা জেনে অনেক খুশি হলাম আপু।

 2 months ago 

ভৌতিক গল্প প্রথম পর্ব পড়েছিলাম ভালো লেগেছিল বেশ। দ্বিতীয় ভয়ংকর পর্বটি পড়েও বেশ ভালো লাগলো। দুই বোন চারটি জ্বলজ্বলে চোখ দেখে দৌড়ে পালিয়ে শ্মশানের কাছে যায়।পরবর্তী পড়বে কি হবে জানার অধিকার আগ্রহী রইলাম। আপনাকে পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

 2 months ago 

খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব শেয়ার করার চেষ্টা করবো দিদি। যাইহোক, আমার শেয়ার করা এই গল্পটি পড়ে যে আপনার বেশ ভালো লেগেছে, তা জেনে আমারও অনেক ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74