বাঁওড় ভ্রমন || পর্ব- ১

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার সবাইকে,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও খুব ভালো আছি।

গত দুইদিন আগের একটি ব্লগে আমি তোমাদেরকে জানিয়েছিলাম ঠাকুরনগরে একটি ইম্পরট্যান্ট কাজে গেছিলাম। মূলত সেই ইম্পরট্যান্ট কাজটি ছিল খাওয়া দাওয়া। যাইহোক ঠাকুরনগর থেকে কাজটি কমপ্লিট করে আমরা পাঁচজন বন্ধু মিলে টোটো করে চলে গেছিলাম পাঁচপোতা বেড়ির বাঁওড় ভ্রমন করতে। আমরা আগে কোনদিনও ঠাকুরনগর হয়ে এই বাঁওড়ে যায়নি। এর আগেও একবার আমি এই বাঁওড় ভ্রমণ করেছিলাম কিন্তু সেইবার গেছিলাম গোবরডাঙ্গা হয়ে। এই বাঁওড়ে যাওয়ার অনেকগুলো পথই রয়েছে। বনগাঁ দিয়েও খুব সহজে যাওয়া যায় এই বাঁওড়ে ।

20221215_144451.jpg

20221215_144512.jpg

যাই হোক আমাদের কাছে যেহেতু ঠাকুরনগর হয়ে যাওয়াটা নতুন ছিল তাই লোকের কাছে শুনতে শুনতে আমাদের টোটো স্ট্যান্ডে পৌঁছাতে হয়েছিল। সেখানে গিয়ে টোটোতে উঠে আমাদের কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়। কিছু সময় পর টোটো টি ছেড়ে দেয় তারপর টোটোওয়ালার কাছে আমি জিজ্ঞেস করি, এখান থেকে পাঁচপোতা বাজার পর্যন্ত ভাড়া কত? টোটোওয়ালা জানায় ২৫ টাকা। তখন আমরা বুঝতে পারলাম মোটামুটি ভালই দূরত্ব আছে যেহেতু এত টাকা করে নেবে। টোটোতে উঠে রীতিমত চারপাশের গ্রামীণ প্রকৃতি দেখতে দেখতে চলে গেলাম পাঁচপোতা বাজারের কাছে। বাজারে নামার পর আমরা সবাই মিলে একটু আলোচনা শুরু করলাম কেমন করে আমরা বাঁওড় ভ্রমন করব তাই নিয়ে।

20221215_144458.jpg

20221215_144859.jpg

আমরা যেহেতু বাঁওড়ে গিয়ে নৌকায় উঠে বাঁওড়ের চারপাশে ঘুরে ঘুরে দেখব তাই সিদ্ধান্ত নিলাম নৌকায় ওঠার আগে আমরা বিভিন্ন খাবার দাবার কিনে তারপর উঠবো। তারপর রীতিমতো সবাই কিছু কিছু টাকা দিয়ে চিপস, চানাচুর, কেক, জুস , বাদাম ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের খাবার কিনে নিলাম এবং বাঁওড়ের ঘাটের দিকে রওনা করলাম। এই ঘাটে পৌঁছানোর আগে বেশ একটু জঙ্গলের মতো পড়ে সেখানে বিভিন্ন ধরনের গাছপালা রয়েছে । এখানে লোকজন খুব একটা আসা যাওয়া করে না। স্থানীয় কিছু লোকজনকেই সেই সময়টাতে সেখানে দেখতে পেয়েছিলাম। আমরা বাদে বাইরের কোন লোকজন সেই দিন সেখানে দেখতে পাইনি। বছরের অন্যান্য সময় বাইরের কিছু কিছু লোক এখানে ভ্রমণ করতে আসে কিন্তু আমরা যে সময়টাতে গেছিলাম এই সময়টাতে তেমন একটা লোকজনের কোনো চাপ থাকে না যা আমরা সেইখানের স্থানীয় কিছু লোকজনের কাছে শুনতে পেয়েছিলাম। লোকজনের কোন চাপ না থাকায় নৌকার মাঝিও ছিল না নৌকার ঘাটে। সেইখানের একটি স্থানীয় লোক নৌকার মাঝিকে ফোন করে এবং নৌকার ঘাটে আসার জন্য বলে কারণ আমরা সেই লোকটিকে বলেছিলাম আমরা নৌকায় ভ্রমণ করব।

20221215_144419.jpg

20221215_144416.jpg

নৌকার মাঝি ঘাটে আসার আগের সময়টুকু আমরা ওই ঘাটে অপেক্ষা করতে থাকি এবং ঘাটের চারপাশে প্রকৃতি উপভোগ করতে থাকি। নতুন একটি পরিবেশে গিয়ে সেই জায়গার পরিবেশটাকে উপভোগ করা একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিছু সময় পর নৌকার মাঝি চলে আসে এবং আমাদের সাথে ভ্রমণের ব্যাপারে কথাবার্তা শুরু হয়। দু'ঘন্টা ভ্রমণ করতে আমাদের কত টাকা দিতে হবে আমরা সেই মাঝিকে জিজ্ঞেস করি। আমাদের বাজেট ছিল ২৫০ টাকার মধ্যে আমরা নৌকায় ঘুরবো। যাই হোক সেই মাঝি প্রথমে ৪০০ টাকা চায় আমাদের দুই ঘন্টা ঘোরানোর জন্য। পরে ৩০০ টাকায় রাজি হয় পুরো জায়গাটা ভালো করে ঘুরে দেখানোর ব্যাপারে। তারপরই আমাদের মুল ভ্রমণ শুরু হয়। বাঁওড় ভ্রমণ করতে গিয়ে আমরা অনেক আনন্দ করেছিলাম। বাঁওড় ঘাট থেকে বিভিন্ন ধরনের যে ফটোগ্রাফি গুলো করেছিলাম আজকের পর্বে সেগুলো শেয়ার করলাম।

20221215_144414.jpg

ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin
স্থান : পাঁচপোতা, নর্থ চব্বিশ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ।

বাঁওড় ভ্রমন নিয়ে শেয়ার করা প্রথম পর্ব তোমাদের কেমন লাগলো জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 2 years ago 

বাওড়টার আশেপাশে পাশের পরিবেশ কিন্তু খুব সুন্দর। বেশ খানিকটা পথ পেরিয়ে আমাদের জন্য সুন্দর সব প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ জানাই দাদা।
বেশ কিছু খাবার দাবার নিয়ে নৌকায় ওঠার প্রস্তুতি নিয়েছেন দেখলাম। মাঝি দু ঘন্টার জন্য অবশেষে ৩০০টাকায় রাজি হলো। পর্বে আরো চমৎকার সব ছবি পাবো আশাকরি।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই পরের পর্বে আরো অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি দেখতে পারবেন প্রকৃতি এবং বাঁওড়ের।

 2 years ago 

নদী এবং নদী কেন্দ্রিক জায়গায় ভ্রমণ করতে বরাবরই আমার অনেক ভালো লাগে আপনি খুব সুন্দর মুহূর্ত পার করেছেন সেই সাথে সুন্দর ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আমাদের মধ্যে তুলে ধরেছেন খুবই ভালো লাগলো।। তবে আশপাশের পরিবেশটা মনে হচ্ছে অনেক সুন্দর।।

 2 years ago 

বাঁওড়ের আশেপাশের পরিবেশটা বেশ সুন্দর ও শান্ত ছিল। শান্ত পরিবেশে সময় কাটিয়ে বেশ ভালো লেগেছিল আমার।

 2 years ago 

দাদা বগুড়া ভ্রমনের বিস্তারিত গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার পোস্টের মাধম্যে বাংলার কিছু অপরূপ রূপ বৈচিত্র দেখতে পেলাম। তবে আপনারা কিন্তু অনেক কম টাকায় নৌকা ভ্রমন করলেন। ঢাকার পূর্বাঞ্চলে তো ১ ঘন্টা ঘুরতে ৬০০ টাকা নেয়।

 2 years ago 

ঢাকার পূর্বাঞ্চলে তো ১ ঘন্টা ঘুরতে ৬০০ টাকা নেয়।

আমাদের এইখানে নৌকা ভ্রমণ করতে একটু কম খরচ পড়ে আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 59888.38
ETH 2373.74
USDT 1.00
SBD 2.48