গল্পঃ " মা " (দ্বিতীয় পর্ব)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো । সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমিও অনেক ভাল আছি। আজ তোমাদের সাথে একটি গল্পের দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করব। গল্পটির নাম হল "মা" |
---|
সে কথা বলে কম, কথার আগে হাত চলে। স্বভাব তার খুব বদমেজাজী। শ্রেণীতে প্রথম সারির বেঞ্চ তার জন্য বরাদ্দ থাকা চাই। প্রতিদিন বেঞ্চে বসা নিয়ে তার প্রত্যেকের সাথে ঝামেলা হত। একজন শিশুর স্বাভাবিক প্রবৃত্তি এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত প্রত্যেক শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটে। আবার তিন থেকে আট বছর মেধা বিকাশের আরেকটি ধাপ। তপু এ দু'টি ধাপ পেরিয়ে এসেছে। তার মেধা সমবয়সীদের চেয়ে অনেক ভাল। শুধু লেখাপড়ার দিক দিয়ে নয়, অন্য সকল দিক থেকেও তপু পারদর্শী। লেখাপড়ায় ভাল বিধায় শিক্ষকরা তাকে তেমন কিছু বলতেন না।
শ্রমিক আন্দোলনের ফলে শ্রমিকদের বেতন হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেছে। দীপঙ্করের আগের মত আয় নেই। এখন শুধু রিক্সা চালিয়েই সংসার চালাতে হয়। এদিকে তপুর লেখাপড়ার খরচ যোগানও সম্ভব হয়ে ওঠে না। বর্তমানে তপু অষ্টম শ্রেণী পাশ করে নবম শ্রেণীতে। যদিও এখনো রেজাল্ট বের হয়নি।
তপুর মা এখন অসুস্থ আর তপুদের বর্তমান অবস্থা খুবই নাজুক। তার বাবা রিক্সা চালিয়েই সংসার চালায়। এদিকে তপুর লেখাপড়ার খরচও বেড়ে গেছে। তার মনে হয় আর লেখাপড়া হবে না। পরীক্ষার ফি ধার করে দিয়েছিল কিন্তু এখনো শোধ দিতে পারেনি। এক মাস হলো তপুর মার প্রতি রাতে জ্বর আসে। খেতে পারে না কিছুই। তপুর বাবার এ পর্যন্ত যা কিছু সঞ্চিত অর্থ ছিল তা শেষ দেখে কিছুই বলে না তপুর মা। শুধু দুচোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। মাঝে মাঝে তপুর মা বলে-“তপু, আমার কাছে একটু বস বাবা।” তপু বসতে চায়না। শুধু বাইরে থাকে। আগের মত স্কুল ছুটি হলে তপু বাড়ি আসতে না আসতেই তার খাবার, বিশ্রাম সব কিছু এখন আর তৈরি থাকে না।
চলবে...