ট্রাভেল || এলিয়ট পার্ক ঘুরতে যাওয়া

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

কিছু দিন আগে আমি কলকাতার এলিয়ট পার্ক ঘুরতে গেছিলাম তাই নিয়ে আজকের ব্লগে কিছু কথা শেয়ার করবো। ঘোরাঘুরি করতে আমরা সবাই অনেক ভালোবাসি। তবে কাজের ব্যস্ততায় সবসময় ঘোরাঘুরি করা সম্ভব হয় না। এই কাজের ব্যস্ততার মধ্যে যখনই একটু অবসর সময় পাওয়া যায় মনের ভেতর একটা আনন্দ লাগে, এই ভেবে কোথাও হয়তো ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হবে। সবার মত আমিও অবসর সময় পেলে কোথাও না কোথাও ঘুরতে চলে যাই। ঘোরাঘুরি করলে মনের ভেতর একটা আলাদা ভালো লাগা কাজ করে। হঠাৎ করেই মনটা আনন্দ ভরে ওঠে। জীবনের সব ক্লান্তি কেমন জানি ঘুরতে গিয়ে নিমিশেই শেষ হয়ে যায় ‌।

20240101_150717.jpg

20240101_134630.jpg

20240101_134628.jpg

এবার আসল কথা শেয়ার করি, বেশ কিছুদিন আগে আমি আমার এক বান্ধবীর সাথে কলকাতার এলিয়েট পার্কে ঘুরতে গেছিলাম। যেহেতু এটি আমাদের বাড়ির কাছাকাছি কোন পার্ক ছিল না তাই আগে কোনদিন আমার এখানে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। প্রথমবারই সেদিন সেখানে গিয়েছিলাম। এই পার্কের ভেতরে ঢুকতে কোন টাকার প্রয়োজন ছিল না। সবার জন্যই ফ্রি ছিল। এরকম পার্ক গুলোতে সবাই আসার সুযোগ পায় এবং সবাই একটা ভালো সময় কাটাতে পারে। এই পার্কটির সন্ধান আমি আগে জানতাম না। আমার সেই বান্ধবী আমাকে এই পার্কের সন্ধান দিয়েছিল। যাইহোক, পার্কের মধ্যে সেদিন যখন গেছিলাম, মনে হচ্ছিল অন্য এক জগতে চলে এসেছি। চারিদিকে সবুজের সমারোহ। কোথাও মাটি দেখা যাচ্ছিলো না। সব জায়গাগুলো সবুজ ঘাসের চাদরে আবৃত ছিল এমনটা দেখাচ্ছিল

20240101_134638.jpg

20240101_134644.jpg

20240101_140209.jpg

পার্কে ঢোকার সাথে সাথেই আমার মনটা ভালো হয়ে যায় এই সবুজের সমারোহ দেখে। এই পার্কে ছোট বড় সব বয়সের মানুষই ঘুরতে এসেছিল একটা ভালো সময় কাটানোর জন্য । এই পার্কের বিভিন্ন জায়গায় বসার জায়গা করা ছিল। পার্কে এসে সবাই যে যার মতো করে বসে আড্ডা গল্পে মেতে উঠেছিল। এই ধরনের পার্কে সাধারণত যারা যায় তাদের অনেকে বাড়ি থেকে অথবা কিনে খাবার নিয়ে যায়। পার্কে বসে আড্ডা দিতে দিতে খাওয়ার মধ্যে আলাদাই মজা থাকে। আমিও সেইদিন এই কাজটাই করেছিলাম। আমি বাড়ি থেকে শুকনো কিছু খাবার নিয়ে গেছিলাম তাছাড়া কিছু খাবার কিনেও নিয়ে গেছিলাম এই পার্কে বসে খাওয়ার জন্য। পার্কের ভেতরে একটু ঘোরাঘুরি করার পর সুন্দর একটি জায়গা গিয়ে বসে আমি এবং আমার বান্ধবী গল্প করতে আমাদের সাথে নিয়ে যাওয়া খাবারগুলো ইনজয় করি

20240101_140205.jpg

20240101_140159.jpg

20240101_140202.jpg

আমরা গেছিলাম বিকেলের সময়টাতে । এই সময় পার্কের পরিবেশটা সুন্দর থাকে। যেহেতু এখন শীতের সময় চলছে তাই পরিবেশটা আরো বেশি সুন্দর ছিল। আমরা বলতে গেলে মাঠের একদম মাঝেই বসে ছিলাম। সেখান থেকে চারপাশের সব কিছুই দেখা যাচ্ছিলো। মাঝে বসে পার্কটাকে দেখতে আরো বেশি ভালো লাগছিল। পার্কে কিছু সময় বসে গল্প করার পর পুনরায় আমরা পার্কটাকে ভালো করে ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নেই। তারপর আমরা চারপাশে অনেক ভালো করে ঘুরে ঘুরে দেখি। এই পার্কটি অনেকটাই ভালো লেগেছিল আমার । এতদিনে আমি কেন যে এই পার্কে আসিনি তাই ভাবছিলাম তখন!

20240101_140214.jpg

20240101_140559.jpg

20240101_140944.jpg

এখন যেহেতু শীতের সময় চলছে আর এই শীতের সময় পার্কে লাগানো ফুল গাছ গুলোতে বেশ সুন্দর ফুল ফুটে থাকতে দেখা যায় । ফুলের সমারহে পার্ক গুলো আরো সুন্দর করে সেজে ওঠে। এই পার্কেরও বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের ফুল গাছ লাগানো ছিল। সেই গাছগুলোতে ফুলও ফুটেছিল যেগুলো দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছিলো। বিভিন্ন জাতের ফুল এখানে গিয়ে দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার।এখানে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের বড় বড় গাছও দেখতে পেয়েছিলাম। তার মধ্যে বট গাছও ছিলো। তাছাড়া নাম না জানা আরও শত প্রকারের গাছ এখানে গিয়ে দেখতে পেয়েছিলাম। এসব গাছগুলোর জন্যই এই জায়গাটা আরো বেশি সুন্দর হয়ে উঠেছিলো।

20240101_135208.jpg

20240101_150323.jpg

এরকম সুন্দর পার্কে গেলে কিছু সময়ের জন্য সব কিছু ভুলে থাকা যায়। প্রকৃতির সংস্পর্শে গিয়ে একসাথে আড্ডা গল্পে মেতে ওঠা যায়। আমরা সেদিন এই পার্কটাতে গিয়ে অনেকটা ভালো সময় কাটিয়েছিলাম। আমরা প্রায় দু'ঘণ্টার মতো এই পার্কে গিয়ে বসেছিলাম। পার্কে ঘুরতে গিয়ে সময় কখন চলে গেছিল তা বুঝে উঠতে পারি নি সেদিন। ভালো সময় যে খুব তাড়াতাড়ি চলে যায় এখানে গিয়ে তা আরো একবার বুঝতে পেরেছিলাম। এখানে গিয়ে সময় কাটানোর পর আমার তো বাইরে বের হতে ইচ্ছেই করছিল না, এতটাই ভালো লাগছিল এই পার্কটা। তবে আমাদের যেহেতু অন্য প্ল্যান ছিল তাই আমাদেরকে এখান থেকে বের হতেই হয়েছিল। এইখানে ঘোরাঘুরির অভিজ্ঞতা টা অনেক ভালো ছিল আমার সেদিন।


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীট্রাভেল
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@ronggin
লোকেশনএলিয়ট পার্ক, কলকাতা ,ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, এলিয়ট পার্ক ঘুরতে যাওয়া নিয়ে শেয়ার করা এই ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  
 6 months ago 

প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে কার না ভালো লাগে দাদা। এলিয়ট পার্ক ঘুরতে গিয়েছিলেন জেনে খুশি হলাম। সেখানের পরিবেশ দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো। যেনো চতুর্দিকে সবুজের সমারোহ। সব গুলো ফটোগ্রাফি অনেক সুন্দর লাগতেছে ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

হ্যাঁ ভাই, চতুর্দিকে সবুজের সমারোহ ছিল এই এলিয়ট পার্কে। আমার শেয়ার করা ফটোগ্রাফিগুলো আপনার কাছে অনেক সুন্দর লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

 6 months ago 

এলিয়ট পার্ক এ খুব সুন্দর একটি এই মুহূর্ত উপভোগ করেছেন আপনি৷ আমাদের মাঝেও খুব সুন্দরভাবে সবগুলো বিষয় ফুটিয়ে তুলেছেন৷ আসলে আমাদের সকলেরই ঘুরতে অনেক ভালো লাগে। আপনি এই পার্কে ঘুরে খুব সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছেন৷ অনেক ভালো লাগলো আপনার এই পোস্টটি দেখে৷

 6 months ago 

ঘুরতে আমাদের সবারই অনেক ভালো লাগে, এটা ঠিক কথা। যাইহোক, আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 6 months ago 

শীতকালে প্রকৃতি যেন নতুন রূপে রুপ পাই। এ সময় প্রকৃতি অনেক সুন্দর দেখায়। যার কারণে মানুষের সময় বেশিভাগ ভ্রমণে বের হয়। আপনি ঠিক বলেছেন ঘোরাঘুরি করলে মন অনেক হালকা হয়। শারিরিক ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

শীতকালে প্রকৃতির এক অন্যরূপ দেখা যায়। ভ্রমন প্রিয় মানুষেরা, এই জন্যই এই সময়টাতে ঘোরাঘুরি করা বেশি পছন্দ করে। যাইহোক, ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 6 months ago 

শীতকালে প্রকৃতি নানান সাজে সেজে উঠে। আপনি এলিয়ট পার্কে এই প্রথম গেলেন।সবুজের হাতছানিতে সত্যি ই মুগ্ধতা খুঁজে পাওয়া যায়। আপনি আর আপনার বান্ধবী ২ ঘন্টার মতো বসে ছিলেন।কিছু খাবার ও নিয়ে গিয়েছিলেন।আবার কিছু কিনলেনও।চমৎকার অনুভূতি গুলো শেয়ার করেছেন। আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো দারুন লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

হ্যাঁ আপু, এলিয়ট পার্কে আমি প্রথমবার গেছিলাম সেদিন। আমার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো আপনার কাছে দারুণ লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 6 months ago 

এলিয়ট পার্কে বেশ ভালই ঘুরাঘুরি করলেন আপনারা। তাছাড়া এরকম কোন পার্কে মধ্যে ঘুরতেও বেশ ভালো লাগে। আপনি আর আপনার বান্ধবী পার্কের মধ্যে অনেকক্ষণ পর্যন্ত বসেও ছিলেন। বসে বেশ ভালই সময় কাটালেন দুজনে। তাতে তো আমার কাছে আরো অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি দেখে। ঘুরাঘুরির মাঝে এরকম সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন সেটা দেখে আরো ভালো লাগলো। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে। পার্কের মধ্যে ঘুরাঘুরি করার পোস্টটি সুন্দরভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 6 months ago 

হ্যাঁ আপু, পার্কে গিয়ে বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছিলাম দু'জনে। পার্কে ঘোরাঘুরির সময় তোলা ফটোগ্রাফি গুলো আপনার ভালো লেগেছে, জেনে আমারও ভালো লাগলো আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60589.35
ETH 2628.62
USDT 1.00
SBD 2.53