বাংলাদেশ ভ্রমণে এসে একটি গ্রামের পুজো দেখা

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

নমস্কার সবাইকে,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও বেশ ভালো আছি । আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম।

20231206_005702.jpg

20231206_005658.jpg

বেশ কিছুদিন হলো বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছি আমি। প্রথমে ঘোরাঘুরির জন্য শহরে গেছিলাম আমার এক আত্মীয়র বাড়ি। তারপর তাদের সাথে চলে আসি তাদের গ্রামে । এই গ্রামে প্রতিবছর কালীপুজোর বেশ কিছুদিন পরে নতুন করে একটি কালীপুজো অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এটি এই গ্রামের স্পেশাল পুজো। এই পুজোকে ফুল পড়া পুজোও বলা হয়। এই পুজো দেখার জন্যই মূলত তাদের সাথে তাদের গ্রামের বাড়িতে চলে আসা। গত ৬ তারিখ ভোরে ছিল তাদের গ্রামের এই পুজো। এই পুজোর একদিন আগে থেকেই সবাইকে উপোস রাখতে হয়। যেহেতু আমি যাদের বাড়ি ঘুরতে এসেছিলাম তারা সবাই উপোস ছিল, সেজন্য তাদের সাথে আমিও উপোস ছিলাম এই পুজোটাকে ভালো করে দেখার জন্য। এই পুজো অনুষ্ঠানে শত শত লোক অংশগ্রহণ করে এবং সারারাত ধরে পুজো হয়ে থাকে।

20231205_173526.jpg

20231206_061421.jpg

সারারাত ধরে জেগে থেকে এই পুজো করার পরে ভোররাত্রের দিকে ফুল পড়ে । ফুল পড়ার ব্যাপারটা এই গ্রামের সব লোকের বিশ্বাস। আমি যেহেতু প্রথমবার এই গ্রামের পুজো দেখছিলাম তাই সবকিছুই আমার জন্য নতুন ছিল । আমি রাতের দিকে এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য যাই। বেশ ঠান্ডা লাগছিল তখন। যাই হোক আমি সেখানে গিয়ে একটি চেয়ারে বসে এই পুজো অনুষ্ঠান দেখি। এই পুজো অনুষ্ঠানের জন্য শত শত কালী প্রতিমা আনা হয়েছিল। পুজো মন্ডপের সামনে একটি বড় বটগাছ ছিল। এই বটগাছের নিচেই এই পুজো সম্পন্ন হয়। এই পুজোতে সব থেকে বেশি মহিলারা উপোস থাকে এবং পুজো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। তবে কিছু কিছু পুরুষ এবং ছেলেপেলেরাও ছিল যারা এই উপোস রেখেছিল।

20231206_061432.jpg

20231206_062407.jpg

আমি সারারাত এই পুজো অনুষ্ঠান দেখি এই ফুল পড়া দেখার জন্য। ভোররাত্রে ফুল পড়া দেখার সুযোগ হয় এই পুজোতে তবে ফুল পড়া সবাই দেখতে পারে না কারণ এক সেকেন্ডের মধ্যেই ফুল পড়া সম্ভব হয়ে যায় । তাছাড়া উপোস না থাকলে এখানের পুজোর মঞ্চে বসার সুযোগ সাধারণত হয় না। তবে পুজোর স্থানের বাইরে অংশে উপোস না থেকেও পুজো অনুষ্ঠান দেখা যায়।

20231205_173520.jpg

20231206_061437.jpg

ভোর রাত্রে পুজো সম্পন্ন হওয়ার পর এইখানে বাতাসা ছাড়ানো অনুষ্ঠান হয়ে থাকে । মিষ্টি, ফল, সন্দেশ ইত্যাদিও রাখা হয় সেগুলো পুজোর শেষে সবার হাতে হাতে দেওয়া হয়। এই গ্রামে এসে এই নতুন কিছু দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। উপোস থেকে পুজো দেখতে যদিও আমার অনেকটা কষ্ট হয়ে গেছিল । পুজো শেষ হওয়ার দিন রাতে এখানে কবি গানের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এই বছর দুইদিন কবিগানের অনুষ্ঠান ছিল, ৬ এবং ৭ তারিখ । তবে ৭ তারিখের কবি গানের অনুষ্ঠান প্রচন্ড বৃষ্টির কারণে বাতিল করা হয়। ৬ তারিখ রাতে যে কবিগান হয়েছিল সেখানে আমরা সবাই গেছিলাম এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য।



ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: নড়াইল , বাংলাদেশ ।




বন্ধুরা, গ্রামের পুজো নিয়ে শেয়ার করা আজকের এই ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 7 months ago 

বাংলাদেশে এসে আপনার চমৎকার কিছু অনুভূতি হয়েছিল বোঝাই যাচ্ছে। বিশেষ করে এই যে এই গ্রামটিতে আপনি সারা রাত জেগে এবং উপোস করে পুজো দেখেছেন। সত্যিই এটা আপনার স্মৃতির পাতায় অনেকদিন যাবত থেকে যাবে এবং ফুল পড়ার যে বিষয়টি আলোচনা করলেন। এটাও আমার কাছে একদমই নতুন মনে হয়েছে যাই হোক সবমিলিয়ে আপনার কাছে পুজো দেখা এবং অনুষ্ঠানটি ভালো লেগেছে জেনে আমার কাছেও ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই বাংলাদেশ ভ্রমণ করে আপনার অনুভূতিটি চমৎকার এই পোস্টের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

এরকম স্মৃতি মনে থেকে যাবে এটাই স্বাভাবিক ভাই । আমার কাছেও এখানের পুজো অনুষ্ঠানটি বেশ নতুন লেগেছিল। তারপরও বেশ ভালই আনন্দ করেছিলাম।

 7 months ago 

বাংলাদেশে আপনার সময় বেশ ভালই কাটছে,আপনার পোস্ট পড়ে তাই মনে হচ্ছে। নতুন কিছু জানলাম আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে। ফুল পরার বিষয়টি আমি প্রথম শুনলাম। তবে আপনি বেশ ভালই কালীপুজা উপভোগ করেছেন। যদিও উপোস করে বেশ কস্ট হয়েছে। বেশ ভালো লাগলো বাংলাদেশে আপনার অনুভূতি পড়ে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 7 months ago 

হ্যাঁ আপু , বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছি বাংলাদেশ ভ্রমণে এসে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58478.70
ETH 3158.37
USDT 1.00
SBD 2.43