গল্পঃ "মা" (চতুর্থ পর্ব)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো । সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমিও অনেক ভাল আছি। আজ তোমাদের সাথে পূর্বের শেয়ার করা একটি গল্পের চতুর্থতম পর্ব শেয়ার করব । গল্পটির নাম হল "মা"। |
---|
হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলে কিছুই বোঝা যায় না। প্রায় মিনিট ৪/৫ পরে তপুর মা বুঝতে পারল বাইরে যেন কারা কথা বলছে। এদিকে ঝি ঝি পোকার ডাক। অন্যদিকে দূরের গানের সুরে তার কান যেন ভারী হয়ে উঠছে । তপুর মা কিছুই আন্দাজ করতে পারল না। সারাদিন কঠিন পরিশ্রম করে তপুর বাবা গভীর ঘুমে মগ্ন। তাকে ডাকতে ইচ্ছা হলো না। তপুর মা উঠতে চেষ্টা করল কিন্তু পারল না। মনে মনে ভাবল তপু বাইরে গেছে কিন্তু ওখানে কারা কথা বলছে? মনে হচ্ছে কারা যেন ষড়যন্ত্র করছে। হঠাৎ পায়ের শব্দ শুনতে পেল। মনে হলো কারা যেন হেঁটে যাচ্ছে। তপুর মা আর স্থির থাকতে পারল না। তপু-তপু বলে ডাকতে লাগল। কোন সাড়া নেই। ডাকের শব্দে তপুর বাবা তাড়াতাড়ি উঠল।
সে কিছু বুঝতে পারল না। তপুর মা বলল, “দেখত আলোটা জ্বালিয়ে তপু ঘরে আছে কিনা?”। দীপঙ্কর বলল, না সে ঘরে নেই। সে গেল কোথায়? তুমি জান? অনিতা জানালো সে জানেনা । তবে কিছুক্ষণ আগে আমি যা শুনেছি তাতে মনে হলো আমার তপু যেন কোথায় গেল? দীপঙ্করের কাছে তখন পূর্বেকার সকল ঘটনা বর্ণনা দিল। তপুর বাবা বলল, আমাকে কেন ডাকলে না? হঠাৎ তপুর বাবা বিছানায় পড়ে গেল। কোন সাড়া না পেয়ে তপুর মা ফুফিয়ে কেঁদে উঠল। তপুর বাবা বিছানায় বসে বলল, “তুমি কেঁদনা আমি ভাল আছি”।
আমি কাল ঘুমে মগ্ন ছিলাম। কঠোর পরিশ্রম করি বলে তুমি আমায় ডাকলে না। কিন্তু আমাদের যে কতবড় ক্ষতি হয়ে গেল তা তুমি হয়তো বুঝবে না। সে যদি সকালে ফিরে আসে আমরা কালই গ্রামের বাড়ি যাব। সেখানে পরের জমিতে জন বেঁচে আমরা বাঁচতে পারব। তপু যে পথে পা দিয়েছে সে পথ থেকে তাকে ফেরাতে গেলে গ্রামে যাওয়া ছাড়া কোন পথ নেই। তারপরও জানিনা সে ফিরবে কিনা? অনিতা বলল, সে আজ রাতে আমার পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছে। আমি বুঝতে পারিনি সে এইভাবে চলে যাবে। দুজন কেঁদে কেঁদে বাকি রাতটুকু কাটিয়ে দিল।
চলবে...