জেনারেল রাইটিং || স্মৃতিচারণ : স্কুল পালানো

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও বেশ ভালো আছি।

people-2129700_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম। আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে স্মৃতিচারণমূলক একটি শেয়ার করব। এই স্মৃতিচারণ স্কুল পালানো নিয়ে। এই স্কুল পালানো ওয়ার্ডটা শুনলেই সবাই তার স্কুল জীবনে ফিরে যাবে, এতোটুক আমার বিশ্বাস রয়েছে সবার উপর। কারণ এরকম খুব কম মানুষই পাওয়া যাবে যারা স্কুল লাইফে, স্কুল পালায়নি। আমি তো আমার জীবনে অনেক অনেক বার স্কুল পালিয়েছি। অনেকবার স্কুল পালাতে গিয়ে ধরাও খেয়েছি। তবে স্কুল পালানোর সময় একটা অন্যরকম মজা লাগতো। পুরো একটা অ্যাডভেঞ্চারাস ব্যাপার চলে আসতো নিজের মধ্যে। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে স্কুল থেকে বেরিয়ে যাওয়া অনেকটা মুশকিল কাজও ছিল।

তবে আমরা বন্ধুরা যেহেতু প্ল্যান করেই এই কাজগুলো করতাম সেজন্যে এই কঠিন কাজকেও আমরা অনেকটা সহজ বানিয়ে নিতাম। আমাদের এই কাজগুলো দেখে টিচাররাও অনেকটা সচেতন হয়ে যেত এবং তারাও বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করত আমাদের আটকানোর জন্য। তবে আমরা আমাদের কাজগুলো ঠিকই করে যেতাম। আমাদের স্কুলে এরকম নিয়ম ছিল সেটা হলো, টিফিন পিরিয়ডের পরে পুনরায় প্রেজেন্টের খাতা এখানে নাম ডাকা হতো, যারা প্রথম পিরিয়ডে ছিল তারা পঞ্চম পিরিয়ডে আছে কিনা সেটা দেখার জন্য। তবে এই কাজটা মাঝে মাঝে করা হত। আর ওই কারণে মাঝে মাঝে সমস্যার মধ্যে পড়তে হতো।

আমাদের স্কুলে উঁচু দেওয়াল ছিল। সেই দেওয়াল টপকে পালানো কিন্তু অনেকটা কঠিন কাজ ছিল। আর যেহেতু স্কুল লাইফের কথা বলছি, সেই সময় এই কাজটা আমাদের জন্য একটু বিপদজনকও ছিল কারন আমরা ছোট ছিলাম । উঁচু দেওয়াল থেকে লাফ দিয়ে অন্য পাশে নামতে গিয়ে হাত-পা ভেঙে যাওয়ারও একটা সম্ভাবনা থাকতো। এই কাজ করার জন্য প্রথমে আমরা স্কুল ব্যাগটাকে দেওয়ালের ওই পাশে ছুড়ে ফেলে দিতাম, পরে অন্য আরেকজন বন্ধুর সাহায্য নিয়ে আমরা দেওয়াল বেয়ে উপরে উঠে যেতাম এবং অন্য পাশে আস্তে আস্তে নেমে যেতাম। একবার দেওয়াল টপকে অন্য পাশে যাওয়ার পরে প্রচন্ড দৌড়ে স্কুলের এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলে যেতাম। স্কুল পালানোর পরে কোনদিন বাড়ি চলে আসতাম আবার কোনদিন বন্ধুরা মিলে কোথাও ঘুরতে চলে যেতাম। এই কাজগুলোর মধ্যে যে একটা মজা ছিল, সেটা যারা স্কুল পালিয়েছে তারা অবশ্যই বুঝতে পারবে। অনেকবার স্কুল পালানো নিয়ে বাড়িতেও ফোন কল গেছে।

বাড়িতে অনেক বার কথা শুনতাম এই স্কুল পালানো নিয়ে। তবে এখন মনে হয় স্কুল লাইফে থাকতে যদি স্কুল পালানোর এক্সপেরিয়েন্সটা না থাকে তাহলে হয়তো স্কুল জীবনের মজাটা অর্ধেক হয়ে যেত। যেদিন আমরা টিফিন পিরিয়ডের আগে পালিয়ে যেতাম, সেদিন আমাদের প্রত্যেকের কাছে টিফিন থাকতো। সেই টিফিনগুলো আমরা বাইরের একটা জায়গায় গিয়ে বসে বসে খেতাম। অনেক সময় এরকমও হয়েছে আমরা টিফিন পিরিয়ডের আগে পালিয়ে গেলে টিফিন পিরিয়ডের পরে যখন সবার নাম ডাকা হতো তখন অন্য কোন বন্ধু আমাদের হয়ে প্রেজেন্টটা দিয়ে দিতো। যার ফলে পরের দিন স্কুলে গেলে টিচারদের মার খাওয়ার হাত থেকে বেঁচে যেতাম। এরকম অনেক স্মৃতি রয়েছে স্কুল পালানো নিয়ে। তার মধ্যে থেকে টুকটাক কিছু তোমাদের সাথে শেয়ার করলাম এই পোস্টের মাধ্যমে।


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, স্কুল পালানো নিয়ে শেয়ার করা এই স্মৃতিচারণ টি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  
 5 months ago 

ভাই আপনার বন্ধুরা তো বেশ ভালো ছিল পালিয়ে যাওয়ার পরেও আপনাদের প্রেজেন্টটা দিয়ে দিত। কিন্তু আমাদের বন্ধুরা একদম ভিন্ন ছিল তারা শিক্ষকদের কাছে আরো বলে দিত কয়জন পালিয়েছে আর তাদের নাম লিস্ট করে দিয়ে দিত হা হা হা।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

হ্যাঁ ভাই, আমার বন্ধুগুলো বেশ ভালোই ছিল। এই জন্য আমরা পালিয়ে যাওয়ার পরেও আপনাদের প্রেজেন্টটা দিয়ে দিত।

কিন্তু আমাদের বন্ধুরা একদম ভিন্ন ছিল তারা শিক্ষকদের কাছে আরো বলে দিত কয়জন পালিয়েছে আর তাদের নাম লিস্ট করে দিয়ে দিত হা হা হা।

তাহলে তো অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় ছিল আপনার জন্য ভাই। হিহি..🤭🤭🤭

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আসলে ছোটবেলায় সবাই কমবেশি স্কুল পালিয়েছে। আমিও ভাই বেশ কয়েকবার স্কুল পালিয়েছি টিফিনের সময় টিফিন খাওয়ার নামে একবারে বাড়িতে চলে আসতাম। আপনি স্কুল পালাতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন জানতে পারলাম হি হি হি ।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

স্কুল পালাতে গিয়ে ধরা খাইনি, এমন কম মানুষই খুঁজে পাওয়া যাবে ভাই। 🤭🤭 স্কুল পালিয়ে মজা আর ধরা খেলে সাজা! এই দুই রকম অভিজ্ঞতাই আছে আমার। হিহি😁🤣🤣

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে স্কুলে অনেক কিছুই করেছি, যেগুলোর কথা মনে পড়লে এখন অনেক বেশি ভালো লাগে। আর স্কুল পালানোর বিষয়টা তো এভেলেবেল ছিল। আমরাও বন্ধুরা মিলে স্কুল পালানো টা মিস করিনি। আসলে স্কুল পালানোর বিষয়টা ছিল সবথেকে আলাদা এবং অনেক বেশি মজার। আপনার স্মৃতিচারণ পোস্টটা পড়ে আমার স্কুল জীবনের কথা গুলো মনে পড়ে গিয়েছে। স্কুল পালানোর পর ধরা খেলে মাফ ছিল না। অনেক বেশি ভালো লেগেছে ভাই আপনার আজকের লেখা সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে।

 5 months ago 

স্কুল পালানোর বিষয়টা সত্যিই মজার বিষয় ছিল। তবে এই কাজে ধরা খেলে বেশ কঠিন শাস্তিই দেওয়া হতো।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

দাদা আজকে দারুন একটি ব্লগ শেয়ার করলেন ৷ আপনার পোস্ট টি কত কিছু মনে পড়ে গেলো ৷আমিও তো স্কুল পালানোর জন্য মাঠে কান ধরা বকা খেয়েছি তার হিসেব নেই ৷ তবুও জানালা দিয়ে ব্যাগ ভেলে দিয়ে তারপর পালাতাম ৷এরপর দুই তিন পর যেতাম ভয়ে ৷
যা হোক যতটা ভয় ছিল ততটা আনন্দই ছিল ৷
যা হোক অনেক সুন্দর একটি ব্লগ শেয়ার করার জন্য ৷

 5 months ago 

এটা কিন্তু ঠিক কথা বলেছেন ভাই, এই কাজে যতটা ভয় ছিল ঠিক ততটাই আনন্দ ছিল।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ছেলেরাই বেশি স্কুল পালাতো। আমরা ছোটবেলায় স্কুল থেকে কখনো এরকম পালাইনি। কারণ মেয়েদের স্কুল পালানোর সুযোগটা খুব কম থাকে। অবশ্য কলেজের ক্লাস থেকে বেশ কয়েকবার বের হয়ে গিয়েছিলাম। যেদিন ক্লাস করার ইচ্ছা থাকতো না সেদিন পিছনের বেঞ্চে গিয়ে বসতাম। প্রেজেন্ট দিয়ে আস্তে করে বেরিয়ে যেতাম। বেশ কয়েকবার ধরাও পড়েছিলাম। এ বিষয়গুলো আসলেই বেশ মজার। ভালো লাগলো আপনার ছোটবেলার স্মৃতি পড়ে।

 5 months ago 

যদিও এটা ঠিক কথা বলেছেন আপু, মেয়েদের স্কুল পালানোর সুযোগটা খুব কম থাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

আসলে স্কুল জীবনে থাকাকালীন কখনো স্কুল পালাই নাই। স্কুল পালানোর বিষয়টা তো মাথায়ই আনি নাই। তবে ছেলেরা বেশিরভাগই দেখতাম স্কুল পালিয়ে চলে যায়। মেয়েরা এই বিষয়টা খুবই কম সাহস করতো। আপনি স্কুলে থাকাকালীন অনেকবার বন্ধুদের সাথে তাহলে স্কুল থেকে পালিয়ে ছিলেন। আপনাদের জায়গায় অন্য বন্ধু প্রেজেন্ট দিয়ে দিত এই আইডিয়াটা কিন্তু ভালোই ছিল আপনাদের। স্কুল পালানো নিয়ে আপনার জীবনে অনেক স্মৃতি রয়েছে, তা তো আপনার পোস্ট পড়েই বুঝতে পারলাম।

 5 months ago 

আসলে স্কুল জীবনে থাকাকালীন কখনো স্কুল পালাই নাই।

এটা জেনে অনেক অবাক হলাম আপু! আপনি তো তাহলে স্কুল লাইফে খুব শান্ত স্বভাবের ছিলেন আমার যা মনে হচ্ছে ।

 5 months ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে সেই ছোট বেলার কথা মনে পরে গেলো। আপনাদের মতো আমি ও অনেক বার স্কুল পালিয়েছি। আবার অনেক দিন বাসায় থেকে স্কুল ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হয়ে স্কুলে না যেয়ে বন্ধু বান্ধব মিলে ঘুরতে চলে গেছি। এই স্কুল পালানোর জন্যতো বাসায় অনেক বকাও শুনেছি। আপনার পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 5 months ago 

এই স্কুল পালানোর জন্য সবাইকেই বাড়িতে অনেক বকা শুনতে হয়েছে ভাই। যাইহোক, আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার ভীষণ ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 63186.04
ETH 3392.68
USDT 1.00
SBD 2.50