ফিশ মার্কেট : পর্ব ০২ (শেষ পর্ব)
বন্ধুরা ,
সবাই তোমরা কেমন আছো ? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। |
---|
গত দুইদিন আগের একটি ব্লগে বারাসাতের ফিস মার্কেট নিয়ে তোমাদের সাথে একটি পর্ব শেয়ার করেছিলাম। সেই পর্বে তোমাদেরকে সেখানে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে কিছু কথা শেয়ার করেছিলাম। সেইখানে সেদিন গিয়ে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছিল আমাদের সাথে। সেই সম্পর্কে পরবর্তী পর্বে তোমাদের সাথে শেয়ার করব বলে জানিয়েছিলাম আমি। আজকের পর্বে সেইসব নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করব। আজকের পর্বে বারাসাত ফিস মার্কেট থেকে তুলে নিয়ে আসা বিভিন্ন মাছেরও কিছু ছবি শেয়ার করব। বিভিন্ন ভ্যারাইটির মাছের দেখার সুযোগ হবে সবার। যাইহোক আমরা যখন বন্ধুরা মিলে ফিশ মার্কেটের এপাশ থেকে ওপাশ মাছের দাম থেকে শুরু করে মাছের নাম সবকিছু লোকের কাছে জিজ্ঞেস করে বেড়াচ্ছিলাম তখন একটা বিষয় খেয়াল করছিলাম। আশেপাশের সবার নজর আমাদের উপরে ছিল। আমরা কয়েকজন বন্ধু ছিলাম আমাদেরকে একটু অন্যভাবেই দেখা হচ্ছিল।
তারা ভাবছিল হয়তো আমরা মৎস্য অফিস থেকে এসেছি। মাছ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এইখানে কোন ফরমালিন বা অন্যায় মূলক কাজ আছে কিনা সেসব সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করার জন্য আমরা গেছি তাই তাদের ভিতর একটু ভয় হচ্ছিলো। সেই কারণে প্রথমে যখন তাদের কাছে বিভিন্ন মাছের দাম জিজ্ঞেস করা হয়েছিল প্রথম অবস্থায় কেউ কেউ বলতে চাইছিল না। তারপর যখন তাদেরকে পরিচয় দেয়া হয়, আমরা কলেজ থেকে এসেছি আমাদের একটু প্রজেক্ট এর কাজের তখন তারা খুবই সুন্দর হবে ইনফরমেশন গুলো বলে যাচ্ছিল। সেখানে গিয়ে মাছের দাম যথেষ্টই কম লেগেছিল। আমরা যে স্থানীয় খুচরো বাজার থেকে মাছগুলো কিনে খাই তার দামের প্রায় অর্ধেক দামে অনেক মাছ পাওয়া যাচ্ছিল সেখানে। এইখানে গেলে একটা সমস্যা হয় তা হলো কিছু কিছু মাছ ৫ কেজির কমে কেনাই যায় না, বেশি পরিমাণ কিনলেই কম দামে দেয় আর কি।
যাইহোক আমরা যেহেতু মাছ কিনতে যাইনি মাছ সম্পর্কে রিসার্চ করতে গেছিলাম তাই গিয়ে প্রায় কুড়ি থেকে ত্রিশ টি দোকানে যাই এবং বিভিন্ন মাছের নাম খাতায় লিখি এবং সেই মাছের দাম, কোথায় পাওয়া যায়, সবকিছুর একটা বিস্তারিত নোটস বানিয়ে ফেলি সেখানে থাকতে থাকতেই। পুকুরের, নদীর , খাল-বিলের এবং সামুদ্রিক মাছের এক বিশাল সম্ভার সেখানে গিয়ে দেখার সুযোগ হয়েছিল আর কি। সেইখানে যাওয়ার পর একটি লোকের সাথে আমাদের খুব ভালো পরিচয় হয়। সেই লোক যথেষ্ট ব্যস্ত ছিল তারপরও অনেকটা সময় দিয়ে আমাদের বিভিন্ন জায়গার কয়েকটি দোকানে নিয়ে যায়। সেই লোক মূলত সেই দোকানগুলোতেই নিয়ে গেছিল যেখানে রাজ্যের বাইরে থেকে মাছ আসে। রাজ্যের বাইরে থেকে আসা মাছগুলোর সাইজ তুলনামূলকভাবে বড় বড় হয়। স্থানীয় মাছগুলো কিছুটা ছোট এবং বাইরে থেকে আসা রুই কাতলাগুলো বড় হওয়ার কারণ আমরা খুঁজে পাই সেদিন সার্ভে করতে গিয়ে এবং এই ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছিল আমাদের কাছে।
মার্কেট সার্ভের কাজ করার সময় একটা মাছের দোকানদার আমাদের সাথে একটু খারাপ ব্যবহার করেছিল কিন্তু যেহেতু আমাদের এটি কাজ ছিল তাই আমরা সেখানে আর কথা না বাড়িয়ে চলে আসি। আমরা সেখান থেকে বের হওয়ার পর পাশের একটি দোকান থেকে সকালের হালকা খাবার খেয়ে নি কারণ আমরা একদম ভরে গেছিলাম তাই কোন কিছু না খেয়েই গেছিলাম বাড়ি থেকে। সকালের খাবার খাওয়ার সময় আমরা সেই দোকানে বসেই সারা মার্কেট ঘুরে ঘুরে কি কি জানলাম বুঝলাম সব বন্ধুরা মিলে তাই আলোচনা করি । দারুণ একটা ভালো লাগা কাজ করছিল তখন বন্ধুরা মিলে গ্রুপ ডিসকাশন করতে। বন্ধুদের সাথে কাটানো সেই সময় গুলো এখনো মনে পড়লে খুব ভালো লাগে। অনেকদিন হয়ে গেছে এই সার্ভে করেছিলাম, এখনো চোখের সামনে একসাথে কাজ করার মেমরি গুলো ভেসে ওঠে। বন্ধুগুলো হায়ার স্টাডি করার জন্য বাইরে রাজ্যে থাকে, অনেকদিন হয়ে গেছে তাদের সাথে কথা হয় না ।পুরনো অ্যালবামের এই ফটোগুলো দেখতে দেখতে সেই সব স্মৃতিগুলো বারবার মনে পড়ে যাচ্ছিল।
ভাইয়া আপনারা কয়েকজন বন্ধু মিলে বারাসাতের ফিস মার্কেটে বেশ ভালই ঘোরাঘুরি করেছেন যদিও কাজের জন্য গিয়েছিলেন ।আর বিভিন্ন মাছের ফটোগ্রাফি করেছেন যার জন্য অনেক ধরনের মাছ দেখতে পেলাম । আসলে সবাই বেআইনি কাজে ব্যস্ত থাকে এই জন্য আপনাদেরকে মৎস্য অফিসের লোক ভেবে লোকেরা ভয় পাচ্ছিল । আসলে নিজের প্রয়োজনে কোথাও গেলে অন্যের খারাপ আচরণ উপেক্ষা করেও কাজটি সম্পন্ন করতে হয় । বেশ ভাল ছিল আপনার পোস্টটি ।ধন্যবাদ ।
আপু এত সুন্দর করে গুছিয়ে কমেন্টটি করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মাছ বিক্রেতারা তাহলে তো বেশ ভালোই ভয় পেয়েছিল। তারা ভেবেছিল আপনারা হয়তো তাদের সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। যাইহোক যেহেতু ইনফরমেশন গুলো প্রজেক্ট এর কাজে লাগবে তাই সুন্দরভাবে সেগুলো কালেক্ট করেছেন। আসলে অনেক মাছ একসাথে কিনলে দামে কম পাওয়া যায়। কিন্তু সেই মাছগুলো খুচরা বাজারে কিনতে গেলেই বেশ চড়া দামে কিনে নিতে হয়।
মাছ বিক্রেতাদের ভয় দেখে আমাদের একটু মজা লাগছিল মনে মনে। সত্যি বলতে গেলে ওদের মনেই পাপ ছিল, এই জন্যই ওরা ভয় পাচ্ছিল।
মাছ বাজারের গন্ধ শুঁকে জ্যান্ত বাড়ি ফিরতে পারলে, সেটাই তো বিশাল কৃতিত্বের। তবে তোমার পড়ার বিষয়টা যেহেতু ফিশারি তাই হয়তো গন্ধ এতদিনে সয়ে গেছে। হিঃ হিঃ।
মাঝে একটা মাছ দেখে মনে হলো টুনা। ৭ নাম্বার ছবি, আমি কি ঠিক?
দাদা সত্যি কথা বলতে গেলে মাছের গন্ধ আমার সহ্য হয় না, ভুল করেই এই সাবজেক্টের উপর গ্রাজুয়েশন করা কমপ্লিট হয়ে গেছে। 🤭🤭
হ্যাঁ দাদা ওইটা টুনা মাছ।
একসাথে কয়েকজন বন্ধু মিলে এভাবে মাছের ফটোগ্রাফি করার কারণে হয়তো তারা ভয় পেয়ে গেলেন। বারাসাত ফিস মার্কেট অনেক তাজা তাজা মাছ পাওয়া যায় মনে হয়। এবং আপনি লিখেছেন মাছের দাম একটু কম। সব জায়গাতে শুনি মাছের দাম অনেক ছড়া। একটি মাছের দোকানদার আপনাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করল। আসলে কিছু মানুষ আছে তাদের ব্যবহারটা খুব খারাপ। আপনি খুব সুন্দর করে মাছের ফটোগ্রাফি এবং বর্ণনা দিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন।
হ্যাঁ আপু অনেক তাজা তাজা মাছ পাওয়া যায় এখানে গেলে এবং দামও যথেষ্ট কম থাকে।
আপনারা কয়েকজন বন্ধু মিলে খুব সুন্দর তাজা তাজা মাছের ফটোগ্রাফি করেছেন। একসাথে কয়েকজন বন্ধু মিলে এভাবে ফটোগ্রাফি করলে মাছ বিক্রেতারা ভাববে কোন সরকারি লোক। সেই কারণে তারা দাম বলতে ভয় পেয়ে গেছে। আপনার পোষ্টের মধ্যে জানতে পারলাম একটি লোক আপনাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করল। আসলে কিছু লোক আছে তাদের ব্যবহার এমনিতে খারাপ। এবং আপনি মাছগুলোর ফটোগ্রাফি করেছেন পোষ্টের মধ্যে জানতে পারলাম মাছগুলোর দাম একটু কম। আমাদের এদিকের মাছ গুলোর দাম অনেক বেশি। খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ ভাই একটা লোকের ব্যবহার একটু খারাপ ছিল ।হয়তো তারা সবসময় কাজে ব্যস্ত থাকে এজন্য তাদের ব্যবহার মাঝে মাঝে ঐরকম হয়ে যায়। যদিও আমরা এ বিষয় নিয়ে তেমন একটা ভাবি নি, চলে এসেছিলাম সেখান থেকে কোন কথা না বলেই।