ট্রাভেল || বাংলাদেশ ভ্রমণ: গ্রাম ঘুরে দেখা (পর্ব -০৪) শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম। আজকের ব্লগে ভ্রমনমূলক একটি পোস্ট শেয়ার করবো তোমাদের সাথে। আজকের চতুর্থ পর্বের এই ব্লগে বাংলাদেশের একটি গ্রাম ঘুরে দেখা সম্পর্কে বাকি যে কথা গুলো ছিল তাই শেয়ার করব।

20231218_165135.jpg

20231218_165129.jpg

তৃতীয় পর্বের লিংক

গ্রামের রাস্তা দিয়ে যত হেঁটে যাচ্ছিলাম, ততই মনের ভেতর একটা আলাদাই আনন্দ লাগছিল। আস্তে আস্তে সূর্য ডুবে যেতে থাকে আর গ্রামের পরিবেশটা একটু বেশি ঠান্ডা হতে শুরু হয়। কারণ আমি যেই সময় বাংলাদেশ ভ্রমণে ছিলাম সেই সময়টা বেশ শীত চলছিল। গ্রামের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দুই পাশেই প্রকৃতি উপভোগ করা যায়। চলার সময় তো মাঝে মাঝে বুঝতেই পারছিলাম না কোন পাশের প্রকৃতিটা আগে উপভোগ করবো এবং কোন পাশের টা পরে উপভোগ করব। দুই ধারে দুই রকমের প্রকৃতি দেখার সুযোগ হয়েছিল।

20231218_165022.jpg

20231218_165624.jpg

এক ধার দিয়ে খাল বয়ে গেছিল তার একটা আলাদা সিনারি ছিল এবং অন্যদিকে ছিল শত শত একর জমি। যেখানে বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়। যদিও আমি যে সময় গেছিলাম সেই সময় জমিতে লাগানো ফসল গুলো ছোট ছোট ছিল । রাস্তা দিয়ে চলার সময় আমাদের একটু জল তেষ্টাও পেয়ে গেছিল। কিন্তু আশেপাশে আমরা কোন দোকান পাইনি। তাই সেই জল তেষ্টা নিয়েই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে চলি। আর আমরা কিন্তু অনেকটা পথই হেঁটেছিলাম। আমরা পূর্বে কোন প্ল্যান করে যদিও বাড়ি থেকে বের হয়নি। তবে হাঁটতে হাঁটতে আমরা কয়েক কিলোমিটার গ্রামের ভিতরে চলে গেছিলাম। কিছুদূর আসার পরে খালের এই পাশ থেকে ওই পাশে যাওয়ার জন্য কাঠের ব্রীজও দেখতে পাই।

20231218_165603.jpg

20231218_165604.jpg

এটা সত্যি আমাকে অবাক করেছিল কারণ এরকম ব্রিজ আমি এরকম জায়গায় এক্সপেক্টই করিনি। সাধারণত এই ধরনের কাঠের ব্রিজ আমি বিভিন্ন পার্কে দেখেছি যা পার্কের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য করা হয় কিন্তু এইখানের এই ব্রিজ আমাকে সত্যি মুগ্ধ করেছিল। এখানে ব্রিজ দেখার পর আমি, আমার দাদা এবং আমার সেই বোন এই ব্রিজ পার করে অন্য সাইডে যাই। সেখানে যাওয়ার পর দেখতে পেয়েছিলাম গ্রামের অন্য আরেক রূপ। দূরের প্রকৃতি একটা আলাদা রূপ নিয়েছিল, এরকমটা মনে হচ্ছিল যা তোমরা ফটোগ্রাফিতে দেখলেও বুঝতে পারবে।

20231218_165627.jpg

20231218_165627.jpg

গোধূলি লগ্নের এই দৃশ্য মুগ্ধ করে দেওয়ার মত ছিল।ওই জায়গাটাতে কিছু সময় দাঁড়িয়ে শান্ত প্রকৃতিটাকে একটু উপভোগ করি। এই বিলের ভিতরেও কয়েক জায়গায় কিছু বাড়ি দেখতে পেয়েছিলাম। যদিও সেই বাড়িগুলো অনেক দূরে ছিল না। রাস্তার নিকটেই ছিল। তবে সেই বাড়িগুলোর পর থেকেই শুরু হয়েছিল বড় বিল। ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে খালের সৌন্দর্য দেখা যাচ্ছিল। ব্রিজের দুই সাইডে যেহেতু খাল ছিল সেই কারণে দুই সাইডের খালেরও একটা অন্যরকম দৃশ্য এখানে দাঁড়িয়ে দেখতে পাই। খালের দুই দিকের দুই ধরনের দৃশ্যের ফটোগ্রাফিও করেছিলাম তখন। আস্তে আস্তে যেহেতু সূর্যের আলো নিভে যেতে থাকে সেজন্য এখানে আর বেশি সময় আমরা না দাঁড়িয়ে আর একটু সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্ল্যান করি।
20231218_165800.jpg

20231218_165804.jpg

20231218_170218.jpg

20231218_170215.jpg

একটু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরে বড় একটি বটগাছ দেখতে পাই। এখানে আসার পর আর আমাদের সামনে যাওয়ার কোন এনার্জি ছিল না। কারণ অনেক জল তেষ্টা পেয়েছিল। তাই আমাদের ভ্রমণ আমরা এখানেই শেষ করতে চাই। এই বট গাছের নিচে আমরা কিছু সময় বসেও থাকি। তারপর কিছু ফটোগ্রাফি করে আমরা পুনরায় যেভাবে এসেছিলাম তার বিপরীতভাবে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করি। এইভাবে সেদিন আমাদের ভ্রমণ সমাপ্ত হয়। সেদিন যেতে আমাদের অনেকটা সময় লেগেছিল কারণ আমরা অনেক জায়গায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবকিছু দেখছিলাম, তবে বাড়ি ফেরার সময় খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন পড়েনি। আমরা তাড়াতাড়িই বাড়ি চলে এসেছিলাম।


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীট্রাভেল
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@ronggin
লোকেশননড়াইল, বাংলাদেশ।
বন্ধুরা, বাংলাদেশের গ্রাম ঘোরাঘুরি নিয়ে শেয়ার করা শেষ পর্বের এই ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  
 5 months ago 

আসলেই কাঠের ব্রিজ তো শুধু পার্কে দেখা যায় কিন্তু গ্রামের মধ্যে এরকম কাঠের ব্রিজ থাকলে সেটা আলাদা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে। গ্রামের রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় শেষ বিকেলের সূর্য টা আসলেই ভালো লাগে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের গ্রামের সৌন্দর্য বেশ উপভোগ করেছেন।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

হ্যাঁ ভাই, পার্কে তো এরকম কাঠের ব্রিজ দেখেছি তবে সেই দিন গ্রামে এরকম কাঠের ব্রিজ দেখে আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম । তাছাড়া সেই দিন গ্রামের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় চারপাশের সৌন্দর্য বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করেছিলাম।

 5 months ago 

ভাইয়া আপনার বাংলাদেশ ভ্রমণ নিয়ে আজকে দারুন একটি পর্ব দেখলাম। নদীর পাড়ে খালি জমি গুলো দেখতে দারুন লাগছে। আর সেই সাথে কাঠের ব্রীজটাও খুব সুন্দর লাগছে। আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে গ্রাম বাংলার মূল চিত্র ফুটে উঠেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 5 months ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনার প্রশংসা মূলক মন্তব্যটির জন্য।

 5 months ago 

ভাইয়া আজ আপনারা বাংলাদেশের গ্রাম ঘুরে দেখার শেষ পর্বটি ও তার সাথে অসাধারণ বর্ণনার পাশাপাশি অপূর্ব কিছু প্রকৃতির ছবি ও তার বর্ণনাও আমাদের সাথে অনেক চমৎকার করে শেয়ার করেছেন। আসলে আপনার এত সুন্দর গ্রামের প্রকৃতির ছবিগুলো দেখে আমিও মুগ্ধ হয়ে গেছি। আমিও ভাইয়া গ্রামে এত সুন্দর একটি ব্রিজ দেখে অবাক হয়েছি। কারণ এরকম ব্রিজ আমিও বিভিন্ন পার্কে দেখেছি। আর তাই আমিও দেখে মুগ্ধ। আর গোধূলি লগ্নের তাল গাছের ঐ প্রকৃতির অপূর্বের মাঝে কিছু সময় মনে হচ্ছিল শান্তভাবে বসে কাটিয়ে আসি।ধন্যবাদ ভাইয়া। এত সুন্দর একটি গ্রাম ঘুরে দেখা ও তার পাশাপাশি গ্রামের প্রকৃতির এত অপূর্ব কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

এত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে আপনার মন্তব্যটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে। ভালো লাগলো আপনার এই সুন্দর মন্তব্যটি পড়ে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57249.71
ETH 3092.70
USDT 1.00
SBD 2.41