অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা
নমস্কার সবাইকে,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো কিন্তু আমি আজ ভালো নেই। |
---|
আজ সকালের ঘুম এমনভাবে ভাঙবে আনএক্সপেক্টেড ছিল পুরোপুরি। আমরা এক বন্ধুর নাম শোভন, সকাল-সকাল তার দাদা আমাকে ফোন করে বলল, ভাই শোভন বাইক এক্সিডেন্ট করেছে বারাসাত হসপিটালে ভর্তি আছে তুই তাড়াতাড়ি চলে আয়। হঠাৎ করে যেন আকাশ থেকে পড়লাম। এটা আমি ভাবতেই পারছিলাম না আমার কাছের বন্ধু বাইক এক্সিডেন্ট করে হসপিটালে ভর্তি থাকবে কারণ সে সবসময় বাইক চালানোর ব্যাপারে সচেতন ছিল। তাকে কোনদিনও আমি জোরে বাইক চালাতে দেখিনি। তার এই বিশেষ গুণটি ছিল সেটা বলতেই হবে। যাইহোক বিপদ তো বলে আসেনা আর চলে আসার পরে আমাদের কোন কিছু করার থাকে না। সকালে নিউজটা শোনার পর কোনরকম ভাবে ব্রাশ করেই বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলাম বারাসাত হসপিটালের উদ্দেশ্য।
বারাসাত হসপিটালের ইমারজেন্সি বিভাগে তাকে ভর্তি করা ছিল এবং তার পাশে তাকে দেখাশোনা করার মত তার দাদাও ছিল । আমি সেখানে যদিও একা যায়নি, আমার সাথে আমার দাদা এবং অন্য একজন বন্ধুও ছিল। ইমারজেন্সি বিভাগের সামনে আসার পর আমাদের কোন অবস্থায় গেটের মধ্যে ঢুকতে দিচ্ছিল না কারণ সেখানে ঢোকার জন্য যে পাস কার্ডের প্রয়োজন সেটা আমার কাছে ছিল না। কিছু সময় অপেক্ষা করার পর উপর থেকে শোভনের দাদা এসে আমাদের ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে শোভনের অবস্থা দেখে প্রথমে বোঝা যাচ্ছিল না যে খুব বড়সড়ো এক্সিডেন্ট হয়েছে । আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি কিন্তু শোভন যখন আমাদের কাউকেই চিনতে পারছিল না তখন রীতিমতো আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। বাইরে থেকে এক্সিডেন্টের প্রভাব তেমন না বোঝা গেলও মস্তিষ্কের মধ্যে রক্ত জমে গেছে যেটা যাওয়ার আধঘন্টা পরে সিটি স্ক্যানের রিপোর্টার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছিলাম। তার অবস্থা খারাপ দেখে বারাসাত হসপিটাল থেকে ডাক্তার খুব তাড়াতাড়ি আমাদের রেফার করে দেয় পি.জি হসপিটাল আসার জন্য। এটি বারাসাত থেকে অনেকটা দূরের পথ ছিল।
আমাদের হাতে সময় খুব কম ছিল কারণ শোভনের এই অবস্থা দেখা যাচ্ছিল না। সে একটি কথাও বলতে পারেনি এবং কাউকে চিনতে পারছিল না এটা বেশ ভয়ের একটি কারণ ছিল কারণ মস্তিষ্কের ব্যাপার এই বিষয়ে অবহেলা করার সময় আমাদের হাতে ছিল না। তৎক্ষণাৎ আমরা অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করলাম এবং এম্বুলেন্সে করে চলে আসলাম পিজি হসপিটালে। আমাদের আসতে মোটামুটি দেড় ঘন্টার মত সময় লেগেছিল যদিও আমরা চাইনি সময়ের অপচয় করতে কিন্তু রাস্তার জ্যামের কারণে অনেকটা সময় আমাদের অপচয় হয়ে গেছিল। এখানে আসার পরও বেশ দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছিল আমাদের। প্রথমে ইমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তি করাতে হলো সেখান থেকে পুনরায় রেফার করে নিয়ে আসা হলো ট্রমা বিভাগে যেখানে মূলত মস্তিষ্কের অপারেশন হয়ে থাকে।
সেখানে আনতেও অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছিল সবাইকে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমি না খেয়েই দৌড়াদৌড়ি করে যাচ্ছি, এখনো পর্যন্ত কোন কিছু খাওয়ার সুযোগ টুকু পায়নি। যাই হোক বর্তমানে সে অপারেশন থিয়েটারে রয়েছে এবং তার অপারেশন শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যেও অনেক কাজ করতে হয়েছে সে কাজের কথাগুলো আর বললাম না। আমি এখন হসপিটালের বাইরের একটি কোনায় বসে এই কথাগুলো লিখছি ,বেশ খারাপ লাগছে তার কথা ভেবে। যার সাথে বছরের পর বছর ধরে চলাফেরা তার এই পরিণতি চোখে দেখা যায় না । আমি চাই সে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাক। আপনাদের সকলের আশীর্বাদ প্রার্থনা করছি আজকের ব্লগে। বেশি কিছু এখন আর বলতে পারছি না, অনেকটা চিন্তিত আছি আমরা সবাই। আজকের মত ব্লগ এখানেই শেষ করছি।
সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।
আসলে কার বিপজ্জন কখন কিভাবে আসে তা আসলে বলা যায় না। তা না হলে উনি এত সতর্ক থাকা সত্ত্বেও কেন উনার সাথে এক্সিডেন্টটা হলো!! আমিও প্রথমে ছবি দেখে ভেবেছিলাম সামান্য এক্সিডেন্ট। কিন্তু আপনার কাছে শুনে আমার কাছে খুবই খারাপ লাগলো, যে আপনার বন্ধু আপনাদেরকে চিনতে পারছে না ।আশা করি তার অপারেশন সাকসেসফুল হবে ।এবং আমাদেরকে আরো একটি সুখবর দেবেন ।আপনার বন্ধুর জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।
সতর্ক থাকা সত্ত্বেও এরকম ঘটনা তা ভাগ্যের পরিহাস আপু এক্ষেত্রে কোন কিছু করার নাই। বন্ধুর অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে আপু এখন সে মোটামুটি অবস্থায় রয়েছে।
প্রথমে বলব আল্লাহ যেন আপনার বন্ধু শোভনকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেই। বাইক এক্সিডেন্টগুলো অনেক মারাত্মক। কিছু মাস আগে আমার হাজবেন্ডের বড় ভাই বাইক এক্সিডেন্ট করেছিলেন। অনেক মারাত্মক ভাবে। তবে বিপদ আসতে কাউকে বলে আসে না। আপনার বন্ধুর অপারেশন করাচ্ছেন মনে হয় অনেক বড় এক্সিডেন্ট করেছে। তার হাসপাতালে ছবিগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে। আল্লাহ তাকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করেদেন। এবং সবাইকে আল্লাহ তায়ালা যেন ভালো রাখে।
সৃষ্টিকর্তার নিকট আমার বন্ধুর জন্য প্রার্থনা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
প্রথমেই আপনার বন্ধু শোভন এর সুস্থতা কামনা করছি। সত্যি বিপদ কোন দিক থেকে আসে তা কেউই জানে না। আপনার বন্ধুর এই দুর্ঘটনার মাঝে ও আপনি আমাদের সাথে পোস্ট শেয়ার করেছেন এটাই অনেক। যখন সব থেকে কাছের বন্ধুটার এরকম অবস্থা চোখের সামনে দেখা হয় তখন অবিশ্বাস্য লাগে। আপনার বন্ধুর মনে হয় মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছে। যদিও উপরে কিছু হয়নি কিন্তু ভেতরে অনেক আঘাত পেয়েছে কিন্তু। আল্লাহ তা'আলা যেন আপনার বন্ধুকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেয় সে দোয়া করি। আপনিও ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।
আমার বন্ধুর সুস্থতা কামনা করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে। আপনাদের সবার প্রার্থনায় সে এখন মোটামুটি ঠিক আছে আপু।
আসলে দুর্ঘটনা কখনো বলে কয়ে আসলে না ৷ নিজে সর্তক ভাবে চললেও অন্যর অসতর্কতার জন্য দূর্ঘটনা ঘটে যায় ৷ যাই হোক আপনার কাছের বন্ধুর এমন অবস্থা দেখে বেশ খারাপ লাগলো ৷ আপনার বন্ধুর সুস্থতা কমনা করছি ৷ আশা করি খুব শীঘ্রই ভালো হয়ে উঠবে৷
কারোর লাইফে দুর্ঘটনা যে কেমন করে চলে আসে কেউ তা বলতে পারেনা। আপনাদের সবার প্রার্থনায় আমার বন্ধু এখন মোটামুটি ঠিক আছে ভাই।