রাসের মেলায় ঘুরতে যাওয়া
নমস্কার সবাইকে ,
তোমরা সবাই কেমন আছো ? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও অনেক অনেক ভালো আছি। |
---|
আজকের ব্লগে আমি রাসের মেলায় ঘুরতে যাওয়া নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করব। দুইদিন আগেই গেছিলাম আমি এই রাসের মেলাতে। এটি মধ্যমগ্রাম স্টেশনের একদম পাশেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অনেক বছর ধরেই এই একই জায়গায় প্রতিবছর ১৫ দিনব্যাপী এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছরই আমি এই মেলায় গিয়ে উপস্থিত হই কিন্তু সব সময় কেনাকাটির উদ্দেশ্য নিয়ে মেলায় যাই না। ঘুরে ঘুরে মেলার সবকিছু দেখতে ভালো লাগে সেই জন্য যাই। এই বছরের মেলা শুরু হয়েছে বেশিদিন হয়নি । তিন থেকে চার দিন হবে শুরু হয়েছে তার মধ্যেই আমি একবার গিয়ে ঘুরে নিলাম সেদিন। প্রতিবছরই আমি এখানে কমপক্ষে দুইবার যাই এই মেলাটাকে পুরোপুরিভাবে ঘুরে দেখার জন্য। অনেকটা সুবিশাল জায়গা নিয়ে এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয় না কিন্তু যতটুক জায়গা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় সেই জায়গায় প্রচন্ড পরিমাণে ভিড় হয়ে যায়। হাঁটার জন্য জায়গাটুকু পাওয়া যায় না এত মানুষের ভিড় হয়, এত দোকানপাট বসে।
যাইহোক দুইদিন আগে আমি যখন গেছিলাম আমি সেখানে একা যায়নি। আমি গেছিলাম আমার এক বান্ধবীর সাথে। আমার এই বান্ধবীর বাড়ির পাশেই এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেই দিন সন্ধ্যার একটু পর আমি মধ্যমগ্রাম স্টেশনে যাই ট্রেনে করে। ট্রেন থেকে নামার পর আমি দেখতে পাই আমার বান্ধবী আগেই সেখানে চলে এসেছে এবং সে আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। তার সাথে দেখা হওয়ার পর দুজনে কথা বলতে বলতে মেলার এক সাইড দিয়ে মেলার মধ্যে ঢুকে পড়লাম। প্রথমেই গিয়ে মানুষের ভিড় দেখে অবাক হয়ে গেলাম, এত মানুষ এত তাড়াতাড়ি মেলায় ঘুরতে এসেছে! শহরের মানুষ মেলা এত ভালবাসে প্রতিবছরই তার নমুনা পাওয়া যায়।
মধ্যমগ্রাম স্টেশনের পাশে একটি ছোট মাঠের মতো জায়গা রয়েছে সেই মাঠের সমস্ত জায়গা জুড়ে এবং রাস্তার আশেপাশের সব জায়গা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের দোকান বসেছে। অল্প পরিসরের জায়গার মধ্যে শত শত দোকানের সমারোহ। বিভিন্ন ধরনের কাজের জিনিস, শখের জিনিস সবকিছুই এই মেলাতে দেখা যাচ্ছিল। মাদুর, হাতা ,খুন্তি, ছুরি , ঝাটা, প্রেসার কুকার, হাড়ি, কড়াই এমন কোন কিছুই ছিল না যা পাওয়া যাবে না। কিছু কিছু জায়গায় দেখলাম জামা কাপড়ও নিয়ে এসেছে মেলাতে। মেলাতে গিয়ে আরেকটা জিনিস মনে হল মেয়েদের জিনিসের সংখ্যাই এখানে বেশি। মেয়েদের কসমেটিক্সের দোকান ছিল অসংখ্য। এখানে আরও ছিল ঘর সাজানোর বিভিন্ন জিনিস, বিভিন্ন খাবারের দোকান । খাবারের দোকান গুলোর মধ্যে পিঠাপুলির দোকান থেকে শুরু করে মিষ্টির দোকান, পানের দোকান , বিভিন্ন তেলেভাজা মুখরোচক খাবারের দোকান সবকিছুই ছিল। মিষ্টির দোকানগুলোতেই বাদাম ভাজা করেই বিক্রি করা হচ্ছিল।
মেলা হলে সেখানে নাগরদোলা তো থাকবেই। এখানে নাগরদোলা বসেছিল তাছাড়াও শিশু বিনোদনের জন্য আরো অনেক কিছুই ছিল। এই মেলায় গিয়ে ম্যাজিক শপও দেখতে পেয়েছিলাম। যেখানে বিভিন্ন ধরনের ম্যাজিক দেখানো হচ্ছিল। কিছু টাকার বিনিময়ে সেই ম্যাজিকের জিনিসগুলো বিক্রি করা হচ্ছিল এবং ক্রেতাদের ম্যাজিকও শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছিল তারা কিভাবে সেই ম্যাজিকটি করবে । সেখানে আমি বান্ধবীর সাথে ঘুরে ঘুরে অনেকটা সময় মেলার সবকিছু দেখি। মেলার মধ্যে খাবারের কোয়ালিটি আমার একটু খারাপ লেগেছিল এই জন্য মেলার মধ্যে থেকে কোন কিছু খাইনি। সবকিছু ঘুরে ঘুরে ইনজয় করেছিলাম, মানুষ কোথায় কি করছে, কি কিনছে সেসব দেখতে বেশ ভালোই লাগছিল।
আরেকটা কথা বলতে তো ভুলেই গেছিলাম মেলাতে গিয়ে আমি রিং খেলেছিলাম। কুড়ি টাকার বিনিময়ে পাঁচটি রিং নিয়ে সামনে রাখা জিনিসের উপর ফেলতে হবে, সেই রিং ছুঁড়ে দেওয়ার পর সামনে রাখা জিনিস গুলোর মধ্যে যে জিনিসটি সেই রিংয়ের মধ্যে চলে আসবে সেই জিনিসটা আমার হয়ে যাবে। পাঁচটি রিং নিয়ে ট্রাই করার পরও আমার রিংয়ের মধ্যে কোন কিছুই আনতে পারিনি অর্থাৎ কুড়ি টাকা সম্পূর্ণই আমার লস গেছিল সেইখানে। টাকার লস হলেও সেই বিষয়টা আমি অনেকটাই ইনজয় করেছিলাম। মেলার মধ্যে আমি মোটামুটি এক ঘন্টার মত সময় অতিবাহিত করেছিলাম। মেলা থেকে বের হওয়ার পূর্বে বাড়ির জন্য ৫০ টাকার বাদাম কিনে নিয়েছিলাম আমি আর বান্ধবীর জন্য ৪০ টাকার জিলাপি কিনে দিয়েছিলাম। এইভাবে আমার সেই দিন মেলা ঘোরাঘুরি সম্পন্ন হয়।
ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: মধ্যমগ্রাম স্টেশন ,নর্থ ২৪ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
রাসের মেলায় ঘোরাঘুরি করা নিয়ে শেয়ার করা আজকের ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানাতে পারো । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।
রাসের মেলা ভ্রমণ করে চমৎকার কিছু মুহূর্ত আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দাদা। আমি তো এটা শুনেই অবাক হয়ে যাচ্ছি এখানে প্রত্যেক বছর ১৫ দিনের জন্য মেলা করা হয়। মেলাতে রিং ফেলার এই খেলাটি মেলার মজা আরও বৃদ্ধি করে দেয়।
হ্যাঁ ভাই ১৫ দিনব্যাপী এই মেলা অনুষ্ঠিত হয় এবং মেলার ১৫ দিনই প্রচন্ড ভিড় দেখা যায় এই জায়গায়।
খুব সুন্দর মেলার দৃশ্যাবলী। তোমার এই ছবি দেখে মনে পড়ে গেল বেশ কয়েক বছর আগে আমিও এই মেলায় গেছিলাম। মধ্যমগ্রামে দিদি বাড়ি হওয়ার সুবাদে এই রাসের মেলা বেশ কয়েকবার দেখেছি। ধন্যবাদ ভাই সেই স্মৃতি আবার জাগিয়ে তোলার জন্য।
আপনি যেহেতু এই মধ্যমগ্রাম মেলাতে কয়েক বছর আগে এসেছিলেন তাহলে এটা নিশ্চয়ই জানেন এখানে কি পরিমান ভিড় হয়? অল্প জায়গার মধ্যে মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকলেও খুবই ভিড় হয়ে থাকে এখানে।
মেলাতে খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। মেলাতে কাটানো অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুবই অসাধারণ ছিলো। আসলে মেলায় মানে বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি হাসি আনন্দ। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
হ্যাঁ ভাই মেলায় গিয়ে খুবই সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলাম। সুন্দর গুছিয়ে কথাগুলো বলার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।