ট্রাভেল || নতুন বছরের শুরুতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ঘুরতে যাওয়া।
নমস্কার সবাইকে,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ঠিক আছি। আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ঘুরতে যাওয়া নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো। |
---|
এই শীতের সময় আমাদের সবারই কমবেশি ঘোরাঘুরির প্ল্যান থাকে। প্রতিবছর এই শীতের সময় আমি আমার বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাই। শীতের শুরুতে আমি বাংলাদেশে ছিলাম সেইজন্য কলকাতার অনেক জায়গায় এবার ঘুরতে যাওয়া হয়নি। তবে কলকাতায় আসার পর বন্ধুদের সাথে প্ল্যান করতে থাকি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য। বর্তমানে এখানে বেশি বন্ধুবান্ধব নেই তাই একটি বন্ধুর সাথেই প্ল্যান করেছিলাম নতুন বছরের শুরুতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল যাওয়ার জন্য ।
প্ল্যান অনুযায়ী , ১ জানুয়ারি আমি এবং আমার সেই বন্ধু বাড়ি থেকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের উদ্দেশ্যে রওনা করি। কলকাতার খুবই নামকরা জায়গায় এটি। এর আগেও আমি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে কয়েকবার ঘুরতে গেছি। বেশ ভালই লাগে আমার কাছে এই জায়গাটি। ১ জানুয়ারী দুপুরের দিকে আমি এবং আমার বন্ধু আমাদের প্ল্যান করা রাস্তা ধরেই চলে যাই এই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে। তবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে প্রবেশের পূর্বে আমরা দুইজনেই অবাক হয়ে যাই প্রথম বার এরকম একটা দৃশ্য দেখে! ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের টিকিট কাউন্টারের জায়গা থেকেই প্রায় ১/৪ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে শুধু টিকিট নেওয়ার লাইন ছিল। আমি জীবনে প্রথম বারই এত লোকের লাইন দেখলাম সেখানে গিয়ে। এইসব দেখে আমি কিছু সময় নিরব দর্শকের মত তাকিয়ে থাকি মানুষের ভিড়ের দিকে।
বছরের প্রথম দিন এখানে ঘুরতে যাওয়ার ব্যাপারটা তখন হতাশা জনক মনে হয় আমার কাছে। কারণ এত লোকের মধ্যে কোন অবস্থাতেই ভালোভাবে ঘুরে দেখা সম্ভব না। শুধু ভিড়ের ধাক্কাধাক্কির মধ্যেই সময় চলে যাবে, ভালো করে কিছু আর দেখা যাবে না। তবে আমার সাথে যে বন্ধু ছিল সে লাইনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে টিকিট কাটার জন্য। প্ল্যান এমন ছিল ৪০ মিনিটের মধ্যে টিকিট কাটতে পারলে ভিতরে গিয়ে ঘুরে আসবো আর সেটা না হলে ভিতরে প্রবেশ করবো না। যাইহোক, বন্ধু লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে আর আমি আশেপাশের সবকিছুর ফটোগ্রাফি করা শুরু করে দেই। কারণ আমার তখন কেন জানি মনে হয়েছিল এত লোকের ভিড়ে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল শেষ পর্যন্ত ঘুরতে পারবো না । তাই বন্ধুকে লাইনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে আমি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর যে প্রধান গেটের সামনে চলে আসি।
হাজার হাজার মানুষের ভিড় আমি সেদিন সেখানে গিয়ে দেখতে পেরেছিলাম। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর গেট এর কাছেও অনেক মানুষের ভিড় ছিল। যা শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলোর মধ্যে তোমরা দেখতে পাবে। আমি আগে যতবার এখানে এসেছি, জীবনে কখনো এত ভিড়ের দেখা পায়নি। এই প্রথমবারই এরকম সারপ্রাইজ হওয়ার মতো ভিড়ের দেখা পেলাম আমি। শেষ পর্যন্ত আমার বন্ধুও লাইন থেকে চলে আসে আমার কাছে। কারণ সেও এত লোকের ভিড়ের মধ্যে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ভিতরে সেদিন ঘুরতে চাইছিলো না। তারপর আর কি! দুই বন্ধু ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ভিতরে না গিয়ে, সামনেই ঘোরাঘুরি করলাম। প্রধান গেটের সামনে থেকেই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল স্পষ্ট ভাবে দেখা যায় তাই সেখানে দাঁড়িয়ে আমরা অনেক ফটোগ্রাফি করি এবং ঘোরাঘুরি সম্পন্ন করি।
সত্যি কথা বলতে কলকাতার মানুষকে সব সময় কাজের উপর থাকতে হয়। তাই কখনো ছুটির দিন পেলে একসাথেই হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমে যায় কলকাতার ভ্রমণের জায়গাগুলোতে। ১ জানুয়ারিতে, এই জন্যই হয়তো ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে এত ভিড় বেশি হয়েছিল । যাইহোক, এই ছিল আমার আজকের ব্লগ।