ক্রিয়েটিভ রাইটিং || গল্প: খেঁকশিয়ালের পিকনিক (পর্ব-০১)
বন্ধুরা,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমি মোটামুটি ভালোই আছি তবে আমার একটু ঠান্ডা লেগেছে । আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "খেঁকশিয়ালের পিকনিক" । গল্পটির প্রথম পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক। |
---|
সুন্দরবনের কাছাকাছি অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রামের নাম খলসিপুর। এই গ্রামে মোটামুটি ৫০টা পরিবার একসাথে বসবাস করে। তারা সবাই খুবই শান্তিতে থাকে এখানে। শহরের কোলাহল থেকে নিরিবিলি এক গ্রাম এটি। তবে ইদানিং সবাই লক্ষ্য করছে এই গ্রামটিতে শিয়ালের উৎপাত খুব বেড়ে গেছে। দিনে রাতে সব সময় শিয়াল ঘোরাঘুরি করছে বাড়ির আশেপাশে এবং সুযোগ পেয়ে বাড়ির হাঁস মুরগি ধরে নিয়ে চলে যাচ্ছে । সেই সাথে বাড়ির রান্না করা খাবারও খেয়ে নিচ্ছে। শিয়াল গুলোর সাহস অনেকটা বেড়ে গেছে যা মনে হচ্ছে এইসব দেখে।
গ্রামবাসী শিয়াল যে কিভাবে প্রতিরোধ করবে তার উপায় খুঁজে পাচ্ছে না। আর যেহেতু শিয়াল গুলো সব সময় দলবদ্ধ ভাবে চলে সেজন্য গ্রামের মানুষ অনেকটা ভয়েই রয়েছে। তারা শিয়াল মারার মতো এরকম কাজও করতে পারবে না কারণ শিয়াল সবসময় দলবদ্ধ ভাবে আক্রমণ করে দেয়। সেজন্য শিয়ালের এই অত্যাচার গুলো নিয়মিত ভাবেই তাদের মেনে নিতে হচ্ছে।
ছোট্ট এই গ্রামের সুনীল মন্ডলের ছেলের নাম বিজয় মন্ডল। বয়স তার খুব বেশি না। এই ১১ থেকে ১২ বছরে পা দিয়েছে। সে খুবই দুরন্ত, কারো কোন কথাই শোনে না। নিজের মত কাজ করে বেড়ায়, পড়াশুনার প্রতি তার একদমই মন নেই। তবে পড়াশোনা বাদ দিয়ে টাকা ইনকামের প্রতি তার একটু আগ্রহ বেশি। সে বিভিন্ন ধরনের কাজ খুঁজে নিচ্ছে টাকা ইনকামের জন্য। মাঝে মাঝে গ্রামের বড় ছেলেদের সাথে কাজ করতেও যায় এবং সেখানে সারাদিন কষ্ট করে ২০০ টাকা করে ইনকাম করে আনে মাঝে মাঝে। তার এই কাজকর্ম দেখে বাড়ির লোকজনও অনেক চিন্তিত।
বিজয় অনেক সাহসীও বটে। সে দিনে রাতে যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়। জঙ্গলে যেতেও তার ভয় করে না। রাতে অনেকবার শিয়ালের তাড়াও সে খেয়েছে তবে তার এসব নিয়ে কোন পরোয়া নেই। সে তার মতো করে চলতে পছন্দ করে। একবার বিজয় টানা তিন দিন কষ্ট করে ৬০০ টাকা জমিয়েছিল এবং সেই টাকা দিয়ে মুরগি কিনে নিয়ে আসে বাড়িতে পিকনিক করে খাওয়ার জন্য। কষ্ট করে টাকা ইনকাম করে মুরগি কিনে আনাতে বাড়ির লোকজনও কিছুটা খুশি হয়েছিল তার উপর তবে তারা চায়নি সে এভাবে কষ্ট করে টাকা ইনকাম করুক। তারা চায় বিজয় পড়াশোনা করে মানুষের মত মানুষ হোক। তবে তাই নিয়ে বিজয় ভাবে না।
যাইহোক, মুরগি কিনে তার মায়ের কাছে এনে দেওয়ার পর তার মা যত্ন করে সেই মুরগি কেটেকুটে রাখে দুপুরে রান্না করে দেবে সেই জন্য। তবে সেদিন দুপুর বেলায় বিজয় আবার বন্ধুদের সাথে প্ল্যান করে অন্য কোথাও ঘুরতে যায় এবং তার মাকে বলে যায় এই মাংস রান্না করে রাখতে যা সে রাতে এসে খাবে। তার কথামতো তার মাও এই কাজ করে। রাতে সেই মুরগির মাংস রান্না করে রান্নাঘরে তুলে রেখে দেয় বিজয়ের জন্য ।
চলবে...
আসল আগ্রহটাই তো রেখে দিলেন, বিজয় যে মুরগি কিনে এনেছিল বন্ধুদের সাথে খাবে বলে সে মুরগিটা তার মায়ের কাছে রান্নার জন্য দিয়েছিল তার মাঝে তো রান্নাঘরে তুলে রেখেছিল বিজয়ের জন্য তাই সেটা বিজয় আসার পরে অবশিষ্ট ছিল নাকি শেয়াল হামলা করেছিল সেটাই এখন জানার ইচ্ছা রয়ে গেল।
গল্পের আগ্রহটা ইচ্ছা করেই একটু রেখে দিলাম ভাই🤭! সামনের পর্বেই পুরো ঘটনাটি জানতে পারবেন ভাই।
আসলে আপনার গল্পটা মনযোগ দিয়ে পড়ছিলাম। তবে এমন জায়গা শেষ করলেন পরবর্তী পর্ব পড়ার আগ্রহ বেড়ে গেল।যাইহোক মাংস গুলো খাওয়া হলো কিনা বিজয়ের। আশা করি শীঘ্রই পরবর্তী পর্বে নিয়ে হাজির হবেন।
মাংস গুলো বিজয়ের খাওয়া হলো কিনা সেটা পরের পর্বেই জানতে পারবেন আপু 🤭🤪। গল্পের সাসপেন্স টা একটু রেখে দিলাম ইচ্ছা করেই😶।