শৈশবে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা : একশত টাকা (পর্ব -০১)

in আমার বাংলা ব্লগlast year

বন্ধুরা,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে আমার শৈশবে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার প্রথম পর্ব শেয়ার করবো।

rupee-g2fa4e1666_640.jpg

ইমেজ সোর্স

শৈশব আমাদের জীবনের এমন একটা পর্যায় যেখানে হাজারো ঘটনা ঘটে এবং সেগুলো স্মৃতির পাতায় জ্বলজ্বল করে ভেসে ওঠে জীবনের অন্যান্য পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় । স্মৃতিগুলোর মধ্যে কিছু স্মৃতি হয় তিক্ত এবং কিছু হয় সুন্দর। এই স্মৃতিগুলো মনে করলে একটা অন্য জগতের মধ্যে চলে যাওয়া যায়। এই স্মৃতি গুলো যখন বসে বসে মনে করা হয় তখন তিক্ত স্মৃতিও অনেকটা মধুর মত লাগে। আমার শৈশবের কিছু সময় গ্রামে এবং কিছু সময় শহরে কেটেছে । ক্লাস থ্রি পর্যন্ত আমি গ্রামেই কাটিয়েছি। তারপর বাবার চাকরির সুবাদে শহরে যাওয়া হয় । যাই হোক শহরে যাওয়ার পর আমার জীবনের ছোট্ট একটি স্মৃতিচারণ নিয়ে আজকের এই ঘটনা।

গ্রাম থেকে শহর আসার পর আমি প্রথম ক্লাস ফোরে ভর্তি হই। এই ফোরে থাকার সময় জীবনে অনেক ঘটনা ঘটেছে। তবে আজকের ঘটনাটি ২০০৭ সালের, যখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি। আমার বয়স তখন ১০ বছরের মত হবে। সেই সময়টাতে আমাকে বাড়ি থেকে প্রতিদিন হাত খরচ বাবদ ২ টাকা করে দিত। তাই নিয়ে আমি মহা খুশি হয়ে স্কুলে যেতাম । সেই সময় বাড়ি থেকে দুই টাকা আদায় করাই আমার জন্য চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল। কোনদিন যদি পাঁচ টাকা আদায় করতে পারতাম সেই দিন মহা খুশি হয়ে স্কুলে যেতাম । সেই সময়টাতে পুজোয় হাত খরচ হিসেবে দেওয়া হতো ১০০ টাকা, এই ১০০ টাকা আমার কাছে বর্তমান হিসাব করলে ১০ হাজার টাকার সমান ছিল।

সাধারণত পুজোর আগে দিন এই ১০০ টাকা দিত পুজোর পাঁচ দিন চলার জন্য । আমি এখানে আমাদের সব থেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজোর কথাই বলছি। যাই হোক সেই বছর পুজোর টাকা আমি বাড়ি থেকে প্রায় পুজোর পাঁচ দিন আগে আদায় করে নিয়েছিলাম । এই ১০০ টাকা হাতে পেয়ে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি এমন ভাব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম আমি। বাড়ি থেকে এই ১০০ টাকা আদায় করার পর আমি এত খুশি হয়েছিলাম যে সেই টাকা আমি বাড়িতে রেখেও কোথাও যাচ্ছিলাম না, বাড়ির লোক আবার যদি পুনরায় এই টাকা নিয়ে নেয় এই ভয়ে । সেদিন স্কুলও ছিল আমার তাই আমি এই ১০০ টাকা সাথে করে নিয়ে গেছিলাম স্কুলে।

আমি স্কুলে গিয়ে আমার কয়েকজন বন্ধুকে এই ১০০ টাকা দেখেছিলামও আর বলেছিলাম আমাকে পুজোর হাত খরচ বাবদ এত টাকা দিয়েছে। সেই দিন টিফিনের সময় আমি সেই ১০০ টাকা আমার একটি বইয়ের মধ্যে লুকিয়ে রেখে আমি বাড়িতে গেছিলাম টিফিন খাওয়ার জন্য। স্কুল থেকে বাড়ির দূরত্ব খুব একটা বেশি দূরে না থাকার কারণে আমি ভেবেছিলাম বাড়ি যাব আর ১৫ মিনিটের মধ্যে আবার চলে আসব তাই টাকা টা আর সাথে নিয়ে যাইনি ।

চলবে...

আজকে শেয়ার করা শৈশবে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার প্রথম পর্ব তোমাদের কেমন লাগলো তা জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 last year 

আপনার শৈশবের গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগল। সত্যি ভাইয়া আগের ১০০ টাকা আর এখন ১০,০০০ টাকার সমান।যাইহোক পূজোর টাকা গুলো বাড়িতে না রেখে স্কুলে টিভিন খেতে এসে কি হলো, সেটা জানার অপেক্ষায় থাকলাম। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 last year 

টাকা টা স্কুলে রেখে বাড়িতে যখন টিফিন খেতে এসেছিলাম তারপর যা ঘটেছিল পরের পর্বের মাধ্যমে তা অবশ্যই জানতে পারবেন আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58544.56
ETH 2629.02
USDT 1.00
SBD 2.44