কালীপুজোর দুইদিন আগে "সন্ধানী ক্লাবের পুজো প্যান্ডেল" তৈরির কাজ দেখতে যাওয়া।
প্রিয় বন্ধুরা ,
তোমরা সবাই কেমন আছো ? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও অনেক অনেক ভালো আছি। |
---|
আজকের ব্লগে প্রথমেই সবাইকে স্বাগতম জানাই। কয়েকদিন আগের একটি ব্লগে আমি কালীপুজোর প্রস্তুতি নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলাম। সেই ব্লগ আমি জানিয়েছিলাম কালীপুজোর দুইদিন আগে আমি বেরিয়েছিলাম পুজোর প্রস্তুতি কোথায় কতদূর হল তা দেখার জন্য। সেদিন আমি প্রথমে যে পুজো প্যান্ডেলটিতে গেছিলাম সেটি ছিল নবপল্লী বয়েজ স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত "আমরা সবাই ক্লাব" আয়োজিত "কর্নাটকের কোটিলিঙ্গেশ্বর মন্দির" দেখতে। তারপর আমি যে প্যান্ডেলের প্রস্তুতি দেখতে গেছিলাম সেটি হল বারাসাতের সন্ধানী ক্লাবের পুজো প্যান্ডেল। আজ এই সম্পর্কে কিছু কথা শেয়ার করব।
"আমরা সবাই ক্লাব" আয়োজিত পুজো প্যান্ডেল প্রস্তুতিটি দেখে আমি একটু বারাসাতে গেছিলাম কিছু কাজ ছিল সেই কাজগুলো করার জন্য। সেখান থেকে নতুন একটি মোবাইলের সিম তোলার জন্য পাশের একটি জায়গাতে যাই। সেখানে যাওয়ার পর আমার এক বন্ধু আমাকে ফোন করে এবং আমি কোথায় আছি জানতে চায়। তখন তাকে আমি জানাই ,নতুন একটি সিম তোলার জন্য আমি বারাসাতের একটি জায়গায় এসেছি। তখন সে আমায় জানায় তারও একটি সিম তোলার দরকার আছে এবং সে সিম তোলার জন্য বারাসাতে সেই জায়গায় আসছে। তার ঐ কথা শুনে কিছুসময় আমি তার জন্য অপেক্ষা করি। কুড়ি মিনিট পরে সে আমি যেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম সেইখানে চলে আসে। সেখানে সে আসার পর সেইখান থেকে আমরা সিমের কাজ মিটিয়ে দুজনে প্ল্যান করি কোথাও গিয়ে পুজো প্রস্তুতি দেখে আসবো। তখন সে আমায় জানায় সন্ধানী ক্লাবের পুজো প্যান্ডেল প্রস্তুতি দেখতে যাওয়া যেতে পারে। আমরা যেখানে ছিলাম সেইখান থেকে কিছুদূর পায়ে হেঁটে যাওয়ার পথ ছিল সেই সন্ধানী ক্লাব। তাই আমরা দুই বন্ধু গল্প করতে করতে পায়ে হেঁটে কিছু সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম সেই জায়গাটিতে।
সেখানে গিয়ে রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম আমরা! পুজোর আর দুই দিন বাকি কিন্তু পুজো প্যান্ডেলের অনেক কাজ এখনো শেষ হয়নি তাই দেখে। সেইখানে যারা কাজ করছিল তাদের সাথে গিয়ে কথা বললাম আমরা কিছু বিষয় জানার জন্য । তাদের আমরা জিজ্ঞেস করলাম তারা আর দুই দিনের মধ্যে কি করে পুজো প্যান্ডেলের কাজ শেষ করবে? তখন তারা জানায় তাদের এই দুইদিন ২৪ ঘন্টা করে একটানা কাজ করতে হবে, না হলে পুজো প্যান্ডেলটি কমপ্লিট করতে পারবে না। সেখানে বড় করে পাহাড় তৈরির কাজ চলছিল। পাহাড় তৈরীর উপরের অংশ বাদে বাকি অংশগুলো মোটামুটি কমপ্লিট হয়ে গেছিল । তারা সেই অংশগুলোতে রঙ দেয়ার কাজ করছিল সেই সময়। আমরা সেখানে গিয়ে দেখলাম আমাদের মত আরও অনেকেই এসেছিল এই পুজো প্যান্ডেল তৈরির কাজ দেখতে। পুজোর আগে এইসব প্যান্ডেল তৈরির কাজ দেখতে গেলে একটা আলাদা মজা পাওয়া যায়। যাইহোক পুজো প্যান্ডেল তৈরীর কাজ দেখতে দেখতে আমরা সেখানকার ওয়ার্কারদের সাথে কথা বলা শুরু করলাম এবং এই প্যান্ডেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করলাম।
যেহেতু আমি আগে থেকে জানতাম না এইখানে কোন ধরনের থিম করা হবে তাই আমার আগ্রহ অনেকটাই বেশি ছিল এই সম্পর্কে জানার। বারাসাতের মধ্যে সন্ধানী ক্লাব খুব সুন্দর করেই প্রত্যেক বছর কালীপুজোর প্যান্ডেল করে। ওয়ার্কারদের মাধ্যমে আমি জানতে পারলাম তাদের এবারের বছরের পুজোর থিম হল "মা আসছে এবার লিফটে করে" । আমি কৌতুহলী হয়ে তাদের কাছে জিজ্ঞেস করে বসলাম এই পুজো প্যান্ডেলটি তৈরি করতে কত খরচ হচ্ছে? তারা জানায় এ বছর ৩০ লক্ষ টাকারও অধিক টাকা এই পুজো প্যান্ডেলটি তৈরি করতে খরচ করা হচ্ছে। তাদের এ বছর ৬২ তম বর্ষের পুজো ছিল। অনেক পুরাতন একটি ক্লাব এটি এবং অনেক বছর ধরে তারা খুব সুন্দর করে এই পুজো পালন করে আসছে। তারা আরো জানায় দুর্গাপুজো শেষ হওয়ার পর পরই তারা কালীপুজোর প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু করেছে আর এখনো সেই কাজ চলছে। যাইহোক সেখানে তাদের সাথে এইসব কিছু বিষয় আলোচনা করে আমি এবং আমার বন্ধু আবার গল্প করতে করতে বাড়ির দিকে চলে আসি।
ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: বারাসাত ,নর্থ ২৪ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
আমাদের এইখানে পুজো প্যান্ডেল করতে কোটি টাকাও খরচ করে থাকে। খুবই চোখ ধাঁধানো প্যান্ডেল করে, টাকার চিন্তা একদম করেই না প্যান্ডেলের কর্তৃপক্ষরা। কোনদিন এইখানে এসে এই পুজো প্যান্ডেল গুলো দেখলে সত্যি অবাক হয়ে যাবে ভাই।
আপনার কালীপুজোর প্যান্ডেলের পর্বটা আমি দেখেছিলাম। সন্ধানী পূজো নামটা আমার কাছে নতুন। আসলে আপনাদের এত বেশি পুজো সবকিছু একেবারে গুলিয়ে যায়। যদিও সিম কার্ড তোলার উদ্দেশ্যে পূজা প্যান্ডেলটি দেখা হল। কিন্তু এই পূজোর প্যান্ডেলটি দেখে তো একদম অবাক হলাম। তার উপর আবার ৩০ লক্ষ টাকা খরচ অনেক বেশি টাকা। যেখানে এত টাকা খরচ করা হচ্ছে সুন্দর না হয়ে কোথায় যাবে। আমার কাছে তো দেখেই ভালো লাগছে। তার উপরে আবার টানা ২৪ ঘন্টা করে দুইদিন কাজ করে শেষ করবে। এই ব্যাপারগুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে।
খুবই গুছিয়ে কথাগুলো বলার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে। আপনি পুরো ব্লগ টি খুব সুন্দর ভাবে পড়ে কমেন্ট টি করেছেন বুঝতে পারলাম। আমাদের এইখানের পুজো প্যান্ডেলগুলো তৈরী করতে এ রকমই টাকা খরচ করে থাকে সবসময়।