গভীর রাতে শিয়ালের সাথে দেখা
নমস্কার সবাইকে,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও খুব ভালো আছি। আজকে নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম। |
---|
শৈশব আমার গ্রামে কেটেছে । ক্লাস ফোর পর্যন্ত আমি গ্রামে বড় হয়েছি তারপর শহরে আমার বেড়ে ওঠা। শৈশবে যখন গ্রামে থাকতাম কয়েকবার শিয়াল দেখার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছিল অনেক কাছ থেকে। বেশ কিছুদিন আগে তোমাদের সাথে তাল কুড়ানো নিয়ে একটি ব্লগ শেয়ার করেছিলাম। সেখানে শিয়াল দেখার অভিজ্ঞতার কথাও শেয়ার করেছিলাম। তারপর এত বছর কেটে গেছে আর কোনদিনও সামনাসামনি শিয়াল দেখার অভিজ্ঞতা হয়নি। যাইহোক আমার পূর্বের শেয়ার করা দুটি ব্লগে তোমাদেরকে জানিয়েছিলাম আমি বাংলাদেশের একটি গ্রামে ভ্রমণ করার জন্য এসেছি আমরা এক আত্মীয়র বাড়িতে।
এখানে আসার পর ভালোভাবে ঘোরাঘুরি করার সুযোগ হচ্ছে না বৃষ্টির কারণে । বৃষ্টিতে বাড়ির মধ্যেই আটকে থাকতে হচ্ছে । এবার আসল কথায় আসি। অধিকাংশ গ্রামের বাড়িতে ওয়াশরুম বাড়ির বাইরে থাকে এটা হয়তো তোমরা কমবেশি সবাই জানো। আমি যে বাড়িতে ঘুরতে এসেছি সে বাড়িতেও ওয়াশরুমে বাড়ির অনেকটা দূরেই ছিল, অনেকটা বাগানের মধ্যে আর কি। গ্রামের অনেক বাড়িতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকলেও বাইরের ওয়াশরুম পর্যন্ত বিদ্যুতের কোন ব্যবস্থা থাকে না। সেজন্য রাতের বেলা ওয়াশরুমে যাওয়া অনেকটা সমস্যার ব্যাপার।
যাইহোক আমি যেহেতু লাইফের অধিকাংশ সময় শহরে বসবাস করেছি তাই আমার কাছে বাইরের ওয়াশরুমে যাওয়াটা অনেকটা ঝামেলা লাগে। তারপরও যখন গ্রামে ঘুরতে এসেছি তাই গ্রামের মতো করেই চলতে হবে এটাই স্বাভাবিক। গতকাল রাত দুটোর সময় হঠাৎ করে ওয়াশরুম যাওয়ার জন্য আমাকে বাইরে যেতে হয়েছিল। আর এর জন্য আমি লাইট নিয়ে বাড়ি থেকে কিছুটা বাইরে যেখানে ওয়াশরুম ছিল সেখানে যাই। ঘুম থেকে যখন উঠেছিলাম রাতের বেলা, তখন দূরে শিয়ালের ডাক শুনতে পাচ্ছিলাম। যে কয়দিনে গ্রামে ঘুরতে এসেছি প্রতিদিন রাতেই এই শেয়ালের ডাক শুনতে পেয়েছি আমি। মূলত সন্ধ্যা থেকেই তাদের ডাক শুরু হয় , ভোর রাতেও অনেক সময় তাদের এই ডাক শোনা যায়। যাই হোক গতকাল রাতে ওয়াশরুমের একদম পাশেই দেখি চার থেকে পাঁচটি শিয়ালের এক ঝাঁক এসে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই শিয়ালগুলো সাধারণত গ্রামের বাড়ির পোষা হাঁস মুরগি চুরি করে নেওয়ার জন্যই আসে।
আমি যে বাড়িতে বর্তমানে আছি সেই বাড়ির পাশেই হাঁস মুরগির ফার্ম রয়েছে। এগুলো খাওয়ার লোভে মূলত তারা এখানে আসে। যাই হোক, একসাথে এতগুলো শিয়াল দেখে আমি প্রথম অবস্থায় একটু ভয় পেয়ে যাই। তবে লাইট মারার সাথে দেখি তারা কিছুটা দূরে চলে যায়। আমি হঠাৎ করে চিৎকার করতে গিয়েও চিৎকার করি নি তখন। কিছুটা সাহস নিয়ে চুপ করে ছিলাম। কয়েক সেকেন্ড পর আমি তাদেরকে জোরে তাড়া দিই। তাড়া দিলে দেখি শিয়াল গুলো দূরে পালিয়ে যায়। তারাও মানুষের ভয় সাধারণত পেয়ে থাকে। এমন গভীর রাতে একা একা এতগুলো শিয়ালের সাথে দেখা হওয়া সত্যি একটা ভয়ের ব্যাপার ছিল কারণ এগুলো হিংস্র প্রাণী। যে কোন সময়, যে কারোর ক্ষতি তারা করতেই পারে। তবে গত কালকে কোন সমস্যা হয়নি আমার সাথে। বাংলাদেশে ঘুরতে এসে এমন একটি অভিজ্ঞতা হবে বুঝতে পারিনি। রাতের এই ব্যাপারটা সেই বাড়ির অন্য কাউকে এখনো শেয়ার করিনি। প্রথমেই তোমাদের সাথে বিষয়টা শেয়ার করে নিলাম।
আমার তো পোস্ট পড়েই ভয় লাগছে। আর আপনি এত অন্ধকার রাতে কি করে এতগুলো শিয়াল দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পেরেছেন সেটাই ভাবছি। আমারও কিন্তু বসবাস শহরে, আর তাই তো আপনার পোস্ট পড়ে ভাবছি যে আমি যদি কোন দিন শিয়াল দেখি তাহলে কি করবো তখন? হি হি হি
আপু যদি কোনো দিন শিয়াল দেখেন তাহলে শিয়ালের মতো করে ডাক শুরু করে দেবেন, ওরা ভয়ে এমনিই পালাবে।🤭🤭
আসলে ভাইয়া এখন গ্রাম আর গ্রাম নেই বলেই চলে। আপনি কেমন বাড়িতে আছেন সেটা হয়তো আমার জানা নেই। তবে আমরাও গ্রামে থাকি আমাদের ওয়াশরুম সবকিছুই ভিতর রাতে বাইরে বের হতে হয় না। যাইহোক আপনি বেড়াতে এসে কাছ থেকে শেয়াল দেখেছেন, সত্যি হঠাৎ করে দেখলে ভয় লাগারি কথা। যাইহোক আমি কিন্তু এখন পর্যন্ত কাছ থেকে শেয়াল দেখিনি। শুধু শেয়ালের ডাক শুনেছি।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
আপু শিয়ালের ডাক আমি আগেও অনেকবার শুনেছি তবে সামনাসামনি ৩ বার সুযোগ পেয়েছি শিয়াল দেখার।
শুনেতো আমার গায়ের লোম দাড়িয়ে যাচ্ছে। এত রাতে একসঙ্গে অনেকগুলো শিয়াল দেখলে তো ভয় পাওয়ারই কথা। তারপরও আপনি সাহস করে শিয়াল তাড়ানোর চেষ্টা করেছেন জেনে ভালো লাগলো। শিয়াল হয়তো মুরগির খামারের জন্যই এখানে এসেছিল। আপনার জন্য মুরগিগুলো বেঁচে গেল।
হ্যাঁ আপু, শেয়াল গুলো মুরগির খামারের জন্যই এসেছিল। ওইদিন আমার জন্য মুরগি গুলো বেঁচে গেলেও ফার্ম মালিক আমাকে উপহার হিসেবে একটাও মুরগি দিই নি। 🤣🤣
শেয়ালের আনাগোনা প্রচুর গ্রামে।আপনি টয়লেটে যাওয়ার সময় শেয়ালের সাথে দেখা হয়েছিল। ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক। আর শেয়াল সত্যি হিংস্র প্রাণী।কামড়ে দেয়নি এটা আপনার ভাগ্য ভালো।ধন্যবাদ পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
আগে গ্রামে এত শিয়ালের দেখা পাওয়া যেত না, এখন শুনছি সব জায়গাতে শিয়ালের উৎপাত বেড়েছে।
অনেক বেশি হিংস্র একটা প্রাণী । সন্ধ্যার পরে শিয়ালের ডাক শোনা যায় বেশিরভাগ জায়গায়। আপনি তো দেখছি বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছিলেন আপনার এক আত্মীয়ের বাড়িতে। আর তাদের বাড়ি গ্রামে হওয়ার কারণে ওয়াশরুমটা ঘর থেকে অনেকটা দূরে ছিল। তবে এখন তো এরকম একেবারেই দেখা যায় না। কারণ এখন সবগুলো ওয়াশরুম ঘরের মধ্যেই থাকে। ওয়াশরুমে যাওয়ার সময় আপনি এতগুলো শিয়ালের দেখা পেয়েছিলেন, শুনেই তো আমার ভয় পেয়েছে। ভাগ্য ভালো শিয়াল গুলো কিছুই করেনি। যাই হোক সময়টা আশা করছি ভালোই কাটাবেন আপনার সেই আত্মীয়ের বাড়িতে।
গ্রামে বর্তমানে শিয়ালের দেখা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এখন এই কমেন্ট করতে করতেই শিয়ালের ডাক শুনতে পাচ্ছি গ্রামের সেই বাড়ি বসে।