দৌড়ের উপর

in আমার বাংলা ব্লগlast year
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও মোটামুটি ঠিক আছি।

আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম। আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে চলমান জীবনের দৌড়াদৌড়ি নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো।

20230811_140452.jpg

20230811_140441.jpg20230811_140448.jpg

এত দিনে যা বুজলাম জীবনের কোন পর্যায়ে এসে বসে থাকার কোন সময় নেই। ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। স্কুল জীবন শেষ করা, কলেজ জীবন শেষ করা তারপর চাকরির জীবন, এভাবে সবসময় দৌড়ের উপরেই থাকতে হয়। তারপর আরেকটু বড় হলে সংসারের দায়িত্ব, সংসারের পেছনে দৌড়াদৌড়ি। আমাদের ফ্যামিলি বাদেও আত্মীয়-স্বজনদের জন্যও দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। এই দৌড়াদৌড়ির শেষ যেন কখনোই নেই। এত কিছুর মাঝে নিজের জন্য একটু সময় বের করা এখন মুশকিল হয়ে পড়েছে। বয়স কুড়ি থেকে পঁচিশ পার করার পর থেকেই সবাই কেমন আমাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

20230811_140439.jpg

20230811_140429.jpg20230811_140336.jpg

কারো কোন সমস্যা হলে সেটা দেখা, কাউকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া , সংসারের সব কাজকর্ম দেখা, বাজার ঘাট করা ইত্যাদি কাজগুলো তো পরিবারের জন্য প্রতিনিয়ত করতে হয় । তা বাদেও আত্মীয় স্বজন যারা রয়েছেন তাদের জন্য যে দৌড়াদৌড়ি কম করতে হয় তা না! তারা কোথাও থেকে ঘুরতে আসলে তাদেরকে এগিয়ে নিয়ে আসা, পুনরায় তাদের এগিয়ে দিয়ে আসা, বাড়িতে আসার পরে কোথাও ঘুরতে যেতে চাইলে তাদের নিয়ে ঘোরাঘুরি এভাবে দৌড়ঝাঁপ জীবনের একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এইতো কয়দিন আগে একজন আত্মীয়কে নিয়ে আসলাম। তারা ঘুরে চলে যাওয়ার পরে পুনরায় অন্য আরেক জন আত্মীয়কে আমার আনতে যেতে হয় হাওড়া। আমি জার্নি করতে খুব একটা ভালোবাসি না তবে এই জার্নি আমাকে নিয়মিত করেই যেতে হয় ।

20230811_140306.jpg

20230811_140303.jpg20230811_140319.jpg

দুই দিন আগেই আমাকে হাওড়া স্টেশনে ছুটতে হলো রাজস্থান থেকে আমার এক আত্মীয় আসবে তাকে আনার জন্য। রাজস্থান থেকে কলকাতা অনেক দূরের পথ। সে ৪০ ঘণ্টার মতো জার্নি করে আসবে তাই তাকে সেখান থেকে ভালো করে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসা আমার একটা দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। তাই আমি ছুটে গেছিলাম সকাল সকাল না খেয়েই হাওড়াতে। প্রথমে নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশন থেকে গাড়িতে করে গেলাম শিয়ালদহ স্টেশন। সেখান থেকে পুনরায় বাসে করে গেলাম করে এই হাওড়া স্টেশনে। সেখানে পৌঁছানোর পর আমাকে সেই আত্মীয় ফোন করে এবং জানায় তাদের ট্রেন মোটামুটি তিন ঘন্টা লেট । দূরপাল্লার ট্রেনগুলোতে মাঝে মাঝেই এমন হয় তাই এই ব্যাপারটা আমার কাছে মোটেও অবাক লাগে নি।

20230811_140258.jpg

20230811_140300.jpg20230811_140255.jpg

কি আর করা, এই সময়টাতে বসে কোন কাজ না পেয়ে হাওড়া স্টেশনের আশেপাশে একটু ঘোরাঘুরি করি। মাঝে মাঝে নিজের মধ্যে বিচার করতে লাগলাম এই দৌড়ঝাঁপ কি কখনোই শেষ হবে না ? হাওড়া স্টেশনে যাওয়ার পর এটা ভালোভাবে উপলব্ধি হলো, শুধু আমার জীবন না প্রত্যেকের জীবনই দৌড়ের উপর! কারোর এক মিনিট স্থির হওয়ার সময় নেই। হাজার হাজার মানুষ ট্রেন থেকে নেমে চলমান তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে কেউবা অপেক্ষায় রয়েছে কারো জন্য অথবা অন্য কোথাও যাওয়ার জন্য কিন্তু ব্যস্ততার শেষ নেই। এটাই জীবনের প্রকৃতি, জীবন গতিময়। এটা আমাদেরকে মেনে নিতেই হবে। যাইহোক হাওড়া স্টেশনে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে করতে আশেপাশের টুকটাক একটু ফটোগ্রাফিও করে নিয়েছিলাম । তারপর আবার পুনরায় একা একা অপেক্ষা করতে লাগলাম রাজস্থান থেকে হাওড়াগামী ট্রেনের জন্য।



ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: হাওড়া স্টেশন, ওয়েস্ট বেঙ্গল।



বন্ধুরা, আজকের ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  

আসলে আমাদের প্রত্যেকের জীবনই সবসময় দৌড়ের উপর থাকে। আমি নিজেও তো ছোটবেলা থেকে ভাবতাম যে বড় হলে হয়তো একটু রিলাক্স হবে। কিন্তু যত বড় হচ্ছি তত বেশি টেনশন মাথার ভেতর ঢুকেছে। আর এই দৌড়াদৌড়ি ব্যাপার গুলো আমার থেকে তুমি ভালো জানো। এই জন্য তোমাকে এইগুলোর ভিতর সব সময় রাখার চেষ্টা করি। আর আগের দিন তো আমার শরীর খারাপ ছিল না হলে আমিই যেতাম।

 last year 

বড় হয়ে রিলাক্স করতে পারব ছোটবেলার এই ভাবনাগুলোই বেকার । বাস্তবটা অন্য, আমাদের সবসময় দৌড়ের উপর থাকতে হবে এটাই জীবন।

 last year 

দাদা দৌড় কিন্তু জন্মের আগে থেকেই শুরু হইছে,আর মৃত্যু পর্যন্ত এই দৌড় থামবে না। আমার অবস্থাও সেম আপনি তো শুধু নিজের আত্মীয় স্বজন,আমার প্রতিবেশীর গেস্টকেও রিসিভ করতে যাওয়া লাগে।কারো কিছু হলে রাত বিরাতে হসপিটাল নিয়ে যাওয়া আর কত কি। কিন্তু এরই নাম জীবন। ভাল লাগল পোস্টটি আপনার। ধন্যবাদ দৌড়াদৌড়ির ফাকে গল্পটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

দৌড়ের উপর থাকার গল্পটা আমাদের সবারই কমবেশি একই রকম ভাই। আমাদের এত দৌড়ের উপর থাকতে হয় তারপরও দিন শেষে অনেক কথা শুনতে হয়, আমাদের জীবনটাই এরকম।

 last year 

দাদা আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এরকম দৌড়াদৌড়ি থাকে। তবে তুমি যে জার্নি করতে পছন্দ করো না, এটা আমি আজকে নতুন করে জানলাম। আসলে আমিও জার্নি করতে একেবারেই পছন্দ করিনা, তবুও সময় বিশেষ করতে হয়।আসলে বাড়িতে বড় ছেলেরা থাকলে আত্মীয়-স্বজনদের আনতে যাওয়ার দায়িত্বটা তাদের উপরই পড়ে।

 last year 

দিদি, জার্নি করতে পছন্দ করি কিন্তু লোকাল ট্রেন বা বাসে জার্নি করা একদমই পছন্দ করি না আমি। মোটকথা যেখানে ভিড় থাকে সেই জায়গাগুলো আমি এড়িয়ে চলতে পছন্দ করি।

 last year 

সত্যি কথা বলতে কি ভাইজান মানুষের জীবনটা বড় সংগ্রামী ভয়। জীবনের প্রত্যেকটা মুহূর্ত সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। আর সবাই কিন্তু সব সময় জার্নি করতে পছন্দ করে না, বা পারেও না কিন্তু পারিবারিক বিভিন্ন দায়-দায়িত্বের কারণে অনেক সময় জার্নি করতে হয়। আর বাড়ির বড় ছেলেদের বড় দায়িত্ব থেকে তাকে বিভিন্ন বিষয়ের উপর।

 last year 

বেশি জার্নি করতে পছন্দ না করলেও দায়িত্বের জন্য ওই সব অপছন্দের কাজগুলোও সব সময় করতে হয় ভাই।

 last year 

জী ভাইয়া ঠিক বলেছেন আমাদের জীবনেরে দৌড় কোথায় গিয়ে শেষ হবে সেটা কেউ জানে না। ৪০ ঘন্টা জার্নি করে আসছে। শুনেই ক্লান্ত হয়ে গেলাম। আমিও মাঝে মাঝে আত্বীয় স্বজন বন্ধু বান্দবকে রিসিপ করতে আমাদের কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যায়। আপনাদের স্টেশনটা অনেক বড় আর দেখতেও অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ।

 last year 

আমাদের এই দৌড়ের শেষ আমাদের জীবনের শেষের মধ্য দিয়েই আসে ভাই, তার আগে আর এই দৌড়ের শেষ হয় না।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58551.09
ETH 2617.32
USDT 1.00
SBD 2.44