১৫ তলা ছাদ থেকে চিরচেনা ঢাকা শহরটাকে দেখা কিছু অনুভূতি। ১০% beneficiary shy-fox এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আমার বাংলা ব্লগের সকল সহযোগী এবং সহযোদ্ধাদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সকলেই ভালো আছেন, আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। দীর্ঘদিন পর আপনাদের মাঝে নিয়ে এলাম "১৫ তলা ছাদ থেকে চির চেনা ইট বালুর ঢাকা শহরটাকে দেখার অনুভূতি"। আশা করি আপনাদের সকলেরই ভালো লাগবে।

১৫ তলা ছাদ থেকে চির চেনা ইট বালুর ঢাকা শহরটাকে দেখার অনুভূতি।

আমি দীর্ঘ ১৭-১৮ বছর ধরে ঢাকা শহরে চাকরিজীবন অতিবাহিত করেছি। আর এই ঢাকা শহরের ইট বালুর দালানকোঠার মাঝে মানুষের গুঞ্জন রাস্তার জ্যামের মাঝে এদিক সেদিক যাওয়া এবং কি বিরক্তিবোধ ছাড়া আর কিছুই নয়। ঢাকা শহরটাকে ভালো করে উপভোগ করার মত সেরকম সময় হয়ে ওঠেনি। আর যখন কিছু কিছু জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি তখন আমার বাংলা ব্লগের সাথে পরিচিত ছিলাম না। যদি জানতাম কোনদিন আমার বাংলা ব্লগ নামে কোন প্লাটফর্মেই কাজ করতে পারব তাহলে হয়তো স্মৃতিগুলো সংগ্রহ করে রাখতাম। এখনো থাকতো যদি প্রতিবছরে দুই চারটা মোবাইল নষ্ট না হত এবং কি হারিয়ে না যেত।

চলুন যাওয়া যাক মূল পর্বে।

মূলত আমি গিয়েছিলাম মগবাজার ইনসাফ বারাকাহ কিডনি হসপিটাল ইউনিট টু-তে আমার আমার স্ত্রীকে ডক্টর দেখানোর জন্য। যদিও দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে ট্রিটমেন্ট চলছে। সেদিন বুধবার ছিল যখন আমার স্ত্রীকে নিয়ে মেডিকেলে গেলাম। দীর্ঘ ৪-৫ ঘন্টা বসে থাকার পর ম্যাডাম আসলো, তখন আমার স্ত্রীকে নিয়ে ম্যাডামের চেম্বারে ব্যস্ত। তখন একা একা বসে থাকতে থাকতে খুব বিরক্তিবোধ হচ্ছিল তাই চিন্তা করলাম একটু হাঁটাহাঁটি করে আসি। বেলকনির পাশে যেতে মনে হচ্ছে যেন নতুন একটা অপরূপ সৌন্দর্য শহর দেখতে পেলাম। তাই নিজের ইচ্ছামতো অনেকগুলো ফটোগ্রাফি করলাম আর চিন্তা করলাম বন্ধুদের সাথে শেয়ার করা যাবে।

20220706_122442.jpg

আসলে আমার মত অনেকেই আছে যারা বছরের পর বছর কাটিয়ে দিয়েছি শহরে। কিন্তু ভালো করে শহরটা দেখার মত সময় হয়ে ওঠেনি। হয়তো যানবাহনে করে অফিস থেকে বাসা বাসা থেকে অফিস তার মাঝে যানজট বিরক্তি আর ধোঁয়াশা মনে হয়। সব সময় ঢাকা শহরের ইট পাথরে গড়া দালান কোঠাগুলো দেখা যায় না। হঠাৎ করে দেখতে পেয়ে আনন্দটা একটু বেশি পেলাম। মনে হচ্ছে যেন নতুন এক দিগন্তের ছোঁয়া লাগলো। রীতিমতো অবাক হলাম ছাদ বাগানটি দেখে মনে করেছিলাম নিচে ছোট্ট একটা বন। কিন্তু পরে ভালো করে দেখলাম যে না এটা একটা ছাদ বাগান। তবে ওই বাড়িওয়ালাকে বলতে হবে রুচি আছে তার। এমনকি সবুজের প্রতি তার ভালোবাসা অনেক।

20220706_122128.jpg

অট্টালিকা আর প্রাচুর্য যা দেখে সত্যিই মুগ্ধতা বলে গেছে, মনে হচ্ছে কোলাহলমুক্ত শান্ত একটি শহর, আসলে কি তাই। কোনভাবেই না সবাই সবার ব্যস্ততা নিয়ে কোলাহল যুক্ত শহরে দিনের পর দিন বছরের পর বছর কাটিয়ে দিচ্ছি। হয়তো শহরের দালানকোঠা গুলো দেখার মত সময় নেই।

20220706_122348.jpg

আমার কাছে মনে হয়েছে সত্যিই নতুন একটা রূপনগরে হারিয়ে গেলাম। রূপনগরের রূপের কোন শেষ নেই এবং কি আমি যেই অসহায়ত্ব নিয়ে এসেছি সেটাও ক্ষনিকের জন্য ভুলে গিয়েছিলাম। যদিও আমার সময়টা ছিল অনেক জটিল এবং কঠিন একটা সময়। কিন্তু শহরের চিত্রগুলো দেখে ভুলে গিয়েছিলাম আমি কোথায় আছি।

20220706_122336.jpg

যেদিকে তাকাই শুধু দালান কোঠা আর দালান কোঠা, তবে এটা সত্য এর আগে কখনো এত সুন্দর করে উপলব্ধি করতে পারেনি ঢাকা শহরের দালান কোঠা গুলো। তাই আমার কাছে একটু অবাক লাগা স্বাভাবিক, হয়তো আমার মত আরো অনেকেই আছেন।

20220706_122635.jpg

এটা হচ্ছে আল-বারাকা হসপিটালের ১৬ তম তলা, একেবারেই উপরে ছাদ যেখানে নানান ধরনের ফুল গাছ এবং শাকসবজি গাছ ভূনে রেখেছে। দেখতে খুবই ভালো লাগছে নতুন ভিজ থেকে গাছ বেড়ে উঠতেছে। হঠাৎ একজন লোক এসে অপরিচিত দেখে আমাকে ছাদ থেকে নেমে যেতে আদেশ করল, আমি কয়েকটা ফটোগ্রাফি নিয়ে নেমে গেলাম। কথা বাড়াবাড়ি করলাম না কারণ বাড়াবাড়ি করার মত কোন সুযোগ কিংবা মাধ্যম নেই।

20220706_122423.jpg

১৫ তলা থেকে নিচের যে রাস্তাটা দেখতে বেশ আকর্ষণীয় লাগছে। এক পায়ে দাঁড়ানো নারিকেল গাছ গুলো দেখতে আকর্ষণটা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। মানুষগুলোকে খুবই ছোট ছোট দেখা যাচ্ছে মনে হচ্ছে যেন ছোট কোন প্রাণী গুটি গুটি পায়ে হাঁটছে।

20220706_122256.jpg

এখানে ছাদে কলা ধরেছে, যার রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম এবং কি আপনারা জুম করলে দেখতে পারবেন গাছে আমড়াও ধরেছে। তাই ফটোগ্রাফিটা নেওয়া।

20220706_122606.jpg

শেষ পর্যন্ত নিজের একটা সেলফি নিয়ে সুরসুর করে নেমে পড়লাম ক্ষণিকের হারিয়ে যাওয়া রূপনগর থেকে। তবে এর স্মৃতি এবং সৌন্দর্য মনে থাকবে আজীবন এবং কি আরো ভালোভাবে মনে রাখার জন্য আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করা।

বন্ধুরা কেমন লেগেছে আমার ১৫ তলা ছাদ থেকে চিরচেনা ইট বালুর ঢাকা শহর টাকে দেখার অনুভূতি। আশা করি সকলের কাছেই ভালো লাগবে। ভালো মন্দ কমেন্টে জানাবেন। সাপোর্ট দিয়ে পাশে থাকবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে, সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Sort:  
 2 years ago 

চারদিকে শুধু ইট পাথরের দেয়াল ছাড়া তো আর কিছুই দেখা যায় না ভাই😁।এখানকার মানুষরা হয়তো ভুলেই গেছে প্রকৃতি বলে কিছু আছে হিহি।যাইহোক ফটোগ্রাফি গুলো অবশ্য ভালই লাগলো🙂

 2 years ago 

তাইতো ও শহরের মানুষ বাইরে গিয়ে ঘুরে বেড়াতে খুব পছন্দ করে। আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

 2 years ago 

আসলে ঢাকা শহর এ খুব একটা বেশি ছাদে যেতে দেয়া হয় না কিন্তু যখন ছাদে ওঠা হয় তখন ইট পাথরে ঘেরা ঢাকা শহরটাকে খুবই ভালোভাবে দেখতে পাওয়া যায়। আমি যখন ঢাকা শহরে থাকতাম তখন সেই বাসাটা ছিল আনুমানিক ১০ তলা সেখান থেকে খুবই সুন্দর ভাবে ঢাকা শহরের দৃশ্য গুলো দেখতে পেতাম। আসলে ভাইয়া ঢাকা শহরটাকে যদি ছাদ থেকে দেখা যায় তাহলে মনে হবে পুরো ঢাকা শহর একটি কবুতরের খামার।

 2 years ago 

আপনি একবারে মনের কথাটাই বলেছিলেন। অবশ্য দূর থেকে দেখতে মনে হয় যেন সারিবদ্ধভাবে কবুতরের খোপগুলো খুব সুন্দর করে তৈরি করেছে। সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহ দিয়ে পাশে থাকার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

এরকম বিল্ডিং এর উপর থেকে যদি দেখা যায় তাহলে আসলে সব বিল্ডিংয়ে দেখা যায়। আপনি এই 15 তলার উপর থেকে যে ফটোগ্রাফি গুলো তুলেছেন সেগুলো আসলে বিল্ডিং এর ছাদের কিছু দারুন ফটোগ্রাফি করেছেন ভালই লাগছে ধন্যবাদ আপনাকে ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনার কাছে ভালো লেগেছে ফটোগ্রাফি গুলো জেনে খুশি হলাম, শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 57859.61
ETH 2966.06
USDT 1.00
SBD 3.67