আমার বাংলা ব্লগ। উৎসবের ভ্রমণ কাহিনী। ১০% পে-আউট লাজুক খ্যাক এর জন্য।
চলুন যাওয়া যাক মূল পর্ব।
উৎসবের ভ্রমণ কাহিনী।
![]() |
---|
আমার ব্যাটেলিয়ান সদস্য ছিল সাতজন দুই পুরুষ পাঁচ নারী, তার মধ্যে ৪ শালিকা, আমার সহধর্মিনী, আমার শালক, এবং আমি। বুঝতেই পারছেন ভ্রমণ কাহিনী টা একটু অন্যরকম ছিল। সবাই আনন্দে আত্মহারা ছিল। যেন আনন্দের সীমা নেই। যেমন বন্দি খাঁচায় থেকে পাখি গুলো বের হলে যতটা আনন্দ উপভোগ করে ঠিক তেমনি। আর এমনিতেই সাধারণত গ্রাম অঞ্চলের মেয়েদের কে একা বের হতে দেয় না এবং কি খুব সতর্কতার সাথে চলাফেরা করতে হয়। শশুর বাড়ি জামাই বলে কথা, এই কারণেই শালিরা নিজের ইচ্ছেমতো আবদার করল, কিন্তু কেউ কোন কিছুই বলেনি সাড়া দিল যাওয়ার জন্য।
ঈদের দ্বিতীয় দিন।
আমার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়া হয়না প্রায় দুই বছর। যাওয়া হয়না বলতে আমারই যেতে ইচ্ছে করেনা সময় স্বল্পতার কারণে। এবং এমনিতেই কেন জানি মন টানে না শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার। যাই হোক অবশেষে ঈদের পরের দিন গেলাম শ্বশুরবাড়িতে। শ্বশুর বাড়ির সবাই খুবই আনন্দে মুখরিত। আমিও খুব আনন্দ অনুভব করছি। সকাল গড়িয়ে দুপুর তখন তারা সবাই বায়না করেছে তাদেরকে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে। এমনিতেই তারা বাড়ি ঘরে থাকতে থাকতে একঘেয়েমি হয়ে গেছে বের হতে পারে না এবং সাংসারিক কাজ, পড়াশোনা, কলেজ আর তাদেরকে একা বের হতে দেয় না বললেই চলে।
![]() |
---|
এতটাই ভায়না ধরলো যে তাদেরকে না নিলে তারা আর কেউ আমার সাথে কথাই বলবে না। এতগুলো সালি কার মন রাখবো, আর কার মন ফেলবো, সেটাই ভেবে পাচ্ছি না। তবে মানুষের মন রক্ষা করা টা খুব কঠিন একটা ব্যাপার। যাক অবশেষে রাজি হলাম, কোথায় যাবে তাদেরকে বলে দিলাম ঠিক করার জন্য। তখন তারা বলল আমাদের এলাকার পাশে একটা পার্ক করেছে "গ্রীন পার্ক"। তবে আমি নামও শুনিনি আমি জানতাম না যে আমার এত কাছে এত বিশাল বড় একটা পার্ক হয়েছে। তখন আমিও চিন্তা করলাম যে ওদেরকে নিয়ে যাই নিজেও দেখে আসি গ্রামের ভিতরে পার্ক টা কেমন।
গ্রীন পার্ক।
![]() |
---|
এটা হচ্ছে প্রবেশপথ।
শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রীন পার্ক এর যেতে সিএনজি ভাড়া লাগে ৩৫০টাকা। খুব আনন্দে মুখরিত ছিল সবাই। তবে ওদের সাজতে সাজতে ঘুরার সময় ঘরেই শেষ করে ফেলেছিল। মেয়েদের যেন সাজা শেষ হয় না, আমি খুবই বিরক্ত হচ্ছিলাম। কিন্তু কিছু বলতেও পারছি না। তাদের মন রক্ষা করতে হবে এটাই হচ্ছে বড় কথা। অবশেষে রওনা দিলাম গন্তব্যস্থলে, পৌঁছাতে আমার আধঘন্টা সময় লেগেছে। সেখানে গিয়ে তো আমার চোখ কপালে উঠে গেল। মনে হচ্ছে ঢাকা শহরের সব মানুষ এক জায়গায় ভিড় জমিয়েছে।
![]() |
---|
গেটের ভেতরে ঢুকলেই বড় বড় দুটো হাতি, একটা থেকে আরেকটা আর দূরত্ব অনেক বেশি এ কারণে দুটি ছবি একসাথে নেওয়া সম্ভব হয়নি। মাঝখানে প্রবেশপথ দুপাশে দুটো হাতই দাঁড় করানো।
গ্রামের ভিতরে একটা পার্ক হয়েছে আমার কাছে খুবই আশ্চর্য লেগেছে, এত বড় এবং কি এতো বিশাল এরিয়া নিয়ে যা কল্পনা করিনি। প্রায় ১০০০ শতাংশেরও বেশি হতে পারে। এখনো সংস্কারের কাজ চলছে এবং কি সৌন্দর্য আকর্ষণ এখনো শুধু বেড়েই যাচ্ছে দেখে রীতিমত অবাক হয়ে গেল।
![]() |
---|
ভেতরের দিকে যাচ্ছি তবে মানুষ দেখে আমি খুবই অবাক।
তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে যখন সবাইকে টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করালাম তখন কেউই আমাকে চেনে না। টিকেটের মূল্য ছিল মাত্র ৫০ টাকা। সবাই আনন্দে আত্মহারা এবং কীর্তন চালিয়ে যাচ্ছে। ওদের আনন্দ দেখে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আমি ওদের পিছনে পিছনে ঘুর ছিলাম বেশ ভালোই লেগেছিল। আসলে আনন্দ অনেক রকম হয়। কিছু আনন্দ আছে যে এই আনন্দের সীমা থাকে না। এবং কি আনন্দ প্রকাশ করাটা খুব কঠিন ব্যাপার, ঠিক সেরকমই ছিল বিষয়গুলো। বন্ধুরা চলুন দেখে নেওয়া যাক আমার ঘোরাফেরার গ্রীন পার্ক এর কিছু ফটোগ্রাফি।
![]() |
---|
রাইডার গুলো খুবই আকর্ষণীয় যা দেখে খুবই ভালো লাগছে। তবে সংস্কারের কাজ চলছে এই অনবরত।
![]() |
---|
প্রত্যেকটা রাইডারের ছিল খুবই আকর্ষনীয় এবং কি সৌন্দর্যের সমাহার।
![]() |
---|
অনেক দূর যাওয়ার পর দেখলাম ভিতরে অনেকগুলো চটপটির দোকান।
![]() |
---|
এ রাইডার টা আরো আকর্ষণীয়।
![]() |
---|
আরো ভিতরে গিয়ে দেখি বিশাল বড় একটা পুকুর। আশ্চর্য হয়ে গেলাম এবং কি সেখানে হাঁসের বিভিন্ন ধরনের রাইডার সবাই খুব আনন্দ করছি।
![]() |
---|
আমরা সবাই জানি যে এইটা খুবই ভয়ঙ্কর একটা রাইডার। উঠলে খুবই ভয় করে।
![]() |
---|
এখানে কয়েকটা ক্যাঙ্গারু তৈরি করা হচ্ছে সংস্করণ এর কাজ চলছে।
![]() |
---|
এখানে একটা পাখির সেট তৈরি করা হচ্ছে এখনো কোন পাখি আনা হয়নি অনেক বড় একটি ঘর একেবারেই ফাঁকা।
![]() |
---|
এখানে সারিবদ্ধ ভাবে ধোলনা লাগানো হয়েছে। যার যেমন এসে বসছে আর দুলছে, খুবই সুন্দর লাগছিল।
![]() |
---|
আর এখানে আমার পাঁচটা মহারানী আছে। সবাই অনেক আনন্দ অনুভব করেছে ঘুরেছে। অবশেষে বাড়ি যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। তবে এখন পর্যন্ত রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে যেহেতু অনেকগুলো মেয়ে আমার সাথে ছিল, তাই আমি সন্ধ্যার আগেই বেরিয়ে পড়েছি।
বন্ধুরা আমি অনেকগুলো ফটোগ্রাফি করেছি। চেষ্টা করব আপনাদের সাথে ধারাবাহিকভাবে শেয়ার করার জন্য, আশা করি সকলের ভাল লাগবে।
আমার আজকের উৎসবের ভ্রমণকাহিনী কেমন লেগেছে আপনাদের কাছে তা আমি জানিনা। আশা করি সকলের কাছেই ভালো লাগবে। ভাল মন্দ কমেন্টে জানাবেন, সাপোর্ট দিয়ে পাশে থাকবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
কি বলেন ভাইয়া দুই বছর পর শ্বশুর বাড়িতে গেলেন। আমি তো একদম অবাক হয়ে গেলাম। আপনারা কেন যে শ্বশুর বাড়িতে যেতে চান না বুঝি না। তাছাড়া সালিরা যখন আছে আবদার তো করবেই। শালীদের আবদারে যে পার্কে ঘুরতে গেছেন অনেক ভালো লাগলো। সবাই একসাথে সেলফি তুলেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর একটা ঘুরাঘুরির মুহূর্ত ছিল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার যখন।
আসলে আপু সত্যি কথা বলতে যেতে ইচ্ছে করলেও যাই না। কারণ শ্বশুর বাড়ি বেশি যাওয়া টা আমি পছন্দ করি না। কারণ শ্বশুর বাড়িতে বেশি বেশি গেলে দামটা অনেক কমে যায়। যাই হোক তবে আপনি ঠিকই বলেছেন শালি দের আবদার রাখাটা আমার জন্য দায়িত্ব মনে করেছিলাম। কারন ওরা বাসা থেকে বের হতে পারেনা। বন্দি পাখির মত ছটফট করছিল, তাই চিন্তা করলাম ওদের কে নিয়ে যাই, আমিও একটু ঘুরে আসি। কাঙ্খিত মন্তব্য করে সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
যা দেখে বুঝলাম ঈদ উপলক্ষে বউ শালী শালা মিলে ভ্রমণে অনেক উপভোগ করেছেন । খুবই ভালো লাগলো আপনাদের এত সুন্দর দৃশ্য দেখে আশাকরি দিনটা আপনাদের খুব ভালো কেটেছিল এবং ঈদের পরের দিন ভ্রমণ টাও খুব ভালো কেটেছে। ঈদ উদযাপন এত সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।
জি ভাইয়া সত্যি দিনটি খুবই আনন্দের ছিল। আর এত সুন্দর মন্তব্য করে সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি যথাযথ একদম ঠিক বলেছেন ভাই মেয়েদের সব সময় সাজুগুজু করতে একটু বেশি সময় লাগে। সাজুগুজু করতে করতে ঘুরার সময় অনেকটা এখানে চলে গিয়েছে এটা বেশ মজার ছিল। আপনি তো ভাই পুরাই ভাগ্যবান এতগুলো শালী পেয়েছেন হাহাহা। খুব ভালো করেছেন তাদের বায়না করাটা আপনি রেখেছেন। আসলে সত্যি বলতে সবার মন রক্ষা করা সত্যিই কঠিন। সব মিলিয়ে খুব সুন্দর ভাবে মুহূর্ত কাটিয়েছেন।
হ্যাঁ ভাই ঠিকই বলেছেন এই দিক থেকে আমি অনেক হ্যাপি। কারণ শালি পেতে হলে কপাল লাগে। আর মেয়েদের সাজার শুরু করলে মোটামুটি একটা ঘুম দিয়ে আবার উঠে দেখব যে তারা সাজছে খুবই বিরক্তিকর একটা কাজ, তবে ওদের ভালোই লাগে। যাই হোক অসাধারণ মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক অভিনন্দন প্রিয় ভাই টু।
আপনার উৎসবের ভ্রমণকাহিনী আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ঘুরতে ঘুরতে অনেক সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে সেই ফটোগ্রাফি গুলো তুলে ধরেছেন। আপনাকে খুবই ভালো লাগলো আপনার ভ্রমণকাহিনী পোস্ট পড়ে। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের সকলের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনার কাঙ্খিত মন্তব্যের জন্য আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম।
দুলাভাইয়ের কাছে শালিরা আবদার করবে এটাই স্বাভাবিক। তার ওপর দুই বছর শ্বশুরবাড়িতে যান না। সুতরাং শালিরা যে আপনাকে অল্পের উপর ছেড়ে দিয়েছে এটাই বেশি। অনেক ভালো লাগলো আপনার ঈদ পরবর্তী ঘোরাঘুরি। বোঝাই যাচ্ছে অনেক আনন্দে সময় কাটিয়েছেন। শুভকামনা রইল
সব শালিকার দুলাভাইয়ের উপহার আবদার থাকে। তবে ভাইয়া অল্পের উপরে ছাড়েনি 5000 ঝেড়েছে। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
😯😯😯🤪
দুই বছর পর শ্বশুর বাড়িতে গেছেন শুনে অবাক হয়ে গেলাম। যেখানে আমি প্রতি সপ্তাহে চার থেকে পাঁচবার যাওয়া হয়। শালিরা সহ পার্কে খুব ভালো একটি সময় কাটিয়েছেন আপনি। আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে ভাই।
শশুরবাড়িতে এই ঘন ঘন যাওয়ার অভ্যাস টা আমার বাবার ও ছিল না, আমারও নেই, তবে বাবা যখন বুড়ো হয়ে গেছে তখন ও বাবার যেমন শ্বশুরবাড়িতে আদর ছিল, চেষ্টা করছি বাবার মত হওয়ার জন্য।
একজনই 350 টাকা নাকি সবাই মিলে 350 টাকা।আর আপনার তো দেখছি মেলা শালীকা 😍।যাইহোক ভালই ঘুরাঘুরি করেছেন আর আপনার উপস্থাপনাও ভালই ছিলো।শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।
হ্যাঁ ভাই ঠিকই বলেছেন শালী পেতে হলে কপাল লাগে। আর 350 টাকা ছিল সিএনজি ভাড়া। টিকিট ছিল 50 টাকা করে জন প্রতি।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই ।।দেখে বোঝা যাচ্ছে আপনি আপনার শ্যালক ও শালিকাদের নিয়ে খুবই সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছেন । গ্রীন ভ্যালি পার্কে আমি গিয়েছি অনেক সুন্দর একটি জায়গা ।।ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা ভ্রমণকাহিনী আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।।
ভাইয়া এটা গ্রীন ভ্যালি পার্ক না। শুধু গ্রীন পার্ক। নতুন একটা পার্ক গড়ে উঠেছে নোয়াখালী এবং কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকায়। মন্তব্য করার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।
abbcontest-17 তে অংশগ্রহণ করায় আপনাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আপনি দুই বছর পর শ্বশুর বাড়িতে গেলেন শুনে তো আমি অবাক। তবে ভাবি ও আপনার শালদের কে নিয়ে এই ঈদে অনেক মজা করেছেন দেখে ভালো লাগলো।
আপনার ঘোরাফেরার ঘটনা গুলো অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অবাক হওয়ার কিছু নেই, শ্বশুরবাড়িতে যত লেট করে যাবেন ততই আদর টা বেশি পাবেন এটাই হচ্ছে নিওয়োম। শ্বশুরবাড়ি বেশি গেলে শ্বশুর বাড়ির আবদার থাকেনা। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।