আমার বাংলা ব্লগ। বন্দি পাখির অর্থহীন ভালবাসা। ১০% পে-আউট লাজুক খ্যাক এর জন্য।
চলুন দেখে নিই আজকের বন্দি পাখি অর্থহীন ভালবাসা।
আমার কিছু কথা।
ছোটবেলা থেকেই পাখির প্রতি আমার গভীর একটা ভালোবাসা। কেন যে এমন হয়েছে সেটা আমি জানতাম না। পাখি দেখলে আমি স্থির থাকতে পারি না। ছুটে যায় তাকে ধরার জন্য আদর করার জন্য দেখার জন্য। পাখি দেখলে আমি এক ধরনের উম্মত পাগলের মত হয়ে যেতাম। আমার শৈশব টাই কেটেছিল পাখিদের নিয়ে খেলাধুলা, পাখির বাচ্চা ধরা, পাখির বাসায় উঠা, পাখি ডিম পাড়ছে কি-না। সব সময় আমি এগুলো নিয়ে পড়ে থাকতাম।
আমার শৈশবের কিছু কিছু কথা আমার খুব বেশি মনে পড়ে। বর্ষার মৌসুমের শুরুতেই বাঁশঝাড়ে উপরে বক বাচ্চা ফুটায়। আর ওই বকের ছানা পড়ার জন্য আমি বাসের উপরে উঠে যেতাম। আমাদের বাড়ির পাশে একটা চাড়া বাড়ি আছে। ওই ছাড়া বাড়িতে শুধু বাঁশ বাগান বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে। শুধু বাঁশ বাগানে বিভিন্ন ধরনের ফল গাছ এবং পাঁরগাছা বেশি জন্মায়। আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি যখন বকের ছানা গুলো পাড়ার জন্য বাঁশঝাড়ের একবারে মাথার উপরে উঠে গেলাম। এলোমেলো হাওয়ায় আমি বাঁসের সাথে দুলছি। নিচে পড়ে যাওয়ার অবস্থা' বাঁশগাছের আমি হাওয়ার সাথে দুলছি আর এদিকে আমাকে বারবার উড়ে এসে ঠোকর মারছে বক। আসলে স্মৃতিগুলো ভোলার মত নয়।
যাইহোক আমি গত পরশুদিন গিয়েছিলাম আমার কবুতরের খাবারের জন্য। যেখানে কবুতর খাবার বিক্রি করে সেখানে বিভিন্ন ধরনের পাখি আছে। আমি সব পাখির নাম জানিনা হয়তো দু একটা নাম জানি। পাখি গুলো দেখে অধীর আগ্রহে চেয়ে দেখলাম। পাখির কিচিরমিচির ডাক আমার খুবই ভালো লাগে।
ছোটবেলায় একদিন বাবা এসে দেখল আমি কয়েকটা দোয়েল পাখির বাচ্চা ধরে নিয়ে আসছি। তখন বাবাকে যমের মত ভয় পেতাম। বাবাকে দেখে দৌড়ে লুকিয়ে গেলাম, কিন্তু না বাবা ডেকে নিয়ে আসলো, আমি তো মারের ভয়ে থরথর করে কাঁপছি। পরে বাবা বলল তুমি যে ছানাগুলো ধরে নিয়ে আসছো ওদের মা বাপ কত কান্না করতেছে, চিন্তা করতেছে, তোমাকে বদদোয়া দিতাছে।
তুমি কি জানো তোমার মায়ের কোল থেকে যদি তোমাকে নিয়ে যায় কেউ তোমার মা কি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবে। বাবা অনেক বুঝালো যে আর কখনো পাখির বাসা ভাংবেনা। পাখির বাচ্চা এভাবে নিয়ে আসবে না। বাবার কথাগুলো আমার মনে গেঁথে রইল।
তবুও ছাড়তে পারেনি পাখির ভালোবাসা। যখন যৌবনে আসলাম চাকরি-বাকরি নিলাম শহরমুখী হয়ে গেলাম তারপরও কি আমি ছাড়তে পেরেছি সেই পাখির ভালোবাসা। না আমি এখনো আমার ব্যালকনিতে কবুতর পালন করি। এবং কবুতরের দুইটা পোষ্ট আমি করেছিলাম হয়তো সামনে ইনশাল্লাহ আপনাদের জন্য আরো পোস্ট করব। আমি বিভিন্ন জাতের কবুতর পালন করি।
আমার এই পাখির ভাষা নিয়ে অনেক আশা আকাঙ্ক্ষা মনের ভিতর জাগে। ওদেরকে দেখলে আমার দুনিয়াদারি কোন কিছুর প্রতি নজর থাকে না। আমি হারিয়ে যাই ওদের মাঝে।
তবে এটুকু বুঝি
বন্যেরা বনে সুন্দর
শিশুরা মাতৃক্রোড়ে
আমাদের সবার উচিত পাখিকে বন্দি না রেখে মুক্ত আলো-বাতাসে ছেড়ে দিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা। আমরা প্রতিনিয়ত এই ভুলগুলোই করে যাচ্ছি। পাখিগুলো বন্দি করে রেখে আমরা যে আনন্দ অনুভব করি আসলে তা পাখিদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক।
ফটোগ্রাফি - ১
এইখানে অনেক গুলো বাজিগর 🐦🐦🐦🐦 পাখি আছে। বন্দি জীবন যাপন করছে। খাঁচা এইপাশ থেকে ওপাশ উড়ে বেড়ায়।খাঁচা গুলো দৈর্ঘ্য '৫" ফিট বাই প্রস্থ ২২" ইঞ্চি।
ফটোগ্রাফি - ২
এগুলো হচ্ছে লাভ বার্ড, এদের একই অবস্থা খাঁচার ভিতর এই পাশ থেকে ওপাশ ঘুরে বেড়ায় আর কিচির মিচির ডাকে।
ফটোগ্রাফি - ৩
এই পাখিগুলোর আমি নাম জানিনা। কিন্তু দেখতে খুবই সুন্দর, ছোটখাটো, সারিবদ্ধ ভাবে বসে থাকে, আর খাঁচার ভিতর উড়াউড়ি করছে।
ফটোগ্রাফি - ৪
এই পাখিটা দেখতে আরো বেশি সুন্দর। এটা দেখতে অনেকটা কাকাতুয়ার মত। মাথার উপর জুটি, দেখতে ভারী সুন্দর লাগে চেয়ে থাকতে মন চায়।
ফটোগ্রাফি - ৫
এই পাখিগুলো এত ছোট সাইজের, টুনটুনি পাখির মত হবে। কিন্তু দেখতে চড়ুই পাখির মত। ঠোঁটগুলো অনেক ছোট এবং কি মোটা।
ফটোগ্রাফি - ৬
এই পিখি অনেকটা ছড়ুই পাখির মতো দেখতে। কিন্তু এগুলা একবারে ধবধবে সাদা।
ফটোগ্রাফি - ৭
এগুলো হচ্ছে ঘুঘু পাখি। কোন দেশের তা আমি জানিনা। অস্ট্রেলিয়ার ঘুঘু আরেকটু বড় সাইজের। এ ঘুঘু পাখিগুলোর চোখ গুলো লাল এবং গায়ের উপরে ছোট ছোট ফুল। হৃদয় ছোঁয়ার সৌন্দর্য।
আমার পাখির প্রতি ভালোবাসা এবং পাখির ফটোগ্রাফি গুলো জানি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। যদি কারো ভালো না লাগে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। সবকিছুরই ভাল এবং মন্দ দুটি দিক থাকে। আশা করি সবাই সাপোর্ট দিয়ে পাশে থাকবেন। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি।
আল্লাহ হাফেজ।
আপনি যে পাখি দেখান তা আমি পছন্দ করি, কারণ আমিও বাড়িতে পাখি রাখি।
আসলেই আমার খুব ভালো লাগলো আপনার এতগুলো পাখি দেখে। আমার ইচ্ছে করছে আমিও যাই, এই পাখিগুলোর সাথে একটু খেলা করি।
আমার বেশি পছন্দ লাভ বার্ড গুলো।
ভালোবাসা অবিরাম আপু, আমার মন খারাপ হলে, আমি ওদের মাঝে হারিয়ে যাই। পৃথিবীর আর কিছু মনে থাকে না।
বন্দি পাখির আর্তনাদে
কেমন ভালবাসা।
বন্দী করে পাখিকে তুমি
মেটাও মনের আশা
বন্দি খাঁচায় ছটপটিয়ে
গুমড়ে কাঁদে পাখি
এমন দৃশ্য সইতে আমার
পারেনা দুটি আঁখি
মুক্ত করে পাখিকে তুমি
দিও ভালোবাসা
পুরণ হবে বন্দি পাখির
অতৃপ্ত যত আশা♥♥
পাখি আমার নয়তো বন্ধি
বন্দি আমার আঁখি
পাখি শুধু নয়তো সেই
আমার হৃদয়ের ও আঁখি।
এই পাখিকে ভালোবাসে
হাসি খুশি থাকি।
ভালোবাসা অবিরাম আপু,মৃষ্টি মধুর কবিতার জন্য।
পাখির প্রতি আপনার ভালোবাসা দেখে আমার খুব ভালো লাগলো। তবে পাখিকে খাঁচায় বন্দী না রেখে মুক্ত আকাশ উড়তে দেখেই বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু