আমার বাংলা ব্লগ। স্বরচিত কবিতা।পরোপকার।
চলুন যাওয়া যাক মূল পর্বে।
স্বরচিত কবিতা।
পরোপকার।
আমাদের পরিবার কিংবা আমাদের সমাজ কিংবা আমাদের গ্রাম কিংবা সমগ্র বাংলাদেশ কিংবা সারা পৃথিবীতে যত মানুষই আছি আমরা কেউ না কেউ পরোপকারী করে থাকি। মানুষকে সুন্দর পথ দেখানো আমাদের মনের চাহিদা। পরোপকার টা যখন আমাদের নিজের কাল হয়ে দাঁড়ায়, তখন মাথা নিচু করেই পথ চলতে হয়। কিন্তু প্রয়োজনটা আমার ছিল না, প্রয়োজনটা ছিল অন্যের। সহযোগিতা টা আমার প্রয়োজন ছিল না, সহযোগিতাটা প্রয়োজন ছিল অন্যর। কিন্তু নির্দোষ হয়েও দোষের বোঝা ঘাড়ে চেপে প্রতিনিয়ত বয়ে বেড়াতে হয়।
আর এই দোষের বোঝা বয়ে বেড়ানো যে কত কষ্টের তা কাউকে বলে বোঝানোটা খুবই কষ্টের ব্যাপার। তবুও আমার বাংলা ব্লগের মাঝে যারা পরোপকার করে থাকেন তারা অবশ্যই বুঝতে পারবেন। পরোপকার করাটা কতটা কঠিন একটা কাজ। অনেক সময় নিজের পরিবারের কাছেও হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়। শুনতে হয় সংসারের প্রতিটা মানুষের আঙ্গুল তুলে কথা বলা। অনেক ক্ষেত্রে শুনতে হয় আত্মীয়-স্বজনের ত্রিরিষ্কারমূলক কথা,কিছু দিন যাওয়ার পূর্বে মনে হয় আমরা মনের অজান্তেই ভুলে যাই পরোপকার করার অপবাদ মাথায় বয়ে বেড়ানোর যন্ত্রণা।
আবার কেউ বিপদে পড়লে ছুটে যাই, আবার নিজের সাধ্যমত সহযোগিতা করি। বিনিময়ে সেই আবার পিছন থেকে লাথি খাওয়া ছাড়া কপালে ভালো কিছুই জোটে না। তেমনি নিজের কাছেও আফসোস লাগে যে তার উপকার করতে গিয়ে মনে হয় তার ক্ষতি করে ফেললাম। অথবা পরক্ষনে বুঝতে পারি পরোপকার করাটাই ছিল আমার বড় ভুল। না হলে আমার এই ধরনের ক্ষতি হতো না। অথবা ভাবি মানুষের এই তিরস্কার মূলক কথাগুলো আমার শুনতে হতো না। জানি না আল্লাহ পাক কি রকম মন দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এবং পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। পরের কষ্ট দেখলে মনে হয় যেন কলিজায় আঘাত লাগে। আর সেই আঘাতের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ও পরোপকার করতে যাওয়া। আর সে পরোপকার করার প্রতিদান পেতে হয় নির্মমভাবে।
সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমি দিব্যি চলছি ভালো
পরের কষ্ট দেখলে যেন মন হয়ে যায় কালো
এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াই চিন্তা করি হায়
অসহায় মানুষের জন্য করার কিছু কি নাই
অসহায় মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখলে আমার
কষ্ট লাগে বুকে, কি করিলে থাকবে মানুষটা অতি মহা সুখে
সত্যের রাস্তা দেখানোর জন্য দিয়ে যাই অনেক উপদেশ
মনে মনে তাহার জন্য রাস্তা খুঁজছি বেশ।
অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে লাগে আমার বেশ
একটুখানি সহযোগিতা করেলে মনে লাগে সুখ
এই সুখটাই ছিল ক্ষণিকের তাই কি জানি আমি
পরোপকারের প্রতিদান তাই তিরস্কারের ঘানী।
চোখ রাঙিয়ে আঙ্গুল তুলে পরিবার-পরিজন
পরোপকার করার জন্য ছিল কি তোমার প্রয়োজন
বুক ফেটে যায় কান্না আসে কিছুই বলতে পারিনা
বুঝিনা আমি পরোপকারের পরিণাম হয় শুধুই কান্না।
মনের সাথে যুদ্ধ করে ছেড়েছি পরোপকার
কিছুদিন যাওয়ার পরে বুলেছি যে আবার
মানুষের কষ্ট দেখে হৃদয় কাঁদে যখন
পরোপকার করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ি তখন।
ভাই ব্রাদার আত্মীয়-স্বজন নয়তো আমার কেহ
পরোপকার করে যাব প্রাণ আছে যতক্ষণ দেহো
অচিন পাখি ছুটে আসে নাহি জানি তাহার ঠিকানা
তাহার কষ্টটাই হয়ে যেন আমার মহা যন্ত্রণা।
আধোর আপ্যায়ন আহার করিয়ে দিয়েছিলাম বিদায়
মাথায় হাত বুলিয়ে যতন করে বলেছিলাম
প্রয়োজন হলে আসিও আবার
প্রয়োজন হলে খাওয়াবো তোমায় নিজেরই খাবার।
পরোপকার করলে কেন হতে হয় ছোট অন্যের কাছে
পরের কাছে এত ছোট করার কোন কি মানে আছে
বুক ফুলিয়ে চলে গেলে করে সিনা টান
অন্যের কাছে হতে হয়নি তোমাকে অপমান।
তবুও আমি আপন ভেবে পরোপকার করি
আঘাতগুলো দিয়ে তারা বলে শুধু সরি
ভেবেচিন্তে বলার মত পাইনি কোন ভাষা
এটাই ছিল পরোপকারের চিরসত্য ভালোবাসা।
মানুষগুলো দিব্য চলছে অতি হাসিখুশি
কেন জানি মনের কষ্টে শুধু আমি ভাসি
পরোপকার ছেড়ে দিবো করবো না আর কারো
আঙ্গুল তুলে সবাই বলে কষ্ট পাবে আরো।
পরোপকার করতে গিয়ে হয়েছি আমি বোকা
মা ও বলে বেশি বুঝিস নি ওরে আমার খোকা
সবকিছু হারালে তখন বুঝবে কেন দিয়েছি বকা
পরোপকার করার চেয়ে বসে থাকো একা।
পরোপকার করতে গিয়ে পেয়েছি হাজার যন্ত্রণা
পিছন থেকে লাথি খাওয়া এটাই ছিল মন্ত্রনা
কাজ করে কষ্ট পেয়ে রোজ দিচ্ছে গালি
শালা আমায় কষ্ট দিয়ে রোজ মারছে খালি।
এত কিছু হওয়ার পরেও হয়নি আমার লাজ
পরোপকার করাটাই যেন আমার প্রধান কাজ
পরোপকার কর তুমি শিখিয়েছে মা-বাবা
পরোপকার করে আমি রোজ খাচ্ছি থাবা।
দারুন লিখেছেন আপনার কবিতাগুলো অনেক অর্থবহ হয়ে থাকে। সেই সাথে সমাজের অনেক অনেক বাস্তব চিত্র আপনি কবিতার মাঝে তুলে ধরেছেন, সত্যি কবিতাটি পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে কবিতাটি, আসলে উপকার করলে মানুষ এমনই করে আমার সাথে এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল যেটা আমি এর আগে পোস্ট আকারে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম। এজন্যই উপকার করতে হলেও খুব ভেবেচিন্তে হিসাব-নিকাশ করেও করতে হবে আমি মনে করি। তারপরও আমাদের উপকার করে যেতে হবে কারণ উপরে আল্লাহ একজন আছে তিনি সব দেখছেন এর প্রতিদান তিনিই দিবেন। এভাবে চালিয়ে যান আশা করি আল্লাহ তাআলা আপনাকে ভালো একটা প্রতিদান দিবেন সেটা হয়তো এই দুনিয়াতে না দিলেও পরকালে পাবেন ইনশাল্লাহ।
আপনি প্রশংসার দাবিদার, যদিও এই বিষয়ে আপনি পোস্ট করেছেন। আমার নজরে আসেনি, ব্যস্ততার কারণে তেমন একটা পোস্ট দেখা হয় না। আর আপনার কথাগুলো একেবারেই সত্যি উপকার করলে বরঞ্চ নিজের ক্ষতি হয়। আপনার উৎসাহ ও ভালোবাসা আমাকে অনেক এনার্জি দেয় যা আমার কাজ করতে অনেক সাহায্য করে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আসলেই ঠিক বলেছেন এ সমাজে ভালোর কদর কখনো হয়নি, হবেও বলে আমার মনে হয়না! অন্যের উপকার করাটাই যেন বোকামি! বিনিময়ে পেতে হয় অপমান, লাঞ্চনা! আপনার কবিতার কথাগুলো বাস্তব চিত্রটাই তুলে ধরেছে। ভালো লিখেছেন 🌼
একদম ঠিক বলেছেন। গঠনমূলক মন্তব্য করে উৎসাহ দেয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
মুগ্ধ হয়ে গেলাম ভাই।অনেক সুন্দর ছিল।উপকার করলে যে কথা শুনতে হয়,তারপরেও আমরা উপকার করে যাই বিষয়টি খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।এভাবেই পরোপকার ও কবিতা লেখা চালিয়ে যান।অনেক শুভ কামনা রইল।
মন্তব্য করে সাথে থাকার জন্য শুভেচ্ছা রইল ভাইয়া।
সত্যি বলতে মানবতা ফিরে না আসলে কখনোই ভালো মানুষ, অথবা ভালো কার্যক্রম সফলভাবে ঘটতে পারবে না। অনেক বাস্তব মুখি একটি কবিতা লিখেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া, আপনাদের ভালো লাগাটাই আমার সার্থকতা।
আপনি অবশ্যই সার্থক এবং খুব চমৎকার একটি কবিতা উপহার দিয়েছেন ধন্যবাদ।
আপনার ভালোলাগাটাই আমার সফলতা। চেষ্টা করছি লিখার জন্য। আপনারা পাশে থাকলে অবশ্যই ভালো কিছু লিখতে পারবো।
জানেন তো সমাজের মানুষগুলো বেশির ভাগ সময়ই বড্ড বেঈমান হয়। উপকারের প্রতিদান তো দূরের কথা ,মনে পর্যন্ত কেউ রাখে না। এটাই বাস্তব রে ভাই। আমার সাথে কম হয় নি এমন। তবু যে যেমন তার স্বভাব তেমন থাকবেই। খুব সুন্দর গুছিয়ে কথা গুলো লিখেছেন ভাই। সত্যি ভালো লাগলো পড়ে। আর ভাই যে যেমনই বলুক না কেন, আপনি আপনার মতই থাকবেন। আর কেউ বুঝুক বা না বুঝুক , সৃষ্টি কর্তা বলে তো কেউ একজন আছেন। তিনি সবটা দেখছেন। ভালো-মন্দ বিচার তিনিই করবেন।
আপনার কথাগুলো শুনে খুবই ভালো লাগছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো ভালো মানুষ না থাকলে হয়তো পৃথিবীটাই থাকতো না। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যারা নিজের স্বার্থ আদায়ের জন্য অন্যদের ব্যবহার করে।প্রয়োজন শেষ হলে ছুড়ে ফেলে দেয়।এমন মানুষের থেকে দূরে থাকা ভাল।তাদের কারনে নিজেদের বরং ক্ষতি হয়।
খুব সুন্দর করে নিজের অনুভূতি ফুটিয়ে তুলেছেন লাইন গুলোতে।
একেবারে খাঁটি কথা বলেছেন। পর উপকার এবং স্বার্থের জন্য উপকার পার্থক্য অবশ্যই আছে। তবে আমাদেরকে বুঝেশুনে পথ চলতে হবে। শুভকামনা রইল সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন সব সময় পরোপকার করে যাবেন অনেক দিক দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করবেন দেখবেন সামান্য একটা কারণে এমন একটা কথা বলবে বা এমন একটা আচরণ করবে মনে হবে আপনি তার বহুদিনের অপরিচিত।।
আসলে আমাদের সমাজে এমন মানুষও আছে যারা মনে করে পরোপকারী আসল কাজ যেমনটি আপনি উপরের কয়েক লাইনে আমাদেরকে বুঝিয়েছেন।।
খুব সুন্দরভাবে পুরো কবিতাটি রচনা করে আমাদের মধ্যে শেয়ার করেছেন শুভকামনা রইল আপনার জন্য।।
পর উপকার করাটা অনেক স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। আবার অনেকের কাছে হাসির পাত্র। অসাধারণ মন্তব্য করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
কবিতাটি বেশ বাস্তব ধর্মী ছিল এবং বাস্তবতা নিয়েই লিখা বুঝতে পারলাম। তবে পরোপকার করলে বেশ কষ্ট পেতে হয় আমিও জানি এবং এর ভুক্তভোগী আমি নিজেও। তবুও মানিয়ে নিয়ে আর নিজেকে বুঝিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যে যেতেই হবে ভাই। পেছনে মানুষ কি বললো তা ভাবা যাবেনা এবং উপকারের প্রতিদান আশা করা যাবেনা।
সবকিছু ঠিকঠাক কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় বানান একটু ভুল ছিল। আশাকরি ভুলগুলো শুধরে নিয়ে চমৎকার লেখনি নিয়ে আসবেন আবারো আমাদের মাঝে।
দোয়া রইল ভাই 🥀
আপনাকে দেখে আগেই বুঝতে পেরেছি হয়তো আপনিও একজন মানবতার ফেরিওয়ালা মানুষ ভুল করে আর ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করব। আপনার কাঙ্খিত মন্তব্য করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য, আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম।
একদম বাস্তবমুখী একটি বিষয় সম্পর্কে আপনি কবিতা লিখেছেন ভাইয়া। কবিতার প্রতিটি লাইন যেন বাস্তবের সাথে মিলে যায়। আসলে অন্যের উপকার করলে নিজের মনের মধ্যে একটা শান্তি লাগে। কিন্তু অনেকের কাছে ছোট হতে হয়, বিভিন্ন ধরনের কথা শুনতে হয়। তবে এসব কথা আমাদের কানে নেওয়া উচিত না। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপনার কথাগুলো সত্য, কাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য, আপনার প্রতি রইল আন্তরিক অভিনন্দন।