আমার বাংলা ব্লগ। প্রথম প্রেমের অনুভূতি। ১০% beneficiary shy-fox এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)
আমার বাংলা ব্লগের বাংলার এপার-ওপারের সকল সহযোগী এবং সহযোদ্ধাদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সকলেই ভাল আছেন, আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আমি আজকে আপনাদের মাঝে নিয়ে এলাম আমার "প্রথম প্রেমের অনুভূতি" নিয়ে গল্প। আশা করি সকলেরই ভালো লাগবে।

চলুন যাওয়া যাক মূল পর্বে।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।

আমি প্রথমে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের সবার প্রিয় আর, এম, ই, দাদাকে। আসলে ধন্যবাদ দিলে কম হয়ে যাবে। যিনি আমাদেরকে নিজের মাতৃভাষায় ব্লগিং করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন। আর,এম,ই, দাদা মহৎ একজন মানুষ যার কৃতজ্ঞতা কোন কিছু দিয়ে শোধ করা যাবে না। এবং কি দাদা এবং আমাদের মডারেটরগণ সকলেই চেষ্টা করেন প্রতিনিয়ত আমাদেরকে হাসিখুশি রাখার জন্য। ভালো কাজ করার জন্য। তাইতো প্রতি সপ্তাহে আমাদেরকে উপহার দিয়ে থাকেন নতুন নতুন কন্টেন। ভালবাসি তোমায়, ভালোবাসা অবিরাম দাদা। আমাদেরকে "প্রথম ভালোবাসার অনুভূতির" গল্প প্রকাশ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


প্রথম প্রেমের অনুভূতি।

আমরা মানবজাতির সৃষ্টি শুরু থেকেই প্রেম ভালোবাসার মধ্যেই আবির্ভাব। এই পৃথিবীতে সেই থেকেই একজন আরেকজনের প্রতি আকুলতা ব্যাকুলতা ভালোবাসা মায়া মমতা সবকিছু মিলেই ভালোবাসা। তবে ভালোবাসা মূলত কৈশোর বয়স থেকেই উঁকি দিয়ে থাকে। আর সবচেয়ে কৈশোরের প্রেম ভালোবাসার উঁকিজুকি বেশি। আর সারা জীবন বুকে বহন করে বেড়ায় প্রতিটি মানুষ। হয়তো কেউ প্রকাশ করে, আবার কেউ গোপনে চাপিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ নিজের জীবন ধ্বংস করে দেয়। আবার কেউ লাইফে টার্নিং পয়েন্ট খুঁজে নিয়ে পৌঁছে যায় সফলতার শিকড়ে।

কৈশোরের প্রেম কিংবা ভালোবাসা এত মধুর যা সত্যি লিখে বা বলে বোঝানো খুব কষ্টকর। কারণ ওই ভালোবাসাটা সারা জীবন বুকের মধ্যে যতন করে আগলে রাখে প্রত্যেকটা মানুষ। তাদের মাঝে আমিও একজন যদিও সফলতার খোঁজ পাইনি, কিন্তু ভালোবাসাটা ছিল পবিত্র। কৈশরের ভালোবাসাটা বুকের ভেতরে গোলাপের কাটার মত ভিদে থাকে সারা জীবন। আর চাইলেও কেউ সে যন্ত্রনা মুছে দিতে পারে না। আবার কখনো না কখনো সে যন্ত্রণাটা উঁকি দিয়ে উঠে। আবার চলে যায় সেই কৈশোরের আবেগপ্রবণ ভালোবাসার কাছে। আবেগ দিয়ে জীবন চলে না। তাই সে ভালোবাসাটার মূল্যটাও কেউ দিতে চায় না।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


যাওয়া যাক মূল গল্পে। প্রথম প্রেমের অনুভূতি।

দুরন্তপনা কৈশোর

শৈশব কৈশোর আমার ভেড়ে ওঠা আমার পল্লী অযোগায়ে। ছোটবেলা থেকেই বন্ধু-বান্ধব নিয়ে চলতে ভালবাসতাম, খেলাধুলা ভালবাসতাম। এবং কি ফ্যামিলিতে সবার আদরের সন্তান ছিলাম। এবং ভাই বোনের আদরের ছোট ভাই ছিলাম। আমার ফ্যামিলি সদস্য ১০ জন, পাঁচ বাই, তিন বোন, আমি সবার ছোট। তাহলে বুঝতে পারছেন সবার আদরের দুলাল ছিলাম আমি। দুষ্টামিতেও সেরা ছিলাম আমি, আবার সবার মারও বেশি খেতাম। আমার শৈশব কৈশোর কেটেছে দুরন্ত। এক কথায় যেখানে শুই না চলতো, সেখানে কুড়াল চালিয়ে বসে থাকতাম, এটাই ছিল স্বভাব। তবে বেশিরভাগ মারামারি হানাহানি জরগাঝাটি সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু ছিল খেলাধুল।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


পড়াশোনা।

আমি একজন মুসলিম পরিবারের সন্তান হিসেবে আমার পড়ালেখার রুটিন ছিল সকালবেলা ফজরের নামাজের সময় মা পিটিয়ে বকে কান ধরে তুলে মুক্তবে পাঠাতো। মুক্তব থেকে এসে যা কিছু তৌফিক এ থাকতো বা ভাগ্যে জুটতো তাই খেয়ে পড়ার টেবিলে বসতে হতো। বড়জোর ১ থেকে দেড় ঘন্টা পড়াশুনা করে খেলাধুলার জন্য রেডি হয়ে যেতাম। কিছুক্ষণ দৌড়াদৌড়ি হইহুল্লো এদিক সেদিক যাওয়া আসা করতে করতে সময় হয়ে যেত স্কুলের যাওয়ার। সকাল ৯ টা থেকে স্কুলের ক্লাস শুরু হয় বিকেল চারটায় ক্লাস শেষ। এভাবেই কেটে গেল প্রায় সাড়ে ১৪ কি ১৫ বছর বয়স, তখন আমি ক্লাস নিউটনের ছাত্র।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


খেলার অপেক্ষায় বিকেলে আড্ডা।

আমার বাড়ির পাশে ই আমাদের মেম্বার কাকার বাড়ি। মেম্বার কাকার বাড়ির আশেপাশে অনেকগুলো মাঠ। যে মাঠগুলোতে আমরা খেলাধুলা করতাম। আমি দুপুরবেলা খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমায়নি তিনটার দিকে বেরিয়ে পড়লাম। হাঁটতে হাঁটতে মেম্বার কাকার ডিপ টিউবওয়েল পাকা সিঁড়ির মধ্যে গিয়ে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর আমার সমবয়সী চাচাতো ভাই সাখাওয়াত সে আসলো দুজনে বসে বসে গল্প করছি। কিছুক্ষণ পর মেম্বার কাকার মেয়ে রহিমা আর তার ফুফাতো বোন শিবলী সুইটি তারা তিনজন বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাড়ির সামনে উঠানে মধ্য ঘোরাঘুরি করছে গল্পগুজব করছে।

এরি ফাঁকে চাচাতো ভাই আড় চোখে তাকাচ্ছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। আর মাঝেমধ্যে আমাকে খোঁচা মারছে, কিরে এখানে এসে বসে থাকার কারণ কি প্রেম ট্রেম করস নাকি তুই। দেখিস রহিমার দিকে চোখ দিস না আমি ওর সাথে প্রেম করব। এভাবে কথা বলতে বলতে ওর সাথে তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়লাম। একসময় ওকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম এক সপ্তাহের মধ্যে কে প্রেম করতে পারে রহিমের সাথে, ও চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করলো আমিও করলাম। যদিও আমাদের মধ্যে এত কিছু হয়ে গেল, তারা কোন কিছুই আন্দাজ করতে পারেনি। শুধু এতোটুকুই বুঝতে পেরেছে যে আমরা তাদেরকে নিয়েই গবেষণা করছি। রহিমার বড় ভাই কামরুজ্জামান সে আমাদের সমবয়সী এবং কি অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু। শৈশব কৈশোর তার সাথে সব সময় খেলাধুলায় মেতে থাকতাম এবং কি মারামারিতে লেগেই থাকতো। কিন্তু দিনশেষে আবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাড়ি ফেরা এটাই ছিল আমাদের নিত্য দিনের কাজ।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


পারিবারিক সম্পর্ক।

মেম্বার কাকা আমার বাবা দুজনেই ছিল ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলতে গেলে দুদে চিনিয়ে যেমন একটা ভাব থাকে ঠিক ঐরকম। আর সেই সুবাদে মেম্বার কাকাদের বাড়িতে আমার যাওয়া আসা একটু বেশি হতো। রাজনৈতিক জীবনে কত মানুষ কত ধরনের ফাটল ধরাতে চেয়েছিল দুই বন্ধুর মাঝে কিন্তু কখনো তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক আলাদা করতে পারেননি। তাদের উঠাবসা বিচার-আচার করা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজের সবকিছুই ছিল পরস্পরের সাথে যুক্তির সহিত, কাজগুলো সম্পন্ন করতো। মেম্বার কাকার বাড়ির কোন বড় অনুষ্ঠান হলে কিংবা যেকোনো ধরনের আয়োজন হলে সেখানে আমি থাকতাম এটা কমন ছিল। কারণ বাবাকে ছাড়া আমি এক পাও এদিক সেদিক যেতাম না।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


ভালোলাগার ভাব ভঙ্গি কিছুদিন।

আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা বিশ্বাস করেন কিনা সেটা আমি জানি না। আমি যতটুকু জানি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে অর্থাৎ ৩০ বছরের একজন যুবক যা কিছু বোঝেনা ১৩-১৪ বছরের একটা মেয়ে সংসার সম্পর্কে এর চাইতে বেশি বুঝে। এবং কি যে কোন যুবকের চলার ধরন বা ভঙ্গি দেখলেই বলতে পারে যে আসলে ছেলেটা কি চায়। রহিমার স্কুলে যাওয়ার রাস্তা আমার বাড়ির সামনে দিয়ে। প্রতিনিয়ত রহিমার সাথে কথা হতো খেলাধুলা হত। কিন্তু আগের দেখা আগের কথাবার্তা চাইতে এখনকার কথাবার্তা চালচলন ভাবভঙ্গি সম্পূর্ণ আলাদা। বিষয়টা রহিমা কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছে। যদিও আগে কখনো স্কুলে যাওয়ার সময় ওর জন্য অপেক্ষা করতাম না বা ওর কথা কখনো মাথায় রাখেনি। কিন্তু সে মানুষটা সাথের স্কুলে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকতাম কখন একসাথে স্কুলে যাব। বিষয়টা সাথী ভালো করেই আন্দাজ করতে পেরেছে।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


আমার বড় বোনের সাথে রহিমার সম্পর্ক।

রহিমার বড় বোনের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর রহিমার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠা এবং কি প্রিয় বান্ধবী ছিল আমার বোন। আমার বোনদের মধ্যে ছোট এজন্য আমরা ছোট আপু বলেই সম্বোধন করতাম আপুকে, যদিও আমি আপুর অনেক ছোট। আর রহিমা মেয়ে হিসেবে বড় বোনদের সাথে গলায় গলায় একটা ভাব ছিল। যখন যা বলতো যেটা বলতো দৌড়ে এসে করে দিত, এই এক অন্যরকম মধুর সম্পর্ক ছিল আমাদের পরিবারের।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


রহিমার এবং আমার পড়াশুনা।

রহিমার বয়স কত ছিল তখন সেটা আমার অনুমান করতে পারছি না। তবে আমার ১৪-১৫ এর মাঝামাঝি চলছিল। তখন আমি ক্লাস নিউ টেনে পড়ি। আর রহিমার পড়ালেখা ছিল সে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ছে। এই এক সপ্তা যাবত আমি ওকে চোখে চোখে রাখছি এবং কি ওকে আগে থেকে একটু ভিন্নভাবে দেখছি এটা রহিমা ভালোভাবেই আন্দাজ করতে পেরেছে। সেই বুঝতে পেরেছে যে আমি তার কাছে কিছু চাইছি। আর তার এই বুঝতে পারার ভাব ভঙ্গিটাও আমিও কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছি যে আসলে রহিমা কি চায়।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


হঠাৎ প্রেমের প্রস্তাব।

আমি একদিন বিকেল বেলায় দিনটি কি বার ছিল আমার মনে পড়ছে না। বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মেম্বার কাকাদের বাড়ির সামনে গিয়ে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর দেখলাম কাছারি ঘরে রহিমা পড়তে আসছে। তার সাথে তার ছোট দুই ভাই বোন সুইটি এবং জুয়েল। তাদেরকে বিকেলে লজিং মাস্টার পড়ায়, শুধু বিকেল নয় সকাল বিকেল রাত তিন বেলায় লজিং মাস্টার পড়ায়। লজিং মাস্টারের বাড়ি ছিল লাকসাম, চাকরির সুবাদে সেই মেম্বার কাকার বাড়িতে লজিং থাকে। আর তাকে থাকতে দেওয়া হয়েছিল কাছারি ঘরে। সে ওখানেই থাকে ওখানেই পড়ায়।

রহিমাকে দেখে আমি একটু এগিয়ে গেলাম ও কিছুক্ষণের মধ্যে আবার বেরিয়ে আসলো। তখন আমি জানতে চাইলাম কি ব্যাপার পড়তে গিয়ে আবার চলে আসলি যে। তখন ও প্রতি উত্তর দিল স্যারের শরীর ভালো না আজকে পড়াবে না। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে, তখন সে আমাকে বলল আপনি একটু দাঁড়ান আমি বইগুলো রেখে আসছি। আপনার সাথে একটু কথা আছে। তার এই কথাটা শুনে আমার পেটের নাড়ি ভুড়ি যা ছিল সবকিছু মোচড় মেরে উঠলো। বুকের হার্টবিটটা বেড়ে গেল, কারণ আমি নিজেই বুঝতেছি নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। যে আমি ইদানিং তাকে একটু বেশি যন্ত্রণা দিচ্ছি। মনে মনে ভাবছি আল্লাহই ভাল জানে কপালে কি আছে।

কিছুক্ষণ পর সে হাঁটতে হাঁটতে গাটার দিকে আসলো। বাড়ির উঠোনের পরে যে মাঠ খোলামেলা জায়গা থাকে সেটাকে আমরা গাটা বলি। কারা আঞ্চলিক ভাষায় কি বলে সেটা আমি অবশ্য জানি না। যাইহোক তখন সে এসে আমার পাশে বসলো। সাথে তার ছোট বোন ছুইটি আছে, সুইটি অনেক ছোট সে মনে হয় ক্লাস ওয়ানে পড়ে একেবারেই অবুঝ। আমি কি প্রস্তাব দেবো হঠাৎ করে রহিমা আমাকে প্রশ্ন করে বসলো যে আপনি আমাকে ভালবাসতে চান তাই না। আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেছে, পুরো শরীর ঘামতেছে, তার চোখের দিকে যে মাথা তুলে তাকাবো সে সাহসটাও হারিয়ে ফেলেছি। তখন ভাবতেছি যে এই রহিমাকে আসতে যেতে বকা দিতাম মারতাম আর এখন আমি তার দিকে মাথা তুলে তাকাতে পারছি না বিষয়টা কেমন যেনো।

কিছুক্ষণ পর অনেক কষ্টে মাথাটা তুলে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে দেখলাম বিপরীত কিছু, সে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে এবং অতি নরম সুরে কোমল কন্ঠে বলছে আমি আপনাকে খুব পছন্দ করি। আমি আপনাকে ভালোবাসি। এই কথাটা শোনার পর আমার কলিজাটা এত বড় হয়ে গিয়েছে। আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়লাম কি বলবো প্রতিউত্তরে সে ভাষা টুকু হারিয়ে ফেলেছি। তার দিকে আবার মাথা তুলে তাকাতেই তাকে শুধু দৌড়ে যেতে দেখলাম, মনে হয় যেন অদৃশ্য হয়ে গেছে। আমার চোখটা ঝাপসা হয়ে গিয়েছে তাকে যে ডাক দেবো সে সাহসটাও হারিয়ে ফেলেছি। ঐদিন আর সেই বাড়ি থেকে বেরোয়নি। আমি অনেকক্ষণ পায়চারি করছি। কিছুক্ষণ পর একজন দুজন করে সমবয়সী সবগুলো আসতে শুরু করেছে খেলাধুলা করবে। তখন আমি আর খেলাধুলার প্রতি কোন মন মানসিকতাই ছিল না‌ সবাইকে বললাম না আমি খেলব না আমি চলে যাচ্ছি, এই কথাটা বলে আমি বাড়িতে গিয়ে কিছুক্ষণ এদিক সেদিক ঘোরাফেরা করছি কোন কিছুই শান্তি লাগছে না মজা লাগছে না। ইচ্ছে করছে রহিমার কাছে ছুটে যাই, কিন্তু যাওয়ার মতো সেই সাহসটাও মনে হয় যেন হারিয়ে ফেলেছি।

সেদিন পড়ার টেবিলে বসে পড়ালেখা হয়নি সারাক্ষণ আনমনা হয়ে কিছু একটা ভাবছিলাম। সারাক্ষণ শুধু চোখের সামনে কানের মধ্যে তার কথাটাই আমার বাসছে। রাতে খাওয়া-দাওয়া করতে পারিনি, সারারাত ঘুমোতে পারিনি। রাতে কখন ঘুম এসেছে তাও বলতে পারি না। এরপর দিন সকাল বেলায় আম্মু অনেক বকাঝকা করেছে ঘুম থেকে উঠার জন্য ফজরের নামাজ পড়ার জন্য। ঘুম থেকে উঠতে পারিনি। সকাল ৮টার দিকে পড়ার টেবিলে গিয়ে বসছি, কোন কিছুই ভালো লাগছে না। আর মনে হচ্ছে যেন হার্ট বিট টা কিছুতেই স্থির হচ্ছে না। খুব অশান্তি ভোগ করছি, কখন তাকে দেখবো কখন তার সাথে কথা বলবো। যে রহিমা স্কুলে যাওয়ার দশ মিনিট আগে বাড়ি থেকে বের হতো সেই রহিমা সকাল আটটা বাজে আমার বাড়িতে এসে হাজির। তখন আমার চোখ কপালে উঠে গেল, কি বলবো সে ভাষা ও খুজে পাচ্ছি না।

এতটাই মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল কখন কেটে গেল তিনটি বছর। আমাদের মধ্যে অনেক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে। দুজন দুজনকে ছাড়া বাঁচা বড় দায়। দুজন দুজনকে নিয়ে স্বপ্ন বুনছি। প্রতিদিন তাকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছি, স্কুল ছুটি হলে একসাথে আসছি। এর ফাঁকে বছরখানেক না যেতেই আমার এসএসসি পরীক্ষা কমপ্লিট হয়ে গেল, এসএসসি পরীক্ষা শেষ। আর রহিমা ক্লাস নাইনে উঠলো, কেউ বিন্দুমাত্র আন্দাজ করতে পারেনি আমাদের সম্পর্কের কথা। আমরা সব সময় একসাথেই হাত ধরে স্কুলে যেতাম, কথা বলতে বলতে। আবার কথা বলতে বলতে স্কুল থেকে আসতাম। তবে প্রথম যেদিন ওকে স্পর্শ করেছিলাম, মানে হাতটা ধরে ছিলাম সেদিন মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে দামি জিনিসটা আমি পেরেছি। এই অনুভূতি আমি কেন কারোর পক্ষেই প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

রহিমার বাপের এত অর্থ-সম্পদ বর্তমানেও যা আছে বললে হয়তো বিশ্বাস করবেন না, তবে সে তুলনায় রহিমা ছিল একেবারে মাটির মানুষ। একেবারে লাজুক প্রকৃতির একটা মেয়ে। কিন্তু সে আমাকে এত ভালবাসবে এটা আমি কখনো কল্পনাও করতে পারেনি। আর আমাদের ভালোবাসার মধ্যে কোন খুঁত ছিল না। এমনকি আমি তিনটি বছর আমাদের ভালোবাসা সম্পর্ক ছিল, সেখানে অনেক মান অভিমান ছিল। অনেক রাগারাগি হতো, আবার দিন শেষে দুজনে একসাথে কথা বলতাম। এগুলো সারা জীবনে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভোলা যাবে না। রহিমা সবচেয়ে বড় গুণ ছিল ওকে আমি কোনদিন কোন গিফট দিতে পারেনি। আর সেও আমাকে কখনো কোন কিছু আবদার করেনি, চায়নি। আমি জোর করেও কোন সময় কিছু দিতে পারেনি। তবে সে ভালোবাসা স্মৃতি হিসেবে আমার থেকে নিয়েছিল একটি মাত্র কলম। আর ওই সময় আমি কলমটা কিনেছিলাম ২৫ টাকা দিয়ে। বর্তমানে এই ধরনের একটা কলম কিনতে গেলে ৫০০ টাকারও বেশি লাগবে।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


ভালোবাসায় ফাটল ধরা।

আমাদের সম্পর্কর আমাদের বন্ধুবান্ধব যারা আছে সমবয়সী যারা আছে সবাই মোটামুটি জেনে গেছে। শুধু বড়রা ছাড়া মুরুব্বিরা ছাড়া। তার কিছুদিন পরে রহিমার বাড়িতে রহিমা ছোট ভাইয়ের সাথে তার চাচার ঝগড়া হয়। তার চাচা আমাদের বয়সে অনেক ছোট, কিন্তু একই সাথে খেলাধুলা করতো। তার নাম ছিল বিশু, সে ঝগড়ার মধ্যে জুয়েলকে অনেক গালাগাল করল এবং কি রবিউলের শালা বলেও কয়েকবার গালি দিল। আর এই কথাটাই তাদের মুরুব্বিদের কানে যায়, রহিমার আম্মা মানে আমাদের চাচী আম্মা এ বিষয়টাকে একটু বেশি করে ফেলছিল। কেন বলছিল এই কথা, আর রহিমের সাথে রবিউলের কি সম্পর্ক এটা তোকে বলতে হবে। এত কিছু হয়ে গেল আমিও কিছু জানিনা। তবে রহিমা জানে কিন্তু আমাকে বলার মত সে সুযোগটা পায়নি। কিন্তু আমাদের মধ্যে কোন সেল ফোন ছিল না আমারও না এবং কি পুরো এলাকাতে দুটি মাত্র টিভি ছিল, একটা রহিমাদের আরেকটা আমাদের। পুরো পাড়ার মানুষ ঘরে বাইরে জায়গা দেওয়া যেত না টিভি দেখার জন্য।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


সালিশের একদিন।

একপর্যায়ে চাচী আম্মা বিশাল সালিশ করে ফেলল। সেখানে রহিমাকে ডাকা হল, রহিমা বিষয় টি অস্বীকার করল। তবুও চাচী আম্মা থেমে নেই, আমাদের বাড়িতে এসে নালিশ দিয়ে গেছে। যে রবিউল এসব বিষয় নিয়ে যদি বাড়াবাড়ি না করে।আর যদি কিছু দেখি তাহলে আমি মেম্বারকে বলতে বাধ্যো হবো। এদিকে বাড়ি থেকে আমাকে কড়া শাসন, ওদের বাড়ির সামনে গেলে আব্বুকে সব বলে দিবে। তখন দুজনের মধ্যে দেয়াল তৈরি হয়ে গেল। এখন আর রহিমা কে একা একা স্কুলে যেতে দেয় না। তার ছোট ভাইকে সারাক্ষণ ছায়ার মত লেগে থাকে। এগুলো নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে অনেক কথা কাটাকাটি হয়েছে, অনেক ঝায়ঝামেলা হয়েছে। সবকিছুই অপ্রকাশ্য আমার ফ্যামিলিতে আমার বাবা জানে না। আর রহিমাদের ফ্যামিলিতে রহিমের বাবা জানেনা।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


এলোমেলো জীবন।

একটা সময় এসে আমার জীবনটা একটু এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। যেখানে বাবার সাথে ঘুমাইতাম সেখানে এখন আর বাবার সাথে ঘুমাই না। যেখানে সন্ধ্যার সময় ঘরে ফিরতাম, সেখানে রাত দুইটা তিনটা চারটা নেই ঘরে ফিরতাম। ব্যাপারটা আস্তে আস্তে বাবার কানে গেল। আর ওই দিন থেকে মেম্বারের কানে গেল। কিন্তু ইতিমধ্যে রাতে আমিও মেম্বার কাকার সাথে পরপর দুই তিনবার জঘন্যতম আচরণ করেছি। যা এখনো ভাবলে মাঝে মাঝে শরীরটা শিওরে ওঠে। আর এমন জঘন্যতম আচরণ করাটা আমার ঠিক হয়নি। যে কিনা আমাকে সন্তানের মত কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে। এক সময় রাতের আড্ডা দেওয়া বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরা সিগারেট খাওয়া এই বিষয়গুলো মেম্বার কাকার চোখে পড়ে, তখন কাকায় আব্বাকে বলে ভাই আপনার ছেলেটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এর কিছুদিন পরেই আব্বা এতটাই রাগ হয়েছে যে আমাকে মেরে ফেলবে বাড়িতে আর থাকতে দিবে না। তখন আমার জীবনটা একেবারে এলোমেলো হয়ে গেলো।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


অস্বীকার করা ভালোবাসা।

রহিমের প্রতি ভালোবাসা টা একটু হালকা হয়ে গিয়েছিল। ওকে যখন ডেকে সালিশের মধ্যে জিজ্ঞেস করল যে রবিউলের সাথে কি সম্পর্ক তখন সে অস্বীকার করেছিল। আর এই কথাটা আমার কানে আসতেই আমারও জিত চেপে বসলো। আমি আর জীবনটাই রাখবো না, কিন্তু জীবন্ত দিতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত এলাকা ছাড়তে হলো। কিন্তু এলাকা ছাড়ার আগে রহিমার ভাইয়ের সাথে চাচাতো ভাই জেঠাতো ভাইয়ের সাথে প্রচন্ড মারামারি হয়েছিল। যা ছিল সম্পূর্ণ সিনেমার মত, তাদের টার্গেট ছিল আমাকে দুনিয়াতেই আর রাখবে না। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে, অবশেষে বাবার বকার শুনে আর থাকতে পারলাম না বাড়িতে, বাড়ি ছাড়তে হলো আমার।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


যন্ত্রণাময় জীবনযাপন।

তখনকার প্রত্যেকটা দিন প্রত্যেকটা রাত যেন হাজার যন্ত্রণার মধ্যে কেটেছিল। আসলে এই যন্ত্রণাগুলোর কথায় লিখে বা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আমার মনে হতো যে হৃদয়টাকে ছিড়ে যদি দেখা যেত তাহলে হয়তো বুঝতে পারতাম যে আঘাতটা কেমন ছিল। তবুও দুজনের প্রতি দুজনের ভালোবাসার কমতি ছিল না। অন্তত দুই ঈদে বাড়িতে গেলে তার সাথে দেখা হতো। কিন্তু কথা বললেও তার মা পাশে এসে দাঁড়িয়ে থাকতো। আমিও ভয় পেতাম না যেই থাকুক না কেন চাচি আম্মা থাক আর রহিমার ভাই থাকুক অথবা আমার আপু থাকুক রহিমাকে ডাক দিয়ে বসতাম। ওর সাথে কথা বলতাম, কিন্তু এত কিছু হয়ে যাওয়ার পরও আমাদের ভালবাসাটা আগের মতই ছিল।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


আবারো ভালোবাসার টানে ছুটে যাওয়া।

শেষ পর্যন্ত কোরবানির ঈদ বাড়িতে গিয়েছিলাম রহিমার সাথে দেখা। তখন রহিমা ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। প্রায় তিন বছর পরের কথা বলছিলাম। কলেজে যাওয়ার সময় আমিও পিছু নিলাম। কিন্তু কোন রকমে ওর কাছে যেতে পারেনি ওর বাই পাহারা রেখেছে। অবশেষে আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে ওর কলেজে গেলাম, কলেজে যাওয়ার পর ওর সাথে কথাবার্তা বললাম। কিন্তুক সাথী বাড়ি যাবে না সাথী আমার হাত ধরেছে আজ ছাড়ছে না। তাকে আমার সাথে ঢাকা নিয়ে যেতে হবে। তখন দেশের এমন পরিস্থিতি ছিল এত সুন্দর একটা মেয়েকে নিয়ে আমি যদি ঢাকায় আসি ভালো কোন পজিশন নেই টাকা পয়সা নেই এবং কি সুন্দরীর রূপবতী একটা মেয়ে যদি আনতাম হয়তো আমাকে মেরে তাকে কেউ নিয়ে যেত সেই ভয়টা আরো বেশি ছিল আমার ভিতর। কিন্তু বিষয়টা আমি কোনভাবেই মেনে নিতে পারিনি। অবশেষে অনেক জোরাজোরি করার পরেও তাকে হাত ছাড়াতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত রাগ হয়ে ওকে একটা চড় মেরেছিলাম। সে যে আমার হাত ছেড়েছে আর সে কখনো আমার ছায়া পর্যন্ত পাড়ায়নি। আর কখনো আমার কথা ভাবাটাও সেই চিন্তা করেনি।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


ভালোবাসার মৃত্যু লগ্ন দিন।

এর কয়েক মাস পর হঠাৎ আমি এত বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম বাঁচব কি মরব সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। পুরো শরীরে ফক্স, ফক্সের ভয়ে তখন মানুষ মানুষের কাছে যেত না। অনেক কষ্টে বাড়ি আসলাম, বাড়ি আসার পর বাড়িতে কেউ নেই। একটা প্রাণীও নেই, সবাই রহিমার বিয়েতে চলে গেছে। আমার এক দিক দিয়ে পক্সের যন্ত্রণা, আরেক দিক দিয়ে রহিমার বিয়ে। মনে হচ্ছে যেন নিজের জীবনটা নিজেই দিয়ে দেই। ইচ্ছে করছিল আত্মহত্যা করার জন্য, কিন্তু সেই কাজ টা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। রহিমার বিয়েতে সবাই আনন্দ-ফুর্তি করে এসেছে। রাতে এসে আমাকে এই অবস্থা দেখে কিন্তু সবাই পাগলের মত ছুটেছুটি করছে। কিন্তু আমার পাশে একমাত্র মা ছাড়া পরবর্তীতে আর কেউই ছিল না, সবাই যে যাকে নিয়ে ব্যস্ত।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


হাজার ব্যাথা নিয়ে শহরের দিকে পথ চলা।

কয়েকদিন পর একটু সুস্থ হওয়ার পরেই এই অসুস্থ শরীর নিয়েই আবার শহরে চলে এলাম। কারণ এতটা যন্ত্রণা ভোগ করছিলাম যা কাউকে প্রকাশ করার মত নয়। ওই যে বাড়ি ছেড়েছি দুই বছর পরে বাড়িতে গেলাম। তাও যখন গিয়েছি তখন বাবা মারা গিয়েছিল। বাবা মারা যাওয়ার যন্ত্রণা আমি পাথর হয়ে গিয়েছিলাম। আমার চোখের পানি শুকিয়ে গিয়েছিল। তখন আমাদের বাড়িতে সবাই আসছিল, আত্মীয়-স্বজন যাদের জীবনে দেখিনি কখনো। রহিমা এসেছিল, কিন্তু তার কোলে একটা বাচ্চা ছিল, বাচ্চাটি তার ছেলে। কিন্তু এত কষ্টের মাঝে তাকে ডাক দেওয়ার মত ক্ষমতা ছিল না। উপরওয়ালার কি মহিমা ভালবাসার যন্ত্রনাটুকু সামান্যতম কমানোর জন্য হলেও আল্লাহর ব্যবস্থা করে দেন। যে রহিমা র মায়ের কারণে ভালোবাসাটা ভেঙে চুরে তছনছ হয়ে গেছে, সেই রহিমার মা তার চাচীর সাথে অর্থাৎ চেয়ারম্যান কাকার বউয়ের সাথে রহিমাকে দিয়ে বলছে রবিউলের সাথে গিয়ে কথা বল। বাকরুদ্ধ ছিলাম, কোন কথা বলতে পারিনি, কিন্তু পরবর্তীতে এই আনন্দটুকু অনুভব করতে পেরেছি।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


বাবার মৃত্যুর পর।

হাই হ্যালো বলছি, কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যান কাকার বউ উঠে চলে গেল। রহিমা উঠে চলে যাচ্ছে তার হাতটা টেনে ধরলাম। তার বাবুটাকে কোলে নিলাম, সে বিবাহিত তার একটা সন্তান আছে, কিন্তু তার সাথে কথা বলে বুঝতেই পারলাম না যে সে কেন বিয়ে বসল। আর তার কথাগুলো শুনে তার চোখের পানি দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছি। সে আমাকে এখনো এত ভালোবাসতো সত্যি আমাদের ভালোবাসা সম্পর্কটা ছিল অনেক মধুর।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


প্রথম প্রেমের অনুভূতি ভুলা যায় না।

শেষ পর্যন্ত একটা কথা বলতে হয়, যে যাওয়ার তাকে যেতে দিতে হয়। জীবনের অনেক ছন্দপতন দেখেছি অনেক ঘাটের পানি খেয়েছি কখনো কল্পনা করিনি বেঁচে থাকবো এই পৃথিবীতে। ভাঙ্গা গড়ার মন নিয়ে এখনো বেঁচে আছি। আর প্রথম প্রেমের অনুভূতি আপনাদের মাঝে প্রকাশ করতে পেরে এতটাই ভালো লাগছে সত্যিই বলে বোঝাতে পারবো না। অনেক কিছু বলতে পারিনি, লিখতে পারিনি, তবুও লিখে ফেলেছি অনেক কিছু। এই তিনটি বছরের ভিতরে আরো হাজারো স্মৃতি রয়ে গেছে, যেগুলো এখানে বলা সম্ভব হয়নি লেখা অসম্ভব হয়নি। স্মৃতির পাতায় রয়ে গেল সেই প্রথম প্রেমের অনুভূতি।


FUkUE5bzkAZT3HzV5tJDiU2ik81PCd4JCyhWnRcDN8XJsVFY3UNB8DCRWUhECrBewyvr56XLHQLFtR3iJUgyYXhoNnQzaPV4fGATT2PmXhFCBxcFCr2kEHS2obaiYPVBvHXcZ5NDLfrZh4qAU4CWzpqmK5XnDexEGztE.png


বন্ধুরা কেমন লেগেছে আমার প্রথম প্রেমের অনুভূতি। আশা করি সকলের কাছেই ভালো লাগবে। ভালো-মন্দ কমেন্টে জানাবেন। সাপোর্ট দিয়ে পাশে থাকবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। আবারো দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Sort:  
 2 years ago 

আপনার প্রথম প্রেমের অনুভূতি শুনে খুবই ভালো লাগলো। যদি আপনাদের সম্পর্কের মিল হতো তাহলে আর ভালো লাগতো। যদিও আপনাদের কাহিনীটা অনেকটা সিনেমার মতো ছিল। বেচারি রহিমা😡। আপনাকে ধন্যবাদ আপনার জীবনের এত বড় একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

আপনার সঙ্গে রহিমার প্রেমের গল্প পড়তে পড়তে আমি তো শেষ মনে হচ্ছিল বড়ো একটি উপন্যাস পড়ছি।তার উপরে আপনি যে সেরা দুস্টু ছিলেন এটা আপনাকে দেখলে বেশ বোঝা যায় ,হি হি☺️☺️।ভাইয়া দুঃখের বিষয় আপনাদের সম্পর্ক অপূর্ন রয়ে গেল কিন্তু স্মৃতি রইয়ে গেল।সুন্দর ছিল প্রেমের গল্পটি আপনি অবশ্যই একটা স্থানে নির্বাচন হবেন।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনার পোস্টটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লাম। আপনার লেখা পড়ে খুবই দুঃখ পেলাম। অল্প বয়সী ভালোবাসায় প্রচন্ড আবেগ থাকে যুক্তির উপস্থিতি সেখানে কম। আপনি হয়তো একটু সাহস করলে আজ তাকে নিয়ে সংসার করতে পারতেন। আপনার পোস্টটি ভালই হয়েছে। কিন্তু লেখায় প্রচুর বানান ভুল হয়েছে। যে ভুলগুলো আপনার পোস্টের মান অনেকটা কমিয়ে দিয়েছে। অনুগ্রহপূর্বক ভুলগুলো সংশোধন করে নিন। এতো বেশি ভুল হলে সেটি দৃষ্টিকটু দেখায়। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 56847.11
ETH 2970.63
USDT 1.00
SBD 2.29