বান্ধবী-কে নিয়ে রাজশাহী মেডিকেলে..by @robinsiddiqui...10% for @shy-fox🦊

🔺21 জুন
👉 মঙ্গলবার

_{পিক্সার্ট দিয়ে বানানো💜}

তো চলুন আর দেরি না করে আমার মেডিকেলের সেই দিনের অভিজ্ঞতাগুলো আপনাদের সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিই।

Device	Xiaomi Redmi note 10 pro
Location	here

---

বান্ধবীর নাম স্মৃতি। আমরা সকলে মিলে ক্যাম্পাসে ক্লাস করছিলাম। হঠাৎ সকালে সে ক্লাসে অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাই প্রথমে তাকে ভার্সিটির মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে গিয়ে জানা যায় তার আগে থেকেই অ্যাজমার সমস্যা ছিল। তাই তাকে সেখানে ভেন্টিলেশন এবং অক্সিজেনের সাপোর্ট দেওয়া হয় এবং কয়েকজন বন্ধু মিলে তার রুমে আমরা দিয়ে আসি। তারপর আমরা যথারীতি আবার ক্যাম্পাসে গিয়ে ক্লাস করছিলাম।

হঠাৎ স্মৃতির ফোন আবার আমাদের একজন বন্ধুর ফোনে বেজে উঠল। সে ফোন দিয়ে বলল তার আবার অনেক খারাপ লাগছে এবং অনেক ইমার্জেন্সি ভাবে আমাদের সবাইকে যেতে বলল।আমরা তাড়াতাড়ি করে দুইটি রিকশা নিয়ে তার মেসের সামনে গিয়ে হাজির হলাম।পরে তাকে নিয়ে সরাসরি রাজশাহী মেডিকেলে চলে গেলাম আমরা।

---

পিকচার-০২

Device	Xiaomi Redmi note 10 pro
Location	here

---

প্রথমে আমরা গিয়ে কোন সিট পাচ্ছিলাম না। পরে ডাক্তারের সাথে ইমারজেন্সি কথা বলে আমরা তাঁকে ভর্তি করে নিই। পরে সকাল থেকে কী কী হয়েছে সবকিছু জানার পর ডাক্তার তাকে একটি প্রেসক্রাইব করল এবং অক্সিজেন মাক্স মুখে লাগিয়ে দিল। স্মৃতির যেহেতু অ্যাজমার সমস্যা তাই সব সময় তার কাছে ইনহেলার থাকতো কিন্তু সেদিন দুর্ভাগ্যক্রমে তার কাছে সেটি ছিল না বলেই এতো কিছু।অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়ার পর তার খানিকটা স্বস্তি ফিরে এলো। তারমধ্যে স্মৃতি আবার সেদিন সারাদিন কিছু খাইনি। মানে সবকিছু মিলিয়ে একবারে সব অ্যাটাক করেছে।

---

পিকচার-০৩

Device	Xiaomi Redmi note 10 pro
Location	here

---

আমরা 3-4 জন বন্ধু তাকে নিয়ে একদম সকাল থেকে বিকাল-সন্ধ্যা পর্যন্ত ওখানে ছিলাম। একদম আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছিলো।কারণ,আমরা কেউ কিছু খেয়ে যায়নি। পরে অগত্যা সেখানেই আমরা বাইরে থেকে রুটি সবজি নিয়ে চারজনের জন্য খাবার নিয়ে গেলাম। আমরা সবাই রুটি-সবজি খাওয়ার পর স্মৃতিতে দুইটি ওষুধ খাইয়ে দিল ডাক্তার। সরকারি হাসপাতাল বুঝতেই তো পারছে!! ওইরকম কোনো VIP সুযোগ-সুবিধা নেই।যেখানে যে জায়গা পেয়েছে সেখানেই তার ট্রিটমেন্ট চলছে।

2-1 ঘণ্টা যাওয়ার পর পরিস্থিতি যখন একটু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে তখন তার মন ভালো করার জন্য আমরা চিল মোডে ছবি উঠি। এভাবে আরো এক ঘণ্টার মধ্যে চলে গেল।

---

পিকচার-০৪

Device	Xiaomi Redmi note 10 pro
Location	here

---

স্মৃতি তখন অনেকটা স্বাভাবিক ফিল করছিল।তাই বলছিল সে তার রুমে চলে যাবে এবং আমরা তার রিলিজের জন্য ডাক্তারের কাছে গেছিলাম। কিন্তু ডাক্তার এত সহজে রিলিজ দিতে চাচ্ছিল না কারণ, পরে যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে তার দায়-ভার কে নেবে!!যেহেতু তার বাবা-মা এখানে নেই। অবশ্য অনেক আগেই আমরা তার বাবা-মাকে ফোন করে বিষয়টা বলে দিয়েছিলাম এবং তার বাবা-মা দুজনেই কুষ্টিয়া থেকে রওনা দিয়ে দিয়েছিল তার মেয়েকে দেখার জন্য।

যেহেতু আমরা 3-4 জন ছিলাম এবং আমাদের ওখানে বসে থাকার সেরকম কোন ব্যবস্থা ছিলনা,তাই পাশের একজন রোগীর থেকে একটা পাটি নিয়ে বন্ধুরা যে যার মত বসে পড়লো।আর আমি একজন রোগীর বেডে এক পাশে শুয়ে পড়লাম।

---

পিকচার-০৫

Device	Xiaomi Redmi note 10 pro
Location	here

---

একইভাবে তিন-চার ঘন্টা থাকার পর এবং হাসপাতালের পরিবেশ ভালো লাগছিল না বিধায় এক পর্যায়ে আমরা এক বড় ভাইকে ফোন দিলাম। তিনি এসে আমাদের রিলিজ করিয়ে দিলো অনেক তাড়াতাড়ি।সবার বামপাশের সেই ভাইটিই আমাদের রিলিজ করিয়ে দিয়েছিল। তারপর ডাক্তারের কাছ থেকে রিলিজ স্লিপ নিয়ে এবং প্রেসক্রাইব টি নিয়ে আমরা সকল ফরমালিটিস শেষ করে স্মৃতি কে নিয়ে আস্তে আস্তে বেরিয়ে পড়লাম।

---

পিকচার-০৬

Device	Xiaomi Redmi note 10 pro
Location	here

---

আমরা হাসপাতালের উপর তলা থেকে নিচে সিঁড়ি বেয়ে নামতে কষ্ট হবে দেখে স্মৃতিকে নিয়ে লিফটে উঠে পড়লাম। যেহেতু আমরা সাকসেসফুলি খুব কম সময়ের মধ্যে স্মৃতিকে আল্লাহর রহমতে সুস্থ করে তুলতে ফেলেছিলাম, তাই একটি বিজয়ের হাসি লিফটের মধ্যে মিরোর সেলফিতে ফুঠিয়ে তুলেছিলাম আমাদের মুখে।পরে লিফট থেকে নেমে আমরা মেডিকেলের গেটের দিকে গেলাম অটো ঠিক করার জন্য।

---

পিকচার-০৭

Device	Xiaomi Redmi note 10 pro
Location	here

---

অটো ঠিক করার সময় আমরা সবাই মিলে রাজশাহী মেডিকেলের সামনে একটি লাস্ট সেলফি তুলেছিলাম এই দিনটাকে স্মৃতি করে রাখার জন্য। আসলে ভার্সিটি লাইফের বন্ধুরাই এমন যে,যে কেউ যেকোনো ধরনের বিপদে পড়লে সবার আগে আমরা আমাদের সাধ্যমত এগিয়ে আসি তার পাশে থাকার জন্য। তারপর ডাক্তার তাকে যে প্রেসক্রাইব করে দিয়েছিল সেই ওষুধগুলো এবং ইনহেলার টি কিনে নিলাম।

যেহেতু স্মৃতিকে একা তার মেসে পাঠানো ঠিক হবে না তাই তাকে এক বান্ধবীর বাসায় পাঠালাম সে রাতের জন্য। পরে তার বাবা মা এসেও সেই বান্ধবীর বাসায় সেদিন ছিল এবং পরেরদিন সকালে স্মৃতিকে নিয়ে কুষ্টিয়া চলে যায়। আর হ্যাঁ,সেদিন আমাদের ডিপার্টমেন্টের কিছু বড় ভাইদেরও পাশে পেয়েছিলাম।

---

আজকের মতো এই পর্যন্তই ।দেখা হবে আপনাদের সাথে নতুন কোন রেসিপি পোস্ট বা অন্য কোন পোস্টে। ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকবেন, ধন্যবাদ।❤

---

"আমার পরিচয়"

^{_{আমি রবিন সিদ্দিকী। পড়াশোনা করছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভগের ১ম বর্ষে।পড়াশোনার পাশাপাশি প্যাশন হিসেবে গান,গিটার,ফটোগ্রাফি ও ট্যুর করতে ভালোবাসি। 'আমার বাংলা ব্লগ' যদি কোনো গাছ হয়,তাহলে 'স্টিমিট' তার শিকড়। 'আমার বাংলা ব্লগের' সাথে থেকে নিজেকে একদিন একটা প্রফেশনাল জায়গায় নিয়ে যেতে চাই।}}

ধন্যবাদান্তে,

@robinsiddiqui

---