মিনিয়েচার মডেল "সপ্তমাশ্চর্য ভ্রমণ", ইকো পার্কে : পঞ্চম আশ্চর্য "আগ্রার তাজমহল"

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

তাজমহলের কথা বিস্তৃত বলে আর কি করবো ? ভারতের প্রায় প্রতিটা ছেলেমেয়েই কম বেশি জানে আগ্রার এই তাজমহলের কথা । অদ্ভুত সুন্দর এই স্থাপত্যটি । যমুনার তীরে তুষার ধবল এই সৌধের নয়নভুলানো সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়নি এমন মানুষ খুঁজলে খুব কমই মিলবে । মুঘল সম্রাট শাজাহান তাঁর প্রিয়তম স্ত্রী মমতাজের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১৬৩২ সালে তাজমহলের নির্মাণ কাজ শুরু করেন । দীর্ঘ ২১ বছর ধরে এর নির্মাণ কাজ চলে এবং অবশেষে ১৬৫৩ সালে স্থাপত্যটি সম্পূর্ণ হয় ।

তাজ মহলের স্থপতি ছিলেন ভারত, পারস্য তুরস্কের একাধিক নামকরা স্থপতি । তন্মধ্যে ওস্তাদ আহমেদ লাহুরি, মাকরামাত খান এবং আবদুল করিম মামুর খান প্রধান ছিলেন । ২১ বছর ধরে ২২ হাজার শ্রমিকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল এই তাজমহল । তাজমহলের গড় উচ্চতা ১৮০ ফুট, মূল গম্বুজটি ২১৩ ফুট উঁচু এবং এর চতুর্পাশে চারটি মিনারের প্রত্যেকটির উচ্চতা ১৬২ ফুট । মূল স্থাপত্যটির আয়তন ১৯০২ X ১০০২ ফিট ।

তাজমহল বহু মূল্যবান পাথর দ্বারা নির্মিত হয়েছিল । তন্মধ্যে সাদা মার্বেল পাথর-ই ছিল প্রধান উপাদান । এছাড়াও লাল , কালো, গোপালী পাথরও প্রভূত পরিমানে আনা সারা বিশ্ব ঢুঁড়ে - ভারত, পারস্য, বাগদাদ, তিব্বত, শ্রীলংকা, ইয়ামেন, কানাডা ও মিশর প্রভৃতি দেশ থেকে প্রায় ১৭ হাজার মনেরও অধিক পাথর আনা হয় এর নির্মাণকার্যে ।

তাজমহল এখন যেমন দেখতে আগে কিন্তু এমনটি ছিল না । মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পূর্বে তাজমহলের দেয়ালের সর্বত্র নানান রকমের বহুমূল্য রত্ন ও মূল্যবান পাথরে সজ্জিত ছিল । একটি ঐতিহাসিক বিবরণী থেকে এর একটা আভাস পাওয়া যায় - চৌম্বক পাথর ৮০ মণ, স্বর্ণ ২০০ মণ, গোয়ালিওর স্টোন ৯৯০ মণ, চুনী ৬০ মণ, পান্না ১০০ মণ, ফিরোজা মণি ৯০ মণ, নীলকান্ত মণি ১৬০ মণ, নানান রঙের উজ্জ্বল মণি ও মুক্তো ১৮০ মণ, উজ্জ্বল দ্যুতিময় নানান ধরণের মূল্যবান পাথর ৮০ মণ এবং আরও মহামূল্যবান বিদেশ থেকে উপঢৌকন হিসাবে প্রাপ্ত প্রায় ২৩০ মণি মাণিক্য । মুঘল সাম্রাজ্য পতনের সাথে সাথে বহুবার লুন্ঠিত হয়ে তাজমহল এখন রিক্ত ।

সূর্যোদয়ে তাজমহলের রং হয় গোলাপী, সন্ধ্যায় ধবধবে সাদা আর পূর্ণিমা রাতে নীলাভ রঙের দেখায় ।

কথিত আছে অপূর্ব এই প্রেমের সমাধি তাজমহলের গায়ে নাকি রক্তের দাগ লেগে আছে । তাজমহলের ২২ হাজার নির্মাণ শ্রমিকের অধিকাংশের দুই হস্ত কর্তন করা হয় এর নির্মাণ কাজ সমাধার সাথে সাথেই যাতে দুনিয়াতে আর কেউ দ্বিতীয় তাজমহল না তৈরী করতে পারে ।

কলকাতার ইকো পার্কে তাজমহলের একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ রয়েছে - তো চলুন দেখে নেওয়া যাক ।


ছোট্ট পরিখার ওধারে তাজমহল, গোধূলিবেলায় ।

তারিখ : ০১ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ০২ মিনিট
স্থান : ইকো পার্ক, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


সন্ধ্যাবেলায় অনেকটা দূর থেকে তাজমহল ।

তারিখ : ০১ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ০২ মিনিট
স্থান : ইকো পার্ক, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ধীরে ধীরে তাজমহলের যত সন্নিকটে যাচ্ছি ততই যেন এর সৌন্দর্য্য ফুটে উঠছে ।

তারিখ : ০১ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ০২ মিনিট
স্থান : ইকো পার্ক, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


তাজমহলের একেবারে ঠিক সামনে, রংবেরঙের বেশ কয়েকটি ফোয়ারা রয়েছে এর সামনে ।

তারিখ : ০১ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ০২ মিনিট
স্থান : ইকো পার্ক, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


তাজমহলের গর্ভগৃহে মমতাজের সমাধির রেপ্লিকা ।

তারিখ : ০১ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ০২ মিনিট
স্থান : ইকো পার্ক, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


তাজমহলের একটি মিনারের সামনে তনুজা এবং টিনটিনবাবু ।

তারিখ : ০১ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ০২ মিনিট
স্থান : ইকো পার্ক, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


Sort:  

beauty of the place, what a regret that I have left on the other side of the world

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



 2 years ago 

দাদা আপনার পোষ্টের মাধ্যমে মনে হচ্ছে সপ্তম আশ্চর্য গুলোর একটা রিভিউ হয়ে গেল। সপ্তম আশ্চর্য গুলো দেখার সৌভাগ্য কোনদিন হবে কিনা জানিনা। তবে ছোট করে হলেও আপনার পোস্টের মাধ্যমে সপ্তম আশ্চর্য গুলো পর্যায়ক্রমে দেখে নিতে পারলাম। রাতের বর্ণিল আলোয় তাজমহল টাকে দেখতে আরো সুন্দর লাগছে। ইকো পার্কে তাজমহল টি দেখতে আগ্রার তাজমহলের চেয়ে আমার কাছে কোনো অংশে কম মনে হচ্ছে না। ইকোপার্কের সৌন্দর্য আমাদের দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

দাদা আপনি ঠিক বলেছেন তাজমহলের ইতিহাস আমরা সবাই জানি ছোট বাচ্চাদের শুরু করে বৃদ্ধ বৃদ্ধ সবাই তাজমহল সম্পর্কে অবগত। মোগল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজের জন্য তাজমহল নির্মাণ করেন । পৃথিবীতে প্রেমের নিদর্শন হিসেবে তাজমহল এর জুড়ি মেলা ভার। আপনি তাজমহল সম্পর্কে সুন্দর সংক্ষিপ্তভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস তুলে ধরেছেন। প্রেমের কথা মনে পড়লেই তাজমহলের কথা মনে পড়ে। প্রেমের অপূর্ব সৌন্দর্য ও প্রেমের জন্য ত্যাগ মহিমা এক চিরায়িত নিদর্শন তাজমহল। কলকাতায় ইকো পার্কে সপ্তম আশ্চর্য হিসেবে তাজমহল অবস্থা সত্যি আনন্দদায়ক। এই ইকো পার্ক সম্পর্কে আমার আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছুদিন আগে আপনি যখন কলকাতা মিউজিয়াম এর ফটোগ্রাফি সহ বিভিন্ন সংগ্রহ আমাদের মাঝে তুলে ধরলেন। তখন আমি বুঝেছি কলকাতা কতটা সমৃদ্ধ ।এরপর আপনি যখন কলকাতা ইকো পার্কের সম্পর্কে আমাদের মাঝে এত সুন্দর সুন্দর আশ্চর্যজিনিস গুলো তুলে ধরেছেন তা দেখে আমি মুগ্ধ। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা আপনার মাধ্যমে এত সুন্দর সুন্দর তিনি সম্পর্কে অবগত হতে পারছে।

 2 years ago 

তাজমহল সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশীরাও মোটামুটি জানি দাদা। সত্যি পৃথিবীর বুকে প্রেমের অসাধারণ এক স্থাপত্য এই তাজমহল। তাজমহল সম্পর্কে অনেক নতুন কিছু তথ্য পেলাম আপনার পোস্ট থেকে। এর দেয়ালে যে নানারকম মূল‍্যবান পাথর খচিত ছিল এটা জানতাম না।

সূর্যোদয়ে তাজমহলের রং হয় গোলাপী, সন্ধ্যায় ধবধবে সাদা আর পূর্ণিমা রাতে নীলাভ রঙের দেখায় ।

এবং এটা বেশ অবাক করার মতো তথ্য ছিল। কলকাতা ইকোপার্কে তাজমহলের সিকুয়েলটা দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য দাদা।

 2 years ago 

ক্লাস ৪ থেকে বইয়ে পড়ে আসছি তাজমহল সম্পর্কে। কখনো বাংলা বইয়ে কখনো সমাজ আবার কখনো ইংরেজিতে।বাট সবগুলোতে শুধুমাত্র একটি করে ছবিই দেয়া থাকতো তাও জাস্ট তাজমহলটিকে একটা ফ্রেমের ভেতর নিয়ে।
আপনার এই পোস্টে বেশ অনেক ফটোগ্রাফি দেখিয়েছেন এবং সবগুলোই বেশ আকর্ষণীয়। অনেক অনেক ভালোবাসা আর শুভ কামনা রইলো দাদা 🖤🥰

 2 years ago 

আগ্রার তাজমহল দেখে ভীষণ ভালো লাগলো।
যদি কখনও সৌভাগ্য কুলায় ইনশাআল্লাহ একদিন স্বচক্ষে দেখবো। আর আজ আপনার চোখে এই আশ্চর্য জিনিসটা দেখে নিলাম 😍

 2 years ago 

বই কিংবা গল্পে অনেক তাজমহলের কথা শুনেছি।আজকে আপনার পোস্টের মাধ্যেমে অনেক কিছু জানতে পারলাম।খুবই সুন্দর। তবে অবাক লাগছে যে,দিনের বেলা সাদা,সন্ধ্যায় গোলাপি ও পূর্ণিমা রাতে নীলাভ রঙের দেখায়। ছবিতেই এতো সুন্দর, তাহলেল সরাসরি আরো সুন্দর মনে হচ্ছে। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

এই তাজমহলটা আমার কাছে সব সময়ই অসম্ভব সুন্দর লাগে। আর আপনার আজকের ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এর সৌন্দর্য যেন আরও অনেক বেশি ফুটে উঠেছে ।ইচ্ছে আছে কোনদিন যদি যেতে পারি তো যেয়ে দেখে আসব। দূর থেকে আস্তে আস্তে করে কাছে আসার ফটোগ্রাফি গুলো সত্যিই চমৎকার ছিল দাদা ।ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।

Waow what a master piece.

Hy @rme nice photography i love Taaj Mahal.
I have a huge wish to see this front of my eyes.

Dear @rme i need your help to grow here in steemit

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74