কুঞ্জবিহারীর নিকুঞ্জ - পর্ব ০৩
copyright free image source pixabay
দ্বিতীয় পর্বের পর
তিন
বিস্ময়ের প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে নিয়ে এরপরের করণীয় কি আছে মনে মনে স্থির করে নিলেন হরনাথবাবু । গ্রেট ডেন কুকুর এমনিতেই বিরাট হয়ে থাকে, আর এর তো আকৃতি আরো বিশাল । ডেনদের মধ্যে দানব বলা যেতে পারে একে । একা বাড়ি পর্যন্ত এই আহত কুকুরকে বয়ে নিয়ে যাওয়া একেবারেই অসম্ভব হরনাথবাবুর পক্ষে । যে কোনো একক ব্যক্তির পক্ষেও সেটা অসম্ভব, তা সেই ব্যক্তি যতই শক্তিশালী হোক না কেন । কারণ, কুকুরটির আনুমানিক ওজন ১২০ কেজির বেশি বই কম হবে না । সাধারণত একটা পুরুষ গ্রেট ডেনের ওয়েট সর্বোচ্চ ৯০ কিলোর আশেপাশে হয়ে থাকে । আর এতো দানব ।
যাই হোক, হরনাথবাবু একটু দ্রুত পায়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলেন । ছেলে আর চাকরবাকরকে খবর দিতে হবে ।
অন্যদিনের তুলনায় একটু আগেই আজকে বাড়িতে ঢুকলেন হরনাথ বাবু । তখনও কুঞ্জবাবুর অক্সিজেন তৈরির মেশিন প্রদর্শনের আড্ডা-সভা শেষ হয়নি । দ্বিতীয় রাউন্ড চা-চপ শেষের পথে । কিন্তু, আচমকা হরনাথ বাবুকে ঢুকতে দেখে মুহূর্তে অমন জম জমাট আসর নিমেষেই ফর্সা ।চায়ের শূন্য কাপ গুলি শুধু পড়ে রয়েছে । কিন্তু চপ-সিঙ্গাড়া একটাও নেই । হরনাথ বাবুকে গেট দিয়ে ঢুকতে দেখে যে যা পেরেছে চপ-সিঙ্গাড়া নিয়ে সরে পড়েছে ।
শুধু বোকা হারাণ মাস্টার দ্রুত চা গিলতে গিয়ে জিব্বা টিব্বা পুড়িয়ে শূন্য আসরের এক কোণে বসে পরিত্রাহি চ্যাঁচাচ্ছেন । হরনাথ বাবু ঢুকেই এমন এক রাম তাড়া লাগলেন যে পরমুহূর্তেই হারান মাস্টার অনুভব করলেন জিব্বার জ্বালা যেনো অনেকটাই কমে গেছে । হরনাথবাবুকে দেখলেই হারান মাস্টার ভয়ানক নার্ভাস হয়ে পড়েন । আজকেও তার ব্যতিক্রম হলো না ।
-"এই যে হহহ রনাথ বাবউ । ভালোওও .....আছেন স্যার ? আপনার পিতৃদেব ভালো আছেন ?"
-"আমার পিতৃদেব বহুকাল আগেই দেহরক্ষা করেছেন হারান ।", গম্ভীরভাবে বললেন হরনাথবাবু ।
-"কুঞ্জ, হারান তোমরা আমার সাথে এসো । আর চাকর-বাকর দু'এক জনকে ডেকে নিয়ো সাথে । কাজ আছে ।"
সবার আগে হরনাথবাবু, পিছন পিছন কুঞ্জবাবু, হারান মাস্টার আর দু'জন চাকর; চাকরদের একজনের হাতে একটা হ্যাজাক । হরনাথবাবু হনহন করে ছুটে চলেছেন । তাঁর সাথে পাল্লা দিয়ে হাঁটতে গিয়ে হারান মাস্টার আর কুঞ্জবাবুর জিব বেরিয়ে যাচ্ছে । চাকর বাকর দুজনেরও ভারী দম সম হচ্ছে । ফোঁস ফোঁস করতে করতে হাঁটছে তারা আর নিজেদের মধ্যে নিচু স্বরে বলাবলি করছে যে কর্তাবাবু একেবারে ঘোড়দৌড় লাগিয়েছেন ।
দ্রুতবেগে হেঁটে কিছুক্ষনের মধ্যেই তাঁরা এসে পৌঁছলেন ঝিলের ধারে সেই অশ্বত্থের তলে । হ্যাজাকের আলোয় দেখা গেলো কুকুরটা এখনো তেমনি আছে । কুকুরের সাইজ দেখে আঁতকে উঠলেন হারান মাস্টার । ভয়ে বুক কাঁপতে লাগলো চাকর দু'জনের । কিন্তু, কুঞ্জবাবু মোটেও ভয় পেলেন না । কুকুরটি আহত দেখে সঙ্গে সঙ্গে তার শুশ্রষায় লেগে গেলেন । ক্ষিপ্র হাতে যখন ব্যান্ডেজ বেঁধে দিলেন, কুকুরটা লম্বা জিভ বের করে চেটে দিলো কুঞ্জবাবুর হাতটা ।
কুঞ্জবাবু খুব খুশি হয়ে বললেন, "আজ থেকে তোর নাম নিকুঞ্জ । তুই আমার সব চাইতে ভালো বন্ধু হবি ।"
দাদা পড়া শুরু করতেই শেষ হয়ে গেলো। আরেকটু বেশি লিখলে কি ক্ষতি হতো? দারুন জমেছে গল্পটা। আবার যে কবে পরবর্তী পর্বটা পাবো?
কুঞ্জ বাবুর নিকুঞ্জ এবার আমাদের মাঝে প্রকাশ হতে চলেছে। এই গল্পের অন্যতম চরিত্র নিকুঞ্জকে আমরা পেয়ে গেলাম। নিকুঞ্জকে ঘিরে হয়তো তৈরি হয়েছে হাজারো রহস্য। আর এই রহস্যের মায়াজাল ভেদ করতেই অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বের জন্য। ধন্যবাদ দাদা।
বেচারা চা খেতে গিয়ে জিব্বা পুড়ে ফেললো 😄। এটা আমার কাছে মজা লেগেছে খুব।
আর কুন্জ বাবুরও অনেক দিনের ইচ্ছা পূরণ হলো। কুকুরটা নামটাও চমৎকার দিয়েছে কুন্জ বাবু।
আজকের পর্ব টি পড়তে পড়তেই শেষ হয়ে গেল। বেশি ছোট হয়ে গিয়েছে। যাইহোক সমস্যা নেই পরবর্তী পর্ব তো এখনই পড়তে পারব। হা হা হা। একসঙ্গে পড়ার মজাই আলাদা।
যাক, শেষপর্যন্ত কুঞ্জবাবুর অনেক বছরের মনে পুষে রাখা ইচ্ছেটা আজ পূরণ হতে যাচ্ছে। তবে মনে হচ্ছে এই কুকুরকে নিয়ে ভালোই রহস্য হবে। অপেক্ষায় আছি দাদা।
গল্পটি যত পড়ছি ততো আরো আগ্রহ বাড়ছে। এ গল্পটি আরো সামনে অনেক ভালো একটি রূপ নিবে আমি মনে করছি। কুকুরটি নিয়ে আরো রহস্য আছে মনে হচ্ছে,গল্পটি সম্পন্ন করার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
দ্বিতীয় পর্বটি পরে খুব ভালো লাগলো ।সামনের পর্ব হয়তো আর ও মজার হবে ।ধন্যবাদ
বেশ একটা আকর্ষণ কাজ করতে ছিলো কি হয় কুকুরটার, শেষে পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যাবে তো? পুরোটা পড়ে মনে হচ্ছে আরো একটু বড় হলে ভালো হতো, আজকে মনে হচ্ছে এটকু দ্রুত পড়ে ফেলছি, হি হি হি হি। নতুন পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম
"জীবে দয়া করে যে জন,
সেজন সেবিছে ঈশ্বর "।
কুকুরটির সেবা করতে গেলে কুকুরটিও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে জিব দিয়ে কুঞ্জবাবুর হাত চেটে দিলো।
অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই।সে জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Upvoted! witnesses vote for me get daily upvote. Thank you for your support