পুরোনো স্মৃতিচারণ : "সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অভিযানের মুহূর্ত গুলি ক্যামেরাবন্দী"
অনেক দিন আগের কথা, প্রায় বছর চারেক আগের কথা । সুন্দরবনে গিয়েছিলাম । সুন্দরবনের বাওয়ালী ও জেলেদের জীবনযাত্রা নিয়ে একটা শর্ট ডকুমেন্টারী তৈরী করেছিলো আমার পরিচিত একটা ফিল্ম প্রোডাকশন হাউজ । আমিও ঝুলে পড়েছিলাম তাঁদের সাথে । অদ্ভুত কিছু অভিজ্ঞতা, গা ছম ছমে কিছু অনুভূতি অর্জন করতে সমর্থ হয়েছিলাম । শ্যুটিং এর পুরো সময়টাতেই আমি শ্যুটিং ইউনিটের সাথে থেকে উপভোগ করেছিলাম সব কিছু ।
সত্যি সুন্দরবনের তুলনা নেই । রহস্যে ঘেরা এই সুন্দরবন । বৈচিত্র্যময় এর প্রকৃতি ও পরিবেশ, আরো বেশ আকর্ষণীয় বিষয় হলো সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য । অসংখ্য প্রজাতির উদ্ভিদ, রেপ্টাইল, পাখি, হরিণ, বাঁদর আর বনের রাজা বেঙ্গল টাইগার । জঙ্গলের ভিতর আছে জালের মতো ছড়ানো অসংখ্য খাল । আর সেই সব খালে আছে কুমির, ডলফিন, কামট, কচ্ছপ আর হরেক প্রজাতির মাছ ।
সুন্দরবনের জঙ্গল ঘেঁষা জনপদগুলিও কম বৈচিত্র্যময় নয় । এই সব জনপদের জীবিকার প্রধান উৎস্য মাছ ধরা, গোলপাতা কাটা, মধু সংগ্রহ করা আর চাষাবাদ করা । তবে লবনাক্ত মাটিতে ধান, পাট ছাড়া আর তেমন কোনো শস্য উৎপাদিত হয় না । তাই তাদের প্রধান জীবিকাই হলো জঙ্গলের অসংখ্য খালে মাছ ধরা । প্রায়শই বাঘের কবলে পড়ে জেলেরা । সুন্দরবনের জেলেদের জীবনের চাইতে বাঘের জীবনের মূল্য অনেক বেশি ভারত সরকারের কাছে । তাই বাঘের কবলে কেউ মারা পড়লে ক্ষতিপূরুনের ব্যবস্থা করেছে সরকার, কিন্তু বাঘের গায়ে হাত তোলা নিষিদ্ধ ।
সুন্দরবনের মানুষের জীবন হলো সংগ্রামমুখর । সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি পরিশ্রম করলে তবেই মেলে দু'বেলা ভাতের জোগাড় ।শিশুদের শৈশব এখানে অভিশপ্ত । সুন্দরবনের জনপদগুলোর অধিকাংশ বাচ্চারা স্কুলে লেখা পড়া করে না । যারা কিছুদিন যায় তারাও খুবই শীঘ্র ঝরে পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি টপকানোর আগেই । তার পিছনের কারণ একটাই চরম দারিদ্রতা ।
এই সব সাধারণ মানুষের জীবন আলেখ্য ক্যামেরা বন্দি করা নিয়েই ছিল আমাদের সুন্দরবন অভিযান । সেই অভিযানে আমিও কিছু পার্সোনালি ফটো তুলেছিলাম । তারই কয়েকটি এখানে শেয়ার করলাম । আশা করছি এনজয় করবেন সেগুলি ।
সুন্দরবন
আলোকচিত্র তোলার তারিখ ও সময় : ২৭শে নভেম্বর ২০১৭, দুপুর ১২ টা বেজে ৪৫ মিনিট
স্থান : পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
ক্যামেরা পরিচিতি : SONY
ক্যামেরা মডেল :DSC-W710
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ
আপনি সুন্দরবনের সবুজ শ্যামলের ছবি তুলে ছিলেন। নিজ দেশে এতো সুন্দর জায়গা থাকা অবস্থায় কখনো যাওয়া হয়নি।আপনার ফটোগ্রাফি দেখে তো যেতে ইচ্ছে করছে। সুন্দরবনের দৃশ্য পটভূমি দেখে খুবই ভালো লাগলো।এতো সুন্দর দৃশ্য পটভূমি আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
খুবই সুন্দর ও অমায়িক হয়েছে ছবি গুলো ।পচ্শিম বঙ্গের সাইটে সুন্দরবন দেখা হয়নি কখন ও ।এই ছবিগুলো দেখে মনে হলো সুন্দরবনেই ঘুরতেছি ।ধন্যবাদ দাদা এতো সুন্দর ভাবে সুন্দরবনের চিত্র তুলে ধরার জন্য ।
আপনার সুন্দর বন ভ্রমনে কাটানো মূহুর্ত গুলো খুবই সুন্দর ছিল। সুন্দর ফটোগ্রাফির সাথে আরো সুন্দর আলোচনা।
আমি ও শুনেছি সুন্দর বন অনেক রহস্যময়। যাওয়ার ইচ্ছে আছে কিন্তু বিভিন্ন কারণে ঠিক হচ্ছে না।আপনার পোস্ট পরে আমার সুন্দর বন ভ্রমনের আকর্ষণ আরো বেড়ে গেল।
আপনার পোস্ট পরে সুন্দর বন সম্পর্কে অজানা অনেক কিছু জানতে পারলাম।
ধন্যবাদ দাদা।
দাদা ওই দিনগুলো আপনি অনেক সুন্দর কাটিয়েছেন। তবে এটা ঠিক বলেছেন দাদা, বন জঙ্গলে বসবাস করা মানুষের জীবন সংগ্রাম মুখর। তারা তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এটাই তাদের জীবন। এটা তারাও মেনে নিয়েছে।
সুন্দরবনের অনেকটা অংশ রয়েছে বাংলাদেশের মধ্যে। আমি ২০১৮ সালে গিয়েছিলাম সুন্দরবন ভ্রমণে। অসাধারণ একটা মূহুর্ত ছিল। কী সেই সৌন্দর্য এককথায় অপরুপ। এর পাশাপাশি সুন্দরবনের অবস্থা আগের মতো নেই। চোরাকারবারি রা প্রায়ই গাছ কাঠে বাঘ হরিণ শিকার করে। এতে করে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ক্রমেই বিনষ্ট হচ্ছে। আপনার তোলা সুন্দরনের ফটো গুলো খুব সুন্দর হয়েছে দাদা।।
দাদ, ছবিগুলি দেখে বোঝা যাচ্ছে অসাধারণ একটি অভিজ্ঞতা হয়েছিল। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ব্যাপারটা একটু অন্যধরনের ।প্রকৃতির গভীরত্ব ফুটে উঠছে ।আপনার অভিযান পড়ে দারুন একটা অনুভুতি হলো।
এই অনুভূতি গুলি সত্যিই এমন যে যে ওই মুহূর্তে থাকে ,সেই বুঝতে পারে। ভালো থাকুন দাদা।
একটা ঘরের ভিতরে এতো গুলো মানুষ!
কি পরিমাণ কষ্টেই না দিন কাটে তাদের!
আমি দাদা আরো ভাবতাম তারা বুঝি অনেক মজা করে জীবন যাপন করে। কিন্তু আজকে আপনার পোস্ট পরে পুরো বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।মানুষের জীবন আসলে কত কষ্টের হয়!!
আর ধন্যবাদ দাদা, আপনার কারণে অন্তত অল্পস্বল্প সুন্দরবন দেখতে পেলাম।
ফটোগ্রাফি কি বা কাকে বলে তা আপনার এই ফটোগ্রাফির গুলো দেখেই অনুমান করা যায়। কি অসাধারণ ফটোগ্রাফি আপনার তাও আবার চার বছর আগের ক্যামেরা দিয়ে তোলা ফটোগ্রাফি। আসলে ছবি তোলার অসম্ভব আগ্রহ থেকেই আপনি এই ছবিগুলো তুলেছেন তা না হলে এত সুন্দর ছবি হতো না। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা সুন্দরবনের এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি সাথে এর অসাধারণ বর্ণনা দেওয়ার জন্য।
দারিদ্রতা মানুষকে জীবনের বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে আসে। সেটা কেবল তাদের কাছে কাছে গেলেই বোঝা যায় ।হয়তো আপনি সেটা বুঝে গিয়েছেন।