দিন বদলের গল্প (চতুর্থ পর্ব)
শুভ বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়ে পুরাতন কোন ফুডকার্ট পাওয়া যায় কিনা সেটার খোঁজে। কারণ নতুন ফুডকার্ট কিনতে গেলে অনেক টাকা লাগবে। কিন্তু শুভ জানে তাকে ব্যবসার সমস্ত যোগার যন্ত্র এই টাকার ভিতরেই করতে হবে। তাই শুভ তার শহরের যে দোকানগুলিতে ফুডকার্ট বানানো হয় সেখানে গিয়ে খোঁজখবর করতে শুরু করে। সেখান থেকে শুভ বেশ অল্প টাকায় একটি ফুডকার্ট পেয়ে যায়। তবে সেই ফুডকার্টটা কিছুটা মেরামত করতে হবে আর রং করে নিতে হবে। শুভ চিন্তা করে রং সে নিজেই করে নিতে পারবে। শুধু দোকান থেকে তার ফুডকার্টটা সারিয়ে নিতে হবে। পরদিন সকালে শুভ টাকা নিয়ে সেই ফুডকার্ট কিনে দোকানদারকে বললো তার ফুডকার্টটা রিপেয়ার করে দিতে। আর রংয়ের দোকান থেকে সে কিছু রং কিনে নিয়ে আসে।
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
বিকালের ভেতর শুভর ফুডকার্ট রিপেয়ার করা হয়ে যায়। তারপর সে সেই ফুডকার্টটা টানতে টানতে তার বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসে। এত দূরে ফুডকার্টটা টেনে আনতে তার প্রচন্ড পরিশ্রম হয়। কিন্তু তাতেও শুভর এতটুকু ও খারাপ লাগে না। শুভর যেনো ব্যবসা শুরু করতে আর তর সইছিলো না। সে রাতের বেলায় ফুডকার্টটা রং করে ফেলে। অভাবের সংসারে থাকার কারণে টুকিটাকি অনেক কাজই তাদের নিজের করতে হোতো। সেখান থেকে সে রং করার কাজটা শিখেছিলো। রাতে রং করা হয়ে গেলে শুভ তার মায়ের সাথে আলাপ-আলোচনা করতে বসে কোন ধরনের খাবার সে বিক্রি করবে। শেষ পর্যন্ত ঠিক করে খিচুড়ি আর পোলাও মাংস এ ধরনের খাবার তারা সেখানে বিক্রি করবে। সাথে কিছু হালকা খাবার রাখারও সিদ্ধান্ত নিলো। শুভ মনে মনে পরিকল্পনা করলো খাবারের দাম সে যথাসাধ্য কম রাখার চেষ্টা করবে। কারণ কলেজের স্টুডেন্টদের পকেটে খুব বেশি টাকা থাকে না। খাবার যদি বাজেট ফ্রেন্ডলি হয় তাহলে তার বেচাকেনা বেশি হবে। পরবর্তীতে ফুডকার্ট যদি ভালো চলে তাহলে অন্য আরো আইটেম যোগ করা যাবে।
সেই পরিকল্পনা মোতাবেক শুভ পরদিন বিকালে সমস্ত কিছু বাজার করে নিয়ে আসে। এর ভেতরে শুভ তার কাস্টমারদের বসার জন্য কিছু চেয়ার ও কিনেছে। সেই সাথে প্লেট গ্লাস আর যা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিলো সেগুলোও কেনাকাটা করেছে। তারপরদিন তার মাকে সাথে নিয়ে শুভ সকাল সকাল রান্নাবান্নার কাজে লেগে যায়। দুই মা ছেলে মিলে দ্রুত রান্নার কাজ শেষ করে ফেলে। রান্না হয়ে গেলে শুভ তখন তার ফুডকার্ট নিয়ে কলেজের গেটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সেখানে পৌঁছে শুভ কলেজ গেটের একপাশে তার ফুডকার্ট রেখে প্রথমে ক্লাস করতে যায়। ক্লাস করা শেষ হলে সে দ্রুত বের হয়ে এসে তার ফুডকার্টের সবকিছু গুছিয়ে বসে বেচাকেনার জন্য। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
যেহেতু শুভর কাছে মোট ৫০,০০০ টাকা ছিলো ব্যবসা করার জন্য, তাই অল্প দামে ফুডকার্ট কিনে রিপেয়ার করাতে খুব ভালো হয়েছে। আর নতুন ফুডকার্ট কিনলে তো অনেক টাকা লাগতো। যাইহোক শুভর রান্নার হাত যেহেতু অনেক ভালো এবং খাবারের দামও শুভ কম রাখবে, তাহলে বলাই যায় বিক্রি খুব ভালো হবে। গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অসাধারণ একটি ধারাবাহিক গল্প আমাদেরকে উপহার দিচ্ছেন আপনি। চলমান গল্পটি পড়া শেষ করেই আরেকটি পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকি । শুভ ফুডকার্ট কিনে মেরামত ও রং করল। মা, ছেলে মিলে রান্না বান্না শেষ করে কলেজের সামনে বিক্রি করবে। গল্পটি খুবই ভালো লাগতেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি ধারাবাহিক গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।