অনেক দিন পর নানু বাড়ি

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু আলাইকুম,

কেমন আছেন সবা? আশা করি সবাই সুস্থ আছে। ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছ। আজ আমি আবার আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হলা।
IMG_20240104_170929.jpg

আপু চলে যাওয়ার পর থেকেই মনে মনে প্ল্যান করছিলাম নানু বাড়ি যাওয়ার। আমার তো নানু বেঁচে নেই আমার শুধু নানী বেঁচে আছেন। আর আমার দুই মামা দুই খালা। সবাই ফোন করছিল যাওয়ার জন্য কিন্তু আমি একটু কনফিউশনে ছিলাম যেহেতু আমার ছোট বেবি আর তখন এত বেশি ঠান্ডা ছিল যে ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই অনেকবার ডিসিশন নিয়েও আবারও ভেবেছিলে যাব না কতবার যে দোটানায় ভুগেছি তার কোন শেষ নেই। শেষমেষ চিন্তা করে দেখলাম যাক আল্লাহ ভরসা করে যাই। দেখা যাক কি হয়। যেদিন যাওয়ার প্ল্যান করেছি সেদিন আবার সকালবেলা থেকে বেশ রোদ উঠেছিল। রোদ দেখে মনটা তো খুব খুশি হয়ে গেল এর জন্য সকাল সকাল রেডি হওয়া শুরু করলাম। কারণ বাচ্চা নিয়ে কোথাও যেতে গেলে তো এখন অনেক কিছু প্যাকিং করতে হয় ছোট বেবিদের ড্রেস শীতের ডায়াপার আরও কতকিছু।

আমাদের ইচ্ছা ছিল দুপুরে ঠিক রোদের সময় বাসা থেকে বের হব। আর আমাদের বাসা থেকে নানি বাড়ি যেতে প্রায় ঘন্টাখানেক সময় লাগে। যেহেতু গ্রামের দিকে যাব যদি রোদ থাকে তাহলে অতটা বেশি ঠান্ডা লাগবে না। এজন্য আমরা তাড়াহুড়া করে সবকিছু প্যাকিং করে বেরিয়ে যাই। আমরা মনে মনে দোয়া পড়তে পড়তে যাচ্ছিলাম যাতে বাচ্চাদের কোনভাবে অসুখ না করে। এবার এত বেশি যেতে ইচ্ছা করছিল নানুবাড়ি প্রায় সাড়ে তিন বছর পর যাচ্ছি নানুবাড়ি। করোনা বিভিন্ন কারণে যাওয়া হয়ে ওঠেনি নানু বাড়িতে। তাই এবার ভেবেছি যাব যা হয় হবে। সবাইকে দেখতে খুব ইচ্ছা করছিল। এজন্য গিয়ে দেখি সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আর শীতের সময় যেহেতু এসেছি শীতের অনেক ধরনের পিঠা বানানো হবে অনেক রান্না বান্না হবে সব ভাই বোনরা মিলে একসাথে মজা করে খাব ঘুরাঘুরি করবএটাই মূলত প্ল্যান।

আমরা বিকেল চারটার মধ্যে নানু বাড়িতে পৌঁছে গেছি। গিয়ে আমাদের পুরাতন নানুর বাড়িতে বেড়াতে যাব আম্মুর সাথে মামিদের সাথে নিয়ে নানুর কবর দেখতে যা।ব আর পুরাতন নানা বাড়িতে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে সেগুলো দেখব গিয়ে। এখন আর আগের মতো ভালো লাগে না কারণ নদীর কারণে আগের পুরাতন বাড়ির সব কিছু ভেঙ্গেচুরে গেছে। এখন শুধু নানু বাড়িতেই আছে সব গ্রামের লোকজন ছিল কত পরিচিতজন ছিল এখন তারা তেমন কেউ সেখানে থাকে না। ওখানে গিয়ে দেখেছিলাম ভাজাপোড়া বিক্রি হয়েছিল বাঁধের উপরে। কয়েকটা কিনে নিয়েছিলাম খাওয়ার জন্য। আমার মেয়ে তো নদী চর এসব কিছু দেখে সেই খুশি হয়ে গেছে। ওর ওখানে আমার মামাতো বোনরা তো অনেক ছোট প্রায় ওর কাছাকাছি বয়সের তাদের সাথে ও বেশ মজা করছিল দৌড়াদৌড়ি করছিল।

বাঁধের উপরে নানান ধরনের বাজার বসেছে। অনেক বড় বড় দোকান হয়েছে। নদীটা ভাঙার পরে এখন বাঁধ বেঁধে দিয়েছে। যার কারণে অনেক বড় বড় দোকান হয়েছে সেখানে যেগুলো এর আগে আমার দেখা হয়নি। ওখানে গিয়ে আমার এক নানুর সঙ্গে দেখা হলো যিনি আমার আম্মুর চাচা। কুশল বিনিময় হলো অনেক মজা করলাম তার সাথে। তারপর গিয়েছিলাম আম্মুর আরেক চাচার বাড়িতে যিনি অনেক অসুস্থ ছিলেন। আর অসুস্থ মানুষকে দেখতে যেতে আমার বেশ ভালই লাগে। ওই নানু আমাদেরকে অনেক বেশি আদর করতেন আমার তো নানা ছিল না অন্যদেরকে মন ভরে ডাকতাম আর ওনারাও বেশ আদর করতেন।আমার এজন্য উনাদের সাথে অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। তবে দেখে গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। উনি প্রায় বিছানার সঙ্গে শয্যাশায়ী হয়ে গেছেন। কথাও ঠিক মত বলতে পারছেন না মুখের ভিতর জড়িয়ে আসছে। শরীরে নানা অংশে ঘা হয়ে উঠেছে মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল।

এরপর আর বেশি ঘোরাঘুরি করা হয়নি, আমার মনটাও যেহেতু খারাপ হয়ে গেল সন্ধ্যা হয়ে আসছিল। এজন্য তাড়াতাড়ি করে আবার নতুন বাড়িতে ঘুরে আসলাম। রাতে অনেক পিঠা বানানো হয়েছিল এবং পরের দিন আবার আমার চরে বেড়াতে গিয়েছিলাম। এসব কিছুই আপনাদের সাথে আস্তে আস্তে শেয়ার করব।

আজকের মত এখানে বিদায় নিচ্ছি।ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 6 months ago 

আসলে আপু নানুর বাড়িতে বেড়ানো মজাই আলাদা। আর নানা নানু বেঁচে থাকলে তাহলে নাতিনদের আদর আরো বেশি থাকে। যদিও আপনাদের এক একজন মুরুব্বী আছে অন্যজন দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে। তবে অনেকদিন পর গেলেন এবং ছোট বাচ্চা নিয়ে গেলেন। আসলে এখন ঠান্ডা বেশি এই কারণে কোথায় যেতেও অনেক চিন্তা ভাবনা করে যেতে হয়। যাহোক আপনারা গেছেন দেখে আপনার নানার বাড়ির আত্মীয়-স্বজন সবাই খুশি হয়েছে। অনেক সুন্দর করে নানু বাড়িতে বেড়াতে গেছেন তা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।

 6 months ago 

যতই আমাদের বিয়ে হোক বাবু হোক না কেন নানু বাড়িতে যাওয়ার মজাই আলাদা। যদিও প্রথম দিকে দোটানায় ছিলেন প্রচুর পরিমাণে ঠান্ডা ছিল তাই।আর ঠান্ডায় ছোট বাচ্চাকে নিয়ে কোথাও না যাওয়াটাই বেশি ভালো। তারপরও অবশেষে গিয়েছিলেন এবং আশা করছি বেশ ভালো সময় কেটেছে আপনার সেখানে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57893.29
ETH 3130.56
USDT 1.00
SBD 2.44