মেয়ের আবদার||১০% বেনিফিশিয়ারি @ shy-fox এবং ৫%@ abb-school এর জন্য||
প্রতিদিনকার মত জাহিরার বাবা যখন অফিস যাওয়ার জন্য পুরোপুরি রেডি তখন জাহিরা তার বাবার আদর নেওয়ার জন্য কোলে উঠেছে। এটা অবশ্য নতুন নয় প্রতিদিনই জাহিরা তার বাবার অফিস যাওয়ার সময় কোলেওঠে বসেএবং অনেকটা সময় তাকে আদর করতে হয় তা না হলে সে কোল থেকে নামবে না। সেটা ভেবে আমি বলছি যে তুমি থেকে নেমে আসো কিন্তু সে আজ নতুন বায়না ধরেছে আজ সে তার বাবার অফিসে যাবে।
এর আগে একটি পোস্টে আমি বলেছিলাম যে আমার মেয়ের নাম জাহিরা। আমার একটিমাত্র মেয়ে। আর সেই তার বাবার আদরের দুলালী। তার সব আবদার তার বাবার কাছে আর যখন অফেসে যাওয়ার জন্য বায়না ধরল তখন বাবা আর না করতে পারলো না তাকে নিয়ে যাবে। আমাকে বললো জাহির কে রেডি করে দেওয়ার জন্য। আমিও তার একটি সুন্দর পছন্দের ড্রেসটি পরিয়ে দিলাম তারপর শুধু জামা পড়লে তো হবেনা মাথায় ব্যান্ড লাগাতে হবে তার ব্যাগ লাগবে ম্যাচিং জুতা লাগবে আরও অনেক কিছু।যখন তার সব আবদার পূরণ হচ্ছিল তখন সে তো মহা খুশি।
বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছিল এর মধ্যে বাবা আর মেয়ে ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পরলো অফিসের উদ্দেশ্যে। আমি বাসায় একা। বাসায় থেকে বের হওয়ার সময় জাহির আর বাবা বলে গেল আধাঘন্টা পর যেন আমি জাহিরাকে নিয়ে আসি।আমাদের বাসা থেকে জাহিরার বাবার অফিস খুব একটা দূরে নয়।
জাহিরা বাসায় না থাকায় আমারও খুব একা একা লাগছিল। কারন ওর বাবা অফিসে যাওয়ার পর ওর সাথে আমার পুরো সময়টা কাটে। আজও না থাকায় আমার সময়টা যেন যাচ্ছিল না। তাই ঠিক আধাঘন্টা পরে ঘড়ি দেখে আমি বেরিয়ে পড়েছিলাম ওকে আনার জন্য। রিকশা নিয়ে যখন যাচ্ছিলাম বাইরে টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিল ভালই লাগছিল বৃষ্টিতে রিক্সা দিয়ে যেতে।অফিসে যেয়ে দেখি পুরো অফিস ফাঁকা মনে হচ্ছে যেন এক জনমানব শূন্য। বৃষ্টির কারণে সবাই আসতে দেরি করেছে। কিন্তু আমার মিস্টার ঠিক সময়মতো অফিসে পৌঁছে গেছে।
অফিসে ঢুকছিলামল আর ভাবছিলাম আমার মেয়েটাকে কি কান্ডটাই না করছে বাবার অফিসে গিয়ে।যেয়ে দেখি পুরোই উল্টো ঘটনা সে তার বাবার পাশের চেয়ারে বসে মোবাইল ঘাটাঘাটি করছে তাকে দেখে বোঝাই যাচ্ছে যে সে মহা খুশি।তার বাবা তার পছন্দের নানান ধরনের চকলেট কিনে সামনে দিয়েছে। আর তার বাবার থেকে এসে মোবাইলটা নিয়েছে এখন সে তার পছন্দমতো কার্টুন দেখছে।
আমাকে দেখে অনেক হাসছে।আমি যখনই তাকে বলি চলো আমরা বাসায় যাই। সে কোনভাবেই আসবেন তার বাবার অফিসে সে। থাকবে তাই আমিও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলাম যে কখন তার মর্জি হবে আর আমার বাসায় যাব।
একটু পর মেয়ের থেকে যখন মেয়ের বাবার দিকে তাকালাম দেখি তার বাবা বই পড়া নিয়ে মহাব্যস্ত। আমি ভাবতাম ও শুধু বাসায় হয়তো সবসময় বই পড়ে। কিন্তু অফিসে গিয়ে বই পড়ে এটা আমার জানা ছিল না।
বাবা মেয়ে দুজনের যখন তাদের পছন্দের কাজ নিয়ে ব্যস্ত তখন আমি একা একা বোর হচ্ছিলাম তাই ভাবলাম।রুম থেকে বেরিয়ে অফিসের বারান্দায় গিয়ে একটু দাড়াই বাইরে একটু বৃষ্টি দেখি। যদি ভালো লাগে।
জাহিরার বাবার অফিসে আমার একটি জিনিস ভালো লাগে। অফিসে কোন বিলাসবহুল আসবাবপত্র চাকচিক্য না থাকলেও রুম থেকে বেরিয়ে সামনে তাকালেই দেখা যায় ঝিল।আমি জাহির আর বাবাকে বললাম যে অফিসে কাজ করতে যখন তুমি ক্লান্ত হয়ে যাবে তখন বারান্দায় এসে ছেলের দিকে তাকালেই তোমার ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। তখন বলল তুমি ঠিকই বলেছ আমার যখন অফিসে খারাপ লাগে তখন আমি এখানে এসে দাঁড়াই। কিছুক্ষণ বাইরে তাকালে অনেক ভালো লাগে যেন ক্লান্তি অনেকটা কম হয়ে যায়।
কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পর ভাবলাম না আর দেরি করা যাবে না এবার বাসায় যেতে হবে। কারণ দুপুরের রান্না করতে হবে। এতক্ষণে জাহিরা বাসায় যাওয়ার জন্য রাজি হয়েছে। তাই ভাবলাম আর দেরি করা যাবে না আবার যে কখনো কোন বায়না করে বসে। তাই তড়িঘড়ি করে বের হয়ে গেলাম। আর বাইরে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম যে রিকশা আছে কিনা কারণ বৃষ্টিতে রাস্তায় একদম রিক্সা নেই বললেই চলে।
জাহিরা অফিসের সিঁড়ি দিয়ে নাম ছিল আর বলছিল মামনি ছবি তুলে দাও। আর যখনইওর ছবি তোলা হয় তখনই সে বিভিন্ন ধরনের পোজ দেয়।
জাহিরার বিভিন্ন ধরনের পোজ দেখলে আমার হাসি পায়। আমি হাসি আর ওর ছবি তুলে দেই ওর ছবি তুলে দিলে খুব খুশি হয়ে। অবশেষে তার ছবি তোলা পর্ব শেষ হলে রিক্সা নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
বাচ্চাদের বায়না গুলো সবসময় এমন ই হয়।বাবুকে কিন্তু দেখতে বেশ মিষ্টি লাগছে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।
আপু আপনার মেয়েকে দেখতে খুবই মিষ্টি। সে তার বাবার অফিসে গিয়ে অনেক খুশি হয়েছে এটা বোঝাই যাচ্ছে। তবে মাঝে মাঝে মেয়ের আবদার মেটাতে মনে হয় অনেক ভালো লাগে। কারণ প্রিয় মানুষের হাসি মুখ দেখতে খুব ভালো লাগে। আপনার মেয়ের জন্য শুভকামনা রইল আপু।
চেষ্টা করি ভাইয়া মেয়ের সব আবদার পূরণ করার। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
আর যাই বলুন না কেন আপনার বাচ্চাটি কিন্তু খুবই কিউট। খুবই ভালো লাগলো আপনার এত সুন্দর একটি পোস্ট পড়তে পেরে। আশাকরি বাবুর অন্যান্য বিষয় আমাদের মাঝে তুলে ধরবেন।
আমি চেষ্টা করব ভাইয়া আমার মেয়ের অনেককিছু আপনাদের সাথে তুলে ধরার জন্য। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।