সেচ পাম্পে গোসল||১০%বেনিফিশিয়ারি @shy-fox ও ৫% @ abb-school এর জন্য
সবাইকে আসসালামুআলাইকুম৷ আল্লাহর অশেষ রহমতে সবাই সুস্থ আছেন ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি। আমার পরিচিতিমূলক পোস্টে বলেছিলাম যে আমার সাড়ে তিন বছরের একটি ছোট মেয়ে আছে।একজন মায়ের কাছে তার সন্তানের সবথেকে প্রিয় তাই আমার মেয়েও আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আমাদের ছোট্ট মেয়েটির তার সেই ছোটবেলা থেকেই গোসল করতে খুব বেশি পছন্দ করে।ছোট বাচ্চারা তো এমনিতেই অনেক সময় জেদ করে বসে বা কান্নাকাটি করে আর আমার মেয়ে কান্না থামানোর সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে গোসল।গোসলের কথা বলে নিমেষেই কান্না ছেড়ে মুখে হাসি ফুটে ওঠে তার মুখে। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার মেয়ের একটি গোসল যা সে তার দাদু বাড়িতে গিয়ে করে ছিল সেটার অভিজ্ঞতা শেয়ার করব।
আমি চাই আমার মেয়ে সব ভালো কিছুর সঙ্গে পরিচিত এবং কিছু সুন্দর সুন্দর স্মৃতি তার মনে থেকে যাক।আমার মেয়ে যেই তো গোসল করতে পছন্দ করে তাই আমি মা হিসেবে চাই তাকে সেই আনন্দটা পুরোপুরি দিতে।আমরা তো সচরাচর গ্রামে গেলে টিউবওয়েল দিয়ে গোসল করে থাকি কিন্তু অন্যরকম অভিজ্ঞতার জন্য আমি চেয়েছিলাম সেচ পাম্পের গোসল করাতে।আমার কাছে মনে হয়েছে সেচ পাম্পের গোসল করতে আমার মেয়ে অন্য দিনের চেয়ে একটু বেশি আনন্দ পাবে।
সেচ পাম্প গোসলমকরাতে নিয়ে যাওয়াটা খুব বেশি সহজ ছিল না আমার শ্বশুরবাড়ির খুব কাছে একটি সেচ পাম্প ছিল যেটা দিয়ে জমিতে পানি দেয়া হচ্ছিল।প্রথমে যে ব্যক্তিটি কে রাজি করাতে হয়েছিল সে হচ্ছে সবসময় আমার মেয়ের গোসলের সঙ্গী এবং তার সাথে আমার মেয়ে গোসল করতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে। আর সে হচ্ছে আমার মেয়ের বাবা।এতক্ষণে বলাই হয়নি আমার ছোট্ট মেয়েটির নাম হচ্ছে জাহিরা।আমার অনেক অনুরোধের পর জাহিরার বাবা রাজি হলেও বেঁকে বসলো জাহিরার দাদি। দাদি বলছে সেচ পাম্প গোসল করলে জ্বর আসবে। অবশেষে জাহিরার বাবার অনুরোধে ওর দাদি ও রাজি হলো।
জাহিরার সেই গোসলের আরো অনেকেই সঙ্গী হিসেবে ছিল গ্রামের ছোট ছোট বাচ্চারা যারা ওর সাথে ওর দাদু বাড়িতে গেলে সব সময় খেলাধুলা করে।সেচ পাম্প এর কাছাকাছি যেতে আমার মেয়ে পানি দেখে তো সেই খুশি
ওর খুশি দেখে আমার অনেক ভাল লাগছিল।জাহিরা যদিও প্রথম দিন পাম্পে গোসল করতে যাচ্ছে কিন্তু তাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে না দেশে প্রথম দিন এখানে গোসল করতে এসেছে কাদামাটিতে এত সুন্দর করে হাঁটছে যেন সে কতদিন এখানে গোসল করেছে।তবে গোসল করতে যেয়ে ওর বাবার হাত কিনতে ছাড়েন ওর বাবাকে ধরে গোসল করেছে।ওর বাবা ওর লাফালাফি দেখে আমাকে বলছে যে আমার মেয়ে তো খুব তাড়াতাড়ি সাঁতার শিখে যাবে।সেই কথা শুনে আমি আবার বললাম যে আমি তো সাতার পারি না কিন্তু আমি চাই আমার মেয়ে খুব তাড়াতাড়ি সাঁতার শিখে যাক।আমি সাঁতার জানি না জন্য আমার যে আফসোসটা ছিল সেইটা একটু হলেও কমবে।
জাহিরা সেচ পাম্পের খুব কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিল কারন পানি এত জোরে বের হয়েছিল এবং সেটাতে শব্দ থেকে একটু দূরে দূরে থাকার চেষ্টা করছিল।ওরা এতো লাফালাফি দেখে আমিতো ভয় পেয়েছিলাম যে নাকে মুখে যেন আবার সেই পানি না ঢুকে যায়।কিন্তু ওর বাবা ওকে খুব সাবধানের সাথে গোসল করাচ্ছিল যাতে কোনভাবে ওর কোনো সমস্যা না হয়।
আধা ঘন্টা যাবত সেই পানিতে লাফালাফি করে ও এতটুকুও ক্লান্ত হয়নি।ওর বাবা তো অনেকটাই ক্লান্ত হয়ে বসে পড়েছিল পানিতে।জাহিরা ওর বাবাকে বসতে দেখে ওএকটু বসে ছিল তার পরেও পানিতে পা লাফাচ্ছিল।এতক্ষণ পানিতে বসে থাকাতে ওর হাত পা অনেকটাই সাদা হয়েছিল।
এজন্য আমি চাচ্ছিলাম যে পানি থেকে এখনো সে উঠে আসুক কিন্তু সে তো আমার কথা কোনোভাবেই শুনবে নাও ওর বাবাকে শুধু বলছিল বাবা আরেকটু বাবা আর একটু।জাহিরার বাবা ওকে অনেক কিছু বলে পানি থেকে তোলার চেষ্টা করছে কিন্তু সে কোনভাবেই পানি থেকে উঠবে না।ওর বাবা ওকে বলছিল যে আমরা তোমাকে এখানে রেখে চলে যাব তুমি একা একা পানিতে থাকো যাতে একটু ভয় পেয়ে পানি থেকে উঠে আসে।তখন সে পানি থেকে উল্টো আরো জোরে জোরে কান্নাকাটি করছিল যাতে আমরা ওকে রেখে না আসি।
অনেক কান্নাকাটির পরে একটু একটু করে বাড়ীর দিকে আসছিল।আসার সময় পানিতে ঢুবতে ঢুবতে আসছিল তার গোসল শেষই হচ্ছে না।এখন তো অনেক কাদা মাটিতে গায়ে লেগেছিল যা দেখে আমার খুব রাগ হচ্ছিল।
জাহিরা গোসল করে চলে এসেছিল আর তাকে দেখে অন্য একটি ছেলে গোসলের জন্য মেশিনে সামনে দাঁড়িয়ে ছিল।আমি তো মনে মনে ভাবছিলাম ছেলেটিকে দেখে আমার মেয়ে না আবার মেশিনের সামনে চলে যায়।যাক শেষ পর্যন্ত ও সেটা দেখতে পায় নাই।
আমার মেয়ে এত আস্তে আস্তে পানিতে দিয়ে আসছিল যে রাস্তাটা যেন আরো অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে আরও ভাবছে রাস্তাটা কেন আরেকটু বড় হচ্ছে না।যাতে আর একটু বেশিক্ষণ পানিতে থাকতে পারে।অবশেষে আমার মেয়ের সেই পানিতে ঢোবা এবং গোসল শেষ হলো তারপর তার বাবা তাকে কোলে নিয়ে বাড়িতে আসছিল।
চারপাশে খেয়াল করা হয়নি যে কত সুন্দর সবুজের সমারোহ।যা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। বাড়ীর দিকে আসছিলাম আর ভাবছিলাম যে এতক্ষণ গোসলের জন্য আবার জ্বর না আসে।আল্লাহর অশেষ রহমতে সেই রাতে আমার মেয়ের আর জ্বর আসেনি।
আমার মেয়েকে আনন্দ দিতে পেরে আমি আরও বেশি আনন্দিত যাইহোক আমার সেই আনন্দের মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।ভালো লাগলে মন্তব্য করতে ভুলবেন না আজ এই পর্যন্তই। ধন্যবাদ
Photo by-@rituamin
Device-vivo y12
আহহ আপু ছোট বেলার কথা মনে পরে গেলো আপনার পোস্ট দেখে আমাদের এলাকাতে প্রচুর ধানি জমি ছিল এর জন্য জমির মাঝে মাঝে স্যালো বসানো হতো একটা স্যালো থেকে আশ পাশের জমিতে পানি যেতো আর আমরা সেখানে গেলে অই নালার মধ্যে বসে থাকতাম এতো ঠান্ডা পানি খুবই ভালো লাগতো।
ছোট বেলায় এইরকম সেচ পাম্পে গোসল করার আনন্দই ভিন্ন রকম ছিল। সত্যিই অনেক মজা করতাম। আপনার মেয়ে মুহূর্তটি অনেক উপভোগ করেছে মনে হচ্ছে। সুন্দর মুহূর্তের কিছু ফটোগ্রাফি এবং মতামত তুলে ধরেছেন।
সেচ পাম্পের গোছলের অনুভূতিগুলো যারা গ্রামে থাকে তারা খুব ভালোভাবে অনুভব করতে পারে ।আমি ভীষণ মিস করি এই অনুভূতিগুলো। ছোট বাচ্চারা কত সুন্দর এই গরমে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করছে
দেখেই তো আমাকে ছোট হয়ে যেতে ইচ্ছা করছে। এই গোসল করা অনুভূতিগুলো আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এত সুন্দর একটি অনুভূতি দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সেচ পাম্পে গোসল করার অনুভূতি পড়ে সত্যি মনে হচ্ছে ছোট বেলায় আবার ফিরে গেছি। ছোটবেলায় সেচ পাম্পে আমাদের এদিকে অনেক গোসল করতাম আমরা আমাদের বন্ধুদের নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা টি দারুন ছিল আপু ধন্যবাদ আপনাকে আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
সেচ পাম্পে গোসল করতে সত্যিই অনেক বেশি ভালো লাগে। যদিও এখন বাসায় থাকা হয় না কিন্তু ছোটবেলায় অনেকবার এই পাম্প এ গোসল করেছি। এরকম মুহূর্ত দেখে সত্যিই সেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল মনে হচ্ছে আবার ফিরে যাই সেই ছোটবেলা থেকে। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি মুহুর্ত শেয়ার করার জন্য।
যারা গ্রামে থাকে তারাই জানে এই সেচ পাম্পে গোসল করার কী মজা। আপনার বাচ্চার কথা কী বলব আমি নিজেই তো মাঝে মাঝে জিদ ধরে চলে যায় সেচ পাম্পে গোসল করতে। বেশ মজা হয় বটে। তবে বিগত কয়েক বছর আর সেচ পাম্পে গোসল করা হয় নি। দেখে আগেকার কথাগুলো মনে পড়ে গেল।।
সেচ পাম্পে গোসল করতে অনেক মজা যদিও অনেক ছোটবেলায় করেছি। এখন আর করা হয় না তবে আপনার এই ফটোগ্রাফি গুলোর এবং অভিজ্ঞতার মাধ্যমে পুরনো কথা মনে পড়ে গেল ধন্যবাদ আপনাকে।
সেচ পাম্পে গোসল করার মজাই আলাদা। এই ধরনের সেচ পাম্পে সম্মিলিতভাবে গোসল করতে ওর দারুন মজা হয় ।যেটা বন্ধুদের সাথে অনেকবার গোসল করেছি ভালো লাগে।
আপনার মেয়ের সেচ পাম্প এ গোসল করা দেখে আমার ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে গেল । আমার জীবনে এই ভাবে গোসল করার কিছু অভিজ্ঞতা আছে । সে অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার নানি বাড়ি থেকে । সেচ পাম্পে গোসল করার আসলে একটা মজা আছে । এটা যে না করেছে সে মজাটা বুঝতে পারবে না । আপনার মেয়ে সময়টা খুব ভালো কাটিয়েছে দেখে বোঝা যাচ্ছে । তবে দেখবেন এরপর থেকে প্রতিদিন আবার এভাবে গোসল না করতে চায় ।
সেচ পাম্পে গোসল করার মজাই আলাদা। যখন ছোট ছিলাম তখন প্রায়ই এই রকম পাম্পে গোসল করা হতো। আপনার পোস্ট দেখে সেই স্মৃতিগুলো চোখে ভেসে উঠলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।