বহুদিনের ইচ্ছে পূরণ

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগবাসি কেমন আছেন সবাই? আশা করি পরিবারের সকলকে নিয়ে সবাই সুস্থ আছেন। ভালো আছেন। পরিবারের সকলকে নিয়ে ভালো আছি। ভালো থাকার চেষ্টা করছি। যদিও অনেক শীত পড়ে গেছে ভালো থাকতে চাইলেও ভালো থাকা যায় না। তবুও তার মধ্যেও সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে হয় যতটুকু যেভাবে ভালো আছি ততটুকুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ।আজ অন্য রকম একটি ব্লগ শেয়ার করছি আপনাদের সাথে আর যাকে নিয়ে লিখব সে হচ্ছে আমার বড় বোন তাকে নিয়ে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

received_3753306154891203.jpeg

আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম বেশ কয়েকমাস আগে আমার এক বোনকে নিয়ে।যদিও সে আমার নিজের বোন নয় আর আমার নিজের কোন বোন নেই। কিন্তু আমার অনেক ফুফাতো মামাতো বোন আছে।নিজের বোন নেই বলে তাদেরকে বোন না থাকার শূন্যতা কিছু টা পূরণ করার চেষ্টা করি। তবে সব বোনদের সাথে তো আর সমান আন্তরিকতা থাকে না।কারো সাথে একটু বেশি কারো সাথে একটু কম। এভাবে ব্যালেন্স করে জীবনে চলে যায়।জীবনে চলতে হয়।উপরে যার ছবি দেখতে পাচ্ছেন সে হচ্ছে আমার ফুফাতো বোন। তার নাম শম্পা। বলতে পারেন সে একদিকে আমার যেমন বন্ধুর মত আচরণ করে তেমনি আমার অভিভাবকের মতো আচরণ করে। আমি এক কথায় তার সাথে আমি মনের সব কথা এই একজন মানুষের সাথে শেয়ার করতে পারি। যে আমাকে আমার টিনেজ থেকে সব সময় সঙ্গ দিয়ে এসেছে। তার মেয়ে আমাকে নিজের খালামনির মতোই মনে করে। তার কাছে ফুফাতো মামাতো বলে কোন কিছুই হয় না।

আমার আগের পোস্টে যারা খেয়াল করেছিলেন তারা হয়তো অনেকেই জানেন এক বোনের ক্যান্সার নিয়ে লিখেছিলাম যে আমার বোন খুব অসুস্থ এই হচ্ছে আমার সেই বোন অনেজ অসুস্থ হয়েছিল। কিন্তু এখন অনেকটাই সুস্থ আছে আর সে যখন অসুস্থ ছিল তখন আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম ঢাকায়।।কারণ সে ঢাকায় থাকে তার পরিবারের সাথে। তখন সে আমাকে তার একটা ইচ্ছার কথা বলেছিল সেই ইচ্ছার কথা শুনে আমি শুধু কেঁদেছি শুধু ভেবেছি আর কখনোই হয়তো তার সেই ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারব না। আল্লাহ হয়তো সেই সুযোগটা আমাকে আর দেবেন না। তার খুব ইচ্ছা ছিল আমার বাবার বাড়ি মানে তার মামার বাড়িতে সে একবার বেড়াতে আসবে আমাদের বাসার সামনে একটা বিশাল বড় ঈদগাহ মাঠ আছে। তার সেই মাঠ খুব পছন্দ। সে সেই মাঠে দাঁড়িয়ে থাকবে হাঁটবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মাঠে তার বাচ্চাদের খেলা দেখবে। এসব তার অনেক দিনের ইচ্ছা।কিন্তু তার এমন অবস্থা ছিল যে এটা সে কখনো আবার গাইবান্ধা আসতে পারবে এটা আমরা কখনো চিন্তাই করতে পারিনি। আল্লাহ মানুষের পূরণ করেন মানুষ মন থেকে যা চায় আল্লাহ তা পূরণ করেন। তাই সে আজ ছয় বছর পর গাইবান্ধায় এসেছে।

received_1058619225415898.jpeg

received_252166841085405.jpeg

সে যখন গাইবান্ধায় আসার জন্য প্ল্যান করেছে তখন শুধু আল্লাহকে বলেছি আল্লাহ যেন কোনভাবেই তার আসাটাকে বাতিল না করেন। কারণ দেশের পরিস্থিতিও ভালো ছিল না আর তার শরীর কখন খারাপ হয়ে যায় তারও কোন ঠিক ছিল না। তার সবকিছুর পরও আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি যে তিনি তিনি খুব ভালোভাবে এসেছিলেন এবং খুব ভালোভাবে ঢাকায় আবার পৌঁছে গেছেন। তারপরে আজকে আমি এই ব্লগ গুলো শেয়ার করছি। কারণ তার সাথে যখন ঘোরাঘুরি করেছি তখন কোন ধরনের ব্লক শেয়ার করতে পারিনি। সবসময় ব্যস্ত তাকে নিয়ে সবসময় ব্যস্ত ছিলাম। আর তার মধ্যে আমার তো ছোট বাচ্চা তাকে নিয়ে সবকিছু মিলে কাজ করতে পারিনি একদমই আসার পরে। আপু আসার আগে থেকে আমরা সবকিছু প্ল্যান করে রেখেছিলাম কোন দিন কোথায় কোথায় ঘুরতে যাব। যদিও গাইবান্ধা অনেক ছোট শহর যেখানে তেমন কিছুই দেখার নেই তবুও আপুর ইচ্ছা ছিল যেখানে যতটুকু দেখার মত আছে ততটুকু সে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখবে। তার সেখানে অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই এখানে এসে ঘুরতে চায় মন খুলে হাসতে চায়। তো আমরাও চেষ্টা করেছি তাকে আনন্দ দেয়ার তাকে ভালো রাখার। যাতে সে আমাদের সাথে যে কটা যে কয়টা দিন আমাদের দিন আমাদের সাথে থাকবে সে কটা দিনে তো খুব আনন্দ করে কাটাতে পারে।উপরে যাদের ছবি দেখছেন তারা হচ্ছে আপুর দুই ছেলেমেয়ে। এখন তারাই আপুকে অনেক বোঝে। আপুকে আর তাদের নতুন করে গুছিয়ে দিতে হয় না। মায়ের অসুস্থতার সাথে সাথে তারাও অনেক বড় হয়ে গেছে। নিজে খাওয়া শিখেছে নিজে চলতে শিখেছে অথচ একটা সময় আপুকে ছাড়া তাদের একটা ঘন্টাও চলতো না। এখন আপুর অনেকটা দিন হাসপাতালে কাটলেও তারা নিজেরা নিজেদেরকে নিয়ে চলা শিখে গেছে পরিস্থিতি তাদেরকে শিখতে বাধ্য করেছে।

আপুর মেয়ে বড় মেয়ে এবার অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছে। আর ছেলে ছোট ছেলে ক্লাস এইটে পড়ে দুনিয়া ছেড়ে একদিন সবাইকে চলে যেতে হবে তখন তবে আপুর ছেলে মেয়েরা অনেকটা ছোট তাই চলে যেন এমন তাদেরকে যেন এমন একটা জায়গায় রেখে যেতে পারে যাতে করেমেয়েরা নিজের পায়ে যাতে করে নিজের ছেলে মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। এতটুকুই শুধু আপু চায়। সবাই আপুর জন্য দোয়া করবেন আপুর ছেলে মেয়ে ও পরিবারের সকলের জন্য দোয়া করবেন। আমরা সকলেই চেষ্টা করছি আপুকে ভাল রাখার। আপুর সাথে অনেক ঘুরাঘুরি করেছি সব কিছু আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

আজ এ পর্যন্তই।ভুল ত্রুটিগুলো সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 6 months ago 

আপনার আপুর জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল আপু।।সেই সাথে উনার পরিবারের জন্য দোয়া রইল। আসলে এরকম পরিস্থিতিতে একটি পরিবার একেবারে শেষ হয়ে যায়। মানসিকভাবে অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। বিশেষ করে বাচ্চারা অনেক বেশি কষ্ট পায়।

 6 months ago 

আপনি একদম ঠিক বলেছেন আপু সব দিক থেকে পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু এতো সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58679.35
ETH 3155.04
USDT 1.00
SBD 2.44