আমার মেয়ের স্কুলের প্রথম দিন

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো,

আমার বাংলা ব্লগবাসি কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয়ই ভালো আছেন। নতুন বছরে সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমি আমার আজকের এ বছরের প্রথম ব্লগ টি শুরু করছি।নতুন বছর মানেই নতুন করে শুরু করা। পুরাতন সব দুঃখ বেদনা ভুলে নতুনভাবে জীবনটাকে সাজিয়ে তোলা। তবে এই বছরটা আমার জন্য একটু বেশি স্পেশাল কারণ এ বছরের প্রথম দিনটা শুরু হয়েছে আমার মেয়ের প্রথম শিক্ষা স্কুলে পা রাখার মাধ্যমে।

IMG_20230101_100339.jpg

আমার মেয়ে স্কুলে যাবে এটা ভাবতে কেমন যেন লাগতো আগে।তবে কেন যেন সব কিছু খুব তাড়াতাড়ি হয়ে গেল। এই দিনটার জন্য কতদিন ভেবেছি কতবার ভাবতাম যে আমার মেয়ে প্রথম কাধে ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাবে।টিফিন নিয়ে যাবে।কতকিছু কল্পনা করতাম।দেখতে দেখতে এই দিনটা একদম চলে এলো। আমার মনে হয় প্রত্যেকটা বাবা-মা স্বপ্ন দেখে তার সন্তান প্রথম স্কুল যাবে। প্রথম পথচারনায় স্কুল এসব নিয়ে অনেক কিছুই কল্পনা করে। স্বপ্ন দেখে তার ছেলে মেয়ে একদিন অনেক বড় হবে।

প্রথম দিন এই স্কুলে যাওয়ার জন্য আমি আগের দিন রাত থেকেই সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। যে ও কি পড়ে স্কুলে যাবপ। সকালে কি খাবে।কি টিফিন নিয়ে যাবে।আমি আগেই বলেছিলাম ওদের স্কুলটা প্রথম শুরু হয়েছে এজন্য স্কুল ড্রেস এখনও নেয়া হয় নি।তাই সাধারণ জামা কাপড় পড়ে স্কুলে নিয়ে যেতে হয়েছিল প্রথমদিন।

আর বাইরে তো প্রচন্ড ঠান্ডা ছিল অনেকটা কুয়াশা করছিল এজন্য মোটা জ্যাকেট করে নিয়ে গিয়েছিলাম।আমার মেয়ে আগের দিন রাতে বলে রেখেছিল মা সকালে উঠে আমাকে ডেকে দেবে। আমি স্কুলে যাব। তো সেজন্য আমি ঠিক সময় মত ওকে ঘুম থেকে ডেকে রেডি করে আমি নিজেও রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম।

IMG_20230101_100326.jpg

আরো একটা কথা বলা হয়নি আমি আমরা যে বাসায় থাকি সেই বাসার চারতলার ভাবির মেয়েও জাহিরার সাথে একই ক্লাসে একই শাখায় ভর্তি হয়েছে। ওর নাম নাজিফা। ওরা যেহেতু একই বাসায় থাকে তাই ওদের মধ্যে আলাদা একটা বন্ধুত্ব আগে থেকেই ছিল।তাই স্কুলে যাওয়ার সময় আমরা সবাই একসাথে গিয়েছিলাম। ওরা দুজন ক্লাসে পাশাপাশি বসেছিল। ওরা তো ছোট মানুষ ক্লাসে বেশিক্ষণ একা থাকতে ভালো লাগবে না দুজন পরিচিত থাকলে অনেকটা মন বসবে ক্লাসে। এটা ভেবে ওদেরকে একই সাথে ভর্তি করানো হয়েছে একই শাখায়।

IMG_20230101_122848.jpg

IMG_20230101_122838.jpg

সব ছোট ছোট বাচ্চারা পাশাপাশি বসেছিল দেখতে বেশ ভালোই লাগছিল। আমার মেয়ে ভয় পাচ্ছিল তবে ক্লাসে বসে ছিল। এটা দেখেই আমার খুব ভালো লাগছিল।আবার টিফিন টাইমে টিফিন ও খেয়ে নিয়েছে। এসব দেখে ভাবছিলাম মেয়ে টা আমার বড় হয়ে গেল।

ক্লাস শেষ করে বেরিয়ে পড়েছে। তখন অনেকটা রোদ উঠে গেছে। আমার মেয়েকে তো খেলতে দিতেই হবে। দোলনায় না হলে তো তার অনেক মন খারাপ হবে। প্রথম দিন স্কুলে এসেছে বসেছে টিফিন খেয়েছে আমার কাছে এটাই অনেক কিছু মনে হচ্ছে। আমি তো ভেবেছিলাম ও ক্লাসে গিয়ে অনেক কান্নাকাটি করবে। তবে সেরকম কোন কিছু করেনি।
দোলনায় দোল খেয়ে আমরা সবাই আবারও একসাথে বাসায় ফিরেছি।এরপর সন্ধ্যায় আমরা বাইরে খেতে গিয়েছিলাম সেটা অন্য কোন দিন শেয়ার করব।সবশেষে এটাি বলব এ বছরের প্রথম দিনটি আমার খুব ভালো কেটেছে আর মনের খাতায় আজীবন স্মৃতি হয়ে থাকবে এ দিন টি।আপনাদের কাছে আনন্দময় হয়ে উঠুক এই বছরের প্রতিটি দিন এই কামনা করি। ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 2 years ago 

আপু আপনার মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন আর আমি অপেক্ষায় আছি কবে আমার ছেলে বড় হবে আর তাকেও এভাবে ভর্তি করাবো। নতুন নতুন স্কুলে যাওয়ার মজাই আলাদা। আপনার মেয়েকে যে স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন তার ভিতরের পরিবেশ দেখতে খুবই সুন্দর। আপনার মেয়ের জন্য দোয়া রইল যাতে সে জীবনে অনেক বড় হতে পারে। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনার মেয়ের মধ্যে আমি আমাকে খুঁজে নিচ্ছিলাম, হয়তো আমিও যখন স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম প্রথম ক্লাসের সবাইকে দেখে হয়ত আমিও ভয়ে ছিলাম , আমরা হয়তো নতুন জায়গায় গেলে একটু ভয়ই পাই ছোটবেলা, কোন একদিন আমার সন্তান হয়তো আমার হাত ধরে স্কুলে যাবে সত্যি প্রত্যেক বাবা-মার কাছে এই দিনটার একটু স্পেশাল।

 2 years ago 

সত্যি ভাইয়া এ দিনটা অনেক বেশি আনন্দের যা বলে বুঝাতে পারব না। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

জাহিরার স্কুলের প্রথম দিন তাহলে ভালই কাটলো। আসলে দেখতে দেখতে পিচ্চিরা কত বড় হয়ে যায়। এখন তারা শিক্ষা জীবনের শুরু করতে চলেছে। সত্যি অনেক স্বপ্ন মিশে থাকে সেই দিনগুলোর সাথে। যেহেতু তার একজন বন্ধু রয়েছে তাই আশা করছি স্কুলে তার ভালই সময় কাটবে। আর পরিচিত কেউ থাকলে সত্যি অনেক সুবিধা হয়। তা না হলে মন খারাপ করে বসে থাকে। এবার দুজনে মিলে ভালোভাবে স্কুলে যেতে পারবো।

 2 years ago 

আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন আপু যাতে সে একজন ভালো মানুষ হিসেবে তৈরি হতে পারবে।

 2 years ago 

আমার বাচ্চা যখন প্রথম স্কুলে গিয়েছিল তখন মনে হচ্ছিল যে আমিই আবার নতুন করে স্কুলে ভর্তি হয়েছি। খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। আপনার ক্ষেত্রে একই অবস্থা হয়েছে। আপনার মেয়ে তো খুব ভালোই স্কুলে ক্লাস করেছে কোন কান্নাকাটি ছাড়া। ছোট বাচ্চারা প্রথম প্রথম স্কুলে খুব বিরক্ত করে। আপনার বাচ্চার সঙ্গে আপনাদের বিল্ডিংয়ের একটি বাচ্চা ভর্তি হওয়ার কারণে কিছুটা সুবিধা হয়েছে। ওরা আগে থেকেই বন্ধু হওয়ায় এক সঙ্গে ক্লাসেও কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাবে। দোয়া রইল আপনার মেয়ের জন্য।

 2 years ago 

বন্ধু হওয়াতে অনেকটা খুশি মনে স্কুলে যাচ্ছে মেয়ে টা আমার।আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন আপু।

 2 years ago 

এটা কিন্তু সত্যিই যে ছেলে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিয়ে মায়েদের অনেক চিন্তা। ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার সবকিছু নিয়ে অনেক ভাবে মায়েরা।আপনি একটু বেশি এক্সাইটেড ছিলেন আপনার মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করানো নিয়ে। তা আপনার পোস্ট পড়ে আমি বুঝেছি। আপনার মেয়ে তো দেখছি খুবই খুশি। হয়তো ছোটবেলায় আমরাও এরকম করেছি। স্কুলে গিয়ে কি করবো, টিফিন কি নিব, সকালে কি করব,এই সবকিছুই হয়তো আমরাও ভাবতাম। ধন্যবাদ সবার মাঝে তুলে ধরার জন্য।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন আপু স্কুলে যাওয়া নিয়ে আমি একটু বেশি এক্সাইটেড ছিলাম।এখনও যেন বিশ্বাস হয় না যে আমার মেয়ে স্কুলে যায়।আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন আপু।

 2 years ago 

আপু আপনাকেও নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ৷ আসলেই প্রতিটি বাবা মায়ের স্বপ্ন থাকে তাদের সন্তানদের নিয়ে ৷ সন্তানের প্রথম স্কুল যাওয়ারও অনেক কল্পনা জল্পনা থাকে প্রতিটি বাবা মায়ের ৷ আপনার সেই কল্পনার দিন টি দেখতে দেখতেই চলে আসলো জেনে ভালো লাগলো ৷ আশা করি আপনার মেয়ে জীবনে ভালো কিছু করবে ৷ তার প্রথম স্কুল ভর্তি হওয়ার জন্য শুভ কমনা রইল ৷ ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর অনুভুতি প্রকাশ করার জন্য ৷

 2 years ago 

দোয়া করবেন ভাইয়া আমার মেয়ে যেন জীবনে ভালো কিছু করতে পারে।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আপনার ছোট্ট মিষ্টি বাবুটি এখন স্কুলে যায় এটা জেনে ভীষণ খুশি হলাম। ওর ফটোগ্রাফি দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুবই ভালো মুহূর্ত উপভোগ করছে সে। আপনি মনে হয় একটু বেশি চিন্তা করেছেন ওর জন্য। দেখবেন আপনার এই ছোট্ট বাবুটি একদিন অনেক বড় হবে। ওর জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল আমার তরফ থেকে।ধন্যবাদ আপনাকে এভাবে সবার মাঝে এই বিষয়টি ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

 2 years ago 

জাহিরা ও নাজিফা মনে হয় ভালো বন্ধুত্ব। যাক দুইজনে একই স্কুলে হওয়ার কারণে আপনাদেরও সুবিধা হবে। ছোট বাচ্চাগুলো যখন স্কুলে যায় তখন মায়ের কাজগুলো আরো বেড়ে যায়। মনে হয় নতুন করে মাও স্কুলে ভর্তি হয়েছে এরকম লাগে। আর এখন প্রচুর ঠান্ডা। সকালবেলায় স্কুলে নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টকর। আশা করি ছোট বাবু বড় হয়ে আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করবে। তার জন্য অনেক দোয়া রইল।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58067.54
ETH 2469.39
USDT 1.00
SBD 2.40