ছোট্ট আয়োজন
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগবাসী কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয়ি সবাই সুস্থ আছেন।ভালো আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ শেয়ার করব।গত বৃহস্পতিবার আমার বাসায় আমার মিস্টারের কয়েকজন সহকর্মীকে দাওয়াত করা হয়েছিল।আর দাওয়াত যেহেতু করেছি কিছু আয়োজন করতে হবে। সেদিনের কিছু মূহুর্ত আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
দাওয়াত সাধারণত বিভিন্ন ছুটির দিন বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে হলে ভালো হয়। কিন্তু আমি ইচ্ছা করে বৃহস্পতিবার নিয়েছি কারণ যারা আমার বাসায় আসবেন তারা সবাই বাইরে থেকে এখানে অফিসে আসেন ছুটির দিন ছাড়া তারা এখানে আসেন না।
আপনারা অনেকেই জানেন যে আমার মেয়ে জাহিরা এখন স্কুলে যায়। তো ওর স্কুলেও বৃহস্পতিবার খোলা ছিল। এজন্য আমার একটু সমস্যা হচ্ছিল জাহিরার স্কুল দুপুর ১২ঃ৩০ ছুটি হবে।আর ওনারা দুপুরে খাবেন মানে দুপুর ২ টায়।জাহিরার স্কুল সামলে আমাদের জন্য রান্না বান্না করা একটু কষ্টকর হয়ে যাবে। এত তাড়াতাড়ি রান্না করা সম্ভব না এজন্য আমি ভেবেছিলাম জাহিরাকে বৃহস্পতিবার স্কুলে নিয়ে যাব না। একটা দিন স্কুলে না গেলে খুব বেশি ক্ষতি হবে না। কিন্তু আমার মেয়ে স্কুলে যাবে সেই স্কুল কোন ভাবে মিস দেবে না। আমাদের বাসার আরও একটা বাচ্চা একই স্কুলে জাহিরের ক্লাসে পড়ে। বললাম ওর সঙ্গে তুমি কি যাবে জাহিরা এক কথায় রাজি হয়ে গেল বলল আমি আগে স্কুলে যাই তুমি পরে আসো।
মেয়ে যেহেতু রাজি হয়ে গেল তাই আমি আর বেশি কিছু বললাম না। আমি ওইভাবে সব কিছু রেডি করছিলাম আগের দিন রাতে অনেক কিছু কাটা করে সব রেডি করে রেখেছিলাম। পরের দিন সকাল সকাল উঠেই রান্না তুলে দিয়েছি। বাবা মেয়ে ঘুমাচ্ছিল আর আমি সকাল সকাল রান্নাবান্না করি।জাহিরা তো যেতে চাচ্ছিল কিন্তু আমার তারপরও একটা টেনশন হচ্ছিল ও তো অনেক ছোট। তেমন কোন কিছুই বোঝেনা। একটু নিশ্চিন্তে ছিলাম এটা ভেবে যে ওই বাচ্চার সাথে ওর মা যাবে এবং জাহিরাদের স্কুলে একবার ঢুকে গেলে টিফিন পিরিয়ডের আগে ওদেরকে আর ক্লাস থেকে বের হতে দেয় না। এটা নিশ্চিন্তে ছিলাম যে ক্লাসে ঢুকে গেলে ও তো আর বের হবে না। আমি ঠিক টিফিনের আগে ওর টিফিন নিয়ে স্কুলে চলে যাবো।
জাহিরা ঘুম থেকে ওঠার আগে আমি অনেকটা রান্না করে নিয়েছি। এরপর জাহিরাকে রেডি করে ঠিক দশটার আগে ওর বান্ধবীর সঙ্গে স্কুলে চলে গিয়েছিল। তারপর আমি মোটামুটি বাকি রান্নাটা শেষ করেছি যতটা ওর টিফিনের আগে করা যায়। তারপরও কিছু বাকি ছিল তো ওরা যেহেতু দুইটাই আসবে আর জাহিরার সাড়ে বারোটায় ছুটি হবে।বাকি যতটুকু থাকবে স্কুল থেকে এসে শেষ করব।
যেভাবে প্ল্যান করেছিলাম ঠিক সেভাবেই স্কুল থেকে এসে বাকি রান্না শেষ করেছিলাম। রান্না শেষ হওয়ার পর সময় দেখি দুপুর দেড়টা বাজে। এতে করে একটু স্বস্তি লাগছিল যে সময়ের আগে আমি রান্না সব শেষ করে টেবিল গুছিয়ে নিয়েছি। আর রান্না শেষে জাহিরার বাবাকে ফোন দিয়ে বললাম আমার রান্না শেষ তোমরা এবার চলে আসো।জাহিরার বাবা এ কথা শুনে একটু খুশি হয়েছিল কারণ সবকিছু সামলিয়ে ঠিক সময়ের আগেই আমার সবকিছু রান্না শেষ হয়েছে। এটা জেনে খুশী হয়েছেন। জাহিরার বাবা দুইটার মধ্যে চলে এসেছিল তারপর সহকর্মীরা কিছুক্ষণ পরে এসেছেন। এসে খুব বেশি কথা বলা হয়নি কারণ খাওয়া দাওয়া শেষে আবার সবাইকে অফিসে যেতে হবে।
আমি ওনাদের জন্য সালাদ, বেগুন ভাজা, মাছ ভাজা, মাংস, কোয়েল পাখির মাংস, ডিম,রোস্ট এসব কিছু রান্না করেছিলাম।ওনারা খাওয়ার পরেও বলেছেন ওনাদের কাছে খাবার গুলো অনেক মজা লেগেছে। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি যথেষ্ট ভালোভাবে রান্না করার জন্য। তবে ওনারা যে তৃপ্তি করে খেয়েছেন এটা দেখে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আর রান্না করতে যতটুকু না কষ্ট হয় তারপরে যদি কেউ সুন্দর মত খায় সেটাতে আরো বেশি ভালো লাগে।জানি না ওনাদের কাছে কতটুকু ভালো লেগেছে।তবে আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি।
আজ এ পর্যন্তই।পরবর্তীতে আবারও নতুন কিছু নিয়ে দেখা ততক্ষণ সবাই সুস্থ থাকবেন। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
বেশি ভালো লাগলো কোয়েল পাখির মাংসের কথা শুনে।যদিও আমি এই মাংস তেমন একটা পছন্দ করিনা তবে আইটেমটা ইউনিক।
সবশেষে তারা তৃপ্তি করে খেয়েছে সেটাই বড় কথা।শুভ কামনা রইলো।
কোয়ল পাখির মাংস আমিও খুব বেশি পছন্দ করি না।তবে অনেকে পছন্দ করে।আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আপনার মেয়ের স্কুলের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো। কারণ আমি একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে এটাকে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে করি। ছেলে-মেয়ে নিজেদের থেকে স্কুলের প্রতি আগ্রহটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যাইহোক বৃহস্পতিবার ছুটির দিন না হওয়া সত্ত্বেও আপনি এত সুন্দর গেস্টের আপ্যায়নের জন্য আয়োজন করতে পেরেছেন দেখে ভালো লাগলো। সব মিলিয়ে বলবো দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি। আশা করি এই দিনটি একটি স্মৃতিময় হয়ে থাকবে আপনার জীবনে।
এতো সুন্দর একটি মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
মেহমান আসলে ভালো লাগে কিন্তু একা সব কিছু সামলানো বেশ কষ্ট কর হয়ে যায়।তারপর ও আপনি সাহস করে আপনার মিস্টার এর কলিগদের সব ভালোভাবে আপ্যায়ন করে বিদায় দিতে পেরেছেন।আর ছোট বাচ্চা গুলো স্কুলে বেশ মজা পায় প্রথম প্রথম তো।আপু অনেক কিছু আয়োজন করেছেন। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
ঠিক বলেছেন আপু বাচ্চারা প্রথম প্রথম স্কুলে যেতে খুব পছন্দ করে।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার একটা মন্তব্য করার জন্য।
আসলে আপু বাচ্চারা স্কুল বন্ধ দিতে চায় না, আমার মেয়ে ও যদি বলি আজ যাওয়ার দরকার নেই কিন্তু তারা নাছর বান্দা যাবেই। তবে বাচ্চাদের একা ছাড়তে আসলে মন চায় না।আপনি দেখছি অনেক আয়োজন করেছেন মেহমানদের জন্য। একা হাতে সব কিছু করতে আসলে মুশকিল হয়ে পড়ে, তারপর আপনি সময়ের পূর্বে সব কিছু রেডি করতে পেরেছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। যাইহোক সবাই তৃপ্তি করে খেয়েছে শুনে আরো ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার সুন্দর মন্তব্য গুলো আমাকে অনেক উৎসাহ প্রদান করে। অনেক ধন্যবাদ আপু।
ছোট বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ অনেক আপু। আমার ছোট ভাই ও প্রতিদিন স্কুলে যায়। আজ ওর শরির হালকা একটু গরম আমি বললাম যেতে হবে না ও শুনলো না। যাইহোক আপু একা হাতে সব রান্না করেছেন নিশ্চয় অনেক কষ্ট হয়েছে। রেসিপি দেখে জিভে জল চলে এলো। ধন্যবাদ আপনাকে
আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।ভালো থাকবেন।
ছোট বাচ্চারা স্কুল বন্ধ দিতেই চাইনা আপু। আমার ছোট ভাই আছে প্রতিদিন স্কুলে যেতেই হবে না গেলে কান্না শুরু করে দেয়। আপনার মিস্টারের সহকর্মীদের জন্য অনেক সুন্দর সুন্দর খাবার রান্না করছেন। দেখে খুব ভালো লাগলো আসলে একা একা এতো কিছু রান্না করতে তো বেশ সময় এর প্রয়োজন হয় তারপর আবার আপনার বাচ্চার জন্য টিফিন নিয়ে যাওয়া। অনেক ঝামেলার মধ্যে দিয়েও আপনি সময় মতো সব কিছু শেষ করতে পারছেন এটা দেখে ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনার ছোট ভাই ও স্কুল মিস দিতে চায় না জেনে ভালো লাগলো।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
কি যে বলেন ভাবি এটা কি ছোট আয়োজন। এ তো টেবিল ভর্তি খাবার। আপনি তো অনেক কিছু রান্না করেছেন।নিশ্চয়ই একা একা খেতে খুব কষ্ট হয়েছে। আমাদেরকে ডাকলেই পারতেন। 🤪
একা খাই নি ভাবি গেস্ট এসেছিল তাই বেশি কষ্ট হয়। কষ্ট হলে তো অবশ্যই ডাকতাম।
আপু আপনার আয়োজন ত বেশ ভালোই ছিল।একা হাতে সব করে ভাইয়ার কলিগদের সুন্দর ভাবে অ্যাপায়ন করেছেন জেনে খুব ভাল লাগলো। তবে কোয়েল পাখির মাংস ইউনিক একটা রেসিপি কিন্তু আমি কখনও টেস্ট করিনি।অনেক ভাল লাগলো। ধন্যবাদ আপু শেয়ার করার জন্য।
আমিও কোয়েল পাখির মাংস খাই না। আমার পোস্টে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।