স্পোর্টস : ফ্রেন্ডলি ম্যাচ (স্পেন ^ ব্রাজিল )//by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon বাংলাদেশের নাগরিক
- ফ্রেন্ডলি ম্যাচ (স্পেন ^ ব্রাজিল )
- ২৮, মার্চ ,২০২৪
- বৃহস্পতিবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে ফুটবল ম্যাচ দেখার অভিজ্ঞতা শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
ছবিঃ Sportzfy TV থেকে স্ক্রিনশট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
ম্যাচের পরিসংখ্যান:
স্পেন | ব্রাজিল |
---|---|
মোট শট-১৯ | মোট শট-১২ । |
টার্গেটের শট-৮ | টার্গেটের শট-৬ । |
দৈর্ঘ্য | ৯০ মিনিট । |
বল পজিশন -৫৯% | বল পজিশন -৪১% |
পাস করে -৫৪৪ | পাস করে -৩৮৯ |
পাস নির্ভুলতা-৯২% | পাস নির্ভুলতা-৮৪% |
ফাউল-২০ | ফাউল-১৬ |
---|---|
হলুদ কার্ড- ০৩ | হলুদ কার্ড - ০৬ |
রেড কার্ড- ০০ | রেড কার্ড-০০ |
অফসাইডস-০৩ | অফসাইডস-০১ |
কোণ-০৬ | কোণ- ০২ |
সময়কাল রাত ২.৩০ টায় | ২৭.০৩.২০২৪ইং |
ফলাফল : | স্পেন-০৩ ব্রাজিল-০৩ |
ম্যাচের সারসংক্ষেপ
আমার কাছে খেলাধুলা খুবই ভালো লাগে ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি আলাদাভাবে নেশাটা রয়েই গেছে। এখনো সময় পেলে ছোট ভাই ব্রাদারের সাথে এলাকায় খেলাধুলার মেতে ওঠা। যেটা অনেক বড় একটি নেশা খেলাধুলা শরীরের পক্ষে যেমন ভালো তেমনি মানসিক সকল ধরনের অবসাদ দূর করে দেয়। ছোট্টবেলার সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে এখনো ফিরে যেতে মন চায়। আসলে সেই স্বাধীন মুহূর্ত চাইলে যখন তখন খেলাধুলা নিয়ে মেতে উঠতাম এখন আর পারি নাহ। মাঝে মাঝে ছোট্ট বাচ্চাদের খেলাধুলা গুলো দেখে সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করি আর খেলাধুলা এখন নিয়মিত না করা হলেও রাত জেগে খেলা দেখার অভ্যাসটা এখনো রয়েই গেছে।
বর্তমান বিভিন্ন ক্লাবের খেলা বিরতি রয়েছে। এখন জাতীয় দলের খেলা শুরু হয়েছে। ক্লাবের খেলা গুলোর শেষের দিকে সেজন্য সিজনের শেষ মুহূর্তের খেলা কিছুদিনের জন্য বিরতি থাকে সেই সময় দলের খেলা শুরু হয়ে যায়। গতকাল 24 শে মার্চ রাত একটা থেকে শুরু হয় বড় বড় দল গুলোর প্রীতি ম্যাচ। ব্রাজিল ইংল্যান্ড এর মধ্যে ইংল্যান্ডের মাটিতে ওয়েমলি স্টেডিয়ামে রাত একটা ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সময় ডেনমার্ক এবং সুইজারল্যান্ড এর মধ্যে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। রাত দেড়টার দিকে জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস এর মধ্যে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমান ব্রাজিল জার্মানির বেহাল অবস্থা । টানা দুই বিশ্বকাপ জার্মানি গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ হয়ে নিয়েছে । অন্যদিকে ব্রাজিল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইউরোপের দল গুলোর কাছ হেরে বিদায় নেয়।
বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল তারপর জার্মানি তাদের এই বেহাল অবস্থা থেকে কোনভাবেই নিজেদের আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে পারছে না। সেজন্য ২০২৪ সালের তাদের প্রথম ম্যাচ ফ্রান্সের সাথে অনুষ্ঠিত হয় জার্মানির এবং ব্রাজিলের অনুষ্ঠিত হয় ইংল্যান্ডের সাথে। সেই দুটি ম্যাচে ব্রাজিল এবং জার্মানি জিতে যায় যেহেতু ইংল্যান্ডের মতো দলের সাথে ব্রাজিল জিতে গিয়েছে স্পেনের সাথে ভালো একটা পারফরম্যান্স করবে সেটাই প্রত্যাশা করেছিলাম। ব্রাজিলের যে ছন্দময় ফুটবল সেটা যেন এখন বিলুপ্তির পথে। যখন রাত আড়াইটার দিকে স্পেনের সাথে খেলা শুরু হয় প্রথমেই স্পেন অনেক আক্রমনাত্মক ফুটবল খেলতে শুরু করে। তাদের খেলার কাছে ব্রাজিলের সেই ছন্দময় খেলা হারিয়ে গিয়েছিল। বুঝে উঠতে পারছিলাম না কি খেলছে ব্রাজিল।
স্পেন খেলার শুরুতে আক্রমণের উপর আক্রমণ করতে থাকে। অন্যদিকে ব্রাজিল তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তারা ডিফেন্সিভ ফুটবল খেলতে থাকে। এই ধরনের খেলা ব্রাজিলের মতো দলের কাছ থেকে কখনো আশা করিনি। এরকম ম্যাচ আগে কখনো দেখিনি। এর কারণ হলো দীর্ঘ এক বছর তাদের পারফরম্যান্স খুবই খারাপ। বিশ্বকাপের পর থেকে অনেকগুলো বাছাইপর্ব ম্যাচে তারা হেরে গিয়েছে। নতুন কোচ পরিবর্তন হয়েছে তিনটি তবুও দলের কোন পরিবর্তন হয়নি। ডরিবাল জুনিয়ার নতুন দায়িত্ব নেয়ার পর শুরুটা ভালো করেছিল কিন্তু এই ম্যাচে আগের ব্রাজিলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। দলে আক্রমণ ভাগ ব্যতীত সবাই নতুন এরকম একটি দল নিয়ে ইউরোপের বেস্ট দলগুলোর সাথে খেলার সত্যিই অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ। খেলার 12 মিনিটে স্পেন একটি পেনাল্টি পায়। স্পেনের মিডফিল্ডার রদ্রী পেনাল্টি কিক নেয়। ব্রাজিলের নতুন গোলকিপার তার কৌশল বুঝতে পারেনা। মাঝ বরাবর স্লো করে লক্ষ্য দেধে বল পাঠিয়ে দলকে ১-০ গোলে এগিয়ে নিয়ে যায়। যেখানে ব্রাজিল এক শুন্য গোলে পিছিয়ে পড়ে।
এর আগে ব্রাজিলের যতগুলো ম্যাচ দেখেছি তারা গোল খাওয়ার পর খেলায় ভালোভাবে কাম ব্যাক করে। কিন্তু গোল খাওয়ার পরেও ব্রাজিলের মধ্যে সেই বিষয়টি দেখতে পেলাম না । বল পসিশন সব সময় স্পেনের বেশি ছিল ।অন্যদিকে ব্রাজিল এটা কিং মুডে ফুটবল খেলতে থাকে ।স্পেন আক্রমণের উপর আক্রমণ করতে থাকে। ল্যাটিন আমেরিকার যে কোন দল তাদের বল পজিশন ধরে রেখে ফুটবল খেলে থাকে কিন্তু এবার ব্রাজিলকে ভিন্ন রূপ দেখতে পেলাম। সত্যিই আমার কাছে যেটা অবিশ্বাস্য লেগেছে। খেলার ৩৬ মিনিটে অলমো ব্রাজিলের ডি বক্সের মধ্য থেকে ডিফেন্স কে বোকা বানিয়ে দারুণ একটি গোল করে । সত্যিই এই ধরনের খেলা ব্রাজিলের সাথে হবে সেটা অপ্রত্যাশিত। খেলা দেখার মন-মানসিকতাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ভাবলাম আর কিছু সময় দেখে বাদ দিয়ে দেই। কারণ যেভাবে খেলা হচ্ছিল ব্রাজিলের অনেকগুলো গোল খাওয়ার কথা। কিন্তু খেলার ৪০ মিনিটে স্পেনের গোলকিপারের ভুল পাসে ডি বক্সের সামনে রোদ্রিগো বল পেয়ে যায় । দারুন এক ফিনিশিংয়ের মাধ্যমে দলকে ২-০ গোলের ব্যবধান থেকে রক্ষা করে।
2-1 গোল এর ব্যবধানে প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয়। নির্দিষ্ট ১৫ মিনিটের বিরতি শেষে খেলা আবার শুরু হয়। দ্বিতীয় আর্ধে ব্রাজিল দারুন একটা আক্রমণ করে । কিন্তু কর্নার কিক হয় । কর্নার কিক নেওয়ার পর সেই বলটি পেয়ে যায় ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার বিস্ময়কর বালক এন্ড রিক। দারুন এক ফিনিশিং এর মাধ্যমে দলকে পিছিয়ে থাকার হাত থেকে দুই দুই ব্যবধানে নিয়ে আসে। এর আগে ইংল্যান্ডের ম্যাচে এন্ড্রিক বদলি প্লেয়ার হিসেবে নেমে অসাধারণ একটি গোল করে দলকে জিতিয়েছিল। সেজন্যই তাকে বলা হয় বিস্ময়কর বালক। এই ম্যাচেও বদলি হিসেবে নেমে দারুন একটি গোল করলো সত্যিই সবাই হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল । স্টেডিয়ামের স্পেন সমর্থক সবাই স্তব্ধ হয়ে গেল । এভাবে আক্রমণের উপর আক্রমণ চলতে থাকে দুই দলের মধ্যে অনেক সময়ের মধ্যে কোন গোল হয় না কিন্তু ৮৭ মিনিটে ডি বক্সের মধ্যে কারবাহাল ঢুকে পড়লে তাকে ফাউল করে সেখানে স্পেন একটি পেনাল্টি পেয়ে যায়। রদ্রি পেনাল্টি কিক নেয় দলকে তিন দুই ব্যবধানে এগিয়ে নিয়ে যায়।
এই পেনাল্টি নিয়ে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে । আসলে পেনাল্টি টি না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ছিল। সেজন্য অনেক তর্ক বিতর্ক শুরু হয়ে যায় কোচ প্লেয়ারদের মধ্যে। যাইহোক, রেফারি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত ছিল খেলা প্রায় শেষের দিকে সেই মুহূর্তে গোল হজম করা মানে হেরে যাওয়া। সেটাই ভেবেছিলাম কখনো কল্পনা করিনি ব্রাজিল গোলশোধ দিতে পারবে। ব্রাজিল গোল পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে আক্রমণের উপর আক্রমণ করতে শুরু করে। ডি বক্সের মধ্যে দারুন একটি সুযোগ পায় কিন্তু কার বাহাল ফাউল করে বসে । সেখানে ব্রাজিল পেনাল্টি কি পেয়ে যায় সত্যিই ম্যাচটি দারুণভাবে উপভোগ করেছি ।কারণ গোল একদিকে স্পেন দিয়ে এগিয়ে থাকছে অন্যদিকে ব্রাজিল সেই গোল পরিশোধ করছে। দারুন একটা ম্যাচ যেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। সেই পেনাল্টি কিক নেয় পাকুয়েতা গোল হওয়ার পর ম্যাচটি তিন তিন গোলে পরিসমাপ্তি হয়। সত্যিই একটা অবিশ্বাস্য ম্যাচ দেখলাম যেখানে সব মিলিয়ে স্পেনের পারফরম্যান্স সবচেয়ে ভালো ছিল । ব্রাজিল যদিও গোল পরিশোধ করেছে তবুও তাদের পারফরম্যান্স দুঃখজনক ছিল। ম্যাচটি ভালই উপভোগ করেছি। আশা করি এই রিভিউটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত ভিডিওর লিংক সমূহ
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
https://twitter.com/mahmudrr_r/status/1773237312261947695?t=kpjnLoxDkJMQz-hKrMV6Rg&s=19
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন স্পেন ও ব্রাজিলের মধ্য কার খেলা। আসলে দুই দলের খেলা গত পরশু দিন শেষ রাতের দিকে অনুষ্ঠিত হয়েছিল খেলা দেখতে উঠে একবারে সেহরি খেয়ে আবারো ঘুমিয়ে ছিলাম ভাই। আসলে এই খেলাতে অনেক ফাউল হয়েছিল সে কারণে আমার কাছে দেখতে তেমন একটা ভালো লাগেনি। তবে ব্রাজিলের প্লেয়ার সব থেকে বেশি বাজে খেলা খেলেছে এই ম্যাচে। অবশেষে খেলাতে ০-০ গোলে সমতা হয়েছিল। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি খেলা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ব্রাজিলের বর্তমান ফুটবল অবস্থা আসলেই খুব করুন। বেশ কিছু প্রীতি ম্যাচে তারা হেরে গিয়েছে। তাদের সেই আগের ছন্দ যেন হাওয়ায় মিশে গেছে। পরপর তিনজন কোচ পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও খেলার মধ্যে কোন আক্রমণ ভাগ লক্ষ্য করা যায় না। কিন্তু তাও যে ব্রাজিল এই খেলায় সমান সমান গোল তথা ড্রোর মধ্যে দিয়ে খেলা শেষ করেছে এটাই অনেক কিছু। আপনার খেলার রিভিউ টি অনেক বেশি ভালো হয়েছে ভাইয়া।
এই ম্যাচটা আমি ইচ্ছা করেই রিভিউ করিনি। প্রথম হাফে ব্রাজিল এতো বাজে খেলছে যেটা বলে বোঝানো যাবে না। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ডোরিভ্যাল জুনিয়র এর তিনটা পরিবর্তনে খেলা বদলে যায় ব্রাজিলের। যদিও আক্রমণ, বদ দখল, শর্ট সবকিছুতেই এগিয়ে ছিল স্পেন। কিন্তু ব্রাজিল মোটামুটি ভালোই খেলছে। তবে সবচাইতে ভালো লাগল এন্ড্রিক এর এসেই গোল করাটা দেখে। সত্যিই বিষ্ময় বালক এই এন্ড্রিক।
ব্রাজিল এবং স্পেনের খেলাটা আমি সরাসরি দেখেছি। খুবই উত্তেজনা পূর্ণ ম্যাচ ছিল। ব্রাজিলের থেকে স্পেনের খেলার মান অনেক বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে। স্পেনের নতুন উদীয়মান প্লেয়ারটা খুবই ভালো খেলেছে। যদিও ব্রাজিলের সাথে রেফারী একটু অন্যায় করেছে। স্পেন যে পেনাল্টি পেয়েছে সেটা না দিলেও পারতো। এই ভুল সিদ্ধান্ত না নিলে হয়তো ব্রাজিল জিতে যেতো। শুভকামনা জানাই আমার প্রিয় টিম ব্রাজিলকে।