রাজুর পথচলা- গল্প ( পর্ব-১) || ( ১০%লাজুক খ্যাকের জন্য )

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক


  • রাজুর পথচলা
  • ১০, এপ্রিল ,২০২২
  • রবিবার


আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি রাজুর পথচলার গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।



africa-2179608_1280.webp

Source

ভোরবেলা খুব জোরে একটা গাড়ি যাওয়ার শব্দে ঘুম ভেঙে গেল রাজুর । চোখ ডলতে ডলতে সে উঠে বসে । পাশে তার মা ও ছোট ভাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন । গাড়িটা যদি এত জোরে না যেত , তবে এখন রাজুও এমনভাবে ঘুমিয়ে থাকত । কিন্তু , সেই অজানা গাড়ির ড্রাইভার কি জানে , যে ফুটপাতে তিনজন মানুষ গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে ? তার হয়ত সেই অভিজ্ঞতা নেই । ঠান্ডার রাতে ফুটপাত যে বরফের মত শীতল থাকে , তার কোন ধারণাও নেই । সে হয়তোবা একটা কাঁথা দিয়ে তার বাসায় আরাম করে ঘুমায় এবং তার গাড়ির পেছনে বসা মালিকের একমাত্র সন্তান কম্বলের ওমে আরাম করে ঘুমায় । একজন আরেক জনের চেয়ে সুখী , জগৎটাকে বেশ আজব মনে হয় রাজুর কাছে । রাজুর কাছে এসব নতুন কিছু না । নিজের দশ - বার বয়সের অভিজ্ঞতায় সে জীবনকে ভালোভাবে বুঝতে শিখে গেছে । অথচ , তার কাছে কেন যেন মনে হয় - রাস্তায় হেঁটে যাওয়া সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাচ্চাগুলো যারা তার সমবয়সী , তারা তা জানে না ।

রাজুর জীবনও প্রথমে বেশ সুখময় ছিল । যখন রাজুর বাবা বেঁচে ছিল । রিকশাচালক হলে কি হবে তখন তারা বেশ সুখে ছিল । রাজু স্কুলে যেত , তাদের বস্তিতে একটা থাকার বাসা ছিল । তখন রাজুর খুব ইচ্ছা হতো - একদিন একটা বড় দালানে সে থাকবে , অনেক লেখাপড়া শিখে চাকরি যোগাড় করবে । আরও কত কিছু ! তবে একদিন সকালে ঘুম ভেঙে সে দেখল , তার বাবা আর নেই , চিরতরে না ফেরার দেশে চলে গেছে । তারপর একে একে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হলো , তার মা ও ছোট ভাই বস্তির সেই ছোট বাসা ছেড়ে অবশেষে রাস্তায় এসে পড়ল । তখন থেকে রাজু রাস্তাতেই থাকে । রাস্তায় ঘুরে ঘুরে সে অন্য ছেলেদের সাথে মিলে বেলুন বিক্রি করে । তার মা মাঝে মাঝে ইট ভাঙার কাজ করে , এভাবে খেয়ে না খেয়ে সে দিন পার করে দেয় ।

slums-2635238__480.jpg

Source

রাস্তায় সে দেখতে পায় , তার বয়সী ছেলে - মেয়েরা স্কুলব্যাগ কাঁধে করে স্কুলে যায় , কি সুন্দর ব্যাগগুলো ! কেউ আরাম করে গাড়িতে আসে , কেউ আবার হেঁটে আসে , কেউ রিক্সায় । খাবার দোকানগুলোর সামনে প্রায়ই তার সঙ্গী - সাথীরা হাত পাতে । তবে সে কখনো হাত পাতে না । মনে মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে । তবে , প্রায়ই সে চেষ্টা করে খাবারের দোকানের সামনে বেলুন বিক্রি করার , উদ্দেশ্য- যদি কেউ করুণা করে কিছু দেয় । তবে আজ পর্যন্ত কেউ দেয়নি । সবাই শুধু বেলুনের দাম জিজ্ঞেস করে , কেউ আবার কিনে নেয় । ছোট বাচ্চাদের সামনে দাঁড়ালে নির্ঘাত বেলুন বিক্রি হবে । তাই , সে ছোট বাচ্চাদের খুঁজে রেড়ায় । মাঝে মাঝে নিজেকে ওই সুখী বাচ্চাগুলোর মধ্যে বদলে নেয় ।

'ষ যদি ওই বাচ্চার জায়গায় আমি থাকতাম , তবে কত ভালোই না হতো ! ’ তবে ইচ্ছা - ইচ্ছাই থেকে যায় । রাজু মাঝে মাঝে ভাবে , রাস্তা দিয়ে যারা হেঁটে যায় তারা কেন তাকে কিছু দেয় না ? তাকে যেন কেউ দেখেও দেখে না ! এসব চিন্তা করতে করতে সে দেখে তার সঙ্গী রুবেলের মুখে একটা সিগারেট ! ‘ রুবেল , ওইডা কি ? ফালা মুখ থাইক্যা , ফালা কইতাছি । ' রুবেল মুখের কোনায় একটা শয়তানি হাসি এনে বলল , ‘ তোর এত সমস্যা কি ? এইহানে বইয়া আসমানের দিকে চাইলেই সব পাইয়া যাবি ? কাম করা লাগত না ? ’ রাজু চুপ করে থাকল । রুবেল মুখ থেকে সিগারেটটা ফেলেনি ! বলে লাভ নেই , রাজু জানে । তার বাবাও বিড়ি খেয়ে জীবনটাকে শেষ করেছে । কাশতে কাশতে মুখ দিয়ে রক্ত বের হলেও বিড়ি ছাড়েনি ! মৃত্যুও তাই তাকে ছাড় দেয়নি । রাজু বেলুনের বস্তাটা হাতে তুলে নিল । সে আর রুবেল বেরিয়ে পড়ল বেলুন বিক্রির জন্য ।..........

ধন্যবাদ সবাইকে



logo.gif

Sort:  
 2 years ago 

ভালো লিখেছেন। ২য় পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম ভাই। আপনার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভ কামনা থাকবে।

 2 years ago 

খুব শীঘ্রই দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের মাঝে তুলে ধরব সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

বেশ ভালো লাগলো আপনার গল্প পড়ে। আসলে এই গল্পের এই পার্ট আমার জীবনের সাথে অনেকটা মিল রয়েছে। আপনার পরবর্তী পার্টের অপেক্ষায় আছি। তারাতারি পোস্ট করেন ভাই।

 2 years ago 

তাই নাকি ভাইয়া আপনার জীবনের সাথে মিল যাও আমাকে অবাক করে দিলো হ্যাঁ অবশ্যই তাড়াতাড়ি আপনাদের মাঝে হাজির হব দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে।

 2 years ago 

আপনার গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাই । আপনি সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন যেটা আমাদের বাস্তব জীবনের সাথে অনেক মিল রয়েছে। আপনার গল্পটি দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

 2 years ago 

চেষ্টা করি ভাল কিছু লিখি আপনাদের মাঝে তুলে ধরার ভালো লাগায় আমি ধন্য আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

এই পর্ব পড়ে আকর্ষন বেড়ে গেল পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। গল্পটা শেষ করার আগ পর্যন্ত যেন মনের অনুভূতি টা পুরোপুরি প্রকাশ করতে পারবো না।

 2 years ago 

খুব শিগগিরই পরবর্তী পর্বের দেখা পাবেন গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া 🥰

 2 years ago 

দ্বিতীয় পর্বের শেষটুকু পোস্ট করে দিয়েছি এখন পড়তে পারেন।

 2 years ago 

অবশ্যই ভাইয়া

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 62299.15
ETH 2428.96
USDT 1.00
SBD 2.65