নাটকের রিভিউ "হাওয়া" || ( ১০%লাজুক খ্যাকের জন্য) by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon বাংলাদেশের নাগরিক
- নাটক রিভিউ
- ১৪, মার্চ ,২০২৩
- মঙ্গলবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে হাওয়া নাটকের রিভিউ শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
ছবিঃস্ক্রিনশট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীঃ
নাম | হাওয়া |
---|---|
পরিচালক | শেখ নাজমুল হুদা ঈমন । |
অভিনয় | মিশু সাব্বির , তাশনুভা তিশা এবং শারাফ আহমেদ জীবন । |
দৈর্ঘ্য | ৪৩.২০ মিনিট । |
ধরন | ট্রাজেডি, বাস্তবধর্মী । |
ভাষা | বাংলা। |
মুক্তির তারিখ | ০৯.০৩.২০২৩ইং। |
নাটকের সারসংক্ষেপ
নাটকের মূল চরিত্রে অভিনয় করে মিশু সাব্বির, সারাফ আহমেদ জীবন এবং তাসনুভা তিশা। হাওয়া নাটকে মিশু সাব্বিরের নাম শাপলা এবং সারাফ আহমেদ জীবন তার নাম মোরশেদ। তাদের দুজনকে নিয়েই মূল কাহিনী তারা দুজনে বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের অধীনে কাজ করে তিনি হলেন শফিক আহমেদ। শাপলা তার ছোট্টবেলা থেকেই স্বপ্ন কাউন্সিলর হওয়া সেই লক্ষ্য অনুযায়ী বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কাজ করে চলে যেতে থাকে।
শফিক আহমেদ তিনি রাজনৈতিকভাবে একজনকে হত্যা করায় জেলে যায়। তাকে জেল থেকে বের করার জন্য শাপলা এবং মোরশেদ তারা সম্মিলিতভাবে এলাকায় আন্দোলন প্রতিবাদ মিছিল গড়ে তোলে এক সময় সে জেল থেকে ছাড়া পায়। শাপলা এই প্রতিবাদ মিছিল করার জন্য তার যে সকল সহকর্মী ছিল তাদের দিয়ে এলাকার কিছু ছেলেপেলে জোগাড় করে মিছিল করার জন্য। তাদের মিছিলের উদ্দেশ্য হাসিল হলে তারা তাদের খরচের জন্য মাথা পতি ৫০ টাকা করে দেয়। সেই মিছিলে উপস্থিত ছিল 40 জন তার দুই সহকর্মীর এক হাজার টাকা এবং মিছিলে উপস্থিত সবার জন্য ২০০০ টাকা বরাদ্দ দেয়।
সে আবার শফিক আহমেদ এর কাছের বড় ভাই মোরশেদ। তার কাছ গিয়ে বলে আমাদের মিছিল সাকসেসফুল হয়েছে অনেক টাকা পয়সা খরচ হয়েছে ৭০ জন লোক উপস্থিত হয়েছিল। সবাইকে মাথাপিছু ১০০ টাকা করে দিতে হবে মোট সাত হাজার টাকা সে মোরশেদ ভাইয়ের কাছে গিয়ে আবদার করে। তখন মোরশেদ সাহেব বলে সামান্য এই মিছিল করার জন্য এত টাকা এভাবে টাকা খরচ করতে থাকলে তো পথের ফকির হয়ে যাবো। যাই হোক এই কথাগুলো বলার পরে শাপলাকে ৭ হাজার টাকা দিয়ে দেয়।
এইদিকে শাপলা ব্যস্ত সময় পার করার পর তার প্রেমিকার সাথে সুন্দর সময় পার করে। তার প্রেমিকা তাশনুভা তিশা বলে তুমি এসব রাজনৈতিক বিষয় থেকে বেরিয়ে আসো এটা মোটেও ভালো নয়। যেটা জীবনের জন্য অনেক ঝুঁকি কিন্তু শাপলা বলে আমার অনেক বড় স্বপ্ন আছে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আমি কাউন্সিলর হব। সে কোনভাবেই তার কথা মেনে নিতে রাজি হয় না তারপর সেখান থেকে রাগ করে চলে আসে। এইদিকে তার ফুফাতো ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে ফুফাতো ভাইয়ের ছেলের ভার্সিটিতে ভর্তি করে দিবে বলে। কিন্তু এখনো ভর্তির ডেট চলে যায় কোন কাজ করে দেয় নি।
শাপলা বাড়িতে আসা মাত্রই তার মা এসব কথা জিজ্ঞাসা করলে সে রাগ করে খাওয়া দাওয়া না করে চলে যায়। তখন সে মোরশেদ ভাইয়ের কাছে গিয়ে বলে আপনার কাছে আমার অনেক বড় একটি আবদার আছে। তখন মোরশেদ সাহেব বলে বল কি আবদার! তখন শাপলা বলে এই আমার ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে ভার্সিটিতে ভর্তি হবে সেই বিষয়ে আপনার সাথে আগে কথা বলেছিলাম। কিন্তু কাজটি এখনো কমপ্লিট হয়নি তখন মোরশেদ সাহেব বলে কমপ্লিট করতে পঞ্চাশ হাজার টাকা লাগবে তখন সে ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করার ডেট ফাইনাল করে।
এক সময় কাউন্সিলর পদে নাম দেয়ার সময় চলে আসে ।শাপলা মোর্শেদ ভাইয়ের কাছে জানতে চায় আমার নামটা কি দেওয়া হয়েছে। তখন মোরশেদ সাহেব বলে আরে পাগলা তোর নাম সবার উপরে আছে তুই কোন চিন্তা করিস না। তুই আমার সবচেয়ে কাছের ছোট ভাই তোর নাম সবার আগে দিয়েছি। কিন্তু এই দিকে শফিক সাহেবের পিএস এর মাধ্যমে জানতে পারে তার নাম দেওয়া হয়নি। সে এই বিষয়টি নিয়ে হতভম্ব যায় এ বিষয়টি তার প্রেমিকার সাথে আলোচনা করা মাত্রই তখন বলে আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম।
তারপর শাপলা মোর্শেদ সাহেবের কাছে গিয়ে বলে আপনি আমার কাছে বললেন আমার নাম সবার আগে দিয়েছেন। কিন্তু আমি শফিক ভাইয়ের পি এস এর মাধ্যমে জানতে পারলাম সেখানে আমার নাম নেই এতো দিন আমার সাথে মিথ্যাচার করেছেন। আপনার জন্য আমি সব ধরনের অপকর্মের সাথে লিপ্ত ছিলাম অনেক জবাবদিহিতা অনেক রাগান্বিত অবস্থায় কথা বলে। তখন মোরশেদ সাহেব বলে তোর মত ছেলে পেলে আমার দরকার নেই দূর হয় এখান থেকে তখন সে চলে আসে।
তারপর মোরশেদ সাহেব রাতের বেলা তাকে ডেকে নিয়ে আসে ভালো কথা বলে তার লোকজন দিয়ে শাপলা কে মেরে ফেলে। আবার সকালবেলা মোরশেদ সাহেব তার বাড়িতে গিয়ে শাপলার দাফনের সময় অভিনয়ের কান্নাকাটি করে। অনেক ভালো মানুষ ছিল আমাকে একা ফেলে চলে গেলি । তোর কথা কখনো ভুলবো না তোর জন্য অনেক দূর এগিয়েছি । এভাবে অভিনয় করে কান্নাকাটি শুরু করে মোরশেদ সাহেব।
শাপলার মৃত্যুর পর দাফনের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর কবরের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মোরশেদ সাহেব। তখন তার বডিগার্ড বলে ভাই চলেন তখন সে বলে আর একটু থাকি যাতে মানুষ না বুঝতে পারে। তখন কবর থেকে শাপলা বলতে থাকে মোরশেদ সাহেব কে উদ্দেশ্য করে আপনি এত বড় মিথ্যা কথা কিভাবে বলতে পারলেন ।আপনার জন্য অনেক মিথ্যা কথা বলেছি কিন্তু মৃত্যুর পর আপনি আমাকে নিয়ে যে মিথ্যা কথাগুলো বললেন তার জন্য আমার কবরের আজাব হবে। এটা নাও বলতে পারতেন তখন মোরশেদ সাহেব বলে সবই রাজনীতি তুই এটা বুঝবি না তাই বলে চলে যায়।
শিক্ষা
নাটকটি বর্তমান রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমান সমাজে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এরকম অসংখ্য যুব সমাজকে কাজে লাগায়। তাদের উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে গেলে নিজের স্বার্থের জন্যই তাদেরকে আবার দূরে ঠেলে দেয় এবং তাদেরকে মেরে ফেলে। প্রতিটা মানুষের মধ্যেই স্বপ্ন থাকে সেই স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নে এভাবেই বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি হয় সেই দৃশ্যপটেই নাটকটি করা হয়েছে। বর্তমান সমাজে যা ঘটছে সেই বিষয়টি খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে অনেক ভালো লাগলো।
ব্যক্তিগত মতামত
নাটকটি কয়েকদিন আগেই রিলিজ পেয়েছে কিন্তু আমার দেখা হলো আজকে। মিশু সাব্বির অনেক ভালো অভিনয় করে তার অনেকগুলো নাটক দেখেছি অনেক ভালো লাগে। এই দিকে সারাফ আহমেদ জীবন সে অভিনয় অনেক নাম করেছে তার অভিনয়ে অনেক সুন্দর ছিল। তাদের দুজনের অভিনয় অনেক মানিয়েছিল। নাটকের গল্পটা চমৎকার ছিল। তাছাড়া মিউজিক, সাউন্ড সিস্টেম সবকিছু অনেক সুন্দর ছিল।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকের লিংক
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
আপনার নাটকের রিভিউ পোস্ট পড়তে আমার কাছে ভীষণ ভালোই লেগেছে। এরকম নাটকগুলোর রিভিউ পোস্ট পড়তে আমার কাছে একটু বেশি ভালো লাগে। হাওয়া এই নাটকটি মনে হয় আমার এখনো দেখা হয়নি। সর্বপ্রথম আপনার রিভিউ পোস্টের মাধ্যমে দেখে ভালো লাগলো।
এই জন্যই রাজনীতি কে ঘৃণা করি, একজন মানুষের মৃত্যু নিয়েও রাজনীতি হয়, কান্না করার নাটক করে। যাইহোক নাটক টা অনেক সুন্দর ছিল। পুরো বিষয়টি তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার নাটকের রিভিউ টা দেখে খুবই ভালো লাগলো। হাওয়া নাটকটি আমি দেখেছিলাম। নাটকটি ভীষণ ভালো লেগেছে দেখতে। মানুষের মৃত্যু নিয়েও তারা যেন কি সুন্দরভাবে পুরো নাটকটি সাজিয়ে নিয়েছে। প্রথমদিকে একটু খারাপ লেগেছিল কিন্তু পরে নাটকটি ভীষণ ভালো লেগেছে। আপনিও খুব সুন্দর ভাবে নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করলেন।
আপনাদের একেক জনের এত সুন্দর সুন্দর নাটক রিভিউ দেখে খুব ভালো লাগে। আমার কাছেও বাংলা নাটক অনেক ভালো লাগে। বর্তমানে খুব সুন্দর সুন্দর নাটক রয়েছে আর এই নাটক দেখতে অনেক মজাও পাওয়া হয়। আপনার নাটক রিভিউর কাহিনি খুব সুন্দর পড়ে বুঝতে পারলাম। ধন্যবাদ সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
ভাই "হাওয়া"নাটকের রিভিউটি খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। নাটকের রিভিউটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো, তবে এ পর্যন্ত নাটকটি আমার দেখা হয়ে ওঠেনি। নাটকের রিভিউ পড়ে উপলব্ধি করলাম বর্তমান সমাজে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গরা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির পরে যুব সমাজকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। তখন তারা আর সেই যুবসমাজের কোন প্রকার খোঁজ খবর রাখে না। আর এইসব স্বার্থপর নেতারা হচ্ছে অভিনেতাদের চেয়েও বড় অভিনেতা, তাদের অভিনয় কান্নাকাটি দেখলে কখোনই মনে হয় না তারা এত বড় মাপের অভিনেতা। যাইহোক ভাই দারুন একটি নাটকের রিভিউ দেয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভাইয়া খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। নাটকটি বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। নাটকটিতে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে যারা মিথ্যা কথা বলে, অত্যাচার করে, তাদের বিচার একদিন ঠিকই হবে। ধন্যবাদ ভাইয়া।