---

হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক

---

---

---

আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন। আর আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি। আলহামদুলিল্লাহ। আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে আবারো একটি পোস্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি। তো আসলে এখন কিন্তু অনেক শীত পড়তেছে। শীতের সময় শীত পড়বে এটাই স্বাভাবিক।

Source

ব্যাডমিন্টন খেলা এমন একটি খেলা যেটা শীতের মৌসুমে সবার কাছেই প্রিয়। যাদের ব্যাডমিন্টন খেলা প্রিয় তারা শীতের মৌসুমটা এই খেলাধুলার মাধ্যমে ভালো সময় অতিবাহিত করেছেন। আমি ব্যাডমিন্টন তেমন একটা ভালো খেলতে পারি না। আমার বন্ধুরা এবং বড় ভাই ব্রাদার যারা আছে সবাই একসঙ্গে রাতে ব্যাডমিন্টন খেলার মাধ্যমে দারুন সময় উপভোগ করেছি। এবার প্রচন্ড শীত পড়েছে এই শীতের মধ্যে ব্যাডমিন্টন খেললে শীতের হাত থেকে সাময়িক মুক্তি পাওয়া যায়। যেকোনো ধরনের খেলাধুলা শরীরের জন্য ভালো।

যাইহোক, এই ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে খারাপ একটি অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছি। যেটা এখনো মনে পড়লে শরীর শিউরে ওঠে। ঘটনাটি ২০১৬ সালের তখন মাত্র এসএসসি পাস করেছি। লেখাপড়ার জন্য কুষ্টিয়া শহরে মেসে থাকতাম তখন। আমি যে মেসে থাকতাম সেই মেসে এলাকার বন্ধু এবং বড় ভাই ব্রাদার অনেকেই থাকতো। বলা যায় একটা বাড়ির মত সবাই পরিচিত ছিল। আমি রাহুল রাজু এবং আকাশ বাড়িতেই ছিল। এই তিনজন ম্যাচ থেকে বাড়িতে আসলাম তখন শীতের মৌসুম প্রচন্ড শীত পড়ছে। তিনজন প্ল্যান করেছি বাড়িতে গিয়ে ব্যাডমিন্টনের কোর্ট কেটে রাতে ব্যাডমিন্টন খেলব।

বাড়িতে এসে যেই প্লান সেই কাজ। বিকেলে এসে সুন্দর করে কোট কেটে খেলা নেট ফেদার রেকেট সবকিছু কমপ্লিট করলাম। সন্ধ্যার সময় বাজার থেকে ঘুরে এসে রাতের খাবার শেষ করে সবাই গার্লস স্কুল মাঠে উপস্থিত হলাম। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই সেটাই মূল ঝামেলা ছিল। কি করা যায় আমরা এক থেকে দুই দিনের জন্য ব্যাডমিন্টন খেলব। সেই মাঠের পাশেই বিদ্যুতের লাইন ছিল। আমাদের মাথায় প্লান আসলো বিদ্যুতের লাইন থেকে চুরাই লাইন নিয়ে একদিনের জন্য খেলব। যদিও বিদ্যুতের লাইন সম্পর্কে আমার তেমন একটা ধারণা ছিল না। বন্ধু রাজু এই প্লান করেছিল আমি তো অনেক ভয়ে ছিলাম।

রাজুর বাসায় বিদ্যুতের অনেক তার ছিল। সেটা নিয়ে সবকিছু সেট করা হলো তারপর বিদ্যুতের লাইনের সাথে সংযোগ দেওয়া বাকি। একটি লম্বা বাঁশির অংশ দিয়ে সেই বিদ্যুতের খুঁটির লাইনের সংযোগ দেওয়ার জন্য রাজু তারের সাথে সংযুক্ত করল। যে তারটি সংযোগ দিয়েছিল অনেক দুর্বল তার। যেটা বৈদ্যুতিক তারের যে ভোল্টেজ সেটা অসহনীয় পর্যায়ে। লাইন সংযুক্ত করার সাথে সাথেই খারাপ একটা আওয়াজ শুরু হয়ে যায় ‌ এমনিতেই কারেন্ট এর এই ধরনের কাজগুলো দেখে আমি অনেক ভয় পাই । আমি একটু দূরে ছিলাম রাজু নিজেই সবকিছু করছিল। রাজু নিজেই বুঝতে পেরেছে যে খারাপ কিছু ঘটতে চলেছে । সে চেষ্টা করছে সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন করার কিন্তু বৈদ্যুতিক খুঁটির তাদের সাথে যেভাবে লাগানো হয়েছে সেটা আর বিচ্ছিন্ন করা যাচ্ছিল না।

বাল্বের যে বোর্ড সেটা আকাশ ধরে রেখেছে। আমি অবস্থা খারাপ দেখে আকাশকে বললাম বার্ড ছেড়ে দিতে সে বোর্ড ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথে সেটা বাষ্ট হয়ে যায়। সমস্ত এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । আমরা তো অনেক ভয় পেয়ে যাই। সবাই সবকিছু ফেলে রেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করি রাস্তার পাশে মাঠ ছিল সেই মাঠ দিয়ে আমরা ফাঁকা জায়গায় চলে যাই। পালানোর সময় এমনভাবে বাষ্ট হয় আমাদের চোখ আধার হয়ে যায় । সেই মাঠের পাশে পুকুর ছিল আমি আর আকাশ সেই পুকুরের মধ্যে পড়ে যাই।🤩 আবার উঠে দৌড় পিছনের দিকে তাকানোর তো প্রশ্নই আসে না। এলাকার অনেক মানুষ সেখানে জড়ো হয় । সবাই এসে দেখি আমরা ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য চূড়াই লাইন নেয়ার চেষ্টা করেছি।

এলাকার সবাই এসে বকাবকি শুরু করে দেয় । আমরা এতটা ভয় পেয়েছিলাম সেদিন এখনো মনে পড়লে শরীর শিওরে ওঠে। বড় কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি এমন একটি খারাপ পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলাম আমাদের মধ্যে কেউ বিদ্যুতি স্পর্শে মারা যেতে পারতো। আল্লাহর অশেষ রহমতে সেদিন বেচে গিয়েছিলাম। বিদ্যুতের লাইনের যে ফেস থাকে সেটা পড়ে গিয়েছিল সে জন্যই আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম। আমরা ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য যে প্লান নিয়েছিলাম সবই ব্যর্থ। খেলা দূরের কথা বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছি ।এটাই তখন বড় পাওয়া ছিল ।অনেক রাত হয়ে যায় তারপর বাড়িতে আসি মাঠের মধ্যে যাওয়ার সময় হাঁটু সমান কাদা হয়ে যায় পায়।

বাড়িতে এসে চুপি চুপি শুয়ে পড়ি আর ভাবছি জীবনে এই ধরনের কাজ আর কখনো করবো না। সেই দিনের পর থেকে ব্যাডমিন্টন খেলার প্রতি যে আগ্রহ ছিল সেটা আর থাকে না। টানা চার পাঁচ বছর ব্যাডমিন্টন খেলতাম না। যে কাজটি আমাদের জীবনে অনেক বড় একটি শিক্ষা দিয়েছে। তারপর থেকে এই ধরনের কাজকে কখনোই সমর্থন করি না । এলাকার ছোট ভাই-ব্রাদার যারা আছে তাদের অনেক সতর্ক হয়ে খেলার নির্দেশ দিই।

---

---