গোয়েন্দা রহস্য গল্প - "এলাচির উইল"(পর্ব-১) || ( ১০%লাজুক খ্যাকের জন্য)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক


  • এলাচির উইল
  • ২৯, এপ্রিল ,২০২২
  • শুক্রবার


আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " এলাচির উইল" গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।



আমি মনে করি গল্প মানেই কোন বাস্তব চরিত্র বা ঘটনার সাথে পরিচিত হওয়া।জীবনের ইতি হয়ে যাবে কিন্তু থেকে যাবে স্মৃতি বিজরিত অতীত বা জীবনের গল্প। বেশিরভাগ মানুষ জীবনের বাস্তবতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করে নাহ।আমি গল্প পড়তে পছন্দ করি কারণ বাস্তবতার সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারি।জীবনে লুকিয়ে থাকা ঐতিহাসিক বড় ঘটনা গুলোই হলো অনেক বড় গল্প।

philatelist-1844080__480.webp

Source

গল্প - এলাচির উইল



তাহলে চলুন গল্পটি শুরু করি


অফিস রুম থেকে বের হয়েই দেখলাম এক বৃদ্ধা আমার অপেক্ষায় বসে আছেন । আমাকে দেখেই মাথা ঝুকিয়ে সম্মান জানালেন । খুব অবাক লাগলো । বৃদ্ধার আসার কারণটা মনে হয় আন্দাজ করতে পেরেছি । কিন্তু বর্তমানে এ কারণে আমার কাছে কেউ আসে না । আগে আসতো । বৃদ্ধা নিজের পরিচয় জানিয়ে আমার কিছু সময় চাইলেন । অফিস রুমে এসে বসলাম আমরা । বৃদ্ধার নাম মিসেস হেম । মিসেস হেম শহরের অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী মি . আজমান সাহেবের বাড়ির কেয়ারটেকার । প্রায় ১০-১৫ বছর ধরেই তার সাথেই ছিলেন । তাই আজমান সাহেব ও তাকেপরিবারের সদস্যই হিসেবে দেখতেন । এক সপ্তাহ আগে আজমান সাহেব ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান । শহরের অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে মৃত্যুর খবর খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়েছিল । এখন তার বিশাল সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে অনেক দুরসম্পর্কের শত্রুও নিজেকে তার স্বজন বলে দাবি করছে । বৃদ্ধার আসার কারণটা সম্ভবত এই বিষয় সম্পর্কিত । তারমানে ঠিক আন্দাজ করতে পেরেছিলাম । পেশা ডাক্তরি হলেও অনেক আগে থেকেই নেশা হিসেবে গোয়েন্দাগিরিটা ভালো লাগতো । কতগুলো কেস সলভও করেছি । তাও অনেক বছর আগের কথা , এরপর তো কাজের চাপে সব ছুটে যায়।

noir-3783057__480.webp

Source

মিসেস হেম আমার ঠিকানা জানলো কি করে , তাকে একটু অবাক লাগছে । জিজ্ঞেস করতেই বললেন- আজমান সাহেব সম্পত্তির কোনো উইল করে যাননি ; কিন্তু তার যাওয়ার পর এসব অচেনা উত্তরাধিকারী নিজেদের উত্তরাধিকার বলে দাবি করছে । এসব উত্তরাধিকারীর থেকে বাঁচতে তিনি এসেছেন । মিসেস হেম আজমান সাহেবের রুম খুঁজে একটি খাম পেলেন । খাম খুলে শুধু একটি শব্দ এবং চিঠির নিচে একটি ঠিকানা পেলেন । ঠিকানাটা ছিল আমার । আর শব্দটি ছিল “ এলাচি ” । কিন্তু বুঝে উঠতে পারছি না এলাচির নামে উইল ? তবে কি মারা যাওয়ার পর সমস্ত সম্পত্তি এলাচির ব্যবসায়ীদের দিতে চান তিনি ?

মিসেস হেম আমাকে খামটি দিয়েই উঠে দাঁড়ালেন । চলে যেতে যেতে এলাচির রহস্যের সমাধান খুঁজে বের করতে তাগাদা দিলেন আমাকে । এরপর মাথা নিচু করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন । আমি চেয়ারে বসে চিঠিটা দেখতে লাগলাম । হঠাৎ করে দরজার কড়া নড়লো । চেয়ে দেখলাম , মিসেস হেম অপরাধীসূচক চোখে তাকিয়ে আছেন । কিছু প্রশ্ন করার আগেই বলে উঠলেন , “ আপনার পারিশ্রমিকটা ... ? ” আমি কিছুটা মুচকি হেসে বললাম “ তা নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না । ” শুনে মনে হলো তিনি কিছুটা স্বস্তি পেলেন । মিসেস হেম যাওয়ার পর ভাবতে লাগলাম কেসটা কোথা থেকে শুরু করা উচিত!

sherlock-4445206__480.webp

Source

পরদিন সকালবেলা পৌঁছে গেলাম মি . আজমান সাহেবের বাসায় । বিশাল বাংলো । দূর থেকে বোঝা যায় । বাংলোর আভিজাত্যের চমক । ভেতরে ঢুকতেই দেখতে পেলাম মিসেস হেম ঘর পরিষ্কার করছেন । আমাকে দেখতে পেয়ে কাজ থামিয়ে দিলেন । বসতে বলে তিনি পানি নিয়ে এলেন । পানি খেয়ে মিসেস হেমের অনুমতি নিয়ে আজমান সাহেবের কামড়ায় গেলাম । কিছু ক্লু পাওয়ার আশায় । তার ঘরের তল্লাশি দিলাম । কিছু ব্যাংকের কাগজপত্র পেলাম । এতো বড় ব্যবসায়ীর ঘরে কাগজপত্র থাকটা স্বাভাবিক । তখনই ব্যাংকে ফোন দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলাম । তারমধ্যে একটি একাউন্টের পাসওয়ার্ড , কাগজ দেখতে পেলেও ২ য় একাউন্টের কোন নম্বর জানা নেই । তারমানে এলাচি ” ও এই কোড নাম্বরে কোন সংযোগ আছে । সময় নষ্ট না করে আজমান সাহেবের পরিবার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম । মিসেস হেম বললেন ১৫ বছর আগে আজমান সাহেবের সাথে করুনা নামের এক মেয়ের বিয়ে হয় । তাদের বিয়ের সময়ই মিসেস হেম তাদের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন । কিন্তু সে সময় আজমান সাহেবের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না । তাই স্ত্রীর সাথে ছোটখাটো বিষয়ে হর - হামেশাই ঝগড়া লেগে থাকতো । বিয়ের ২ বছরের মাথায় তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায় । জিজ্ঞেস করলাম তাদের কি কোনো সন্তান ছিল কিনা ? “ এক মেয়ে ছিল , নাম অমিয়া । ”

spy-5821903__480.webp

Source

তবে তিন বছর বয়সে স্কুল থেকে নিখোঁজ হয় সে । অনেক খোঁজার পরও সন্ধান মেলেনি তার । তবে এই বছরগুলোতে আজমান সাহেব কখনোই তার স্মৃতিচারণ করেননি । কথাগুলো বিরামহীনভাবে বলে গেলেন মিসেস হেম । চোখের কোনায় পানিও দেখতে পেলাম । আজমান সাহেবকে বেশ পছন্দ করতেন তিনি । “ মিসেস আজমান এসেছিলেন মেয়ের খোঁজে ? জিজ্ঞেস করলাম আমি । “ না আসেনি । ” মিসেস আজমানের কোন ঠিকানা আছে কিনা জানতে চাওয়ায় যেই ঠিকানা পেলাম ; তা শহর থেকে অনেক দূরে ।

মিসেস আজমানের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম । ট্রেনে করে যেতে হয় । যাত্রাটা উপভোগ করব আশা করি । গোয়েন্দাগিরির নেশাটা রক্তে মিশে গিয়েছে মনে হয় । তাই তো ট্রেনের কামড়ায় উঠেই প্রথমে সবার দিকে নজর ঘুরিয়ে নিয়ে , কার মনে কী চলছে তা আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম । অল্পবয়স্ক একজনের দিকে চোখ পড়তেই সে চোখ ফিরিয়ে নিলো । মনে হলো কোনো গুরুতর অপরাধ করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে । আর এ কারণেই আড় চোখে সবার দিকে ভয়ার্ত দৃষ্টি দিচ্ছে ।দেখতে দেখতেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছালাম । ট্রেন থেকে নেমে ১৫ মিনিটের পায়ে হাঁটা পথ ধরে এসে পড়লাম মিসেস আজমানের বাড়ির সামনে । তিনি বর্তমানে একাই থাকেন । দুই - আড়াই বছর আগে তার দ্বিতীয় স্বামী মারা যায় । আজমান সাহেবের মৃত্যুর খবরটা মনে হয় তার কাছে পৌঁছায়নি । দরজার কড়া নারতেই মধ্যবয়স্ক এক মহিলা বেড়িয়ে এলেন । মনে হলো , কোথাও যাচ্ছেন । চিনতে অসুবিধা হলো না । ইনিই মিসেস আজমান । নাম করুণা হলেও মুখে বিন্দুমাত্র করুণাবোধ নেই । আমাকে দেখে বিরক্তভরা কণ্ঠে প্রশ্ন করলেন , “ কী চাই ? ” আমি সবিনয়ে উত্তর দিলাম , “ আপনার কিছু সময় চাই । কিছু প্রশ্ন করবো । ” মিসেস আজমান এবার সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকালেন আমার দিকে ।..........!



পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকুন

আশাকরি গল্পটি আপনারা পড়বেন গল্প পড়তে আমি খুবই পছন্দ করি। যেটা প্রায়ই পড়া হয়ে থাকে ভালো লাগে পড়তে।গল্প পড়া মানেই নতুন কোন ঘটছে সাথে পরিচিত হওয়া। আমার লেখা গল্প পড়ে ভালো লাগলে নিশ্চয় মতামতের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন নাহ।

ধন্যবাদ সবাইকে



standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

gPCasciUWmEwHnsXKML7xF4NE4zxEVyvENsPKp9LmDaFuzVwHnY92rponrLLcEknitVG5yvYaPTExVtjfc6Bi4cvC9ppuyLmaATGbhg8UF4suiCxVfuw2YuSWJftJo9C74dQUN2WE1yNJmdtXp.png

💞 আল্লাহ হাফেজ 💞

k75bsZMwYNtze9xHvT6xWCdz7q3QGD35ZKdaPpVrFksWkDGMy52wVotParwf9eYo99FhcDG9yRVNaQxotVf91vSjAbxytemWEpH4UCMBVKo32iMz6Mc3c23ZDcBfZ1ESGR5dcG9hmK3xvsmcahC4GSPabbvtjdepn.png

Sort:  
 2 years ago 

আপনার লেখা গোয়েন্দা রহস্য গল্প থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আসলে পৃথিবীতে যার কেউ নেই তার বেঁচে থাকা মুশকিল।। গল্পের লাস্টের দিকে যেয়ে আমার খুবই খারাপ লাগলো। এলাচির মরে যাওয়ার কাহিনী টা খুবই হৃদয়বিদারক।। আপনার কাছ থেকে পর্ব টু আশায় থাকলাম ভাইয়া।।

 2 years ago 

এটা অবশ্যই গোয়েন্দা রহস্য গল্প যেটা আপনি করেছেন অবশ্যই গল্পের রহস্য সম্পর্কে অনেক ভালো কিছু জেনেছেন যেটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56477.82
ETH 2390.38
USDT 1.00
SBD 2.33