ছোট গল্প - "অশ্রুর তির্থস্থানে একদিন"( পর্ব-১) || ( ১০%লাজুক খ্যাকের জন্য)

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক


  • অশ্রুর তির্থস্থানে একদিন
  • ০৮, মে ,২০২২
  • শনিবার


আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি "অশ্রুর তির্থস্থানে একদিন " গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।



আমি মনে করি গল্প মানেই কোন বাস্তব চরিত্র বা ঘটনার সাথে পরিচিত হওয়া।জীবনের ইতি হয়ে যাবে কিন্তু থেকে যাবে স্মৃতি বিজরিত অতীত বা জীবনের গল্প। বেশিরভাগ মানুষ জীবনের বাস্তবতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করে নাহ।আমি গল্প পড়তে পছন্দ করি কারণ বাস্তবতার সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারি।জীবনে লুকিয়ে থাকা ঐতিহাসিক বড় ঘটনা গুলোই হলো অনেক বড় গল্প।বাস্তব জীবনের সাথে জড়িত জীবন চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো।

christmas-5842978__480.webp

Source

গল্প - অশ্রুর তির্থস্থানে একদিন



তাহলে চলুন গল্পটি শুরু করি


বাবা - মাকে তো ছোট থেকেই দেখে আসছি কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথে একটা প্রশ্ন তাড়া করে আমাকে যে , বাবা - মা তো আমাদের জন্য পারলে প্রাণ দিতেও রাজি আছেন । কিন্তু আমরা সন্তান হয়ে কি সত্যিই কিছু করতে পেরেছি বাবা মায়ের জন্য ? উত্তরটা এতো তাড়াতাড়ি পেয়ে যাব আশা করিনি । এসএসসি পরীক্ষা তখন শেষ , সামনে লম্বা ছুটি । কি করব , কোনটা ছেড়ে কোনটা করব তাই প্ল্যান করছি । এমনই কোন একদিনে হঠাৎ আপার ফোন-

আপাঃ কিরে , এখনো বই নিয়ে বসে কি করিস ? ঢাকায় আয় তাড়াতাড়ি , অনেক প্ল্যান আছে , ঘুরতে যাব । যেহেতু পরীক্ষা শেষ , বাবা - মা তেমন কিছু বললেন না । ট্রেনে চড়ে সাত ঘন্টার মাথায় পৌঁছে গেলাম ঢাকায় , ধানমন্ডিতে বড় আন্টির বাসায় । গিয়ে দেখি ছোট আন্টিও এসেছেন । বাহ্ ! তার মানে বার জন ভাইবোন আবার একসঙ্গে ঘোরার সুযোগ কিছুতেই ছাড়া যাবে না । এবার আর ভাইয়াকে সাথে আনলাম না । ও ভীষণ কুঁড়ে , কোথাও যেতে চায় না । বাবা - মায়ের একমাত্র মেয়ে তাই একা কোথাও গেলে যেন তাদের চিন্তার অন্ত নেই । ‘ কী করছিস ‘ খেয়েছিস তো , বেশি ঘোরাঘুরি করিস না ’ নানা রকম প্রশ্ন আর উপদেশ শুনে বড় আন্টি তো রেগে আগুন হয়ে যান।

বড় আন্টিঃ মুন্নি , তোর মেয়েকে রেখে দিলাম , আর পাবি না । আমি শুনে হাসতে থাকি । বললেন তো ঠিকই কিন্তু রাখতে যে পারবেন না তাই ভেবে খুব হাসি পায় আমার । প্ল্যান মত অনেক জায়গাতেই ঘুরেছি । আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ঢাকা ভার্সিটি নিজের চোখের সামনে থেকে দেখার , সেটাও পূরণ হলো । চার - পাঁচ দিন পর আপু ভাইয়ারা মিলে কোথাও একটা যাওয়ার প্ল্যান করল , কিন্তু আমি তখন আন্টির কাছে নাড়ু বানানো শিখছিলাম । তাই তাদের সাথে থাকতে পারিনি । অনেকবার জিজ্ঞেস করার পরেও কেউই বলল না যে কোথায় যাওয়ার প্ল্যান করেছে । তাই আমি রাগ করে চলে এলাম ঘর থেকে । তখন কল্পনাও করিনি কী অপেক্ষা করছে আমার জন্য।

gift-548290__180.webp

Source

আগের দিন অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল আড্ডা মেরে , তাই ঘুমাতে দেরি হয়ে গেল । সকাল বেলা ভাইয়া ডাকাডাকি করে আমার এতো ভালো ঘুমের ১২ টা বাজিয়ে দিল । কিন্তু ভাইয়াকে ভীষণ ভয় পাই তাই কিছু বলারও সুযোগ নেই । ধমক দিয়ে বলতে লাগল ভাইয়া : এতোটা পথ যেতে হবে , আগে থেকে তৈরী না হলে কিভাবে পসিবল ? এখনও ঘুমাচ্ছিস তুই ! আমি : এতটা পথ ... এতোটা পথ মানে ? কোথায় যাব ? এখনও বলবে না কোথায় যাব ? না বললে যাবই না । কঠিন শর্ত দিয়ে বসলাম । ভাইয়া : ঠিক আছে , যাবি না তো , না যা আমার কি ? বলে ভাইয়া চলে গেল । ওরা হয়ত অনেক সুন্দর কোন জায়গায় যাবে আর আমি থাকব না এটা ইম্পসিবল । তাই , না করেও তৈরী হয়ে গেলাম।

নিচে নেমে দেখি গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে । কি আশ্চর্য ! এমন কোথায় যাচ্ছি যে এতো বড় গাড়ি লাগবে ? অনেক দূর নাকি ? একবার ভাবলাম আপুকে জিজ্ঞাসা করি কিন্তু সবাই গাড়িতে উঠে গেছে । আমি গাড়িতে এখনো উঠিনি দেখে ভাইয়া এমনিতেই রেগে তাকিয়ে আছে আমার দিকে । এসব প্রশ্ন করলে তো না জানি কী হবে তাই বিনা প্রশ্নে গাড়িতে উঠে গেলাম । ঢাকার চওড়া রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলছে , খুব ভালো লাগছে , কিন্তু যাচ্ছি কোথায় ? ....

একঘন্টা চলে গেল কিন্তু গাড়ি থামছে না। আশ্চর্য হলাম কিন্তু কিছু বললাম না । সবাই গান বাজনা নিয়ে ব্যাস্ত । একবার মনে হলো হয়ত আমাকে সারপ্রাইজ দেবে , তাই আগে থেকে বলেনি । আমি ভাবলাম হয়ত কোন রেস্টুরেন্টে খেতে যাচ্ছি । ঢাকা তো ভালো করে চিনিনা । কতক্ষণ লাগবে বলতে পারছিনা । হতে পারে অনেক দূরে কোন বড় দামি রেস্টুরেন্ট ... এসব ভাবতে ভাবতে গাড়িতে চলতে লাগলাম । হঠাৎ ছোট ভাইয়া ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করল ভাইয়াঃ গাজিপুর টাউনে ঢুকে গেছি আমরা ? ড্রাইভারঃ না , এই ১০ মিনিট লাগবে।
ভাইয়া : ও আচ্ছা
...

girl-388652__480.webp

Source

একেবারে আকাশ থেকে পড়লাম । গাজীপুর - এ কে আছে আমাদের ? ওখানে কী করতে যাচ্ছি ? হাজারটা প্রশ্নের জটলা পাকানো চোখে একবার আপুর দিকে তাকালাম । আপু শুধু একটা মুচকি হাসি দিয়ে আবার বাইরে তাকাল । আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না , আপু ভাইয়ারা ঠিক কী করতে চাইছে কিছুই আন্দাজ করতে পারলাম না।

এসব ভাবতে ভাবতে কখন ৩০ মিনিট চলে গেল । এতোক্ষণ পর হঠাৎ গাড়ি থামল । উফ ! এতোক্ষণে গাড়িটার যাত্রা শেষ হলো তাহলে ... ! কিন্তু এখানে থামল কেন ? উপরে চোখ পরতেই যে নাম লেখাছিল তা দেখে আমার যেন পৃথিবীটাই ওলট পালট হয়ে গেল । এখানে কী করতে নিয়ে এল ওরা আমাকে ... ?

নিয়ে এল ওরা আমাকে ... ? আমি : ভাইয়া , এখানে কেন এসেছি আমরা ? ভাইয়া : চল্ না ভেতরে , সব বুঝতে পারবি , আমি জানি তুই কি ভাবছিস ...

christmas-6578796__480.jpg

Source

অগত্যা ভাইয়ার পেছন পেছন গেট খুলে ভেতরে ঢুকলাম। কি বিরাট জায়গা চারপাশে । মাঝখানে ঠিক দৈত্যের মতো বিল্ডিংটা । মনে হয় দুই ভাগ করা , একটা উত্তরদিকে , আরেকটা দক্ষিন দিকে । খুব পছন্দ হলো আমার । বিল্ডিং এর ভেতরে পা রাখতেই একজন ৫০ এর বেশি বয়সী লোক হাসিমুখে আমাদের স্বাগত জানালেন।

লোক : আপনারা এসে গেছেন ? খুব ভালো , খুব ভালো করেছেন , আসুন প্লিজ ভেতরে আসুন । ও ... তার মানে আগে থেকেই জানিয়ে রাখা হয়েছিল যে আমরা আসব এখানে। নাইস ... ।

কিছুটা রাগ হলো । ওখানে যারা বসে ছিল সবাই খুব আগ্রহের সাথে আমাদের দেখছিল । হয়তো ভাবছিল আমরা কোন এনজিও থেকে এসেছি , তাদের খোঁজ খবর নিতে । ৫০ বছরের নিচে কেউই ছিল না । ওদের দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম যে সন্তানরা বাবা মাকে কতটা ভালোবাসে শ্রদ্ধা করে । হয়তো বিশ্বাস যোগ্য নয় । কিন্তু আমার খুব খারাপ লাগছিল ওদের দেখে , জীবনে হয়তো আর কিছুই পাওয়ার বা হারানোর নেই তাদের।..............



পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকুন

আশাকরি গল্পটি আপনারা পড়বেন গল্প পড়তে আমি খুবই পছন্দ করি। যেটা প্রায়ই পড়া হয়ে থাকে ভালো লাগে পড়তে।গল্প পড়া মানেই নতুন কোন ঘটছে সাথে পরিচিত হওয়া। আমার লেখা গল্প পড়ে ভালো লাগলে নিশ্চয় মতামতের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন নাহ।



বিবরণ
বিভাগছোট গল্প ।
বিষয়গোয়েন্দা রহস্য গল্প -"অশ্রুর তির্থস্থানে একদিন"(প্রথম পর্ব)@ripon40
গল্প তৈরি করার অবস্থানলিংক

ধন্যবাদ সবাইকে



20211112_012926-01.jpeg

আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।



standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

gPCasciUWmEwHnsXKML7xF4NE4zxEVyvENsPKp9LmDaFuzVwHnY92rponrLLcEknitVG5yvYaPTExVtjfc6Bi4cvC9ppuyLmaATGbhg8UF4suiCxVfuw2YuSWJftJo9C74dQUN2WE1yNJmdtXp.png

💞 আল্লাহ হাফেজ 💞

k75bsZMwYNtze9xHvT6xWCdz7q3QGD35ZKdaPpVrFksWkDGMy52wVotParwf9eYo99FhcDG9yRVNaQxotVf91vSjAbxytemWEpH4UCMBVKo32iMz6Mc3c23ZDcBfZ1ESGR5dcG9hmK3xvsmcahC4GSPabbvtjdepn.png

Sort:  
 3 years ago 

আমার ভালো লাগে আপনার এই ক্ষুদ্রতম সাপোর্ট এভাবে ক্ষুদ্রতম সাপোর্ট করে পাশে থাকবেন সেটাই কামনা করে।

 3 years ago 

খুব চমৎকার একটি গল্প ছিল আশা করি সামনে দ্বিতীয় পর্ব আরো বেশি সুন্দর হবে, ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন সবসময় এই কামনা করি।

 3 years ago 

দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকুন ভাই গল্পের সম্পূর্ণটা পড়লে অনেক ভালো লাগবে। আর গল্পটির প্রথম অংশ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

অবশ্যই অপেক্ষায় রইলাম আপনার দ্বিতীয় পর্বের জন্য। আশাকরি দ্বিতীয় পর্বও অনেক জমজমাট হবে ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

বুঝলাম ভাই আপনি শেষ পর্যায়ে বৃদ্ধাশ্রমের কথা বুঝালেন। কারণ সেখানে পঞ্চাশ বছরের নিচে কেউ নাই। যাইহোক এইরকম সারপ্রাইজ খারাপ না। তবে ঐ মেয়ের জায়গাই আমি হলেও এইরকম অধৈর্য‍্য হয়ে যেতাম। আপনার লেখার দক্ষতা দেখে আমি মুগ্ধ। দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।।

 3 years ago 

অধৈর্য্য হওয়ার কারন নাই অপেক্ষায় থাকো ভাই পরবর্তী পর্বের জন্য তাহলেই সম্পূর্ণটা বুঝতে পারবে।

 3 years ago 

সত্যি ভাই আপনার মধ্যে অনেক প্রতিভা প্রতিভা না থাকলে কি কেউ এত সুন্দর গল্প লিখতে পারে। খুব সুন্দর হয়েছে। এভাবেই এগিয়ে যান আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

এটা আপনি কি বললেন ভাইয়া আপনিও চেষ্টা করুন অনেক ভালো কবিতা লিখতে পারবেন এবং গল্প লিখতে পারবেন আপনার চেষ্টাই সফলতার দিকে নিয়ে যাবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 99331.95
ETH 3298.98
USDT 1.00
SBD 3.05