গল্প : ছোট্টবেলা কাঁঠাল চুরি করে খাওয়া মজার ঘটনা //by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- ছোট্টবেলা কাঁঠাল চুরি করে খাওয়া মজার ঘটনা
- ০৩, জুন ,২০২৪
- সোমবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " ছোট্টবেলা কাঁঠাল চুরি করে খাওয়া মজার ঘটনা " শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
সেই ছোট্ট বেলার ঘটনা তখন ক্লাস ফোরে কিংবা ফাইভে পড়ি। বর্ষাকালীন সময়ে মজার একটি ঘটনা ঘটেছিল। বর্ষাকাল আসলেই প্রচুর বৃষ্টিপাত হতো আর আমরা বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকতাম। বৃষ্টি হলেই আমাদের আনন্দ গোসল করা দৌড়ঝাপ বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে হইহুল্লা করে বেড়ানো। সেই সময়ে গাছের বাদাম পেরে বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির উঠানে কিংবা ফাঁকা স্থানে ফুটবল খেলা শুরু করে দিতাম। সেই সময় খেলার মধ্যে অনেক আনন্দ ছিল। বৃষ্টি পরছে উঠানের উপর দিয়ে পানি গড়ছে আর আমরা খেলাধুলায় ব্যস্ত। বাবা-মায়ের নিষেধ না শুনে খেলাধুলায় ব্যস্ত হয়ে পড়তাম।
যাইহোক, এবার আসি আসল ঘটনায়। আমাদের বাড়ির পাশে আরিফ চাচার অনেক বড় একটি কাঁঠাল গাছ ছিল। সেই কাঁঠাল গাছে ছোট্ট ছোট্ট সাইজের কাঁঠাল ধরত। সেই গাছের কাঁঠাল অনেক মিষ্টি ছিল। এই সময়ে পাকা শুরু করতো আর আমাদের মত সমবয়সীরা কাঁঠাল পাকার বাসনা পেলেই কিভাবে সেখান থেকে খাওয়া যায় পেরে সেই প্লান মাথায় ঘুরপাক খেতো। আমি এবং আমার দুই চাচাতো ভাই সহপ্লান করলাম। সেই গাছের কাঁঠাল খেতে হবে। কখন খাওয়া যায় সেই চিন্তা ভাবনা করতে থাকলাম। বৃষ্টির সময় সবাই কাজে ব্যস্ত থাকে এবং ঘরের ভিতর থাকে। সেই কাঁঠাল গাছ ছিল ঘরের পিছনের দিকে আমরা তিনজন প্লান করেছিলাম বৃষ্টি হলেই সেখানে গিয়ে দেখবো কাঠাল পেকেছে কিনা।
সেই সময় আমাদের কয়েকটি গ্রুপ ছিল। বন্ধু সুজন এবং শুকর তারা প্রায়ই সেই গাছ থেকে পাকা কাঁঠাল পেরে খাইতো আর আমাদের কাছে স্কুলে যাওয়ার সময় গল্প করত। সেখান থেকেই আমাদের ইচ্ছা পোষণ হয় আমরাও সেই গাছ থেকে কাঁঠাল খাব। হঠাৎ একদিন বৃষ্টি নামে আমরা তিনজন চুপি চুপি সেই কাঁঠাল গাছের আঙিনায় চলে যাই। কেউ নেই চারিদিকে। আমি গাছে উঠেছিলাম দেখি একটি কাঁঠাল পেকেছে। সেটা খুব দ্রুত পেড়ে ফেললাম। সেটা নিয়ে রাস্তার পাশে গোরস্থান তার পিছনে চলে যাই। তারই পাশে ফাঁকা মাঠ সেখানে কাঁঠাল ভেঙে খাওয়া শুরু হলো আর চারিদিকে উকি মেরে দেখছি কেউ এসে দেখে ফেলল নাকি। হঠাৎ দেখি সেই কাঠাল মালিক আরিফ চাচার বাড়ির পাশের একজন মহিলা চলে এসেছে। তিনি বুঝতে পেরেছে সেটা কোন গাছের কাঁঠাল। আমাদেরকে বলতে থাকে তোমরা কাঁঠাল চুরি করে খাচ্ছো দাঁড়াও আমি এক্ষুনি গিয়ে বলছি।
সেখান থেকে আমরা দ্রুত সেই কাঁঠাল ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যাই। এদিকে বাড়িতে এসে তিনজন খুবই ভয়ে আছি। যদি জানে বাড়ি থেকে তাহলে বকা ঝকা শোনার পাশাপাশি মার খেতে হবে। আমাদের সেই বন্ধু সুজন কিভাবে যেন জানতে পেরেছে আমরা কাঠাল চুরি করে খেয়ে ধরা খেয়েছি। তারা প্রতিদিন খায় কখনো ধরা পড়ে না আমরা একদিন গিয়েই ধরা খেয়েছি। তখন তারা নিজেদের দোষ আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের বাড়িতে এসে বলে বিচার চাই বিচার চাই কাঁঠাল চোরের বিচার চাই। এই কথা শোনার সাথে সাথে বাড়ি থেকে পালিয়ে মাঠের দিকে আড়ালে চলে যাই। তারই কিছুক্ষণ পর আমার বাবা তাদের কয়েকজনকে এমন দাবর দেয় তারা দৌড়ে পালিয়ে বাঁচে।
আমরা সেই দুপুর টাইমে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। ভয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকছি না কারণ মার খেতে হবে। তিনজন কি একটা ভুল করলাম সেই বিষয়ে গল্প করছিলাম। বাড়িতে আসার জন্য গোপনে ঘরের পিছনে লুকিয়ে লুকিয়ে শুনছি বাবা-মা কিছু বলছে কিনা আমাদের নিয়ে। দেখি অনেক বলাবলি করছে যে আজ বাড়িতে আসুক কাঁঠাল খাওয়ার স্বাদ মিটিয়ে দেবো। এইটা শোনার পর আর বাড়িতে যাওয়া হলো না। অন্য এক আঙ্কেলের বাড়ি গিয়ে বসে থাকলাম। তারা বলল আমরা আছি কিছুই বলবে না। যাইহোক, পরে কিছু আর বলছিল না অনেক লজ্জা পেয়েছিলাম। যেটা অনেক মজার ঘটনা। এখন মনে পড়লে অনেক হাসি পায়।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
বন্ধু তুমি পাকাপোক্ত ফল চোর হয়ে উঠতে পারো নাই তাই জন্য প্রথম দিন কাঁঠাল চুরি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছিলো। আর তোমার যে বন্ধুরা প্রতিদিন কাঁঠাল চুরি করে খায় দোষটা সুযোগ পেয়ে তোমাদের ঘাড়ের উপর চাপিয়ে দিয়েছিলো। যাইহোক কাঁঠাল চুরি করে খাওয়ার ভিতরে কিন্তু আলাদা একটা মজা আছে। শৈশবের এসব স্মৃতিগুলো হঠাৎ মনে পড়লে অনেক হাসি পায়। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বন্ধু।
আসলে ছোটবেলায় সবাই কম বেশি এরকম কাজগুলো করে থাকতো বিশেষ করে ছেলেরা। যেকোনো কিছু চুরি করে সবাই একসাথে খেতে মনে হয় আপনাদের কাছে ভালোই লাগতো। তিনজনে এত বুদ্ধি করে কাঁঠাল চুরি করেছিলেন, তাও আবার একদিন। আর সেই দিনই ধরা পড়ে গিয়েছেন। আমার তো মনে হয় এসব কাজ আপনাদের জন্য ছিল না, তাই তো প্রথমেই ধরা পড়ে গিয়েছেন। যদিও অনেক বেশি ভয় পেয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে উনারা আর আপনাদেরকে কিছু বলেনি শুনে ভালোই লাগলো। আপনাদের কাঁঠাল চুরি করে খাওয়ার ঘটনা টা আসলেই অনেক বেশি মজার ছিল।
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভাইয়া যারা সব সময় চুরি করে তারা সহজে ধরা পড়ে না। তবে হঠাৎ করে কেউ সেই কাজ করতে গেলে ধরা খাওয়া সম্ভব। আসলে সুযোগে সদব্যবহার সবাই করে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ছোটবেলার স্মৃতি গুলো সব সময় মধুর হয়ে থাকে। আর সেই সমস্ত স্মৃতিগুলো স্মরণ করে যদি অন্যের মাঝে তুলে ধরা যায় তাহলে অনেকের জানানোর সুযোগ করে দেওয়া যায়। ঠিক তেমনি আপনার এই গল্প পড়ার মধ্য দিয়ে বেশ অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার এই কাঁঠাল খাওয়ার মুহূর্তের কাহিনী। অনেক অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার ঘটনা পড়ে।
আপনার মত এখন ওই কথাগুলো মনে করলে আমারও বেশ লজ্জা লাগে ভাই। এমন কাঠাল চুরি করার ঘটনা আমার জীবনের রেকর্ড আছে বেশ ভালো লাগলো আপনার পোস্টটা পড়ে আমার জীবনের সঙ্গে অনেকটাই মিলে গেছে হি হি!
চুরি বিদ্যা মহা বিদ্যা যদি না ধরা পড়।এইটা শুনেছেন নাকি ভাইয়া?তো আপনি কাঁঠাল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লেন।আর আপনারা বন্ধুরা প্রতিদিন কাঁঠাল চুরি করত তারা সুযোগ বুঝে আপনার দোষ দিল।হাসির ছিল ঘটনাটি।দুনিয়ায় সোজা মানুষের টিকা কষ্ট,হাহাহা।